সাহাবীদের বিপ্লবী জীবন – ডঃ আব্দুর রহমান রাফাত পাশা – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

সাহাবীদের বিপ্লবী জীবন – ডঃ আব্দুর রহমান রাফাত পাশা – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ মোহাম্মদ আব্দুল মোনায়েম

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৩৩৯

সাহাবীদের বিপ্লবী জীবন – বইটির এক ঝলকঃ

তোফাইল ইবনে আমর আদ দাউসী রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু ইসলাম গ্রহণের পূর্বে আরবের ঐতিহ্যবাহী দাউস বংশের অত্যন্ত প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। সমগ্র আরবে যে ক’জন উচ্চ নৈতিক গুণাবলি সম্পন্ন সভ্রান্ত নেতার পরিচয় পাওয়া যায় তোফাইল ইবনে আমর আদ দাউসী রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু ছিলেন তাদের অন্যতম। তিনি ছিলেন আরব বিশ্বের প্রখ্যাত দানবীর। তাঁর বাড়িতে মেহমানদের জন্যে সর্বক্ষণ রান্নাবান্না হতো। কোনো আগন্তুক তাঁর দরবার থেকে বিফল মনোরথ হয়ে ফিরে গিয়েছেন এমন কোনো নজির পাওয়া যায় না। ক্ষুধার্তকে অনুদান, ভীতসন্ত্রস্তের নিরাপত্তা বিধান এবং অসহায় ও নিরাশ্রয়কে পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে তাঁর সুখ্যাতি ছিল সবার শীর্ষে। তিনি শুধু একজন দানবীরই ছিলেন না; অত্যন্ত তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব, অনলবর্ষী বক্তা, সুসাহিত্যিক ও খ্যাতনামা কবিও ছিলেন। তাঁর বক্তৃতা ও কবিতার ছন্দে ছিল এক বিস্ময়কর জাদুকরী আকর্ষণ। শ্রোতাদের দেহ-মন এসবের আকর্ষণে হয়ে উঠত উদ্বেলিত। তিনি ছিলেন কাব্য ও ভাষাশিল্পের একচ্ছত্র সম্রাট। এর ভালো-মন্দ বিচারে পারদর্শী, সূক্ষ্মতম ত্রুটিও তাঁর নজর এড়িয়ে যেতে পারত না । ধন-সম্পদ ও ঐশ্বর্য তাঁকে জাহেলী যুগেও পবিত্র খানায়ে কাবার তাওয়াফ থেকে বিরত রাখতে পারেনি। সে সময়ের প্রচলিত প্রথানুযায়ী ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে তিনি তাঁর জন্মভূমি লোহিত সাগরের উপকূলীয় অঞ্চল তিহামা’ থেকে মক্কায় আগমন করেন। এ সময় মক্কায় মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও কাফির কুরাইশদের মধ্যে পারস্পরিক শক্তি ও জনসমর্থন বৃদ্ধির চরম এক প্রতিযোগিতা চলছিল। উভয় পক্ষই নিজ নিজ অনুসারী বৃদ্ধির জন্যে ব্যাপক প্রচারাভিযান পরিচালনা করছিলেন। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিকে যেমন তাওহীদ, রিসালাত ও আখিরাতের প্রতি ঈমান আনার জন্য লোকেদের আহ্বান জানাচ্ছিলেন, অন্যদিকে কুরাইশরা পৌত্তলিকতাকে আঁকড়ে ধরে জনগণকে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আহ্বান থেকে দূরে রাখার জন্য সর্বাত্মক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছিল।
এ অবস্থায় তোফাইল ইবনে আমর আদ দাউসী তাঁর মনের অগোচরেই উভয় পক্ষের লক্ষ্যে পরিণত হন। তাঁকে নিয়ে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে এক চরম স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হয় । তোফাইল আদ দাউসী তা বুঝতে পেরে একদিকে যেমন কুরাইশদের দল ভারী করার প্রতি আন্তরিকতা পোষণ করতেন না, অন্যদিকে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাওয়াতে সাড়া দেওয়ার মানসিকতাও তাঁর গড়ে উঠেনি। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল, সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থেকে ওমরাহ পালন করে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করা ।
তোফাইল ইবনে আমর আদ দাউসী রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুকে নিয়ে এই আদর্শিক দ্বন্দ্বের প্রেক্ষাপটে মক্কায় যে টানাপোড়েন শুরু হয়েছিল, সে ঘটনা ছিল অত্যন্ত চমৎকার ও আকর্ষণীয়। তোফাইল আদ দাউসী রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুর ভাষায় :
“আমি যখন ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে মক্কায় পৌঁছলাম, তখন কুরাইশ নেতৃবর্গ আমাকে প্রাণঢালা সংবর্ধনা জানায় এবং তারা আমাকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ভূষিত করে। অতঃপর আমাকে কেন্দ্র করে কুরাইশ বুদ্ধিজীবী ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ একটি বিশেষ সভার আয়োজন করে। উক্ত সভায় তারা অত্যন্ত সম্মানের সাথে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে :
‘তোফাইল আদ দাউসী! মক্কা শহরে আপনার আগমনে আমরা আনন্দিত ও গর্বিত। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আপনাকে অবগত না করে পারছি না যে, আমাদেরই এক ব্যক্তি নিজেকে নবী বলে দাবি করেছে। সে তার তৎপরতার মাধ্যমে আমাদের সমাজকাঠামোর ওপর এক প্রচণ্ড আঘাত হেনেছে, আমাদের ঐক্যে ফাটল ধরিয়েছে এবং পরস্পরের মাঝে ভুল বোঝাবুঝি ও পিতা-পুত্র, স্বামী-স্ত্রী, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে দ্বিধা-দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করেছে। আমরা আশঙ্কা করছি, সে আপনার মতো জ্ঞানী ও বিচক্ষণ ব্যক্তির উপরও প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করতে পারে। এমনকি সে আপনার নেতৃত্ব ও কর্তৃত্বের মধ্যেও ভাঙন সৃষ্টি করতে পারে। হতে পারে এমন যে, আপনার অধীনস্থ ও অনুগত ব্যক্তিদেরও সে ধোঁকায় ফেলবে। তাই আপনার প্রতি আমাদের একান্ত পরামর্শ হলো, মক্কায় অবস্থানকালে আপনি তার সাথে কোনো কথা বলবেন না এবং তার কোনো কথা বা আলোচনা শুনবেন না। কারণ, তার কথার মধ্যে এক ধরনের জাদুকরী শক্তি রয়েছে, যা দিয়ে সে পিতা-পুত্র, ভাই-বোন এমনকি স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যেও ফাটল ধরাতে সক্ষম।’
কুরাইশ বুদ্ধিজীবী ও জ্ঞানীগুণী ব্যক্তিরা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে এ ছাড়া আরও অনেক আজগুবি কথাবার্তা ও নানা প্রকার আশ্চর্যজনক ঘটনাবলি আমাকে শোনাল। ফলে, তাঁর জাদুকরী কার্যকলাপ সম্পর্কে আমি ও আমার জাতির লোকজনের ধ্যান-ধারণা ও চিন্তা-চেতনা রক্ষায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লাম । অতঃপর দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিলাম :
‘আমি তাঁর সাথে কোনো কথা বলব না এবং তাঁর কোনো কথা শুনব না।’
পৌত্তলিক প্রথানুযায়ী হজ্জের সময় আমরা যেভাবে দেবতাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও খানায়ে কাবা তওয়াফ করে থাকি, পরদিন ঠিক তদ্রূপ তাওয়াফের উদ্দেশ্যে যখন রওয়ানা হই, তখন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা যেন আমার কানে না পৌঁছে সেজন্য দু’কানের মধ্যে খুব ভালো করে তুলা গুঁজে দেই । বায়তুল্লাহ শরীফে প্রবেশ করে দেখতে পাই, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায আদায় করছেন। কিন্তু তাঁর এ নামায আমাদের পৌত্তলিক প্রথার নামায থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের। তিনি ইবাদত করছেন; কিন্তু তাঁর ইবাদত আমাদের ইবাদতের নিয়ম-পদ্ধতি থেকে ভিন্ন ধরনের। তাঁর ইবাদতের একাগ্রতার দৃশ্য আমাকে মুগ্ধ করে। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইবাদতের আন্তরিকতা ও বিনয়ভাব এবং আমাদের প্রদর্শনীমূলক ও অন্তঃসারশূন্য ইবাদতের সাথে তুলনা করতে গিয়ে আমি বরং তাঁর দিকেই আকৃষ্ট হয়ে পড়ি। এমনকি পূর্ব সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমি অজ্ঞাতসারেই ধীরে ধীরে তাঁর নিকটে চলে আসি। আল্লাহর মহিমা! মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তিলাওয়াতের কিছু অংশ আমার কানে এসে পৌঁছে। কী অপূর্ব! হৃদয়গ্রাহী, মনোমুগ্ধকর ও অর্থবহ সে তিলাওয়াত! যা শুনে আমি নিজের প্রতি ধিক্কার দিয়ে বলছিলাম :
‘তোফাইল, তোমার মা তোমাকে কতইনা হতভাগা সন্তান হিসেবে জন্ম দিয়েছিল! তুমি একজন তীক্ষ্ণ মেধাসম্পন্ন ব্যক্তি, খ্যাতনামা কবি, বিচক্ষণ বুদ্ধিজীবী ও জ্ঞান সম্রাট, ভাষার ভালো ও মন্দের পার্থক্য নির্ণয়ে তুমি অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব। কে তোমাকে মুহাম্মদের কথা শ্রবণে বাধা সৃষ্টি করে রেখেছে? তিনি যদি কোনো উত্তম কথা বলেন, তাহলে তা গ্রহণ করতে তোমার আপত্তি কিসের? আর যদি তিনি অকারণে কিছু বলেন, তাহলে তা প্রত্যাখ্যান করতেই বা বাধা কী?
এসব কথা ভেবে ভেবে পরিশেষে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইবাদত ও তাওয়াফ সেরে নিজ গৃহে প্রত্যাবর্তনের পূর্ব পর্যন্ত সেখানে অবস্থানের সিদ্ধান্ত নিলাম। অতঃপর তিনি যখন তাঁর বাড়ির দিকে ফিরলেন, আমি তাঁকে অনুসরণ করে চললাম এবং তাঁর সাথেই গৃহের মধ্যে প্রবেশ করলাম। এরপর আমি তাঁর খিদমতে আরয করলাম :
“হে মুহাম্মদ! আপনার জাতির লোকেরা আমাকে আপনার সম্পর্কে নানা ধরনের ভুল ধারণা দিয়েছে। আমি আল্লাহর কসম করে বলছি, তারা আপনার সম্পর্কে আমার মধ্যে প্রচণ্ড ভীতির সৃষ্টি করে দিয়েছে। আমি যেন আপনার কথা না শুনতে পাই, সেজন্যে কানে ভালো করে তুলা গুঁজে

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top