অপরাজিত – নসীম হেজাযী – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

অপরাজিত – নসীম হেজাযী – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ আবদুল মান্নান তালিব

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৩৭১

অপরাজিত – বইটির এক ঝলকঃ

শোনা যায় হোসাইন বখ্শ পরদেশী গাছগুলি থেকে কিছু দূরে দক্ষিণ দিকে তার এক শাগরিদের সাথে একটি গ্রাম অতিক্রম করছিল। সেখানে একটি হাবেলীর সামনে তার সাক্ষাত হয়ে গেলো গ্রামের মাতব্বরের সাথে। মাতব্বর পেরেশান হয়ে একজনকে বলছিল, দেখো দিলীপ সিং! আর একটুও দেরি করবে না, এখনি চলে যাও এবং হাকিম নিয়ামত আলীকে এখানে পাঠিয়ে দাও। তাকে বলবে, আপনার ভাবীর খুব কষ্ট হচ্ছে, আপনি এখনি চলে যান । তুমি এ ঘোড়াটা তাকে দিয়ে দেবে এবং তারপর পাশের গ্রামে সাঁই বুঢ়া শাহ ও জানকি দাশকেও বলে দেবে যেন অনতিবিলম্বে এখানে চলে আসে।
হোসাইন বখ্শ সেখানেই দাঁড়িয়ে গেলো। সে তার চতুর শাগরিদকে ইশারা করলো। শাগরিদ এগিয়ে গিয়ে মাতব্বরকে বললো, সরদারজী! হাকিম সাহেব জিজ্ঞেস করছেন আপনার বাড়িতে কার কি কষ্ট হচ্ছে?
কে হাকিম সাহেব?
কেন সরদারজী, আপনি হাকিম হোসাইন বখ্শকে জানেন না? তাঁর নাম তো শতদ্রু থেকে নিয়ে ইরাবতীর কিনারা পর্যন্ত গ্রামে গ্রামে লোকের মুখে মুখে । আর ওদিকে শতদ্রুর ওপারে ফিরোজপুর ও জালিস্করের রোগীদের ভীড় তার কাছে সব সময় লেগেই থাকে। তিনি একটি মূল্যবান গাছের শেকড়ের সন্ধানে বের হয়ে ঘটনাক্রমে এখানে পৌঁছে গেছেন। আমার নিশ্চিত বিশ্বাস এর মধ্যে কুদরাতের কোনো ইশারা আছে ।
মাতব্বর বুকে হাত বেঁধে বললো, হাকিমজী ! মূল্যবান গাছের শেকড় পরে তালাশ করে নেবেন। ভগবানের দোহাই, প্রথমে আমার স্ত্রীকে বাঁচান। তার দুটি সন্তান ইতিপূর্বেই নষ্ট হয়ে গেছে। এখন এই তৃতীয় সন্তানকে যদি আপনি বাঁচাতে পারেন তাহলে জীবনভর আমি আপনার সেবা করবো। নয়তো আমার স্ত্রী মারা যাবে।
যখন এসব কথাবার্তা হচ্ছিল, আল্লারাখা মুচি পাশের গ্রামগুলোয় জুতো বিক্রি করে ফিরে আসছিল। সে সাঁই বুঢ়া শাহের সুপারিশ করতে চাচ্ছিল। কিন্তু হাকিম হোসাইন বখ্শ ও তার শাগরিদ মাতব্বরের সাথে হাবেলীর মধ্যে প্রবেশ করলো ।
আল্লারাখা মাতব্বরের প্রতি কিছুটা সহমর্মিতা এবং একজন নতুন হাকিমের ব্যাপারে কৌতূহলের কারণে সেখান থেকে একটু দূরে তার একজন তেলি দোস্তের বাড়িতে চলে গেলো।
তেলি তাকে খাবার দাওয়াত দিল। গ্রামে মাতব্বরের বাড়িতে একজন নতুন হাকিম এসেছে, তেলি গিন্নি একথা শুনে বললো, ভাই আল্লারাখা বেচারী মাতব্বর গিন্নীর প্রতি বড়ই কৃপা দৃষ্টি রাখেন নয়তো হাকিম যেই হোন না কেন তার বাঁচার কোন আশা নেই। ইতিপূর্বে দুটো বাচ্চা নষ্ট হয়ে যাবার শোকে সে হাড্ডিসার হয়ে আছে । তেলির ঘরে যখন এসব কথাবার্তা চলছিল তখন মাতব্বরের ঘরে হাকিম হোসাইন বখ্শ একজন যন্ত্রণাকাতর রোগিনীর নাড়ি পরীক্ষা করছিল। কয়েক মিনিট পর রোগিনী দুধের সাথে হাকিম সাহেবের বড়ি পান করে চোখ বন্ধ করে নিয়েছিল ।
মাতব্বর চিৎকার করে উঠলো, হাকিমজী। এ মরে যায়নি তো?
হোসাইন বখ্শ নিশ্চিন্তে জবাব দিল আমার দাওয়াই খাবার পর রোগী মরতে পারে না। গ্রামে যদি কোনে দাই থাকে তাহলে তাকে ডেকে আনার ব্যবস্থা করুন। আমি বাইরে গাছের ছায়ায় একটু শুয়ে বিশ্রাম নিচ্ছি।
এক ঘন্টা পরে হাকিম নিয়ামত আলী ঘোড়া ছুটিয়ে হাজির হয়ে গেলো। দেখলো হাবেলীর দরোজা বন্ধ। হৈ চৈ ডাকাডাকি করার ফলে ভেতর থেকে মাতব্বরের গুরুগম্ভীর কণ্ঠ ভেসে এলো, আরে ভাই চিল্লাচিল্লী করবে না। হাকিম সাহেবের হুকুম কেউ ভেতরে আসতে পারবে না ।
মাতব্বরজী! আমি হাকিম নিয়ামত আলী বলছি।
আরে ভাই আমি জানি। এক কাজ করুন, আপনি কৃয়ার পাড়ে চলে যান । সেখানে ঘোড়া বেঁধে রাখুন। আর যদি জানকি দাস ও সাঁই বুঢ়ঢ়া শাহ এসে যান তাহলে তাদেরও সেখানে বসান ।
মাতব্বরজী! তারা আসবে কেন?
ভেতর থেকে মাতব্বর গর্জে উঠলো, তারা আসবে কারণ আমি হচ্ছি একটা উলুকা পাঠা ।
নিয়ামত আলী ভীত কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলো, মাতব্বরজী! ভাবীর অবস্থা কেমন?
ভাবীজীর চিন্তা করার দরকার নেই। একটি বাচ্চার জন্ম হয়ে গেছে এবং আরেকটার জন্ম হতে যাচ্ছে। ভগবানের কৃপা, তিনি আমার বাড়িতে একজন ফেরেশতা পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। আপনারা ভাববেন না। সবাইকে ইনাম দেয়া হবে।
কিছুক্ষণ পরে হাকিম হোসাইন বখ্শ ও তার শাগরিদ মাতব্বরের ঘরের তৈরি পরোটা খাচ্ছিল। গ্রামের লোকেরা এসে মোবারকবাদ দিয়ে যাচ্ছিল। মাতব্বর তাদেরকে বলছিল, প্রথমে এই দেবতাকে সালাম করো, যে আমার গৃহে এসেছে খুশির বার্তা নিয়ে। আমি একটি ছেলের জন্য হা পিত্যেশ করছিলাম আর এখন ভগবান দুটি ছেলে দিয়েছে। কুয়ার পাড়ে বসেছিল হাকিম নিয়ামত আলী, সাঁই বুঢ়া শাহ ও জানকি দাস । তারা অনুচ্চ স্বরে সরদার উধম সিং ও অপরিচিত হাকিমকে গালিগালাজ করছিল, যার কারণে তাদেরকে আজ এখানে অপদস্থ হতে হলো ।
তেলির বাড়ি থেকে খাওয়া দাওয়া শেষে কিছুক্ষণ আরাম করে মাতব্বরের বাড়ির খবর জানার জন্য বের হয়েছিল আল্লারাখা। কিন্তু কারোর কাছ থেকে সন্তোষজনক জবাব না পেয়ে ঘোরাফেরা করতে করতে কৃয়ার পাড়ে এসে গেলো ।
সাঁই বুঢ়া শাহ ও তার সাথিদেরকে দেখেই জিজ্ঞেস করলো, আপনারা এখানে কেমন করে? উধম সিং মাতব্বরের বাড়িতে গেলেন না কেন? সেখানে আপনাদের অত্যন্ত প্রয়োজন।
জানকী দাস বললো, মাতব্বর বোকা আর তুমি তার চেয়েও বোকা।
জী, আমি কি বোকামী করলাম? যখন সে একজন নতুন হাকিমের সামনে হাত জোড় করে বলছিল, আমার স্ত্রীকে বাঁচাও তখন আমি ভাবলাম আমার সাঁই পীরবাবাকে ডাকার পরামর্শ দেবো। কিন্তু ততক্ষণে তারা মাতব্বরের সাথে ভেতরে চলে গিয়েছিল। ফলে আমি সুযোগই পেলাম না ।
কিন্তু ঐ নতুন হাকিমটি কে? হাকিম নিয়ামত আলী জিজ্ঞেস করলো।
জি, আমি ঠিক জানি না। কিন্তু আমি তার শাগরিদকে একথা বলতে শুনেছি যে, দরিয়ার ওপারে বহু দূর এলাকা থেকে লোকেরা তার কাছে আসে দাওয়াই নিতে । বুঢ়া শাহ বললো, ইয়ার! এ ধরনের বদমাশদের শাগরিদরা লোকদের ওপর
এভাবে রবরবা জমাতে চায় ।
কিন্তু সাঁইজী, আমি গলির মধ্যে দুই মহিলাকে পরস্পর বলতে শুনেছি যে, একটি ছেলের জন্ম হয়েছে এবং আর একটির জন্ম হতে চলেছে। কিন্তু আপনারা যখন এখানে এসেছিলেন তখন আপনাদেরও ভিতরে গিয়ে দেখা দরকার ছিল। হাকিমজী! এমন কোনো অষুধ আছে কি যাতে প্রসব দোষ সেরে যায় এবং একসাথে যমজ সন্তানও জন্ম নেয়।
না, এমন কোনো ব্যাপার নয়। সম্ভবত ঐ নির্বোধ হাকিম একথা ভাবেনি যে, তার অষুধ খেলে মেয়েরা একটার পরিবর্তে দুটো সন্তান প্রসব করে, একথা যদি একবার মেয়ে মহলে প্রচারিত হয়ে যায় তাহলে বেঅকুফ মেয়েরা তার অষুধের নামও মুখে নেবে না ।
জানকি দাস বললো, আমি চাচ্ছি দুটোর পরিবর্তে চারটে বাচ্চা হয়ে যাক এবং লোকেরা তাকে লাঠিপেটা করতে করতে গ্রামছাড়া করুক। দেখুন মাতব্বর আসছে মনে হয়। আল্লারাখা বললো। তারা নিরবে গলির দিকে দেখেতে লাগলো। মাতব্বরের সাথে গুড়ের টুকরী হাতে করে নিয়ে আর একজনও আসছিল। বহিরাগতরা উঠে মাতব্বরকে মোবারকবাদ দিল। মাতব্বর তাদের মধ্যে গুড়ের পাটালী বিতরণ করলো। তারপর তিনজনের প্রত্যেককে একটা করে পাঁচ টাকার নোট দিয়ে বললো, আপনারা আমার প্রতি বড়ই কৃপা করেছেন। আমি একটা ছেলের ব্যাপারে চিন্তিত ছিলাম, এখন ভগবান আমাকে দুটো ছেলে দিয়েছেন। আমি আপনাদের আরো সেবা করবো।
হাকিম নিয়ামত আলী বললো, সরদারজী! আপনাকে অনেক অনেক মোবারকবাদ। এখন আমাদের অনুমতি দিন ।
মাতব্বর তাদের সাথে মোসাফাহা করলো। আল্লারাখার সাথে মোসাফাহা করতে করতে বললো, আরে তুমি তো আল্লারাখা মুচি, তাই না? মনে হয় আমি তোমাকে আগেও দেখেছি।
জী, হাবেলীর দরোজায় যখন আপনি হাকিম সাহেবের সাথে কথা বলছিলেন, আমি বাইরে দাঁড়িয়েছিলাম। তারপর কোনো ভালো খবর শোনার জন্য এখানে থেমে গিয়েছিলাম।
আরে ভাই! আমি তোমার প্রতি অত্যন্ত তুষ্ট। সম্ভবত তোমার সাথে দেখা হওয়ায় আমার মুসিবত দূর হয়ে গিয়েছিল। তুমি আমার সাথে এসো। আমি তোমাকে কিছু দিতে চাই ।
আল্লারাখা বুঢ়া শাহের দিকে তাকিয়ে বললো, সাঁইজী! আমার এখানে তেলির সাথেও কিছু কাজ আছে। সন্ধ্যায় না আসতে পারলে কাল সকালে আপনার ওখানে আসবো ।
তারা তিনজন ওখান থেকে রওনা হয়ে গেলো এবং আল্লারাখা মাতব্বরের সাথে ভেতরে ঢুকলো ।
গ্রাম থেকে বের হয়ে বুঢ়া শাহ সাথিদেরকে বললো, ঐ বেঅকুফটার এখন তেলির সাথে কোনো কাজটাজ নেই। সে কেবল ঐ নতুন হাকিমটাকে ভালোভাবে দেখতে এবং তার কাছ থেকে নিজের বিবির জন্য দুটো সন্তান জন্মদানকারী বড়ি হাসিল করতে চায়।
হাকিম নিয়ামত আলী বললো, সাঁইজী! এই গ্রামের লোকেরা খুবই বোকা । ঐ চালাক লোকটির কারবার বেশ জমে উঠবে ।
জানকি দাস বললো, আমি তো দেখছি মাতব্বর সবচেয়ে বড় বোকা ।
নিয়ামত আলী বললো, না বন্ধু! সে বোকা হলে আমাদেরকে পাঁচ টাকা করে দিতো না। তার কাজ হয়ে গিয়েছিল। এখন আমার মনে হচ্ছে সে আল্লারাখাকেও কিছু দেবে। এ থেকে বুঝা যাচ্ছে মনের দিক থেকে সে খাঁটি এবং কাউকে নারাজ করতে চায় না।

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top