প্রেম যুদ্ধ – এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

প্রেম যুদ্ধ – এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ মুজাহিস হুসাইন ইয়াসীন

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৫৯

প্রেম যুদ্ধ – বইটির এক ঝলকঃ
আমি সায়্যিদ আহমদের নাম শুনে ভয় পায়নি … তুমিও ভেবে দেখো এই মুসলে (মুসলমান শালারা) এদের ওপর ভরসা করা যায় নাকি? ….. শালারা অনেক দিন এদেশে হুকুমত করেছে। এরা যদি একবার উঠে দাঁড়াতে পারে তাহলে না হরি শিং থাকবে না থাকবে বুধ শিং। তোমাদের মহারাজা রঞ্জিৎ শিং তো মুসলমানদের কিছুই মনে করছে না।’
কাছে বসে উধাম শিং হাসছিলেন। তিনিও বললেন, ‘মুসলমানরা যদি নিজেদের আত্মহত্যা করতে না চায় তাহলে এই সামান্য সংখ্যক ফৌজ নিয়ে আমাদের মোকাবেলা করতে আসবে না ।’
এই শিখ কমাণ্ডাররা যখন মদের নেশায় পুরো মাতাল হয়ে আবোলতাবল বকছিলো তখন শিখ ছাউনির পাথর বেষ্টনী ও কাটাদার ঝোপের আড়াল থেকে এক নওজোয়ান তাঁবুগুলোর ভেতরে উকি মেরে দেখার চেষ্টা করছিলো। কখনো পায়ের পাতার ওপর দাঁড়িয়ে কখনো চাপা পায়ে পাথরের ওপর দাঁড়িয়ে তাঁবুর ভেতরে কিছু একটা দেখার চেষ্টা করছিলো সে। রাতের জমাট অন্ধকারে কিছুই তার চোখে পড়ছিলো না। পুরো তাঁবুপল্লী নীরব- শব্দহীন। এ ছিলো গভীর ঘুমের আলামত। কখনো ঘোড়ার আওয়াজ কখনো প্রহরীর বুটের খট খট খট আওয়াজ সেই নিঃশব্দ ভেঙ্গে দিচ্ছিলো। আবার সব নীরব হয়ে যাচ্ছিলো।
এই নওজোয়ান শিখ পুরো তাঁবু ছাউনির আশপাশ ঘুরে যেদিক থেকে এসেছিলো সেদিকে চলে গেলো। কিছু দূর যাওয়ার পর সে আওয়াজ শুনতে পেলো- ‘এসে গেছো হিম্মত খান?’
সে আওয়াজ লক্ষ্য করে এগিয়ে গেলো।
নওজোয়ান শিখ নয়, হিম্মত খান। শিখদের ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলো। শিখ হিসেবে ওকে চমৎকার মানিয়েছিলো। শিখের ছদ্মবেশে সে দুশমনের ছাউনি পর্যবেক্ষণ করতে গিয়েছিলো। তার অপেক্ষায় জমাদার আল্লাহ বখ্শ এখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন। হিম্মত খান জমাদার আল্লাহ বখ্শকে ছাউনির বিস্তারিত অবস্থা জানালো এবং বললো, হামলার জন্য পরিবেশ বেশ চমৎকার।
এর আগে এই গুপ্ত হামলাকারী জানবাজরা স্থানীয় পাঠানদের সাহায্যে ছোট ছোট নৌকায় নদী পার হয়। কারণ, শুকনো পথে জায়গায় জায়গায় শিখসৈন্যরা টহল দিচ্ছিলো। আর সংখ্যায়ও তারা ছিলো অনেক। এজন্য নদী পথ ছাড়া উপায় ছিলো না। নদী পার হয়ে হিম্মত খানকে দুশমনের তাঁবুপল্লীর অবস্থা দেখে আসার জন্য পাঠানো হয়। হিম্মত খান কাটাদার ঝোপঝাড় ও পাথর দেয়ালের বেষ্টনীর মধ্যেও একটা জায়গা আবিষ্কার করে, যেখান দিয়ে ভেতরে যাওয়া যাবে।
জামাদার আল্লাহ বখ্শ তার জানবাজ নৈশ হামলাকারীদের শেষ দিকনির্দেশনা দিলেন-
‘আমরা সবাই পরস্পরকে পরস্পরের মনোমালিন্য, দুঃখ কষ্ট মাফ করে দিলাম। আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না, কে জীবিত ফিরে আসতে পারবে। শুধু এটা মনে রাখবে, আজকের এই গুপ্ত হামলা তোমাদের আখেরী ফরজ – শেষ কর্তব্য। এরপর তোমরা আল্লাহর দরবারে চলে যাবে। এখন এই ফয়সালা নিজেরা করে নাও আল্লাহর সামনে আনন্দচিত্তে উপস্থিত হবে, না কর্তব্যে অবহেলা করে অভিশপ্তরূপে নিন্দিত হয়ে যাবে !
কারো মুখ দিয়ে কোন আওয়াজ বের হলো না। কারণ, তাদের নীরবতা বজায় রাখার জন্য কঠিন নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো। তারা ‘আল্লাহু আকবার’ শ্লোগান বুকের মধ্যে এমনভাবে চেপে ধরে রেখেছিলো যেমন করে খাঁচায় প্রতাপশালী উন্মত্ত কোন প্রাণী বন্দি করে রাখা হয়। আর সে খাঁচা ভাঙ্গার জন্য খাঁচার শিকে থাবা মারতে থাকে।
দশ হাজার শিখের তাঁবু পল্লী মরণ ঘুমে বেহুশ হয়েছিলো। দেশী মদের কড়া ঝাঁজ তাদেরকে গভীর ঘুমের দেশে পাঠিয়ে দিয়েছিলো। মদ ছাড়া শিখেরা এমন অথর্ব হয়ে পড়ে যেমন পানি বিহীন চারা নেতিয়ে পড়ে। এজন্য শিখদের পানির আগে দেয়া হয় মদ। মদের তোড়ে নেশাকাতর হয়ে তারা লড়াই করে ।
নৈশ প্রহরীরা জেগে ছিলো। তারা টহল দিচ্ছিলো। ও দিকে হিম্মত খানের পেছন পেছন নৈশ হামলাকারীরা ছাউনির পাথর বেষ্টিত ঐ স্থানে পৌঁছলো যেখান দিয়ে ভেতরে যাওয়ার কথা ছিলো। জমাদার আল্লাহ বখ্শ সে জায়গাটা দেখলেন এবং পাথর বেস্টনের বাইরের কাটাদার ঝোপঝাড় এক দিকে ঠেলে দিলেন। সেখান দিয়ে দু’জন জানবায হাল্কা পায়ে ভেতরে লাফিয়ে পড়লো। এরা ভেতরের ঝোপগুলো সরিয়ে দিলো।
এবার আরো কিছু জানবায ভেতরে চলে গেলো। চারজন তলোয়ার তাক করে এক জায়গায় লুকিয়ে পড়লো। যাতে কোন প্রহরী আসলে তাকে নিঃশব্দে খতম করা যায়। হিম্মত খান যখন একলা এসেছিলো তখন এটা দেখতে পায়নি যে, প্রহরীদের হাতে কোন ধরনের অস্ত্র রয়েছে। তাদের কাছে বর্শা নয়, ছিলো দুইনলা বন্দুক । জানবাযদের পুরো দল একে একে ভেতরে চলে গেলো। তারা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে তাঁবুগুলোর রশি কেটে দিলো এবং ওপর থেকে বর্ষ মারতে লাগলো। তাঁবুর নিচে চাপা পড়া শিখেরা মরণ চিৎকার ছাড়া আর কিছুই করতে পারছিলো না। হাঙ্গামার আওয়াজ শুনে এক প্রহরী বন্দুক দিয়ে এদিকে ফায়ার করলো, সবগুলো গুলি মাওলানা বাকের আলী আজীম আবাদীর বুকে গিয়ে গাঁথলো। তিনি বুক চেপে ধরে উঁচু গলায় আওয়াজ দিলেন-
‘বন্ধুরা! আমার কাছ থেকে হাতিয়ার নিয়ে নাও। এটা আল্লাহ তাআলার আমানত। দুশমনের হাত যেন এতে না লাগে’- তিনি পড়ে গেলেন এবং শহীদ হয়ে গেলেন ।
এই গেরিলা হামলার তিনি ছিলেন প্রথম শহীদ।
এরপর ভেঙ্গে পড়তে লাগলো এক গজবের পাহাড়। চার দিকে কেয়ামতের বিভীষিকা জ্বলে উঠলো। মুজাহিদরা তাঁবুর রশি কাটতে লাগলো আর বর্শা মারতে লাগলো পড়ন্তু তাঁবুতে। জানবাযদের এক দল এক তাঁবুতে আগুন লাগিয়ে দিলো। দশ হাজার শিখের এই বিশাল সেনাবাহিনী। হড় বড় করে জেগে উঠলো। কিন্তু কয়েকশতো জাগার আগেই চির নিদ্রায় চলে গেলো। সঙ্গীদের আর্তনাদ ত্রাহি ত্রাহি আওয়াজ এবং আল্লাহু আকবারের গর্জন শুনে তারা পালানো ছাড়া আর কোন কিছুই ভাবতে পারছিলো না।
খুব কম শিখই ঠাণ্ডা মাথায় পরিস্থিতি বুঝার চেষ্টা করলো। তারা লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হলো ঠিক। কিন্তু লড়বে কার সঙ্গে। সেখানে পলায়নপর শিখ ছাড়া আর কাউকেই তাদের চোখে পড়ছিলো না।
জমাদার আল্লাহ বংশের নজর ছিলো শিখদের তোপখানার দিকে। তার সঙ্গে কয়েকজন জানবায পৃথক করে রেখে ছিলেন। তাদেরকে নিয়ে এক শিখ অফিসারকে পাকড়াও করলেন। তোপের মজুদ কোথায় এটা জানানোর বিনিময়ে তাকে প্রাণে বাঁচিয়ে দেবেন- এভাবে তার কাছ থেকে ওয়াদা নিলেন। শিখ অফিসার তাকে তোপের মজুদ যে তাঁবুতে ছিলো সেদিকে নিয়ে গেলো। আল্লাহ বখ্শ তাকে ভাগিয়ে দিলেন। এই তোপগুলো এখন মুজাহিদদের।
একটু পরই তাঁবু পল্লীর কয়েক জায়গায় আগুনের লেলিহান শিখা জ্বলে উঠতে দেখা গেলো। ঘোড়ার ভয়ার্ত চিহি চিহি রব পরিবেশ আরো ভয়ংকর করে তুললো। ছাড়া ছাড়া গুলিও চলতে লাগলো । জমাদার আল্লাহ বখ্শ দেখলেন, যে উদ্দেশ্যে এই গেরিলা হামলা চালানো হয়েছে তার সে উদ্দেশ্য পুরোপুরি সফল হয়েছে। তাই তিনি কয়েকজন কাসেদকে বললেন, চিৎকার করে করে মুজাহিদদের ডেকে বলো, তাঁবু পল্লী থেকে বের হয়ে নদীর তীরে পৌঁছতে। জমাদার নিজেও উঁচু আওয়াজে নির্দেশ দিতে লাগলেন। কিন্তু মুজাহিদরা নিজেদের সফলতায় এতই পরিতৃপ্ত ছিলো যে, কারো কোন দিক নির্দেশনা মানছিলো না।
দশ হাজার সৈন্যের ছাউনির পরিধি ছিলো দুই মাইল এলাকা জুড়ে। হাজার হাজার ঘোড়া, গরু, মহিষ ও এগুলোর গাড়ি, হাতিয়ার, বন্দুক, বারুদ এসব মুজাহিদরা একত্রিত করছিলো।
অবশেষে আকবর খান নামে সহকারী এক কমাণ্ডারের প্রচেষ্টায় মুজাহিদদের তাঁবু পল্লী থেকে বের করা সম্ভব হলো। তখনো বন্দুকের ফায়ার হচ্ছিলো। কোথাও কোথাও বিচ্ছিন্ন লড়াই হচ্ছিলো।
জমাদার আল্লাহ বখ্শ মুজাহিদদের তাঁবু পল্লী থেকে বের করে নিয়ে যাওয়ার জন্য ছুটাছুটি করছিলেন। হঠাৎ এক বন্দুকের ফায়ার তাকে ছিন্নভিন্ন করে দিলো। তিনি শহীদ হয়ে গেলেন। সঙ্গে সঙ্গে সহকারী কমাণ্ডার আকবর খান মুজাহিদদের নেতৃত্ব নিয়ে নিলেন নিজ হাতে ।
ফজরের সময় মুজাহিদরা তাঁবু পল্লী থেকে প্রায় দুই মাইল দূরে চলে গেলো। একটি ফাঁকা জায়গায় সবাই ঘোড়া থামালো। তারা প্রথমে যে কাজটা করলো সেটা হলো, প্রথমে আযান দিয়ে সবাই ফজরের নামায আদায় করলো। তারপর শহীদদের মাগফিরাত কামনা করে দুআ করা হলো। ফজরের জামাআতে যারা অনুপস্থিত ছিলো তাদের মধ্যে হিম্মত খানও ছিলো। তার ব্যাপারে সাবই ধরে নিলো সে শহীদ হয়ে গেছে।
কমাণ্ডার উধাম শিং-এর তাঁবু ছিলো একটু দূরে। হামলার আওয়াজ শুনে তিনি হড়বড় করে উঠলেন। সে অবস্থাতেই বাইরে বেরিয়ে এলেন। ভয়ে তিনি কেঁপে উঠলেন। তার দশ হাজার ফৌজকে পাইকারী দরে হত্যা করা হচ্ছিলো। তিনি বুধ শিং ও হরি শিং-এর তাঁবুর দিকে দৌড়ে গেলেন, কিন্তু তাদের তাঁবু খালি ছিলো। তিনি তো জানতে পারলেন না, মুসলমানদের এই হামলা দেখে তারা ভেবেছে বিরাট এক সৈন্য বাহিনী শিখদের ওপর ঝাপিয়ে পড়েছে। এখন প্রাণ বাঁচানো ছাড়া আর কিছুই করা যাবে না ।

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top