অবাক সেনাপতি – মোশারাফ হোসেন খান – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ মোশারাফ হোসেন খান
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৮৪
অবাক সেনাপতি – বইটির এক ঝলকঃ
কা’ব ছিলেন কবি এবং রাসূল (সা)-এর খুব প্রিয় সাহাবী। তাকে ভালোবাসতেন প্রাণ দিয়ে।
আর রাসূল (সা)-এর প্রতি কা’বের ভালোবাসা ছিল অথই সমুদ্রের মত । বিশাল। সীমাহীন।
রাসূল (সা)-এর নির্দেশ পেয়ে কা’বও তাবুক যুদ্ধে যাবার জন্য প্রস্তুতি নিলেন । যুদ্ধের বাহন হিসেবে প্রস্তুত করলেন দু’টি তাগড়া উট।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত কী যে হলো !
কা’ব আর তাবুক যুদ্ধে গেলেন না।
একে একে সাথীদের সবাই রওয়ানা দিলেন যুদ্ধের জন্য। আর কা’ব কেবলই ভাবেন, আজ নয় কাল যাব। আজ-কাল করতে করতে কা’বের সময়গুলো চলে গেল দেখতে দেখতে। সময় চলে যায়, কিন্তু তার চোখ থেকে কাটে না কেবল দ্বিধার কুয়াশা।
উহুদের পরে যতগুলো যুদ্ধ হয়েছে প্রতিটি যুদ্ধেই কা’ব ছিলেন অগ্রগামী। এমন দ্বিধার আগুনে তিনি দগ্ধ হননি আর কখনো। এবং শেষ পর্যন্ত দোটানার কারণে তিনি অংশগ্রহণ করতে পারলেন না তাবুক যুদ্ধে।
এর মধ্যে তিনি খবর শুনলেন, একে একে সবাই চলে গেছেন যুদ্ধে। এমন কি, রাসূল (সা)-ও পৌছে গেছেন তাবুকে ।
মদীনা ও এর আশ-পাশের প্রতিটি সক্ষম ব্যক্তিই চলে গেছেন তাবুকে। কেবল গেলেন না কা’ব ইবনে মালিক (রা)।
কী লজ্জার কথা!
কা’ব যখন বের হন মদীনার রাস্তায় তখন একমাত্র শিশু, কিছু বৃদ্ধ এবং কিছু মুনাফেক ছাড়া আর কোনো মানুষই তার চোখে পড়ে না ।
কা’ব এসব দেখেন আর ধিক্কার দেন কেবল নিজেকে।
অনুশোচনায় পুড়ে পুড়ে খাক হয় কেবল তাঁর কোমল হৃদয়। বারবার ঘুরে দাঁড়ান নিজেরই সম্মুখে, কেন গেলাম না যুদ্ধে ? কেন ?
লজ্জা আর অনুতাপে ভারাক্রান্ত তিনি ।
রাসূল (সা)-এর সাথে যুদ্ধে গেছেন হাজার হাজার বীর সৈনিক। সংখ্যায় এত বিপুল যে কে এলো, আর কে এলো না- তার হিসেব রাখাই দুঃসাধ্য ব্যাপার । রাসূল (সা)-এর তো কোনো দপ্তরও ছিল না সেখানে। তবুও আল্লাহর প্রিয়নবী (সা)-এর কাছে শেষ পর্যন্ত আর কিছুই গোপন থাকে না। থাকে না ঝাপসা কিংবা অস্পষ্ট।
পৃথিবীর দ্রুততম এবং নির্ভুল বার্তা- ওহীর মাধ্যমে জেনে যান তিনি।
সকল খবর !
যুদ্ধের এক অবসরে রাসূল (সা) তাকালেন ডানে এবং বামে । তারপর জিজ্ঞেস করলেন, ‘কা’ব আসেনি ?’
জবাব দিলেন একজন, ‘হে রাসূল (সা)! যুদ্ধে আসার মত কা’বের এত সময় কোথায় ?’
একটু বাড়িয়েই বললেন তিনি।
সাথে সাথে ভেসে এলো আর একটি প্রতিবাদী কণ্ঠ। কণ্ঠটি মুয়াজ ইবনে জাবালের । তিনি বললেন, ‘ওভাবে না বললেও তো পারতেন! আমরা তো কা’বের মধ্যে তেমন খারাপ কিছু দেখিনি!’
মুয়াজের কথা শুনে রাসূল (সা) চুপ থাকলেন।
এক সময় তাবুক থেকে ফিরে এলেন রাসূল (সা)।
‘কা’বও জেনে গেছেন রাসূল (সা)-এর ফিরে আসার কথা। একবার ভাবলেন, তিনি চলে যাবেন রাসূল (সা)-এর কাছে। সব কিছু খুলে বলবেন তাঁকে।
আবার ভাবলেন অন্য কথা। সত্যিই যদি তিনি আমাকে ভুল বোঝেন, ক্ষমা না করেন কিংবা ঘৃণা করেন ?
মহাচিন্তায় হাবুডুবু খাচ্ছেন কা’ব। দুর্ভাবনার কুয়াশা তাঁর সমগ্র চেহারায় । কীভাবে বাঁচা যায় রাসূল (সা)-এর অসন্তুষ্টি থেকে ?
বারবার জিজ্ঞেস করলেন নিজের কাছে।
পরামর্শ চাইলেন বন্ধুদের কাছে ।
আবারো ভাবতে থাকেন আকাশ-পাতাল ।
অবশেষে।
অবশেষে তিনি সিদ্ধান্ত নেন, আমি অবশ্যই যাব রাসূল (সা)-এর কাছে। যাব এবং সব কিছুই খুলে বলবো তাঁকে। সত্য-মিথ্যা মেশানো নয়, নয় কোনো ছল-চাতুরি। সত্যিই বলবো আমি। তারপর। তারপর যে শাস্তি দেবেন দয়ার নবী, সেই শাস্তি মাথা পেতে নেব আমি। সত্য বলার সাহসটুকু দুলে উঠলো কাবের সাহসী হৃদয়ে ।
তাবুক যুদ্ধে আরো যাঁরা অংশ নেননি- এমন আশিজনের মত লোক রাসূল (সা)-এর কাছে গেলেন। তাঁরা বললেন তাদের কথা। বললেন যেতে না পারার কথা। তারা আত্মপক্ষ সমর্থন করে ক্ষমা চাইলেন রাসূল (সা)-এর কাছে।
তাঁদের সকল কথা শুনলেন রাসূল (সা)।
তাঁর হৃদয়ে তাদের জন্য নেমে এলো ক্ষমার বৃষ্টি । তিনি আল্লাহর কাছেও
তাদের ক্ষমার জন্য দোয়া করলেন।
এরপর কা’ব এলেন । একাকী। রাসূল (সা)-এর কাছে।
কা’বকে দেখে রাসূল (সা) মৃদু হেসে বললেন, ‘এসো কা’ব, বসো।’ কা’বের সমগ্র শরীরে বয়ে গেল এক শিরশির অনুভূতি। তিনি কোনো রকমে জড়সড় হয়ে বসলেন রাসূল (সা)-এর সামনে ।
রাসূল (সা) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কা’ব! যুদ্ধে যাওনি কেন?’
কা’ব বললেন, ‘হে রাসূল (সা)! আপনার কাছে কী আর গোপন করবো ? দুনিয়ার কোনো রাজা-বাদশাহ হলে হয়তোবা নানা রকম কথার জাল তৈরি করে তাকে খুশি করতাম। সে শক্তি আমার আছে। আমি তো একজন বাগ্মী ও তর্কবাগিশ। কিন্তু তবু, তবু আমি আপনার কাছে কোনো সত্য গোপন করবো না। সেই সাহসও আমার নেই। সত্য বললে এমনও হতে পারে, আল্লাহ পাক আমাকে ক্ষমা করবেন। কিন্তু মিথ্যা বললে এই মুহূর্তে আপনি খুশি হলেও মহান রাব্বুল আলামীন নাখোশ হবেন এবং আপনাকেও নাখোশ করে দেবেন আমার ব্যাপারে। আর সেটি হবে আমার জন্য এক চিরস্থায়ী শাস্তি । কষ্টকর ব্যাপার। না, তা হতে পারে না। বরং আমি সত্যই বলতে চাই । হে দয়ার নবী (সা)! না, যুদ্ধে না যাবার পেছনে আমার তেমন কোনো কারণই ছিল না। আমি ছিলাম সুস্থ, সবল এবং অর্থ-বিত্তের দিক থেকেও সম্পূর্ণ উপযুক্ত। তবু, তবুও এক রকম আলসেমি করে আমি যুদ্ধে যাইনি। সত্যিই কী দুর্ভাগা আমি!’
গভীর মনোযোগের সাথে রাসূল (সা) শুনলেন কা’বের কথা। তারপর ধীর কণ্ঠে বললেন, ‘তুমি সত্য বলেছে! কা’ব। তুমি এখন যাও। দেখা যাক আল্লাহ পাক তোমার ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত দান করেন।”
রাসূল (সা)-এর দরবার থেকে চলে এলেন কা’ব। মনটা ভারাক্রান্ত। তবুও সত্য বলার কারণে তার পাঁজর ভেদ করে মাঝে মাঝেই প্রবেশ করছে এক অপার্থিব শীতল বাতাস ।
সত্য বলার কারণে বন্ধুদের মধ্যে কেউ কেউ তাঁকে তিরস্কারও করলো। এমন বোকামী করলে কেন ? কিছু ওজর-আপত্তি দেখালে তো তুমি রাসূল (সা)-এর ক্ষমা পেয়ে যেতে। এমন আত্মঘাতী সত্য তুমি বলতে গেলে
কেন !
কিন্তু শেষ পর্যন্ত কা’ব ছিলেন সত্যের ওপর সুদৃঢ়। না, তিনি টলেননি এতটুকু ।
যুদ্ধে না যাবার কারণে রাসূল (সা) কাবের সাথে কথা বলতে নিষেধ করেন অন্যদের ।
একদিন নয়, দু’দিন নয়, দীর্ঘ পশ্চাশ দিন যাবত এই নিষেধাজ্ঞা বলবত থাকে ।
কী কষ্টকর ব্যাপার!
কা’ব রাস্তায় বের হন ।
সবাই তাঁকে আড়চোখে দেখেন। কিন্তু কেউ কথা বলেন না তার
সাথে।
নামাজ পড়তে যান মসজিদে।
যান হাটে-বাজারে ।
কিন্তু না, কেউ ভুলেও কথা বলেন না তাঁর সাথে ।
রাসূল (সা) বসে আছেন জায়নামাজে। কা’ব সালাম দিলেন। রাসূল (সা) জবাব দিলেন, কিন্তু মনে মনে।
নেন ।
রাসূল (সা)-এর দিকে তাকালে তিনি কাবের দিক থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে
শুধু রাসূল (সা) কেন !
কা’বের দিক থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নেন তাঁর পরিবারের আপনজনেরাও।
যখন কা’বের চলছে এমন দুঃসময়, ঠিক তখনই একজন গাসানীয় রাজার একটি চিঠি নিয়ে হাজির হলো তাঁর কাছে। চিঠিটা মেলে ধরলেন কা’ব চোখের আলোয়। তাতে লেখা ছিল, ‘তোমার বন্ধু রাসূল (সা) তোমার প্রতি খুব অবিচার করেছেন। তুমি তো কোনো সাধারণ ঘরের সন্তান নও! তুমি আমার কাছে চলে এসো।’
চিঠিটা পড়ে কা’বের চোখ দু’টো জ্বলে উঠলো। বললেন, ‘এটাও আমার জন্য একটি পরীক্ষা!’
তিনি রাগে, ক্ষোভে চিঠিটা পুড়িয়ে ফেললেন গনগনে আগুনের শিখায় । দুঃসহ যন্ত্রণা, ঘৃণা আর উপেক্ষার মধ্যে কেটে গেল চল্লিশটি দিন।
চল্লিশ দিন পর রাসূল (সা)-এর পক্ষ থেকে একজন এসে বললেন, ‘রাসূল (সা)-এর নির্দেশ হলো, তোমরা স্ত্রী থেকে তুমি দূরে থাকবে।’ কা’ব জানতে চাইলেন, ‘আমার স্ত্রীকে কি তালাক দেব ?
তিনি বললেন, ‘না। শুধু পৃথক থাকবে।’
কা’ব তার স্ত্রীকে বললেন, ‘তুমি তোমার বাপের বাড়িতে চলে যাও। আল্লাহর পক্ষ থেকে আমার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তুমি সেখানেই থাকবে।’
সময় গড়িয়ে যায় ।
একদিন পূর্ণ হয়ে যায় পঞ্চাশ দিন।
পশ্চাশ দিনের মাথায়, ফজরের নামাজ আদায় করে কা’ব ছাদে বসে আছেন ।
ভাবছেন আপন মনে ।
ভাবছেন আমার জন্য এই আকাশ, এই জমিন সব— সবই কেমন সংকীর্ণ হয়ে গেল! এখন তো জীবনটাই একটি মহা ভারী বোঝা হয়ে গেছে! এসব ভাবছেন কা’ব । এক মনে।
এমন সময় সালা’ পাহাড়ের শীর্ষদেশ থেকে একটি কণ্ঠ ভেসে এলো— ‘কা’ব শোনো! তোমার জন্য সুসংবাদ!’
শব্দটি শুনেই কা’ব বুঝলেন, তাঁর দোয়া ও তওবা কবুল হয়েছে। সাথে সাথেই তিনি সিজদায় লুটিয়ে পড়লেন।
শুকরিয়া জানালেন মহান রাব্বুল আলামীনকে। আর মাগফিরাত কামনা করলেন তার ভুলের জন্য ।
বাতাসের আগে খবরটি ছড়িয়ে পড়লো মদীনার চারদিকে। রাসূল (সা)- এর কাছে ছুটে এলেন কা’ব। রাসূল (সা)-এর দুই হাতে চুমু খেয়ে তাকিয়ে থাকলেন তাঁর দিকে।
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!