আগ্নিপুরুষ – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২৪১
আগ্নিপুরুষ – বইটির এক ঝলকঃ
দরজার দিকে এগোল রেমারিক। দরজার কাছে এসে কি মনে করে ঘাড় ফেরাল সে। দেখল একটা হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল বেলাডোনা, যেন তাকে ছুঁতে চেয়েছিল। সে ঘাড় ফিরিয়ে তাকাতে শুরু করতেই হাতটা তাড়াতাড়ি নামিয়ে নিয়েছে।
ধীরে ধীরে ঘুরল রেমারিক। ভাইয়ের চোখে ধরা পড়ে গিয়ে মাথা নিচু করে নিয়েছে বেলাডোনা, ছুটে গিয়ে বোনের গায়ের ওপর আছড়ে পড়ল রেমারিক । বেলাডোনার হাঁটুর ওপর মুখ রেখে ডুকরে উঠল। তার মাথায় একটা হাত রাখল বেলাডোনা, হাতের উল্টো পিঠে ফোঁটায় ফোঁটায় চোখের পানি পড়ছে।
পরদিন বেলাডোনাকে নয়, তার লাশ নিয়ে এসে কবর দিল রেমারিক। রাতে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে সে।
তিন দিন কাজে বেরুলো না রেমারিক। মা আর ভাইকে বেলাডোনার কথা কিছুই জানায়নি সে, ঠিক করল কোনদিন জানাবেও না। আরও দুটো সিদ্ধান্ত নিল রেমারিক। এক, নারী-ব্যবসার সাথে নিজেকে সে জড়াবে না, ডক এলাকায় কোন বেশ্যাপাড়াও তৈরি হতে দেবে না। দুই, কুষ্ঠ রোগীদের জন্যে একটা আশ্রম তৈরি
করতে হবে তার ।
ঘর-বাড়ি থেকে যাদের তাড়িয়ে দেয়া হয়েছিল, তাদেরকে ফিরে আসতে বলল রেমারিক। খবর পেয়ে মাফিয়া নেতা ব্যাখ্যা দাবি করে প্রতিনিধি পাঠাল তার সাথে দেখাই করল না রেমারিক লোক মারফত জানিয়ে দিল, ডক এলাকায় বেশ্যাপাড়া হবে না। হৈ চৈ পড়ে গেল আণ্ডারওয়ার্ল্ডে। কার এত সাহস নেতার আদেশ অমান্য করে? কে এই রেমারিক?
ঠিক এই সময় মাফিয়া নেতাদের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। রেমারিকের ওপরওয়ালাদের আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে, ধরাকে সরা জ্ঞান করতে শুরু করেছে কেউ কেউ, দেমাকে অনেকেরই মাটিতে পা পড়ে না। কে কত শক্তিশালী এটা প্রমাণ করার জন্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। গোটা দেশ জুড়ে মাফিয়াদের একটা কাঠামো থাকলেও দুই যুগ আগের মত শক্ত আর নিরেট হয়নি তখনও। দক্ষিণের প্রবীণ নেতারা তখনও সবখানে তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি। শিল্পসমৃদ্ধ উত্তরে আর রোমে তারা সফল হলেও, নেপলসে তারা সুবিধে করতে পারছিল না। ইটালীর অবাধ্য শহর বলা হয় নেপলসকে, এখানের ক্রিমিন্যালরাও আর সবার চেয়ে এক কাঠি বাড়া। প্রবীণ মাতব্বররা সবশেষে নজর দিল নেপলসের দিকে ।
ক্ষমতার ভাগ নিয়ে দুটো দলের লড়াই শুরু হল নেপলসে। যে-কোন একটা পক্ষ নিতে হবে রেমারিককে, এই পক্ষ নিতে গিয়েই জীবনের প্রথম ভুলটা করে বসল সে। গিডি নোচি নামে এক লোকের পক্ষ নিল সে। ডন নোচি নারী-ব্যবসা পছন্দ করে না, বেশ্যাদের প্রতি চিরকাল সহানুভূতি দেখিয়ে এসেছে সে, তার এই গুণের জন্যেই রেমারিক তার সাথে হাত মেলাল। কিন্তু নোচি বুড়ো, প্রায় অথর্ব, বহু বছর জেল খেটে আত্মবিশ্বাস কমে গেছে তার। ফলে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারলেও রেমারিক আর তার দলের অপূরণীয় ক্ষতি হতে লাগল। নিচুস্তরের কর্মী বলে রেমারিকের দলকেই সামনে থেকে লড়তে হল। মাস কাটল না, দলের অর্ধেক সদস্য হয় খুন হল নাহয় দল ছেড়ে পালিয়ে গেল। শটগানের গুলি খেয়ে আহত হল রেমারিক, হাসপাতালে শুয়ে কাতরাতে লাগল ব্যথায় ।
ওদিকে, তার আশা-ভরসা আর উদ্ধারকর্তা গিডি নোচি, ক্লান্ত এবং অসতর্ক, ফ্রিটো মিসটো খেতে বসে এক রেস্তোরায় খুন হয়ে গেল। শোনা কথা, পুলিস নাকি তার মুখ থেকে ভাজা মাছ বের করে। আততায়ীকে দেখতেই পায়নি নোচি, শটগানের গুলিতে তার গোটা বুক গুঁড়ো হয়ে যায়।
এই পর্যায়ে ঘুম ভাঙে পুলিসের। দাপট দেখাবার জন্যে রাস্তায় নেমে আসে তারা। খবরের কাগজগুলো আর রাজনীতিকরা এসবের বিহিত দাবি করে বসে। শেষ পর্যন্ত বিজয়ীদের মধ্যে একটা শান্তি আলোচনার ব্যবস্থা হল। মাফিয়াদের তরফ থেকে উদ্যোগী হল ডন আতুনি বেরলিংগার, সরকারের পক্ষে আলোচনায় বসল পাবলিক প্রসিকিউটর। প্রমাণ আর সাক্ষী জোগাড় হল, নিচুস্তরের কিছু লোকজনকে ধরে হাজতে ভরল পুলিস। ডিটেলা রেমারিকও থাকল তাদের মধ্যে। বিচারে দু’বছরের জেল হয়ে গেল তার।
জেল থেকে ছাড়া পাবার পর দু’মাস গা ঢাকা দিয়ে থাকল রেমারিক। আর আমি জেলে যাব না, নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করল সে। ঠিক করল, মাস্তানি ছেড়ে দিয়ে দেখবে সৎভাবে বেঁচে থাকা যায় কিনা। মার নামে কেনা বাড়িটা খালি পড়ে ছিল, ঠিক করল ওটাকে বোর্ডিং হাউস বানাবে।
গত দু’বছরে শহরে নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করেছে আতুনি বেরলিংগার। তার দলে কুখ্যাত সব মস্তানরা ভিড়েছে, পুলিস আর স্থানীয় সরকারের প্রভাবশালী অফিসাররাও এখন তার পকেটে। রেমারিক বুঝল, তাকে আবার নতুন করে শুরু করতে হলে, বেরলিংগারের অনুমতি লাগবে। নেপলসে আত্মপ্রকাশ করল সে, বেরলিংগারের সাথে দেখা করার চেষ্টায় থাকল ।
বেরলিংগার তখনও যুবক, মাত্র পঁয়ত্রিশ বছর বয়স। আধুনিক চিন্তা-ভাবনা নিয়ে অল্প যে-ক’জন নেতা উঠে এসেছিল, সে তাদেরই একজন। রক্তপাত ঘটিয়ে ক্ষমতায় এল বটে, কিন্তু চারদিক একটু গুছিয়ে নিয়েই বাস্তববাদী ব্যবসায়ীর দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করল সে। বুঝল, তার ক্ষমতার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে হলে গোটা দেশের সব মাফিয়া নেতাদের সাথে একটা সমঝোতায় আসতে হবে তাকে। সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়ে সব বড় শহরে প্রতিনিধি পাঠাল সে। পালার্মো থেকে দূত এল তার কাছে, প্রভাব বলয় আর ক্ষমতার আওতা নির্ধারণের জন্যে মীটিঙে বসার আমন্ত্রণ জানানো হল তাকে। পোপ নির্বাচনে যে গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়, সে-সব মীটিঙের আলোচনাও তেমনি গোপন রাখা হল। কার কতটুকু ক্ষমতা, প্রভাব বলয়ের ‘বিস্তৃতি, ইত্যাদি নিয়ে মতবিরোধ আর দ্বন্দ্ব দেখা দিল, কিন্তু নতুন করে কোন রক্তপাত ঘটল না। কালাব্রিয়ার পুরানো ঐতিহ্যের অনুসারীরা গোঁ ধরে বসল, আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত মিলান আর তুরিনের বস-রা যেন কোনভাবেই অতিরিক্ত ক্ষমতার অধিকারী না হয় । সবেচেয়ে বেশি শোরগোল তুলল নেপলস আর রোমের নেতারা, কারণ গত কয়েক যুগ ধরে তাদেরকে অবহেলা করা হয়েছে। তবে সবাই একমত হল যে গোটা দেশ জুড়ে শক্তিশালী একটা কাঠামো থাকা দরকার, নেতাদের নেতাও একজন থাকতে হবে, যার ক্ষমতা হবে সবার চেয়ে বেশি।
উত্তরের নেতারা কালাব্রিয়ানদের মধ্যে থেকে কাউকে চায় না, কালাব্রিয়ানরা উত্তরের কাউকে মেনে নেবে না। রোমের ডন পেসকাকে নরম বলে রায় দেয়া হল, আর রেলিংগারের বয়স কম ।
এ-ধরনের পরিস্থিতিতে যা হয়, একটা আপোসরফায় আসতে হল সবাইকে । মীটিং আহ্বান করা হয়েছিল পালার্মো থেকে। পালার্মোর নেতা ডন বাকালাকে সাময়িকভাবে নেতাদের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে বলা হল। লোকটা মাঝারি আকৃতির, ঝানু একজন কূটনীতিক। কেউ জানত না, তার একটা প্রতিজ্ঞা ছিল, পালার্মোকে ক্ষমতার উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। লক্ষণগুলো দেখে ঠিক কি ঘটতে যাচ্ছে পরিষ্কার আঁচ করতে পারে সে। উপস্থিত কেউই তার কূটনৈতিক চাল পছন্দ করত না। রাজনীতিকদের সাথে তার অতিরিক্ত মাখামাখিও সন্দেহের চোখে দেখা হত। কিন্তু কেউই ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেনি, ডন বাকালা তার কূটনৈতিক চাল চেলেই আগামী আটটা বছর সবার মাথার ওপর ছড়ি ঘোরাবে। সবাই এ-কথা ভেবেই খুশি হল যে বেশ লম্বা একটা সময়ের জন্যে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সংশ্লিষ্ট সবার জন্যেই সেটা বিরাট লাভ হয়ে দেখা দেবে ।
আড়ুনি বেরলিংগারের সাদর অভ্যর্থনা পেয়ে মুগ্ধ হল রেমারিক। তার অফিস দেখেও প্রভাবিত হল সে। সম্পূর্ণ ব্যবসায়ীসুলভ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করছে লোকটা। দু’বছর আগের নিষ্ঠুরতা সত্যি অতীতের একটা কলঙ্ক মাত্র। যা ঘটবার ঘটে গেছে, ভুলে যাওয়াই ভাল, আশ্বাস দিয়ে বলল বেরলিংগার। পরিস্থিতি এখন বদলে গেছে। আরে না, রেমারিক নতুন করে ব্যবসা শুরু করলে কেউ তাকে বাধা দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তবে রেমারিক যদি বোর্ডিং হাউসে মারিজুয়ানাও বিক্রি করে, নেতার অনুরোধ ফেলা হয়নি দেখে যারপর নাই খুশি হবে বেরলিংগার। মারিজুয়ানা কেনাবেচার জন্যে পুঁজি লাগলে তাও পেয়ে যাবে রেমারিক।
শর্তটা জুড়ে দেয়ায় একটু মনক্ষুণ্ণ হলেও, আত্মবিশ্বাস নিয়েই ফিরে এল রেমারিক । ভাবল, ভাগ্যিস তাকে বেশ্যাপাড়া চালাতে বলেনি ।
আসলে ডন বেরলিংগারকে চিনতে পারেনি রেমারিক। বেরলিংগার তাকে ক্ষমা করেনি। বিরোধী পক্ষে রেমারিক আর তার দল ছিল সবচেয়ে বিপজ্জনক, বেশিরভাগ ক্ষয়-ক্ষতি ওদের দ্বারাই ঘটেছিল। সেই রেমারিককে ব্যবসা করে খেয়ে পরে বাঁচতে দেবে, বেরলিংগার সে লোকই নয়।
পালার্মো থেকে নির্দেশ ছিল, আঞ্চলিক গোলযোগ একেবারে কমিয়ে ফেলতে হবে। অতীত ঘটনার জের ধরে কোনরকম খুন-খারাবি চলবে না। বেরলিংগারের তখনও এতটা ক্ষমতা বা সাহস হয়নি যে ডন বাকালার নির্দেশ অমান্য করে। সহজ একটা উপায় আবিষ্কার করে সে। শুরু করুক রেমারিক। সময় আর সুযোগমত প্রোটেকশন প্রত্যাহার করে নেবে সে। যা করার, তার কাছ থেকে প্ররোচিত হয়ে পুলিসই সব করতে পারবে। বিচার বিভাগের সাথে তার দহরম- মহরম আছে, রেমারিককে লম্বা সময়ের জন্যে জেলের ঘানি টানানো কোন সমস্যাই হবে না ।
একদিন রাত দুপুরে এল একটা টেলিফোন কল। কে ফোন করেছিল, আজও জানা হয়নি রেমারিকের।
গিডি নোচি আর আতুনি বেরলিংগার, দুজনকেই বাকিতে অস্ত্র আর গোলা- বারুদ সরবরাহ করেছিল ভিনসেন্ট গগল নামে এক লোক। নোচি নিহত হওয়ায় পাওনা টাকা মার গেল গুগলের। কিন্তু বিজয়ী বেরলিংগারের কাছ থেকেও টাকা পেল না সে। গগলকে সাধারণ একজন স্মাগলার মনে করে টাকাটা না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিল বেরলিংগার। কেউ ঠকালে বা শত্রুতা করলে সরাসরি আঘাত করা গগলের স্বভাব নয়। কারও সাথে প্রকাশ্যে বিরোধে জড়িয়ে পড়াও তার অপছন্দ । বেরলিংগার টাকা দিতে অস্বীকার করায় কোন প্রতিবাদই করল না সে। শুধু ঘটনার ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখল আর অপেক্ষায় থাকল সুযোগের।
অবৈধ অস্ত্রের যোগানদার হিসেবে নোচি আর বেরলিংগার, দু’পক্ষের লোকজনদেরই চিনত গগল। এদের মধ্যে নোচির দলের রেমারিক তার দৃষ্টি কাড়ে। রেমারিক কোত্থেকে কোথায় উঠেছে, তারপর কোথায় নেমে গেল, সব খবরই জানা ছিল তার ।
নানা দেশে ব্যবসা আছে গগলের, সবখানে ঘুরে বেড়াতে হয়, তবু হাতে সময় পেলেই ইতালীতে ছুটি কাটাতে আসে সে। আর এলেই সংশ্লিষ্ট সবার খোঁজ- খবর নেয়। রেমারিক সম্পর্কে আরও কিছু খবর পেল সে। বেরলিংগারের সাথে দেখা করেছে রেমারিক, আবার নতুন করে ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছে ছেলেটা।
নিজের ব্যবসা বা ব্যবসা সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে বন্ধু মাসুদ রানার সাথে কখনও আলোচনা করেনি গগল, তবে রানা কি ধরনের কাহিনী শুনতে পছন্দ করে সেটা তার খুব ভাল জানা আছে। বেরলিংগার টাকা দিতে অস্বীকার করার পর রানার সাথে দেশে- 1- বিদেশে অনেকবারই দেখা হয়েছে গুগলের। গল্পচ্ছলে রানাকে সে রেমারিকের কথাও বলেছে ।
যাকে নিয়ে এত আলোচনা, সেই রেমারিক কিছুই জানল না, কিন্তু বাংলাদেশ কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের এজেন্ট এবং রানা ইনভেস্টিগেশনের চীফ মাসুদ রানা তার সম্পর্কে যা কিছু জানার প্রায় সবই জেনে ফেলল। বিমুখ পরিস্থিতির সাথে একা লড়ে রেমারিক অনেক ওপরে উঠেছে, এটা রানার ভাল লাগে। মাফিয়া নেতার কাছ থেকে নারী-ব্যবসা করার নির্দেশ পেয়েও সেটা অমান্য করার সাহস দেখিয়েছিল রেমারিক, এই ঘটনা রানার মনে একটা ছাপ ফেলে। কেন যেন রানার মনে হয়, ওখানে একজন সৎ যুবক সুযোগের অভাবে সৎ পথে আসতে পারছে না । গগলের সাথে দেখা হলে কথা প্রসঙ্গে দু’একবার জানতে চেয়েছে ও, তোমার সেই রেমারিকের খবর কি?
গগল একবার জানাল, ‘বেরলিংগার তাকে ব্যবসা করার অনুমতি দিয়েছে। তবে আমার ধারণা, সুযোগমত ঠিকই ছোবল মারবে সে।’
একটু চিন্তা করে রানা বলেছিল, ‘ওর কোন সাহায্য লাগলে আমাকে জানিও । ছেলেটাকে আমার ভাল লেগেছে।’
ব্যস, এই পর্যন্তই। এরপর অনেকদিন গুগলের সাথে দেখা হয়নি রানার, রেমারিকের কথাও ভুলে গেছে ও।
ব্যবসার কাজে আবার একবার মিলানে এল গগল। বেরলিংগারের দলের ভেতর নিজের লোক আছে তার, তাকে ডেকে ভেতরের সব খবর সংগ্রহ করার সময়ই সে জানতে পারল, রেমারিককে শায়েস্তা করার জন্যে প্রোটেকশন প্রত্যাহার করে নিচ্ছে বেরলিংগার। আজ রাতেই তার বোর্ডিং হাউসে হানা দেবে পুলিস।
ইনফরমারকে বিদায় করে দিয়ে চিন্তা করতে বসল গগল। রেমারিকের প্রতি সহানুভূতি জাগল তার মনে। ভাবল, রেমারিককে নিরাপদ কোথাও সরিয়ে দিতে পারলে বেরলিংগার একটা চোট খাবে। কিন্তু রেমারিককে কোথায় সরাবে সে?
এই সময় রানার কথা মনে পড়ে গেল গগলের। মিলানে রানা ইনভেস্টিগেশনের শাখা আছে, কিন্তু ফোন করে সেখানে রানাকে পাওয়া গেল না । কোথায় পাওয়া যাবে ওকে, তাও বলতে পারল না শাখাপ্রধান। রিসিভার নামিয়ে রাখবে গগল, এই সময় অপরপ্রান্ত থেকে জানতে চাওয়া হল, ‘মি. রানাকে কি দরকার?’
‘না, মানে রেমারিক নামে এক যুবককে…’ ‘আপনি কে বলছেন?’
নিজের পরিচয় দিল গগল ।
অপরপ্রান্ত থেকে জবাব এল, ‘রেমারিককে আমাদের ঠিকানা দিয়ে পাঠিয়ে দিন। বস্ তার সম্পর্কে অনেক দিন আগেই আমাদেরকে নির্দেশ দিয়ে রেখেছেন। রেমারিক এখানে পৌঁছুতে পারলে তার নিরাপত্তার সম্পূর্ণ দায়িত্ব আমাদের।’
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!