গোলামীর শিকল ভেঙ্গে – ড. তোয়হা হোসাইন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ রফীক-আহমদ
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৪৪
গোলামীর শিকল ভেঙ্গে – বইটির এক ঝলকঃ
হরব বিন উমাইয়া আবদুল্লাহ বিন জুদানকে বললো, আবদুল্লাহ! তোমার রুমী গোলামের মত হুঁশিয়ার ও বুদ্ধিমান লোক আমি আর দেখিনি। তেজারতের কাজে সে খুব উস্তাদ।
আবদুল্লাহ বললো, হ্যাঁ, ঠিক বটে। কিন্তু আমি বুঝতে পারি না, সে কি আসলে আরব বংশীয় লোক, না রুম দেশীয় লোক। তার কথামতে সে আরব বংশীয়। রুম-পারস্যের যুদ্ধে রোমানরা তাকে বন্দি করে নিয়ে আরবের কলবী বংশীয় বণিকদের নিকট বিক্রি করেছিল। কলবীরা বলছে, সে প্রকৃতপক্ষে রোমক বংশীয় লোক। যখন আরব ও পার্সিয়ানরা মিলে রুম সাম্রাজ্য আক্রমণ করেছিল তখন সে কলবীদের হাতে বন্দি হয়। আমি তাকে শামদেশে কলবীদের নিকট থেকে খরিদ করেছি।
হরব বললো, এর গায়ের চামড়ায় এক প্রকার লাল আভা দেখা যায়, যা সাধারণত আরবদের মধ্যে দেখা যায় না। তাছাড়া তার ভাষায় রোমান ভাষার উচ্চারণভঙ্গি পাওয়া যায়। অধিকাংশ শামদেশীয় লোকের ভাষার ভঙ্গি প্রায় তার মত। সে রুমী হোক বা আরব হোক, তার মত বুদ্ধিমান ও চতুর ব্যবসায়ী আমি আর দেখিনি। ইয়ামান দেশে ও সাগরের ওপারে আবেসিনিয়াতে বাণিজ্য ভ্রমণে তাকে জিন বলে মনে হত। শত মাইল দূর থেকে সে বাণিজ্যকেন্দ্রের গন্ধ পেত এবং সহস্র ক্রোশ দূর থেকে সে ব্যবসায়ীদের খোঁজ নিতে পারত। সে বলত, অমুক বস্তিতে গেলে খুব বেচাকেনা হবে। ফলে তাই হত। আবেসিনিয়ার বাণিজ্যে অধিক লাভের আভাস যে কিভাবে পেত তা বুঝতাম না। সেখানে গিয়ে সে অন্য ব্যবসায়ীদের সাথে মিলে যেত। তারা আমাদের কথা কিছুই বুঝে না, রুমীর কথা সামান্য সামান্য বুঝে। সে তাদের সাথে মিশে আমাদের সমস্ত পণ্য বিক্রি করে দিল। আর তাদের নিকট থেকে এমন সব জিনিস ক্রয় করে নিল যা আমরা নিতে চাইনি। কারণ ঐসব জিনিস উঠিয়ে আনার শক্তিও আমাদের ছিল না। কিন্তু সে তা ক্রয় করে উটের পরিবর্তে সমুদ্রগামী নৌকাযোগে এদেশে নিয়ে এল। আরো মজার বিষয় এই যে, ঐ সকল নৌকায় সে দেশীয় কয়েকজন ব্যবসায়ীকে সাথে এনে সে দেশের চাহিদা মত এদেশীয় অনেক জিনিস তাদের নিকট বিক্রি করে নৌকা বোঝাই করে দিল। তার এক সফরে দুই বাণিজ্যের কাজ সমাধা হল।
আবদুল্লাহ বিন জুদান বললো, এটা আমি ভাল করেই জানি যে, এই গোলামটি অতি হুঁশিয়ার ও তীক্ষ্ণবুদ্ধিসম্পন্ন এবং চরিত্রবান লোক। আমি তো প্রথমে একে খরিদ করতেই চাইনি। কিন্তু কেনার পর তার দ্বারা আমি অনেক উপকৃত হয়েছি। সেদিন সন্ধ্যায় আবদুল্লাহ বিন জুদান তার এই গোলামকে নির্জনে ডেকে জিজ্ঞেস করল, সোহাইব! তুমি ইয়ামান ও আবেসিনিয়ার বাণিজ্যে বড়ই বুদ্ধিমত্তা ও দক্ষতার পরিচয় দিয়েছ। হরব বিন উমাইয়া তোমার ভূয়সী প্রশংসা না করলেও তুমি যে প্রচুর মালপত্র এনেছ তাই তোমার গুণের জ্বলন্ত প্রমাণ। আচ্ছা বলতো, তুমি কি ইতোপূর্বে কখনো ব্যবসা-বাণিজ্য করেছিলে?
সোহাইব উত্তরে বললো, না, নিজের দৈনিক আবশ্যকীয় বা বাজার করা ছাড়া অন্য কোন ব্যবসা-বাণিজ্য করিনি।
আবদুল্লাহ বললো, তবে এটা তোমার স্বভাবগত যোগ্যতা বলেই মনে হয় । সোহাইব বললো, হ্যাঁ, এমনই কিছু একটা হবে ।
আবদুল্লাহ কতক্ষণ অন্যমনষ্ক হয়ে মাথা নিচু করে থাকল। এ অবস্থা দেখে সোহাইব অন্য কাজে যাওয়ার জন্যে উঠতে যাবে, এমতাবস্থায় তার মনিব তাকে ইঙ্গিতে বারণ করল। সোহাইব মনিবের আদেশের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকল। কিন্তু আবদুল্লাহ তৎক্ষণাৎ মাথা তুলে উপহাসছলে মনের প্রকৃত কথা চাপা দিয়ে তাকে শান্তভাবে জিজ্ঞেস করল, সোহাইব! তুমি কি গোলামি করতে করতে বিরক্ত হয়ে গেছ?
সোহাইব উত্তরে বললো, মনিব! এমন কে আছে যে গোলামীতে বিরক্ত হয়ে আজাদী লাভের আশা না করে?
আবদুল্লাহ : আমার ইচ্ছা, তোমার স্বাধীনতা তোমাকে প্রত্যার্পণ করি, কিন্তু তার আগে তোমাকে একটি বড় দায়িত্ব দিতে চাই ।
সোহাইব : তবে এই স্বাধীনতা আপনার কাছেই রেখে দিন, তাতে আমার কোন প্রয়োজন নেই। আজাদী কেনাবেচার জিনিস নয়।
আবদুল্লাহ বললো, ওহ্, সোহাইব! তুমি কি বলছ? আমি তো তোমাকে কলবীদের নিকট থেকে খরিদ করে এনেছি। জানি না, তারা তোমাকে কোথা থেকে কিনেছে- আরবদের নিকট থেকে, না রুমিদের নিকট থেকে। সোহাইব : না, আপনি আমাকে খরিদ করেননি, কলবীরাও আমাকে খরিদ করেনি। কিছু ডাকাত আমাকে ধরে এনে কলবীদের নিকট বিক্রি করেছে। কলবীরা আমাকে অসহায় পেয়ে আমার অমতে আপনার নিকট বিক্রি করেছে। এই কেনাবেচাতে আমি কখনো সম্মত ছিলাম না। আপনারা আমাকে গোলাম মনে করতে পারেন, কিন্তু আমি নিজেকে স্বাধীন মনে করি। আপনি নিজে ধনদৌলত ও প্রভাব প্রতিপত্তির বলে আমার শরীরের উপর অধিকার লাভ করেছেন বটে, কিন্তু আমার মনের উপর কারো অধিকার চলতে পারে না ।
আবদুল্লাহ : আচ্ছা, আজাদী যদি ক্রয়-বিক্রয় না হত, তবে এ সকল গোলাম বন্দি কেন? মোকাতাবাত অর্থাৎ টাকা-কড়ি বা দৈহিক শ্রমের বিনিময়ে আজাদী হাসিল করে কেন?
সোহাইব বললো, তা তারাই ভাল জানে, আমি তো কেতাবাত করে কোন মাল আসবাব বা শারীরিক শ্রমের বিনিময়ে আজাদী হাসিল করব না । আমি তো এখনো নিজেকে আজাদ মনে করি ।
আবদুল্লাহ : হরব বিন উমাইয়া সত্যই বলেছে, তুমি খুবই সাহসী ও চতুর লোক। কিন্তু আমি চাই… ।
সোহাইব : হ্যাঁ, আপনি চাচ্ছেন আমার দ্বারা কোন বড় কাজ সমাধা করিয়ে নিতে। আমার উপর তো আপনার যথেষ্ট অধিকার আছে। আপনি যা কিছু করতে চান, আমি তা করতে প্রস্তুত আছি। কিন্তু আমি আপনার নিকট কোন প্রকার প্রতিদানের ওয়াদা চাই না। লোকেরা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য নানা ধরনের আশার জাল পেতে থাকে। আমি ঐসব মোটেই পছন্দ করি না ।
আবদুল্লাহ কিছু বলতে চাইল, কিন্তু সোহাইব সে সুযোগ দিল না। সে বলে উঠল, আপনার কোন বোঝা কি আমাকে হাল্কা করে দিতে হবে? অথবা আপনার মনের কথাটা যা আপনি বলতে ইতস্তত করছেন- তা আমি বলে দিব?
আবদুল্লাহ : তবে কি তুমি মানুষের মনের ভেদ জান?
সোহাইব : আমি ইয়ামান ও আবেসিনিয়ার তেজারতে খুব মুনাফা করে এনেছি। আপনার জন্য বহু জিনিসও খরিদ করে এনেছি। তাই আপনি এখন আমাকে শাম ও রুম দেশের দিকে বাণিজ্যের উদ্দেশে পাঠানোর মনস্থ করেছেন। আপনি ভাবছেন যে, আমি সেখানে গিয়ে আরো অধিক লাভ করে অনেক টাকা-পয়সা নিয়ে আসতে পারব। আপনি আপনার তেজারতের মালপত্র আমার হাওলা করতে প্রস্তুত এবং কোন ধরনের ক্ষতির আশংকাও করেন না। কিন্তু আমার জানটা আমার হাওলা করতে রাজি নন। আপনার ধারণা এই যে, আমি রুম দেশে স্বাধীনভাবে অনেকদিন কাটিয়েছি। ঐ দেশে গেলে আর ফিরে আসব না, ওখানেই থেকে যাব। আর আপনার বাণিজ্য সম্ভারও সেখানেই থেকে যাবে।
আবদুল্লাহ : না, না! তা নয়। মালপত্রের ব্যাপারে আমি তোমাকে খুবই বিশ্বাসী ও আমানতদার মনে করি।
সোহাইব : তবে কি আমাকে আপনার নিজ মাল মনে করেন না? যদি মাল মনে করেন, তবে আমার জানটাও আমার হাওলা করে দেন। যেমন- এ যাত্রায় আপনার মালপত্র আমার হাওলা করে দিতে চান। তারপর মাল ছামানা যোগাড় করুন। অল্প সময়ের মধ্যেই আমি এত অধিক মাল ও টাকা-কড়ি এনে দিব যা আপনি ইতোপুর্বে কখনো পাননি। কারণ, আমি রুমদেশীয় লোকেরা কোন জিনিস পছন্দ করে আর কোন জিনিস পছন্দ করে না তা ভাল করে জানি। আর এটাও জেনে রাখুন যে, রুমদেশে থাকার অভিপ্রায় আমার নেই। ঐ দেশের প্রতি আমার মনের কোন টান ও নেই। কারণ, শৈশব ও যৌবনের সন্ধিক্ষণে আমি জানতে পেরেছি যে, আপনাদের এই দেশে আমার বিশেষ এক কাজ। আছে তা না হলে এই দেশে আপনার আজ্ঞাবহ হয়ে এতদিন টিকে থাকতাম না। আমার মত লোক আপনার কাছ থেকে পালিয়ে যেতে চাইলে অতি সহজেই পালাতে পারে। আপনার নিকট কোন পুলিশ বা সিপাই নেই, আপনাকে ধোঁকা দিয়ে আমি এই হেরেম শরীফ থেকে ভাগতে চাইলে অতি সহজেই ভাগতে পারি। আপনি শত চেষ্টা করেও আমার কোন সন্ধান পাবেন না। পেলেও আমাকে ধরতে পারবেন না ।
আবদুল্লাহ : তুমি এখনি বললে, আমাদের এদেশে তোমার বিশেষ একটি কাজ আছে? সেটা কী কাজ?
:
সোহাইব তা আমার জানা থাকলে বলেই ফেলতাম। আমি বাল্যকাল থেকেই জানতে পেরেছি যে, এই দেশে আমি জীবন কাটাব। এই দেশেই আমার মরণ হবে। আমার জিবনের অর্ধেক এই হেরেমেই কাটিয়েছি, বাকি অর্ধেক দ্বিতীয় হেরেমে কাটাব। আমার মরণ এই দেশে নিশ্চিত এবং হেজাজের মাটিতেই আমার কবর হবে।
আবদুল্লাহ : সোহাইব! তুমি কী বলছ? আমার যতদূর জানা আছে, আরব দেশে মক্কার হেরেম ব্যতীত অন্য কোন হেরেম নেই।
সোহাইব : অন্য কোন হেরেমের কথা আমি নিজেও জানি না। আমি আপনার নিকট শুধু ঐ কথাই বলছি যা আমি আমার বাল্যজীবনের শেষে যৌবনের শুরুতে রুম দেশের এক গণকের কাছে শুনেছি। এখনও আমি এর অর্থ কিছুই বুঝিনি। বুঝবার চেষ্টাও করিনি। কিন্তু দেখলাম, একদিন কলবীরা আমাকে খরিদ করল। আমার মনিবেরা একে অন্যের নিকট বলতে লাগল, শীঘ্রই মক্কার হেরেমের অধিবাসী কুরাইশরা এলে আমাকে তাদের নিকট খুব চড়া দামে বিক্রি করবে। তখনি সেই গণকের কথা আমার মনে পড়ল। আমি ইচ্ছা করলে কলবীদের হাত থেকে অনায়াসে
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!