হেজাযের তুফান ২য় খণ্ড – এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ মুজাহিদ হুসাইন ইয়াসীন
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২৫৭
হেজাযের তুফান ২য় খণ্ড – বইটির এক ঝলকঃ
: ‘আফরী’ – সাদ (রা) এর মুগ্ধ দৃষ্টি সেই সওয়ারের দিকেই ছিলো। তাকে ঘোড়া নিয়ে এক পাশে বিদ্যুৎবেগে সরে যেতে দেখে তার গলা উচ্ছ্বাসে ভরে গেলো- ‘ওহ! আফরী – খোদার কমস! এটা আবু মাজানেরই ধরন……. তার গোড়াটি দেখো। একেবারে আমার ‘বলাকা’। দেখো, সওয়ারের ইশারায় কত দ্রুত এদিক ওদিক সরে যাচ্ছে। ঘোড়াটি ঘামে একেবারে চুপসে ছিলো। পিঠ থেকে তার জিন তুলে নেয়া হয়েছিলো। আর আবু মাজান ঘোড়ার এক পাশে বসে পায়ে শিকল দিচ্ছিলো।
ঃ ‘বলাকা’ এমন ঘামে নেয়ে উঠেছ। কেন সালমা ? সাদ (রা) জিজ্ঞেস করলেন- ‘কোন রোগ নয় তো এটা?….. এর ওপর দেখি ধুলোও দেখা যাচ্ছে। যেখানে জিন বসানো হয় সেখানটায় ধুলো নেই। এতো মনে হচ্ছে আমার ঘোড়া কেউ বাইরে নিয়ে গিয়েছিলো। …… ঘোড়ার সাইসকে ডাকো সালমা!…. আরে আবু মাজান এখানে কি করছে? পা থেকে শিকল খুলে ফেলছে?’
ঃ ‘না ইবনে ওয়াক্কাস !
সালমা বুকে সাহস নিয়ে কণ্ঠে আত্মবিশ্বাস ফুটিয়ে বললো- ‘আবু মাজান শিকল খুলছে না বরং খুলে দেয়া শিকল পায়ে গলিয়ে নিচ্ছে।
আর আপনার ঘোড়ার গা থেকে ঘাম দিচ্ছে কোন রোগের কারণে নয়। আজ বলাকা সারা দিন লড়েছে।’
ঃ ‘কি বলছো সালমা!’
ঃ ‘ঐ সওয়ার আবু মাজানই ছিলো। যাকে দেখে আপনি বলেছিলেন, এতো আৰু মাজানের মতো লড়ছে – সালমা বললো- ‘তার ঘোড়াটি আপনার বলাকাই ছিলো। আপনি বলেছিলেন, এঘোড়া তো আমার ‘বলাকার’ মতো।’
সালমা সাদ (রা)কে খাট পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে বসালো। তাকে শুইয়ে দিয়ে পুরো ঘটনা সাদ (রা)কে খুলে বললো, আবু মাজানের কবিতাও শোনালো। আরো বললো আৰু মাজান কাঁদতে কাঁদতে তার সঙ্গে দুটি ওয়াদা করেছিলো। ‘জীবিত যুদ্ধের ময়দান থেকে ‘জীবিত ফিরে আসতে পারলে নিজে নিজে পায়ে শিকল পরে নিবে। এবং আর কখনো শরাব পান করবে না।
ঃ ‘আপনি তো দেখেছেন ফিরে এসে সে তার পায়ে বেড়ি পড়ছিলো । সালমা বললো- ‘আমি আপনার নির্দেশকে অমান্য করেছি ঠিক; কিন্তু জিহাদের জন্য যখন সে আকুল হয়ে কাঁদছিলো আমি তখন সহ্য করতে না পেরে আল্লাহর শরণাপন্ন হই এবং আবু মাজানকে ছেড়ে দিয়ে আপনার ঘোড়া তাকে দিয়ে দেই। আপনি তার লড়াই তো বেশ উপভোগই করেছেন।’
ঃ তাকে ওপরে ডাকো।’
সালমা জানালা দিয়ে তাকে ডেকে ওপরে আসতে বললো। সিঁড়ি ভেঙে উঠে আসতে আবু মাজানের বড় কষ্ট হচ্ছিল। কিন্তু সকালে তার এত কষ্ট হয়নি। কি এক অমোঘ আবেদন তাকে টেনে এনেছিলো তখন ।
: “শিকল ছেড়ে দাও আৰু মাজান’ সাদ (রা) বললেন- ‘ খোদার কসম! ইসলামের জন্য যে এমন উৎসর্গপ্রাণ তাকে আমি শান্তি দিতে পারি না। …… আজ থেকে তুমি মুক্ত। যাও সকালে তুমি তোমার ঘোড়া পেয়ে যাবে।
ঃ ‘খোদার কসম! আমার প্রিয় সিপাহসালার। আবু মাজান বললো- ‘আজ আপনি আমাকে মুক্ত করে দিলেন। আজ থেকে আমি শরাব ছেড়ে দিলাম।’ লড়াইয়ের দ্বিতীয় দিন রুস্তুম মাঝে মধ্যে দিশাহারা হয়ে যাচ্ছিলো। এক লাখ বিশ হাজার সৈন্যের এজন্যই সমাবেশ ঘটানো হয়েছিলো যে, সৈন্যদের মধ্যে যদি মনোবলের ঘটতি দেখা দেয় তাহলে কয়েকগুণ সংখ্যার চাপেই মুসলমানদের ওপর প্রাধান্য বিস্তার করে ময়দানের ধকল সামলে নেয়া যাবে। তারপর অল্প সময়ের মধ্যেই মুসলমানদের কেটে ফেলা যাবে। কিন্তু রুস্তম এই দিন পদাতিক সৈন্য হোক বা সওয়ারী সৈন্য হোক যাদেরকেই নামালো মুসলমানদের হাতে মার খেয়ে পিছু হটতে টেষ্টা করলো। রুস্তমের ধমকানি হাকডাক কোন কিছুই যুদ্ধে তাদেরকে ফিরিয়ে আনতে পারলো না। ধন-সম্পদ নারী বাড়ির লোভ কোন কিছুই তাদের লড়াইয়ে রঙ ধরালো না ।
পারসিকদের বারবার পিছু হটা আর মুসলমানদের মুহুর্মুহু বিজয়ের দিকে অগ্রসর হওয়ার পথে যে নৈপুণ্য মুসলমানরা দেখিয়েছে মুজাহিদরা এর অর্ধেক কৃতিত্বই দিয়েছে ক’কা ইবনে আমরকে। তার এক একশ সওয়ারের ঝটিকা দলের হামলা পারসিকদের সৈন্যব্যূহ এবং দলীয় বিন্যাস বার বার ভেঙে দিয়েছে। ব্যক্তিগত বীরত্বেও সেদিন ক’কা সবাইকে ছাড়িয়ে যায়। ক’কা একা ত্রিশ জন ফারসীকে হত্যা করে।
আরেক মুজাহিদের নির্ভীকতা ও দুঃসাহিকসতা সবাইকে বিস্ময়ে বাকহারা বানিয়ে দিয়েছিলো। পারসিকদের ঐ সারিতে সে গিয়ে ঢুকে যেখানে রুস্তুম ছিলো। রুস্তমকে হত্যার জন্য তলোয়ার যখন সে উদ্যত করলো এমন সময় এক ফারসী পেছন থেকে তাকে বর্শা মেরে বসলো। তারপর ফারসীরা তাকে ঘিরে তলোয়ার আর বর্শার আঘাতে তার দেহটি কিমা বানিয়ে ফেলে।
শেষ বিকেলে মুজাহিদরা ফারসীদের এমনভাবে চেপে ধরেছিলো যে, মনে হচ্ছিলো আজই ফারসীদের পা ময়দান থেকে উপড়ে যাবে। কিন্তু সন্ধ্যার অন্ধকার উভয় পক্ষকেই পিছু হটিয়ে নিলো। যুদ্ধের এই দ্বিতীয় দিনের নাম দেয়া হয়েছিলো ইয়াওমে আগওয়াস।’
সেদিন অর্ধেক রাত পর্যন্ত মুসলিম ক্যাম্প জেগেছিলো। মুসলমানদের চেহারার দুশ্চিন্তার ছাপ অনেকটা কেটে গিয়ে তাদেরকে নির্ভয় মনে হচ্ছিলো। কেউ কেউ সামান্য উৎফুল্লও ছিলো। সেদিনের যুদ্ধে মুসলমানদের পাল্লা ভারী থাকায় সাদ (রা)ও কিছুটা স্বস্তি অনুভব করছিলেন। এজন্য আৰু মাজানকেও মাফ করে দিয়েছিলেন এবং তার নির্দেশ অমান্য করায় সালমাকেও কিছু বলেননি।
মুজাহিদদের মধ্যে কেমন এক নিশ্চিন্ততার আবহ তৈরী হয়েছিলো। প্রত্যেক গোত্রই তাদের সৈন্যদের মনোবল আরো চাঙ্গা করার জন্য তাদের বীরত্ব প্রদর্শনের প্রশংসা করছিলো উঁচু আওয়াজে।
: ‘আরে প্রশংসা যদি করতেই হয় তবে রবীআ ও মুদার গোত্রের সজীব কান্তি মায়েদের প্রশংসা করো যারা এই পাঁচ হাজার সোনার ছেলে জন্ম দিয়েছেন’ ক’কা উঁচু
আওয়াজে বললেন।
: ‘আর সঙ্গীত রচনা করো সেই এক হাজার সওয়ারের, হেজাযের গর্বিত মাটি যাদের জন্ম দিয়েছে’ – এক মুজাহিদ বললো- যারা মাটি ভেদ করে বের হতো এবং দুশমনকে খুনরাঙা করে আবার মাটির কোলে ফিরে যেতো।’
: ইবনে আমর! তুমি তোমার গোত্রের কথা চেপে যাচ্ছো কেন? – আরেক মুজাহিদ ক’কাকে বললো- বনু তামীমের কথা বলো, যে তোমার মতো এক চিতাকে জন্ম দিয়েছে’।
সিরিয়া থেকে যে ছয় হাজার সওয়ার সাদ (রা) এর জন্য এসেছিলো। তাদের মধ্যেই এই খোশগল্প চলছিলো। এর মধ্যে পাঁচ হাজার বনু রবীআ ও মুদার গোত্রের সওয়ার ছিলেন। ক’কার নির্বাচিত এক হাজার সওয়ারের সবাই ছিলো হেজাযের লোক। ক’কা নিজে বনু তামিমের এক গর্ব ছিলো।
সে রাতে মুজাহিদদের উৎসব উৎসব মেজাজে বড় গলায় কথাবার্তার আওয়াজ সাদ (রা)কে অনেক রাত পর্যন্ত ঘুমুতে দেয়নি। তার কানে তাদের দূরাগত শব্দগুলি পৌঁছছিলো। মুজাহিদরা তখন একে অপরের বাহাদুরির গল্প করছিলো। সাদ (রা) এর কাছে দুই সালার বসা ছিলেন। তাদের একজনকে তিনি বললেন ঃ
‘খেয়াল রেখো, এরা যদি একে অপরের গোত্রের প্রশংসা নিয়ে মেতে থাকে তবে তাদেরকে ঘাটিয়ো না । আমাকে জাগিয়ো না। শেষ পর্যন্ত শত্রুর ওপর তারাই তো প্রবল ছিলো। এরা যদি চুপ করে যায় খুবই ভালো। কয়েকজন যদি চুপ নাও করে অসুবিধা নেই। কিন্তু তাদের কথার সুর যদি পাল্টে যেতে দেখো এবং নিজেদের প্রশংসা আর খ্যাতির মাত্রা নিয়ে গর্ব ও অহংকারের মাত্রায় চলে যেতে দেখো আমাকে তখন জাগিয়ে দিয়ো। কারণ এই মানসিকতাটা আশংকাজনক।’
সাদ (রা) চাচ্ছিলেন মুজাহিদদের পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সুন্দর সম্পর্কটা যেন তাদের কারো অতি কথন এবং গোত্রীয় অহংকার-অহমিকার কারণে নষ্ট হয়ে না যায় । কারণ এ পর্যন্ত এটাই মুসলমানদের সফলতার অন্যতম রহস্য বলে প্রমাণিত হয়েছে। গোত্রে গোত্রে সম্প্রীতি, পরস্পরের প্রতি মমত্ব ও শ্রদ্ধাবোধ এবং নেতার প্রতি নিঃস্বার্থ আনুগত্যই মুসলমানদের সফলতার রূপকার হিসেবে প্রমাণিত হয়ে আসছে।
ক’কা সেখান থেকে উঠে গেলেন। মুজাহিদরা তখনও তাদের খোশগল্পে মেতেছিলো। সারা দিনের লড়াইয়ের ক্লান্তির পরও তাদের শতভাগ ঈমানী শক্তি ও মনের অমিত তেজ তাদেরকে দারুণ সজীব সতেজ প্রাণ লাগছিলো। ক’কা উঠার সময় তার ছোট্ট সেনাদলটিকেও নিয়ে নিলেন। তাদেরকে এমন এক ঘন জঙ্গলের দিকে নিয়ে গেলেন যেখানে জলাভূমি, নলখাগড়ার বন ও বড় বড় ঝোপঝাপের ছড়াছড়ি। ওদিকে কারোই আসা যাওয়া ছিলো না ।
সেখানে নিয়ে গিয়ে ক’কা তার সওয়ারদের ঘোড়ার জিন খুলে রেখে আরাম করার নির্দেশ দিলেন। তার এক হাজার সওয়ারের সবাই উপস্থিত ছিলো না। একশর ও বেশি শহীদ বা আহত হয়ে গিয়েছিলো। অবশিষ্টদের নিয়েই ক’কা আবার দশটি ঝটিকা দল করে তাদের কমান্ডার নিযুক্ত করে দিলেন এবং পরদিনের যুদ্ধে তাদের কি করণীয় তাও বলে দিলেন। এই জঙ্গলেরই আরেক দিকে সাদ (রা) এর ভাতিজা হাশেম ইবনে উতবা তার পাঁচ হাজার সওয়ারকে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিচ্ছিলেন। পুরো পাঁচ হাজার সৈন্য এখানে ছিলো না। কিছু সৈন্য দিনের লড়াইয়ে শহীদ বা আহত হয়ে গিয়েছিলো। মূলবাহিনী থেকে এদেরকে এখানে লুকিয়ে রাখা হয়েছিলো ।
পর দিনের লড়াইয়ে পারসিকদের বিভ্রান্তিতে ফেলার জন্য এই সওয়ারীদের জঙ্গলে লুকিয়ে রাখা হয়েছিলো। এই কৌশলটা বেরিয়েছিলো ক’কার মাথা থেকে। ওদিকে মুসলিম নারীরা হাতে মশাল নিয়ে আহত সৈনিকদের খুঁজে খুঁজে বের করে পানি পান করাচ্ছিলো। তাদেরকে উদ্ধার করছিলো। যারা চলতে পারছিলো না নিজেদের শরীরে তাদেরকে বইয়ে আপন শিবিরে পৌঁছে দিচ্ছিলো।
কোন মুজাহিদের সদ্য যুবতী স্ত্রী যদি কোন যুবক মুজাহিদকে আহত হয়ে পড়ে থাকতে দেখতো তখন তার মনে এটা আসতো না যে, তার স্বামী কোথাও যখমী হয়ে পড়ে আছে বা সে নিজে হয়তো বিধবাই হয়ে গেছে। যে মুজাহিদকেই তার সামনে যন্ত্রণা কাতর দেখতো তার পাশে বসে যেতো। তাকে পানি পান করাতো, তার যুবা শরীরকে নিজের শরীরে ভর করে ছাউনিতে পৌঁছে দিতো। যুবা মুজাহিদটির মনে এটা কখনো উদয় হতো না যে, এটা কোন যৌবনবতী নারী। তাদের আবেগ অনুভূতি অন্তরের উপলব্ধি এক বিন্দুতে গিয়ে মিশে ছিলো। যে বিন্দুর অনন্ত উৎস এক ‘আল্লাহ’। এক আল্লাহর পথের জিহাদই তাদের অস্তিত্বকে প্রাণময় করেছিলো। একই তাবুর ছায়ায় তাদেরকে জড়িয়ে রেখেছিলো সত্যের অমিত শক্তি। সেই সত্যকে প্রতিষ্ঠা এবং মিথ্যাকে পরাস্ত করার জন্য পরস্পরের হাত ধরে দেশ থেকে দেশান্তর হচ্ছিলো। তাই সত্য মিথ্যার এই লড়াইয়ে কোন মুজাহিদের শরীর যদি রক্তাক্ত হতো তবে আরেক মুজাহিদা এসে তার যথমে হাত বুলিয়ে দিতো। পরবর্তী লড়াইয়ের জন্য তাকে তরতাজা করে তুলতো ।
এক মা এক হাতে পানির মশক আরেক হাতে মশাল নিয়ে তার দুই মুজাহিদ সন্তানের খোঁজে বের হলো। তার কানে হঠাৎ কারো কাতরধ্বনি পৌঁছলো। ক্ষীণ কণ্ঠে তার জড়ানো আওয়াজ বের হলো।
‘মা’- মার পা জমে গেলো। লাশের পর লাশ ময়দানময়। কোন মৃত ঘোড়ার পায়ের নিচে তার সওয়ার চাপা পড়ে আছে। জমাট রক্তের মধ্যে তার ছড়ানো পা দুটি দেখা যাচ্ছে । মার কানে আবার সেই কাতরধ্বনি এসে আঘাত করলো, মা মশাল উচিয়ে তাকে খুঁজে বের করলো। কিন্তু এ তার ছেলে নয়। তবুও মা ব্যস্ত হাতে মমতাভরে আপন সন্তানের কথা বুকে চেপে রেখে পানি পান করালো। তারপর উচিয়ে তার ছাউনিতে পৌঁছে দিলো।
সেখানকার এক মা সবার মা ছিলো, এক বোন সবার বোন ছিলো। মা তার মমতায়, বোন তার ভালবাসায় মুজাহিদদের পরিচর্যায় তাদের রাতের ঘুম হারাম করে দিতো। শুধু তাই নয় তাদের মনোবল বাড়াতেও সাহায্য করতো তারা।
মুসলিম নারীরা যখন আহত মুজাহিদদের তালাশে বের হতো তখন তাদের মুখে নানা উৎসাহব্যঞ্জক কথা ফিরতো।
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!