আগুন নিয়ে খেলা – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৬২৭
আগুন নিয়ে খেলা – বইটির এক ঝলকঃ
রানার কণ্ঠ গুড়গুড় করে উঠতেই থমকে গেল লোকটা। ‘সমস্যাটা আসলে কী?’ নরম স্বরে বলল গ্রেসি। রূঢ় পরিবেশটা সামলাতে চাইছে।
‘ওখন দ্বীপে পানির নীচে ভূমিধস হয়েছে,’ বলল রানা। ‘ওটার কারণে বিরাট এক ঢেউ তৈরি হয়েছে। ত্রিশ ফুট উঁচু ওটা, এদিকে আসছে এখন। রেডিও ব্রডকাস্টাররা হ্রদের চারপাশের সবাইকে সাবধান করেছে। কিন্তু আপনাদের সম্মানিত ক্যাপ্টেন তা শুনতে পাননি।’
চমকে গেছে সবাই । বলোর্মার চেহারা ফ্যাকাসে হয়ে গেল, নিচু স্বরে ক্যাপ্টেনকে কী যেন বলছে। তার বক্তব্য শেষ হতে কোনও প্রতিবাদ করল না ক্যাপ্টেন, দু’ সেকেণ্ড পর হুইল- হাউজে ঢুকল। থ্রটল পুরো খুলে দিল, পুরানো ইঞ্জিন তীব্র প্রতিবাদ করল। বোট লিভিয়াঙ্কার দিকে ঘুরিয়ে নেয়া হলো। স্টার্নের ডেকে সার্ভে গিয়ার পানি থেকে তুলতে ব্যস্ত হয়ে উঠল এডি ও উইলসন । বোটের গতি ধীরে ধীরে বাড়ছে।
আকাশে চোখ তুলে অবাক হলো রানা। কখন যেন বোটের উপর থেকে সরে গেছে ববি! পশ্চিমে চলেছে, দেখতে দেখতে দিগন্তে হারিয়ে গেল! এ বোট ঢেউকে হারাতে পারবে না, রানা চেয়েছিল ববি ওদের ধারেকাছে থাকুক। মনে মনে ভাগ্যকে অভিশাপ দিল রানা, বুদ্ধি করে ছোট কোনও রেডিও নিয়ে আসা উচিত ছিল!
“আমাদের সাবধান করতে এসেছেন বলে ধন্যবাদ,’ বলল গ্রেসি, রানার সামনে এসে দাঁড়াল। হাসতে চাইল, কিন্তু ভালভাবে হাসি ফুটল না। হ্যাণ্ডশেক করবার জন্য হাত বাড়িয়ে দিল। ‘খুব ঝুঁকি নিয়ে নেমেছেন।
ডাচ মেয়েটার সঙ্গে সোহানার কোথায় যেন মিল, ভাবল রানা। হাত মেলিয়ে টের পেল শক্ত করে হাত ধরেছে মেয়েটা। রানা বুঝল, এ মেয়েকে পছন্দ করা যায়। ছোবল দেবে না । ‘আমাদের সতর্ক করেছেন বলে ধন্যবাদ,’ বলল বলোমা, কণ্ঠে দুঃখপ্রকাশের সুর। স্বরটাও আগের চেয়ে অনেকটা উষ্ণ। সবাই দ্রুত রানার সঙ্গে পরিচিত হলো। বলোমা বলল, ‘আপনি তো লিমনোলজিকাল ইন্সটিটিউটের রিসার্চ জাহাজ থেকে আসছেন?’
‘হ্যাঁ। আমরা লিভিয়াঙ্কার দিকে ফিরছিলাম। আপনাদের বোট একমাত্র নৌযান, যেটাকে আমরা সতর্ক করতে পারিনি।’ ‘তোমাকে বলিনি এই বোটে সমস্যা থাকতেই হবে?’ ফিসফিস করে এডিকে বললেন উইলসন।
‘বোটের ক্যাপ্টেনেরও বিরাট সমস্যা আছে,’ আফসোস করে মাথা নাড়ল এডি ।
‘মিস্টার রানা, মনে হয় আমরা একইসঙ্গে ঢেউয়ের মধ্যে পড়ব,’ বলল বলোর্মা। ‘ওটা কতক্ষণ পর আসতে পারে?’
বামহাত তুলে ডাইভ রোলেক্স ঘড়িটা দেখল রানা। ‘আমরা দ্যানিয়া ছাড়বার আগের হিসাব অনুযায়ী… বড়জোর পনেরো মিনিট।’
“আমরা লিভিয়াঙ্কা পর্যন্ত পৌঁছব না,’ নিচু স্বরে বলল বলোমা।
হ্রদ দক্ষিণে চওড়া হয়েছে, কাজেই ঢেউ পশ্চিমদিকে এসে কিছুটা গতি হারাবে,’ বলল রানা। ‘আমরা লিভিয়াঙ্কার যত কাছে যাব, ঢেউয়ের প্রকোপ তত কমবে।’
লক্কর-মার্কা বোটে দাঁড়িয়ে থাকল রানা, মনে মনে জানে, ওরা ঢেউয়ের তলে চাপা পড়বে। বিজ পাম্প কাজ করে না বললেই চলে, এমনিতেই পানিতে ভরে উঠছে বোটের খোল। ইঞ্জিনটা এখন পর্যন্ত ঠির-ঠির করে চলছে। বোটের যেদিকে চাইল রানা, পাটাতনের চারপাশে পচা কাঠ। বোধহয় খোলের অবস্থা এর চেয়ে খারাপ ।
“আপনারা জলদি তৈরি হোন, বলল রানা। ‘সবাই লাইফ জ্যাকেট পরে নিন। কিছু হারাতে না চাইলে ডেক বা গানেলের সঙ্গে বাঁধতে পারেন।’
গ্রেসির সাহায্য নিয়ে ব্যস্ত হয়ে উঠল উইলসন ও এডি, সার্ভে ইকুইপমেন্ট বেঁধে রাখছে। বলোর্মা হুইল-হাউজে ঢুকেছে, কিছুক্ষণ পর পুরানো কয়েকটা লাইফ জ্যাকেট নিয়ে ফিরল।
‘বোটে মাত্র চারটে লাইফ জ্যাকেট,’ চড়া স্বরে বলল সে। ‘ক্যাপ্টেন বলেছে সে পরবে না। তবুও একটা কম পড়ছে।’ রানার দিকে তাকাল সে, চোখ যেন বলছে, তুমি এসে না জুটলে আমাদের হয়ে যেত এতেই।
‘চিন্তা নেই, আমি সঙ্গে নিয়ে এসেছি,’ বলল রানা। সার্ভে টিম জ্যাকেট পরতে ব্যস্ত হয়ে উঠল। জুতো ও পোশাক খুলে ফেলল রানা, ডাফল ব্যাগ থেকে বেরুল নিওপ্রিন ড্রাই সুট। পরে নিল ।
‘ওই আওয়াজ কীসের?’ চমকে উঠল গ্রেসি ।
মৃদু ভাবে আসছে শব্দ। মনে হলো বহুদূরে গর্জাচ্ছে মেঘ। কিন্তু থামছে না, পানির উপর দিয়ে ভেসে আসছে গুরুগম্ভীর ধমক। রানা মানসিক ভাবে তৈরি। ভাবল, পাহাড়ি এলাকায় মালগাড়ি বাঁক নিলে এমন আওয়াজ হয়। চাপা গুড়গুড় শব্দ বাড়ছে ধীরে ধীরে আওয়াজটা রানাকে জানিয়ে দিল কী ঘটবে। ঢেউয়ের গতি বেড়েছে, ক্ষমতাও! জোসেফ কার্ক সঠিক হিসাব কষতে পারেননি, সময়ের আগেই আসছে জলোচ্ছ্বাস ! ‘ওই এল!’ দূরে আঙুল তাক করল এড়ি
“বিশাল! এত উঁচু!” শ্বাস আটকে ফেলল গ্লেসি।
সার্ফাররা যেমন ঢেউ খোঁজে ওই জলোচ্ছ্বাস তেমন নয়, চূড়ায় সাদা ফেনা নেই, বিরাট একটা ব্যারেলের মত গড়িয়ে আসছে তরল মৃত্যু! এক তীর থেকে আরেক তীর পর্যন্ত চওড়া! আসছে তো আসছেই! এখনও বিশ মাইল দূরে, তবে দেখলে মনে হয়, মস্ত কোনও পাহাড় ! চল্লিশ ফুট উঁচু! মরণ-ঢেউয়ের সঙ্গে আসছে গুড়গুড় আওয়াজ! পরিস্থিতি বুঝে দমে গেল সবাই ।
‘বলোর্মা, ক্যাপ্টেনকে ঢেউয়ের দিকে বো তাক করতে বলুন, বলল রানা।
কিছু বলতে হলো না, লোকটা হুইল-হাউজের দরজায় দাঁড়িয়েছে, চোখদুটো দশ টাকার রসগোল্লা হয়ে উঠেছে। দ্রুত হুইলের কাছে ফিরল, ঢেউয়ের দিকে বোট তাক করতে শুরু করল। রানা জানে, ওদের কিছু করবার নেই, সব নির্ভর করছে পচা খোল টিকবে কি না, তার উপর! বোট টিকবে হয়তো, কিন্তু পেট ভরা পানি ওদের ডুবিয়ে দেবে। সবাইকে বাঁচাবার চিন্তা এল রানার—যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আশ। প্রথম চ্যালেঞ্জ সবাইকে নৌকার উপর রাখা। ডেকের চারপাশ দেখল রানা, চোখ পড়ল স্টারবোর্ডে। গানেলের কাছে পুরানো জাল গুটিয়ে
রাখা ।
‘উইলসন, এডি, আমার সঙ্গে হাত লাগান,’ বলল রানা ।
তিনজন মিলে গানেল থেকে জাল সরিয়ে নিল, হুইল- হাউজের বাল্কহেডের সঙ্গে ঠেসে দিল। উইলসন এক প্রান্ত নিয়ে স্টারবোর্ডের রেলিঙে বাঁধল। পোর্টের স্টানশনের সঙ্গে আরেক প্রান্ত বাঁধল রানা।
‘ওটা দিয়ে কী হবে?’ জানতে চাইল গ্রেসি ।
‘ঢেউ এলে সবাই জাল জাপ্টে ধরে শুয়ে থাকব। তাতে আছড়ে পড়ে মরব না আমরা। শক্ত করে ধরলে ভেসেও যাব না।’
বোট অগ্রসরমান ঢেউয়ের মুখোমুখি করেছে ক্যাপ্টেন। সবাই জালের উপর উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ল। এডি আছে রানার পাশে, ফিসফিস করে বলল, ‘খেলা শেষ হতে চলল, মিস্টার রানা। তবুও আপনাকে ধন্যবাদ। আমরা সবাই জানি বুড়ো নৌকা আমাদের নিয়ে ডুববে। আপনিও জানেন। তার পরেও নিজের নিরাপত্তা ভুলে এসেছেন আমাদের বাঁচাতে।’
‘মরার কথা ভাবতে হয় না,’ নিচু স্বরে বলল রানা । ওর কণ্ঠে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা বাজল ।
ঢেউয়ের আওয়াজ দ্রুত বাড়ছে। পানির প্রাচীর এখন মাত্র পাঁচ মাইল দূরে! জেলে-নৌকা ওটার দিকে চলেছে! সবাই মানসিক ভাবে প্রস্তুতি নিল। কেউ কেউ নীরবে প্রার্থনা করছে। প্রায় সবাই ভাবছে মৃত্যুটা কীভাবে ঘটবে। পানির গর্জন, কান বধির করে দিতে চাইছে। ওরা কেউ কপ্টারের আওয়াজ শোনেনি। কামোভ যখন পোর্টসাইড থেকে মাত্র এক শ’ গজ দূরে, ধড়মড় করে উঠে বসলেন উইলসন, ‘এই আওয়াজ আবার কীসের?’
“সবাই ঢেউয়ের দিক থেকে চোখ সরিয়ে আকাশ দেখল । কপ্টারটা দ্রুত ছুটছে। অবাক হলো সবাই, চপারের বিশ ফুট নীচে ব্যারেলের মত জিনিসটা কেব্ল্ দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। স্রোতের তিন ফুট উপর দিয়ে ছুটে আসছে। রানা ছাড়া সবাই ভাবল—কপ্টারের পাইলট বদ্ধ উন্মাদ, ওই বিরাট ব্যারেল দিয়ে কী করবে? ডুবে যাওয়ার এই শেষ মুহূর্তে বোটে কী দিতে
এল!
শুধু রানা হাসছে। পেট মোটা জিনিসটা কপ্টারের নীচে ঝুলছে। জাহাজের ডিকমপ্রেশন চেম্বার ওটা, হেলিপ্যাডে উঠবার সময় ওটাকে পাশ কাটিয়েছিল ও। কোনও ডাইভিং অ্যাক্সিডেন্ট হলে ওটা লাগতে পারে, তাই সঙ্গে আনা হয়। হঠাৎ চট্ করে মনে পড়েছে ববির, ওটা সাবমারসিবলের কাজ করবে—বোটের সবাই ওটার ভিতর ঢুকলে বাঁচবে। লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়াল রানা, ববির উদ্দেশে হাত নাড়ল-বোটের স্টার্নে চেম্বার নামিয়ে দিতে বলছে।
পর্বতের মত ঢেউ এগিয়ে আসছে! ওদিকে দ্রুত ছুটে এল
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!