ভারত অভিযান ১ম খণ্ড – এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ শহীদুল ইসলাম
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২৪১
ভারত অভিযান ১ম খণ্ড – বইটির এক ঝলকঃ
এটাই তো তোমার বড় গুণ যে, তুমি একই সাথে তুর্কী ও গোলাম । তোমার মত আমিও ভুর্কী এবং গোলাম ছিলাম। ছোটবেলায় আমাকেও এমন কঠিন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে যেমন কঠিন গোলামীর জীবন তুমি বয়ে চলেছ। তবে তুমি জন্মসূত্রে মুসলিম আর আমার মা-বাবা ছিলেন অমুসলিম। আমি গোলাম অবস্থায় মুসলমান হয়েছি। আমি দীর্ঘদিন একজন বুযুর্গ ব্যক্তির মুখে ইসলামের নীতি ও আদর্শের কথা শুনেছি। ইসলামের কথা শুনে শুনে আমার মন সত্যধর্ম গ্রহণের জন্যে ব্যাকুল হয়ে ওঠে। একদিন সেই বুযুর্গের হাতে হাত রেখে ইসলাম গ্রহণ করে মুসলমান হয়ে গেলাম ।
ইসলাম বলে, মানুষে মানুষে ভেদাভেদ নেই। কেউ কারো প্রভু অথবা গোলাম নয়, টাকায় বিক্রি হওয়ার পণ্য নয় মানুষ। আল্লাহর জমিনে আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব করবে মানুষ। নিজের মর্জি মতো মানুষের উপর প্রভুত্ব করার অধিকার কোন শাসকের নেই। শাসকরা প্রভু নয় সেবক। আমি যদি মুসলমান না হতাম, আমার মনে যদি ইলম ও আমলের তৃষ্ণা সৃষ্টি না হতো, তাহলে হয়তো আজো গোলামই রয়ে যেতাম, এ সম্মান ও ক্ষমতার আসন পর্যন্ত পৌঁছা সম্ভব হতো না আমার ।
সুবক্তগীন বললো, আমার আম্মু আমাকে বলতেন, তুমি বড় হলে অনেক সুনাম কুড়াবে। তোমার তরবারীর আঘাতে মিথ্যা অপসারিত হবে। তিনি আমাকে কুরআনের সেই আয়াত সম্পর্কে বলতেন যা হযরত ইবরাহীম তাঁর পিতাকে বলেছিলেন, “আপনি এই সব জড় পদার্থের পূজা করেন যেগুলো শোনে না, বলতে পারে না, কিছু করতে পারে না। আপনি আমার সাথে আসুন। আমি আপনাকে সঠিক পথে নিয়ে যাব।” আর আমার মা আমাকে বলতেন, “তুমি সে সব মূর্তি পূজারীদের সেই পবিত্র মা’বুদের পথ দেখাবে যিনি ছাড়া আর কোন মা’বুদ নেই এবং হযরত মুহাম্মদ (স.) তাঁর বান্দা ও রাসূল (স.)।” আমার মা’র এসব কথা শুনে আব্বা বলতেন, “তোমার মা’র আকীদা সঠিক কিন্তু তার আকাঙ্ক্ষা অলীক। কারণ, গরীবের সন্তান সুখ্যাতি পায় না, ওদের মধ্যে সত্যনিষ্ঠা, বীরত্ব থাকে না, তারা হয় পরমুখাপেক্ষী ও কাপুরুষ। সুখ্যাতি অর্জন করতে হলে বীরত্ব, সত্যনিষ্ঠ হতে হয় এবং শাসক রাজা-বাদশাহদের সাথে মোকাবেলায় অবতীর্ণ হতে হয়। ন্যায় নিষ্ঠা দিয়ে মানুষকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করতে হয় কিন্তু গরীবের সন্তনদের চরিত্রে এসব বৈশিষ্ট্যের সমন্বয় ঘটে না, ঘটাতেই পারে না, সৎ গুণাবলী অর্জনের সুযোগই তারা পায় না।”
আলপ্তগীন বললেন, তবে আমি বিশ্বাস করি, গরীবের সন্তানও বড় হতে পারে। কেন পারবে না, আরবের বেদুইন উট ও মেষ রাখালরা যদি সত্যের আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে আধা পৃথিবীর রাজত্ব করতে পারে তাহলে তুমি কেন পারবে না? বুঝতে হবে, যাযাবরের সন্তানরা এবং গোলাম হওয়ার পরও তুমি এখন আমার সাথে পাশাপাশি বসে আছ। কোন জাত-গোলাম এমনটি স্বপ্নেও ভাবতে পারে না । আমার মনে হয়, তোমার মায়ের স্বপ্ন সফল হবে। তোমার বিশ্বাস, আস্থা ও কর্মনিষ্ঠা তোমাকে এ পর্যায়ে উন্নীত করেছে। আমি তোমার মধ্যে বিপুল সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি। তুমি যদি চেষ্টা কর তবে জীবনে উন্নতি করতে পারবে অবশ্যই।
আমার নিজের জন্যে কোন চাহিদা নেই। কোন পদ-পদবীর আগ্রহ আমার নেই। তবে আমি অবশ্যই একটা কিছু প্রত্যাশা করি, কিন্তু সেটা কি তা বুঝাতে পারবো না। বলল সুবক্তগীন।
হেসে ফেটে পড়লেন আলপ্তগীন। বললেন, এমন অবস্থা আমারো গেছে। আমিও বুঝে উঠতে পারতাম না আমার কি করা উচিত। সময়ই আমাকে বলে দিয়েছে আমার কি করণীয় ও কর্তব্য। তুমিও অচিরেই বুঝতে পারবে, কি তুমি চাও, কি তোমাকে করতে হবে। আজ থেকে তুমি নিজেকে আর গোলাম মনে করো না। এখন থেকে তুমি স্বাধীন। শুধু স্বাধীন নও, আমার প্রশাসনের একজন সম্মানিত জিম্মাদার ব্যক্তি।
সুবক্তগীনের হৃদয়ে ছিল এক সুপ্ত আগ্নেয়গিরি। মিথ্যাকে দূর করে সত্যের বিজয় কেতন উড়ানো, মানুষের বিশ্বাসের নোংরামি দূর করে তাদের সঠিক পথের দিশা দেয়া এবং সুন্দরের প্রতি মানুষকে আকৃষ্ট করার জন্যে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার সুপ্ত আকাঙ্ক্ষা তার হৃদয়ে যেন অগ্ন্যুৎপাত ঘটাতে চাইত কিন্তু পরিস্থিতি তাকে দমিয়ে রাখতো। এতটুকু সে বুঝতো, একটি নির্ভেজাল, সুন্দর, সত্য দিন দিন তার মধ্যে পুষ্ট হচ্ছে, বেড়ে উঠছে। তারুণ্য যৌবনের তাড়না তার মাঝে ছিল না এমন নয়, কিন্তু তা কখনও তাকে আদর্শচ্যুত করতে পারত না । সে প্রচণ্ডভাবে অনুভব করছে, বিপ্লব তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। এক যুদ্ধ-বিজয় তার হৃদয়ে তোলপাড় শুরু করে দিয়েছে।
পরদিন পড়ন্ত বিকেলে আস্তাবল থেকে একটি তাজী ঘোড়া নিয়ে ভ্রমণের জন্যে বেরিয়ে গেল। শহর থেকে বেরিয়ে সুবক্তগীন ঘোড়ার পিঠে চড়ে বসল এবং জোরছে ঘোড়া ছুটাল। ধুলি উড়িয়ে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটে চলল সওয়ারী। হঠাৎ তার কানে ভেসে এলো নারী কণ্ঠে আর্তনাদ। ঘাড় ফিরিয়ে দেখল, এক সওয়ারী ঘোড়ার পিঠ থেকে পড়ে যাচ্ছে, লাগামহীন ঘোড়া ছুটছে, ঝুলে রয়েছে মহিলা আরোহী। সুবক্তগীন বুঝতে পারল, ঘোড়ার জীন ঢিলে হওয়ায় সওয়ারী এদিক সেদিক হেলে পড়ছিল। ঘোড়া এই সুযোগে সওয়ারীকে ফেলে দিয়েছে। মগড়া স্বভাবের ঘোড়া সাধারণত এমনটিই করে থাকে অথবা সওয়ারী এদিক ওদিক হেলে পড়ার কারণে ঘোড়া ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে সওয়ারী ফেলে প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে এ কাণ্ড করেছে। সুবক্তগীন তার ঘোড়া মহিলার দিকে ছুটাল।
ঘোড়াটি এলোপাতাড়ি দৌড়াচ্ছিল। মহিলা শুধু চিৎকারই করছিল আর বুলছিল, রিকাব থেকে অমার পা ছাড়িয়ে দাও, লাগামটা ছিঁড়ে ফেল, কিন্তু ভড়কে যাওয়া ঘোড়া ওর পিছনে অন্য সওয়ারীর আগমনে বেসামাল হয়ে এদিকে ওদিকে এঁকে বেঁকে প্রাণপণে পলায়নের চেষ্টায় দ্রুত গতিতে দৌড়াতে শুরু করল। পাশেই ছিল বহতা নদী। দিকভ্রান্ত ঘোড়া শেষ পর্যন্ত নদীর দিকেই ধাবিত হল । সুবক্তগীন নিজের ঘোড়াকে আরো তীব্র বেগে ছুটাল। বিদ্যুত গতিতে তার ঘোড়া পলায়নপর ঘোড়াকে তাড়িয়ে ছুটল। এক পর্যায়ে সুবক্তগীনের ঘোড়া মহিলার ঘোড়ার গতিরোধ করতে আগে বেড়ে পথ রোধ করতে চাইল। সুবক্তগীন তখন লক্ষ্য করল, এতো সাধারণ কোন মহিলা নয়। এতো আমীর বা রাজকন্যা হবে। উদ্ভিন্ন যৌবনা, উবর্ষী তরুণী। মাথার চুল এলোমেলো হয়ে তার মুখ ঢেকে ফেলেছে, ওড়না রেকাব আর লাগামে পেঁচিয়ে বেচারীর দুর্দশা আরো বাড়িয়েছে। সুবক্তগীন চকিতে হাত বাড়িয়ে রেকাবে আটকে যাওয়া তরণীর পা ছাড়িয়ে দিল এবং ত্বরিৎ গতিতে তরুণীর ঘোড়ার লাগাম ওর মুখের কাছ থেকে নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে নিল। তরুণীকে সে নির্দেশের সুরে বলল, তুমি লাফ দিয়ে আমার ঘোড়ায় উঠে আস। মুখের কথা শেষ না হতেই সে নিজের ঘোড়া থেকে নেমে ওই ঘোড়াটাকে বাগে আনার চেষ্টা করল। ইত্যবসরে তরুণীর ঘোড়া হেচকা টান মেরে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ল। টানের তীব্রতা সামলাতে না পেরে তরুণীও ছিটকে পড়ল পানিতে।
পাহাড়ী নদী । প্রচণ্ড স্রোত। তরুণী পানিতে পড়ে হাবুডুবু খেয়ে সাঁতরাবার চেষ্টা করছিল। ঘোড়া ওকে ফেলে থমকে দাঁড়ায়। সুবক্তগীন পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে তরুণীকে উদ্ধার করতে। তার ধারণা ছিল তরুণী হয়তো সাঁতরে উঠতে পারবে না। সে তরুণীকে নিজের কাঁধে তুলে তীরে রাখা ঘোড়া দু’টিকে ধরে একসাথে এনে দাঁড় করাল। এমন দুরবস্থার শিকার হয়ে যে কোন তরুণীর ঘাবড়ে যাওয়ার কথা, কিন্তু তরুণী ভীত হওয়া তো দূরে থাক সুবক্তগীনের দিকে তাকিয়ে খিলখিল করে হেসে উঠল।
তুমি বোকা না দুঃসাহসী! আজ তোমার মৃত্যু অবধারিত ছিল। বলল সুবক্তগীন। আমি এমন বাপের বেটি যিনি বোকা নন সাহসী। বলল তরুণী। আমি বুখারার শাসক আলপ্তগীনের কন্যা। চলো, তোমাকে পুরস্কার দেবো। তুমি আমাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করেছো ।
না, আমার এই পুরস্কারই যথেষ্ট যে, আমার শুভাকাঙ্ক্ষীর কন্যাকে মৃত্যুর হাত থেকে উদ্ধার করেছি। আমি তোমার ঘোড়ার জীন বেঁধে দিচ্ছি।
তরুণী আর সুবক্তগীনের মধ্যে বয়সের ব্যবধান তেমন নয়। উভয়েই তরুণ । টগবগে যুবক-যুবতী । তরুণী প্রাণোচ্ছল, সুদর্শনা, পটলচেরা চাহনী, মসৃণ ত্বক ও লাবণ্যময় চেহারার অধিকারিণী। সুবক্তগীনের গায়ের রং পোড়ানো তামাটে হলেও তার দেহের গড়ন পৌরুষদীপ্ত, সুঠাম ও আকর্ষণীয়। উভয়ে ঘোড়ায় সওয়ার হয়ে পাশাপাশি বাড়ির দিকে রওয়ানা হয়েছে। পথে যেতে যেতে তরুণী যুবককে জিজ্ঞেস করে জেনে নিল, কি তার পরিচয়, তার ঠিকানা কোথায় । সুবক্তগীন তার জীবন ও এখানে আগমন বৃত্তান্ত অতি সংক্ষেপে তরুণীকে বলল ।
রাতে আব্বা তোমার কথাই বাড়িতে আলোচনা করেছিলেন। তিনি হয়তো সেনাবাহিনীতে তোমাকে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দান করবেন।
নিজের সেনা বাহিনী! সেনাবাহিনী তার হয় কি করে, সেনাবাহিনী তো থাকে কেন্দ্রীয় শাসকের অধীনে!
তোমার কথা ঠিক, কিন্তু আব্বা হয়তো অন্য কিছু ভাবছেন। তিনি হয়তো হুকুমত নিজের কব্জায় নিতে চাচ্ছেন। এ জন্য বুখারাতে যে সেনা ইউনিট রয়েছে এদের মধ্যে নিজস্ব লোকের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় শাসন এখন শিথিল হয়ে গেছে, তারা আরাম-আয়েশ ও ভোগ বিলাসে ডুবে আছে। এরা ধর্ম সম্পর্কে কটূক্তি করছে, ধর্ম সম্পর্কে এদের অনাস্থা মাত্রা ছড়িয়ে গেছে। তিনি এই জমিনে প্রকৃত ইসলামী শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় একান্ত আগ্রহী। গত রাতে তোমার সম্পর্কে তিনি বলছিলেন, যুবকটি খুবই বুদ্ধিদীপ্ত ও কুশলী।
বাড়ির সদর গেটে উচ্চ পদবীর এক লোককে তারা অতিক্রম করছিল। লোকটি তরুণী ও সুবক্তগীনকে গভীর দৃষ্টিতে নিরীক্ষণ করছিল। তরুণী ও সুবক্তগীন উভয়ের কাপড় ভেজা, তখনো কাপড় থেকে ফোঁটা ফোঁটা পানি ঝরছে। তরুণীর ভেজা কাপড় সেঁটে গিয়েছিল গায়ের সাথে। তার নারী অঙ্গগুলো প্রস্ফুটিত হয়ে ওঠে সিক্ত বসনে। মাথার চুলগুলো ছড়ানো পিঠে-কাঁধে। তার চেহারা রক্তিম। রাগে গড়গড় করছিল লোকটি। চোখ থেকে যেন আগুন ঠিকরে বেরুচ্ছে। উভয়ে লোকটির কাছে গিয়ে ঘোড়া থেকে নেমে পড়ল। কোথা থেকে আসা হচ্ছে? ক্ষুব্ধ কণ্ঠে তরুণীর দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিল লোকটি। এই ছোকড়া কে?
হু, আপনি কে যে একেবারে হাকিমের মতো জেরা শুরু করেছেন? তাচ্ছিল্যের সুরে জবাব দিল তরুণী। আমার ঘোড়া বেসামাল হয়ে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে, রেকাবীতে পা আটকে আমি পড়ে গিয়েছিলাম। এ লোক আমাকে উদ্ধার করেছে। বুঝলেন হাকিম সাহেব! কিছুটা তাচ্ছিল্য বর্ষণ করে তরুণী সুবক্তগীনের বাজু ধরে তাকে নিয়ে বাড়ির ভেতরে চলে গেল।
এ লোক কে? তরুণীকে জিজ্ঞেস করল সুবক্তগীন। আমার বাগদত্তা। এখন থেকেই আমার উপর তিনি কর্তৃত্ব চালাতে চাচ্ছেন, কথায় কথায় হুকুম করেন, আগ বেড়ে খবরদারী চালান। কিছুটা শ্লেষমাখা কণ্ঠে বলল তরুণী। তুমি একে পাত্তা দিও না, ভয় করারও কিছু নেই ।
হঠাৎ তরুণী সুবক্তগীনের বাজু ধরে বলল, তোমার কি স্ত্রী আছে, তুমি কি বিবাহিত না।
কোন মেয়েকে কি তোমার পছন্দ হয়নি? কারো সাথে কি তোমার ভাব নেই?
না । মেয়েদের প্রতি আমি কখনও দৃষ্টি দেই নি। এই সুযোগও আমার নেই। তরুণী আবেগপ্রবণ হয়ে বলল, আমাকে কি তোমার ভালো লাগছে না? নিরুত্তর সুবক্তগীন। তরুণীর কথায় সে দৃষ্টি অবনত করে ফেলল।
হু, তুমি আমাকে বেহায়া মনে করছো, তাই না? বলো, বলো সুবক্তগীন! যদি তুমি আমাকে বেহায়া ও বখাটে মেয়ে ভেবে থাকো তাহলে আর কখনও তোমার দৃষ্টিসীমায় আসবো না ।
তোমাকে ভাল লাগা না লাগার কি আছে, তুমি তো আরেকজনের বাগদত্তা!
এটা আমার পারিবারিক পছন্দ। ওই না-মরদটাকে আমি একদম সহ্য করতে পারি না। সে আমাকে দাসী বানাতে চায়। সে আমাকে ঘোড়সওয়ারী হতে বারণ করে। সে চায়, আমি শুধু তার হেরেমের শোভা বর্ধন করি। চার দেয়ালের ভেতরে আবদ্ধ হয়ে থাকি। ওসব আমার অসহ্য। আমি চাই এমন লোক যে তোমার মতো সুপুরুষ, যে আমার পাশাপাশি ঘোড়া দৌড়াবে, নদীতে ঝাঁপ দেবে। ওসব আয়েশী রাজা-বাদশাহদের বুঝিয়ে দিতে চাই, নারী শুধু হেরেমের শোভা বর্ধনের উপকরণ নয়, নারীর দেহ শুধু পুরুষের কামরিপু
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!