নির্মাতা দ্বীপের গুপ্তধন – আবদুল হামিদ আহমদ আবুসুলাইমান – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ মোহাম্ম জাহিদুল ইসলাম
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৭০
নির্মাতা দ্বীপের গুপ্তধন – বইটির এক ঝলকঃ
হে বিজ্ঞ দার্শনিক বায়দাবা, যখন তারা পুরোপুরি সঠিক দর্শনের অধিকারী ছিলো ও সঠিক চিন্তা-চেতনার পদ্ধতি তাদের কাছে ছিলো, তখন তারা এর বদৌলতে স্বাধীনতা, বিবেক, বুদ্ধি, সম্মান ও চয়ন করার অধিকারের অধিকারী ছিলো। একারণে এ সমস্ত জাতি সম্মান ও মর্যাদাবোধ করতো, তাদের মাঝে ছিলো পেশীশক্তি, প্রতিযোগিতা ও সৃজনশীলতার ক্ষমতা। তাদের নিজেদের প্রতি ও তাদের চর্তুপার্শ্বে যারা ছিলো তাদের প্রতি তাদের দায়িত্ব বোধ এবং জনস্বার্থ ও সাধারণ স্বার্থের প্রতি তাদের দায়িত্ববোধ ছিলো। এ অনুধাবনই সেই দ্বীপের অধিবাসী অর্জন করেছিলো। এর ব্যাখ্যা এবং সেই সংরক্ষণশীলতাই হলো মর্যাদা, সম্মান ও শক্তির গুণাবলী। সে দ্বীপের সন্তানদের মাঝে বাস্তবায়ন করেছে তাদের জ্ঞানী ও পন্ডিতগণ। যার দ্বারা তারা জনপদ ও মানব সভ্যতা সৃষ্টি করে গেছেন।
হে বায়দাবা, তুমি স্মরণ রেখো, ফেতরাত (প্রকৃতি) সংরক্ষিত সঠিক ব্যক্তিগণ সত্য, ন্যায়, ইনসাফ, দয়া, নিরাপত্তা ও শান্তির দিকে ধাবিত হয় এবং এগুলো অন্বেষণ করে। এ কারণেই তারা মুক্ত ও স্বাধীন ইচ্ছাশক্তিতে তাদের পরিপক্ক বুদ্ধির, চিন্তা-ভাবনা ও গবেষণা, তাদের আত্মা (নাফস), প্রতিষ্ঠান ও নিয়ম-কানুন, সত্য, ন্যায় ও দয়ার জন্য বশ্যতা স্বীকারে বাধ্য করে এবং নিরাপত্তা ও শান্তি অন্বেষণ করে। আর সে সমস্ত আত্মা (নাফস) সঠিক ফেতরাত (প্রকৃতি) দ্বারা জাদের জীবনের সমস্ত দিক থেকে তারা মিথ্যা, বাতিল, জুলুম, অত্যাচার, নিষ্ঠুরতা, সীমালঙ্ঘন ও ফেতনা-ফাসাদকে অপছন্দ করে ও ঘৃণা করে এবং এর ওপর তার জীবন ধ্বংস করার লক্ষ্যে এর জন্য কোন ক্ষেত্র ছেড়ে দেয় না।
নিশ্চয়ই জুলুম-অত্যাচার, ফেতনা-ফাসাদ, নিষ্ঠুরতা ও খারাপ গুণাবলীসমূহ ও বদকারগণ প্রকাশ্যে ও গোপনে বদ কাজের ওপর অটল থাকে। তাদের প্রতি পরম করুণাময় রহমানের (আল্লাহর গুণ বাচক নাম) ক্রোধ অত্যন্ত বেশী। পক্ষান্তরে যারা ভাল, সত্য ও ন্যায় পরায়নতাকে ভালোবাসে তাদের প্রতি তাঁর কোন ক্রোধ নেই। যখন তাদের পদস্খলন ঘটে তখন তারা অনুশোচনা করে ও তওবা করে। তারা যে পাপ করেছে, তা বারবার করে মা এবং অতি নিকট হতেই সেই পাপ থেকে তারা ফিরে আসে।
হে বায়দাবা, সৎ ও ভাল ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও জাতিগণ হলো সেই সমস্ত ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও জাতি যারা তাদের ফেতরাগত (প্রকৃতিগত) কারণে মহান ‘আল্লাহ’ পাককে ভালোবাসে এবং তাদের ফেতরাতগত (প্রকৃতিগত) কারণে শয়তানকে ঘৃণা করে। কারণ ‘হক’ বা ন্যায় ও সত্য ‘আদল’ ন্যায় বিচার, ‘দয়া-অনুগ্রহ’ ও ‘শান্তি’ হলেন ‘আল্লাহ্’ এবং এগুলো তাঁর গুণ! ‘মিথ্যা’, ‘বাতিল’ বা অসত্য ‘জুলম’ বা অত্যাচার ও সীমালঙ্ঘন হলো খারাপ। আর এগুলো আসে শয়তানের পক্ষ থেকে খারাপ কাজের আদেশ দানকারী নাফস বা আত্মা হতে। হে বায়দাবা, পদস্খলন ও ভুল-ভ্রান্তির ব্যাপারটি পরম করুণাময় ও মহান দয়ালু এগুলো হতে তাওবা কবুল করেন। সেই তওবার প্রতি তিনি অত্যন্ত খুশী হন এবং তার পদস্খলনগুলো ক্ষমা করে দেন। তার গোনাহখাতাগুলো মিটিয়ে দেন এবং তার সৎকর্মগুলো অনেকগুণ বৃদ্ধি
করে দেন।
আর হে বায়দাবা, আমরা যদি জানতাম, ‘আল্লাহ্’ কে, তাঁর গুণাবলী কী কী। তিনি কী কী কর্ম সম্পাদন করেন, তা’হলে আমরা জানতে পারতাম, শয়তান কে, তার গুণাবলী কী কী, সে কী কর্ম সম্পাদন করে এবং কিসের প্রতিনিধিত্ব করে? তা’হলে আমরা একথাও জানতে পারতাম যে, অধিকাংশ মানুষ প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ্ পাককে ভালোবাসে এবং শয়তানকে ঘৃণা করে যদিও অধিকাংশ মানুষ সে কথা জানে না। কারণ এই অধিকাংশের অনেকের দৃষ্টিভঙ্গি বিকৃত ও কলুষিত হয়ে গেছে এবং তাদের নিকট ও তাদের বিকৃত কল্পনাতে আল্লাহ্ পাক পরিণত হয়েছেন একটি সীমালঙ্ঘনকারী, ধ্বংসাত্মক ও নিঃশ্চিহ্নকারী শক্তিতে যিনি তাদের প্রতিটি পদক্ষেপ পর্যবেক্ষণ করেন এবং তারা যেন আগ্রাসী শত্রুতা পোষণকারী ও খারাপকাজে লিপ্ত শয়তান। একারণেই তিনি তাদের ভুল-ভ্রান্তি ও পদস্খলনসমূহ কঠোর ও নিষ্ঠুরতার সাথে পর্যবেক্ষণ করেন।
আর হে বায়দাবা, এগুলো সংঘটিত হয় এই জাতির চিন্তা-চেতনার অবনতি, তাদের বক্তব্য ও আলোচনার সংমিশ্রনের ফলে। সীমালঙ্ঘনকারী, শত্রুতা পোষণকারী ও মন্দ আত্মার অধিকারী ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে সেখানে ভীতি প্রদর্শন ও আজাবের ভয় দেখিয়ে বক্তব্য দেওয়া হয় । যা তাদেরকে আরও বেশী জুলুম অত্যাচার, বাতিল, নিষ্ঠুরতা ও শত্রুতার দিকে ঠেলে দেয় এবং তারা শয়তানের অনুসরণ করে। এই বক্তব্য এবং মুমিনদের (ঈমানদার) আত্মাসমূহকে লক্ষ্য করে প্রদত্ত বক্তব্য যারা প্রকৃতপক্ষে হক, সত্য, ন্যায়, দয়া ও শান্তির মূল্যবোধের প্রতি ধাবিত হয়, যেগুলো পরম করুণাময় ‘রাহমান’ এর গুণাবলী এবং সে দিকেই তারা আগ্রহী হয়। এর কারণ হলো তারা যেন জাতিগত ভয় পায় এবং তাদেরকে ভীতি ও শংকা পেয়ে বসে এবং তাদেরকে আমল ধ্বংস হওয়া ও নিরাশা ধরে ফেলে। তারা তাদের আত্মাসমূহের (নাফস) মাঝে ভুল-ভ্রান্তি, পদস্খলন, গোপন পাপ-পঙ্কিলতা ছাড়া আর কিছুই দেখতে পায় না। তাদের ভেতরে লুকানো ভীতি ও অপমানবোধ প্রত্যেক ক্ষমতাধর ও শক্তিশালী ব্যক্তির সামনে মাথা অবনত করে ।
হে বায়দাবা, একথা অনুধাবন করা গুরুত্বপূর্ণ, যে ব্যক্তি ভয় করে সে দূরে থাকে ও পেছনে পড়ে থাকে। আর যে ব্যক্তি ভালোবাসে সে কাছে থাকে ও গ্রহণ করে। হে বায়দাবা, পৃথিবীতে এমন কোন শক্তিশালী জাতি নেই যে জাতি নির্মাণ করে ও অর্জন করে, অথচ সে জাতি নিজেদের দর্শণ তৈরী করে নি এবং নিজেদের সমাজের অকাঠামোর ভিত মজবুত করে নি ভালোবাসা, আশা ও আগ্রহের উপর নির্ভর করে। পক্ষান্তরে পৃথিবীতে এমন কোন জাতি নেই, যে জাতির নাগরিকদের হৃদয় ভয়-ভীতি ও শংকায় পরিপূর্ণ অথচ তাদের চলার পথ অক্ষমতা, দূর্বলতা, লাঞ্চনা ও অবমাননায় পর্যবসিত হয় নি। হে বায়দাবা, এ কারণেই জাতিকে রক্ষা করা ও সংরক্ষণ করা তাদের নিয়ম-কানুন, আইন ও সংবিধান সে জাতির প্রতিষ্ঠানসমূহের হেফাজত করা একান্ত জরুরী একটি বিষয়। অনুরূপভাবে সে জাতির অধিকার ও স্বার্থসমূহ রক্ষা করা মানুষের জীবনে ও মানব সমাজে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্দেশ্য। সেটা ব্যতিত দ্বীনকে রক্ষা করা যায় না, নাগরিকদেরকে হেফাজত করা সম্ভয় হয় না এবং তাদের অধিকার ও সম্মানসমূহও রক্ষা করা সম্ভব নয় না। হে বায়দাবা, নিশ্চয় যে জাতির পার্থিব দর্শন ও দৃষ্টিভঙ্গী বিকৃতি লাভ করেছে, সে জাতির দর্শন ও চিন্তা-চেতনা থেকে সাধারণ দূরদৃষ্টি এবং সভ্যতার দর্শন মানব অস্তিত্ব থেকেও বিলীন হয়ে গেছে। তাদের গুরুত্বের বিষয়ও ব্যক্তিস্বার্থকে ঘিরে সীমিত হয়ে গেছে। সে সমাজসমূহে মানুষ যেন কোন লক্ষ্য-উদ্দেশ্য বিহীন শুধুমাত্র এককভাবে বেঁচে থাকে এবং জীবন জীবিকার পেছনে ছুটে বেড়ায় খুব অল্প পরিশ্রমে লাভ করার জন্যে। এভাবে এক সময় সে মৃত্যুর পথযাত্রী হয়।
হে বায়দাবা, এ জাতিসমূহ পরিণত হয়েছে একক ব্যক্তিত্বে যারা ঝগড়া-বিবাদ করছে এবং যুদ্ধ-বিগ্রহে অবতীর্ণ হচ্ছে জীবন জীবিকার কিঞ্চিৎ শুকনো রুটির টুকরোর জন্য। আর তাদের ঘাড়ের উপর চড়ে সীমালঙ্ঘনকারী স্বৈরাচারেরা দাস ব্যবসায়ীদের মত তাদেরকে শাসন করছে। কারণ দূর্বলতা, ভীরুতা ও কাপুরুষতা তাদের আত্মার (নাফস) ভেতর করে কুরে খাচ্ছে, কেননা তারা শুধুমাত্র একক ব্যক্তি যারা স্বার্থপর এবং ব্যক্তি স্বার্থ নিয়ে পরস্পরের সাথে ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত। তারা সমাজ ও জাতির শক্তি থেকে বিচ্ছিন্ন ও আলাদা এবং জ্ঞান ও সভ্যতা শক্তিকে তারা হারিয়ে ফেলেছে।
হে বায়দাবা, জাতীয়তাবোধ ব্যতিত কোন ব্যক্তি এবং সঠিক সুন্দর ও সুষ্ঠু ভিত বিহীন ব্যক্তি ব্যতিত কোন জাতি টিকে থাকতে পারে না। আর হে বায়দাবা, জাতি ব্যতিতও কোন ব্যক্তি টিকে থাকতে পারে না। হে বায়দাবা, ব্যক্তি হলো জাতিকে রক্ষা করা, জাতির মর্যাদা বৃদ্ধি ও তাদের শক্তি উৎপাদনের জন্য দায়িত্ব প্রাপ্ত। হে বায়দাবা, আর জাতি হলো ব্যক্তিকে রক্ষার জন্য দায়িত্ব প্রাপ্ত।
হে বায়দাবা, নিশ্চয় অতীত জাতিসমূহ এবং শান্তিকামী, শক্তিশালী ও সম্মানিত জাতিসমূহ, আমরা সকলেই যেমন জানি ‘আল্লাহ্ পাকের সাথে সুসম্পর্কের সঠিক অনুধাবন ও সমঝোতার মাধ্যমে তাদের শক্তি, সম্মান ও বীরত্বের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করতো। অর্থাৎ আল্লাহ্’র প্রতি তাদের ভালোবাসার কারণে তারা সত্য, ন্যায় পরায়নতা, দয়া, ও শান্তিকে ভালোবাসতো। এভাবেই এই জাতিসমূহ তাদের আত্মাসমূহকে (মাস) বশিভূত করেছে তাদের মুক্তইচ্ছায় সত্য, ন্যায়, ন্যায়পরায়নতা ও মঙ্গলের মূল্যবোধের কারণে। যার প্রতি তাদের অন্তরসমূহে লুকায়িত ফেতরাত বা প্রকৃতি ধাবিত হয়। অর্থাৎ তারা ভালোবাসার উপর প্রতিষ্ঠিত এই দর্শনটি এবং এই সঠিক ফেতরাত (প্রকৃতি)। আর তাহলো নিয়ন্ত্রিত আত্মাসমূহ (নাফস), দাসত্বে পরিণত করা নয়। এর দ্বারা ‘শয়তান’ ও প্রত্যেক অনিষ্ট, জুলুম, ফেতনা-ফাসাদ ও সীমালঙ্ঘকারী শক্তিসমূহের কাছে মস্তক অবনত করা থেকে তাদের আত্মাসমূহকে (নাফস) স্বাধীন ও মুক্ত করেছে। অর্থাৎ তারা প্রত্যেক খারাপ ও বাতিল বা অন্যায় বস্তু থেকে তাদের আত্মাকে (নাস) স্বাধীন ও মুক্ত করেছে, তাদের হৃদয়ে, অন্তরে, ফেতরাতে (প্রকৃতি) হক বা সত্য, ন্যায়পরায়নতা, দয়া ও শান্তির প্রতি ভালোবাসা ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট ছিলো না। অর্থাৎ আল্লাহ্’র ভালোবাসা। অর্থাৎ সে সমস্ত আত্মা (নফস) পরিপূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন করেছে, তাদের আত্মায় সে সমস্ত মূল্যবোধ, সুউচ্চ অর্থসমূহের প্রতি ভালোবাসার অনুভূতি ছাড়া আর কিছুই নেই। আর সেটাই হলো ‘আল্লাহ্’র ভালোবাসা’, আর সেটাই হলো আল্লাহ্’র গুণালীর অন্তঃস্থল, আর আত্মায় (নক্স) সেটাকে বাস্তবায়ন করা ও প্রতিবিম্বিত করাই হলো জীবন ও অস্তিত্ত্বের সুমহান উদ্দেশ্য।
আর আল্লাহ পাকের ভালোবাসা ও তার উত্তমতম গুণাবলীর ভালোবাসাই হলো ভালোবাসা ও আগ্রহের অনুভূতি এবং অর্থসমূহের উৎস। এর সাথে অপমান, লাঞ্চনা, বাধ্যবাধকতার অনুভূতি অথবা এর অর্থসমূহের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। আল্লাহ্ পাককে যিনি ভালোবাসেন তিনি আল্লাহ্ পাকের ভয় ও সংশয় অনুভূতিতে সম্রস্ত থাকেন না। বরং সে তার ভালোবাসার প্রিয় পাত্র, তার বন্ধুর প্রতি ক্রোধের ভয়ের অনুভুতিতে যে, তিনি তাকে ছেড়ে চলে যাবেন ও তার প্রতি তাঁর পৃষ্ঠ প্রদর্শনের আশংকায় অনুভূতিতে সর্বদা শংকিত ও তটস্ত থাকেন। এটাই হলো ঐ সমস্ত বান্দার ভয় ও আশংকা যারা স্বেচ্ছায় আল্লাহ্’কে ভালোবেসে তাঁর দাসত্ব স্বীকার করেছে এবং তাঁর বিধি-বিধান মোতাবেক চলে ( নিয়ন্ত্রিত বান্দা)। ঐসমস্ত দাস ভয় ও ব্রাসে সন্ত্রস্ত থাকে না, যাদেরকে দাসত্বের বেড়াজালে জিম্মি করে রাখা হয়েছে।
আরবীতে আত-তা’বীদ বা নিয়ন্ত্রণ হলো ইতিবাচক নির্মাণ অনুভূতিসমূহকে একাঙ্গীভূতকরণ যা ভালোবাসা ও সন্তুষ্টির অর্থ ছাড়া আর কিছুই ব্যক্ত করে না । সেটা হলো ঐ সমস্ত অনুভূতি, যা অন্তরসমূহকে শক্তি, মর্যাদা ও সম্মানে ভরে দেয় এবং প্রত্যেকটি দাসত্বে পরিণতকারী স্বৈরশক্তি হতে প্রকৃত স্বাধীনতা এবং প্রত্যেকটি অপমান ও লাঞ্চনাবোধ হতে প্রকৃত মুক্তি অর্জন করে। সেগুলো এমন সব অনুভূতি, যা আল্লাহ্’ব ভালোবাসায় পরিপূর্ণ এবং সত্য, ন্যায়পরাণতা, সম্মান ও মর্যাদার প্রকৃত অর্থে ভরপুর। হে দার্শনিক বায়দাবা, আফসোসের বিষয় হলো, সে সমস্ত জাতি ও গোষ্ঠীর মধ্য হতে কিছু সংখ্যক ব্যক্তি বর্তমান যুগে তাদের অনেক সৎ ও মহৎ উদ্দেশ্য থাকা সত্ত্বেও সে সমস্ত জাতি ও গোষ্ঠীকে পথভ্রষ্ট করছে। বিষয়টি এরকম, যখন তারা ইচ্ছা ও চয়নের স্বাধীনতার প্রতি আজ্ঞা, অনুবর্তিতা ও বাধ্যতা থেকে বিচ্যুত হয় তখন তারা মনে করে, তারা স্বাধীনতা লাভ করেছে। তারা তাদের উন্নয়ন এবং প্রগতিকে ছেড়ে দিয়েছে অনুর্বর ও অনেক বন্ধ্যা অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেটের দিকনির্দেশনার জন্য। অনেক রাষ্ট্রীয় উপাধি এবং মিথ্যা উদ্দেশ্য প্রনোদিত দিকনির্দেশনার জন্য, তাদের বিবেক বৃদ্ধি নিষ্ক্রিয় করে দেয়ার উদ্দেশ্য। তাদের অন্তরে ‘দাসত্ব’ ও ‘আপারগতা’র মানসিকতা সৃষ্টি এবং অপারগতা, নৈরাশ্য অপমান ও লাঞ্চনা, (এবং নিয়ন্ত্রণ কারক আপারগ অবমাননা) ভীতি ও সন্ত্রস্ত বোধের অনুভূতি। এভাবে তারা সমাজের শক্তির কেন্দ্রসমূহ ও বিশেষ স্বার্থসমূহের সংঘসমূহের প্রতি তাদের আনুগত্য স্বীকারে সক্ষম হওয়া এবং সেই অসৎ লালসা চরিতার্থকারীদের রাষ্ট্র ও স্বৈরাচারী ক্ষমতার কেন্দ্রসমূহে তাদের প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিষ্ঠিত করা।।
হে দার্শনিক বায়দাবা, সেখানে আরও অনেক জাতি ও গোষ্ঠী আছে, যারা তাদের স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ না বুঝে এবং তাদের ফেতরাত বা প্রকৃতিতে তাদের অস্তিত্বের ও জীবনের উদ্দেশ্য তাদের ফেতরাত বা প্রকৃতিতে সেই স্বাধীনতার বিস্তৃত দিগন্ত ও সেই স্বাধীনতা ছন্দের সীমারেখার দূরত্ব, তাদের অস্তিত্ত্বের উদ্দেশ্য ও জীবনের মর্ম অনুধাবন না করে ভার ঝোঁক-প্রবণতা, প্রবৃত্তি ও তাদের জাগতিক কদমাক্ত পাশবিক লোভ লালসার প্রতি নিজেদেরকে অনুগত করে দেয় কোন প্রকার মূল্যবোধ অথবা চারিত্রিক বা দায়িত্বের বাধাবিঘ্ন তোয়াক্কা না করে। ফলে তারা তাদের উপর যে শক্তি ও ক্ষমতা চড়াও হয়েছে সেটা ব্যতিত অন্য কোন কিছুর প্রতি মনোযোগ ও গুরুত্ব আরোপ করে না, তারা তাদেরকে এর প্রতি আহবান করে তাদের মনবাসনা ও প্রবৃত্তির এবং তাদেরকে তার প্রতি অনেক ধ্বংসাত্মক ক্ষতিকর ঝোঁক ও প্রবণতার প্রতি ঠেলে দেয়।
আর এই সমস্ত জাতি ও গোষ্ঠিই হচ্ছে আজকের বিশ্বের ভঙ্গুর বস্তুবাদী জাতি যারা ধুধু মরুভূমিতে ও আধ্যাত্মিকতা অনুপস্থিত এমন জগতে বসবাস করে। তারা জানে না যে, তাদের জীবনের লক্ষ্য ও গতি কোন দিকে মোড় নিচ্ছে। তাদের অস্তিত্বের উদ্দেশ্য কী। তাদের আত্মা যেসমস্ত বিষয় নিয়ে তাদেরকে ব্যস্ত রেখেছে এবং তারা যেসমস্ত অনুভূতির আস্বাদন পেয়েছে সেগুলোর ওপর অটল থাকা ব্যতিত।
হে বায়দাবা, প্রকৃত অর্থে ঐসমস্ত জাতি ও গোষ্ঠীর কোন পার্থিব দর্শন নেই, তারা প্রকৃত পক্ষে স্বাধীনতার অর্থ বোঝে না এবং স্বাধীনতার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কী, তা ও তারা জানে না। তাদেরকে তাদের প্রবৃত্তির ঝোঁক-প্রবণতা, অশুভশক্তি এবং এতে তাদের কর্দমাক্ত অধঃপতনসমূহ তাদেরকে দাস ও গোলাম বানিয়ে রেখেছে। এভাবে তাদের জগতে তাদের মূল্যবোধ ও চরিত্রসমূহ ধ্বসে পড়েছে। তাদের চলার পথে ধ্বংস ও ক্ষতি ছড়া আর কিছুই নেই, যদিও তারা ধারণা করে যে, তারা তাদের বস্তুবাদীশক্তি দ্বারা অনেক ভালো কর্ম সম্পাদন করে চলেছে। এটা হলো তাদের পূর্বে যে সমস্ত জাতি অতিবাহিত হয়ে গেছে
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!