কিশোর কানন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. – ফজলুদ্দিন শিবলী – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ ফজলুদ্দিন শিবলী
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৭৬
কিশোর কানন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. – বইটির এক ঝলকঃ
ইসলামে ঢুকানোর জন্য। সে উদ্দেশ্য যখন সাধিত হয়েই গেছে তখন আর নবীর দরকার কী? সুতরাং ‘তাঁর সময় শেষ’ এ কথাই সূরার মূল প্রতিপাদ্য ।
হযরত উমর (রা.) হতবাক হয়ে বলেন, কসম খোদার! ইবনে আব্বাস! এমন অভিনব তাফসির তুমি ছাড়া আর কারও মুখে শুনিনি। [হিলইয়াতুল আওলিয়া : ১/৩১৭ ]
শৈশবে ইবনে আব্বাস (রা.) ছিলেন মিতভাষী। দরবারে উমর (রা.) প্রবীণ সাহাবায়ে কেরাম দ্বারা ঠাসা থাকতেও তিনি এই ব্যাঘ্র শাবকের হাত ধরে থাকতেন। শাবকটি বয়োকনিষ্ঠ কিন্তু জ্ঞানে গুণে সর্বশীর্ষে। একবার উমর (রা.) একদল সাহাবাসহ দরবারে বসা ছিলেন। ওখানে লাইলাতুল কদরের দিনক্ষণ নিয়ে কথা উঠল। অনেকে এ নিয়ে কথা বললেন, কিন্তু ইবনে আব্বাস (রা.) নিশ্চুপ ছিলেন।
হযরত উমর (রা.) বললেন, কি হে ইবনে আব্বাস! চুপচাপ বসে আছ যে, কিছু একটা বল । বয়োকনিষ্ঠ বলে কি চুপ থাকছ?
ইবনে আব্বাস (রা.) বললেন, আমিরুল মুমিনীন! নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক বেজোড়, তিনি বেজোড় সংখ্যা ভালোবাসেন। জগতের সপ্তাহকে তিনি সাত দিনে সাজিয়েছেন। আমাদের রুজি তিনি সাত দিনেই নির্ধারণ করেছেন। আমাদের মাথার ওপর সাত আসমানের ছাউনি দিয়েছেন। পায়ের তলায় সপ্ত জমিন গেড়ে রেখেছেন। সূরা ফাতেহাকে সাত আয়াতে বিন্যস্ত করেছেন। কালামে পাকে নিকটাত্মীয়দের সাতজনকে বিয়ে করতে নিষেধ করেছেন। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাইতুল্লায় সাতবার তাওয়াফ করেছেন। সাফা-মারওয়ায় সাতবার সাঈ করেছেন। রমিয়ে জেমারও করেছেন সাতবার। এই পরিসংখ্যানে লাইলাতুল কদরকেও আমি রমযানের শেষ দশকের সাত তারিখে দেখছি। উমর (রা.) হবনে আব্বাস (রা.)-এর অভিনব ব্যাখ্যা শুনে হতভম্ব হয়ে গেলেন। বললেন, এই বালকের ব্যাখ্যার মত সন্তোষজনক ব্যাখ্যা (লাইলাতুল কদর নিয়ে) আর কেউ দেয়নি । [প্রাগুক্ত]
জ্ঞান চর্চার প্রতি আকর্ষণ
প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঊর্ধ্বতন বন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেলেন। কিন্তু ইবনে আব্বাস (রা.)-এর জ্ঞান চর্চা থেমে থাকলো না। তাতে ফল ধরলো। ফলে ফুলে সুশোভিত হল। তাঁর পরও তিনি প্রিয় ভাইয়ের তিরোধানে কাঁদলেন। প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিরহে শোক মাতম করলেন। তাঁর ইন্তে কালে কি-ই বা করার ছিল তাঁর। যিনি এ জগতে আসেন তিনি থাকতে আসেন না। চলে তাকে যেতেই হয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই ধারাবাহিকতার ব্যতিক্রম নন। ইবনে আব্বাস (রা.) শোক ভুলতে চেষ্টা করেন। শোককে শক্তিতে রূপ দেন। নববী জ্ঞানকে বিকশিত করতে সচেষ্ট হন। পত্র পল্লব দিয়ে একে মহীরূহ বানান। কেনই বা বানাবেন না? তাঁর মাঝে রেখে গেছেন প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন কিছু যা আর কারও মাঝে রেখে যাননি। এমন দুআ তাঁকে করেছেন যা আর কাউকে করেননি। আল্লাহর হাবীবকে যতটুকু পেয়েছেন তাতে তাঁর থেকে নিতে ভুল করেননি কোনদিনও।
ইবনে আব্বাস (রা.) আরও জ্ঞান চর্চার প্রতি আগ্রহী হলেন। নববী ইলমের যতটুকু তাঁর অজানা প্রবীণ সাহাবাদের থেকে তা জানতে উদ্যোগ নিলেন। আর এতে তিনি সর্বাগ্রে ইলমে কিরাতের প্রতি ঝুঁকে পড়লেন। হাতের লেখার প্রতি তাঁর অকৃত্রিম আকর্ষণ। সেটিও হাতছাড়া করলেন না। বড় বড় সাহাবাদের থেকে শেখা জ্ঞান বিজ্ঞানকে কলমের আঁচড়ে লিখে যেতেই তাঁর হস্তলেখা শেখা। তাঁর বর্ণনা- প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকাল করলে আমি জনৈক আনসারী সাহাবীকে বললাম, আসুন! প্রবীণ সাহাবীদের থেকে জ্ঞান চর্চা করি। সংখ্যায় তাঁরা ঢের বেশি। এ সংখ্যা তো কালক্রমে কমে যাবে।
আনসারী বললেন, অদ্ভুত ব্যাপার তো! ইবনে আব্বাস! তুমি কী মনে করো, মানুষেরা সকলেই তোমার মুখাপেক্ষী; অথচ প্রবীণ সাহাবাদের সকলেই বলতে গেলে এখন জীবিত?
ইবনে আব্বাস (রা.) এই আনসারীর কথায় হতাশ হলেও হতোদ্যম হলেন না। তিনি এঁকে ছেড়ে জ্ঞান চর্চার জন্য অন্যের দ্বারস্থ হলেন । তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণিত হাদীসের সন্ধানে এমনও সাহাবীর বাড়িতে গিয়েছি যাকে গিয়ে ঘুমন্ত পেয়েছি। আমার জ্ঞানের চাদর তাঁর দরোজায় পেতে রেখেছি। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা আর বাতাসের ঝাপটায় ধুলাবালিতে আমার মুখ একাকার হয়েছে; তবুও হাদীস না শুনে ওখান থেকে ফিরিনি। বাড়িওয়ালা এক সময় আমাকে দরোজায় দেখে হতবাক হয়েছেন। তাঁর বিস্ময় ঝরে পড়েছে এভাবে- কী ব্যাপার, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চাচাতো ভাই! তুমি এখানে?
একটি হাদীসের জন্য যা আপনি প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করে থাকেন। ওটি আমার জানা নেই । শুনতে চাই সরাসরি আপনার মুখ থেকে।
আহা! বুঝলাম হাদীস শুনবে, তা আমাকে ডেকে পাঠালেই পারতে!
না না। তা হয় কী করে! এ ক্ষেত্রে আমারই তো আপনার কাছে আসতে হয়। এ লোক আমাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে বসা দেখেছে। তাঁর সাথে আমার আত্মীয়তা জেনেছে। [সফওয়াতুস সফওয়াহ : ১/৭৫০/ ইবনে আব্বাস (রা.)-এর কথা ও কর্মে তাঁর সহনশীলতা ফুটে ওঠে। ইবনে বুরায়দা বলেন, জনৈক ব্যক্তি তাঁকে গালি দিলেন। ইবনে আব্বাস (রা.) বললেন, তুমি আমাকে গালমন্দ করলে অথচ আমার কিছু বৈশিষ্ট্য আছে—
আমি আল্লাহর কালামের এমনও অনেকখানি জানি না, যা অন্যে জানে ।
মুসলিম হাকিম থেকে অনেক সময় এমনও বিধান শুনি যা তারা নিতান্ত ন্যায়বিচারসম্মতভাবে প্রতিবিধান করে থাকেন। ওটা দেখে আমি প্রীত হই; কিন্তু ওই বিধান মোতাবেক সব বিচার আচারই আমি করি না ।
আমি শুনি মুসলিম শহর নগর বর্ষণঘন মেঘে ছেয়ে যায়। এক সময় বৃষ্টি নামে। এতে আমি আনন্দিত হই। কিন্তু এতে আমার কোন চাহিদা নেই। [সফওয়াতুস সফওয়াহ : ১/৭৫৩/
অর্থাৎ আমি অজ্ঞ, অলস, উদাসীন ও নিঃস্ব। সুতরাং এরূপ একজন মানুষকে গালাগাল করলে তার এমন কি-ই বা যায় আসে!
এই হল সাইয়িদুনা ইবনে আব্বাস (রা.) ও তাঁর সহনশীলতা। গালির জবাব দিতেন সহনশীলতার মাধ্যমে, মূর্খতাকে জ্ঞানের মাধ্যমে। এই তাঁর প্রকৃতি, অভ্যাস ও চরিত্র।
মাইমুন বিন মেহরান বলেন, আমি ইবনে আব্বাস (রা.)কে বলতে শুনেছি, কোন ভাইয়ের কথা আমার কাছে অপছন্দনীয় মনে হলে তাঁকে তিন স্তরের এক স্তরের মনে করতাম
এক. তিনি আমার চেয়ে বয়সে বড় হলে আমি তার মর্যাদা অনুধাবন করতাম।
দুই. তিনি আমার সমবয়সী হলে আমার ওপর তাকে প্রাধান্য দিতাম । তিন. তিনি আমার চেয়ে বয়সে ছোট হলে তাকে গুরুত্ব দিতাম। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) ইলমে নববী অন্বেষায় এবং তা একত্রীকরণে কখনোই অহংকার করেননি। যার কাছেই জ্ঞানের সুঘ্রাণ পেতেন তাঁর থেকেই শিখে নিতেন, হোক সে বড় কিংবা ছোট। স্বাধীন বা পরাধীন।
আবু রাফে যিনি রাসূলে খোদা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খাদেম ছিলেন। তাঁর কাছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণিত কিছু হাদীস কাষ্ঠখণ্ডে লিপিবদ্ধ ছিল। ইবনে আব্বাস (রা.) তাঁর থেকে তা সাগ্রহে সোৎসাহে সংগ্রহ করেন। এতে বিন্দুমাত্র কুণ্ঠাবোধ করেননি।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) ইবনে আব্বাস (রা.)-এর জ্ঞান চর্চার প্রতি অকৃত্রিম আগ্রহ দেখে বিস্ময়বোধ করতেন। বলতেন, আমরা যা পেয়েছি তা যদি এই ছেলে পেত তাহলে আমাদের চেয়ে বহু বহু গুণে ঊর্ধ্বে উঠে যেত।
আলেমদের সহনশীলতা
সূর্য উঠলে মানব প্রকৃতি ও বিশ্ব চরাচর তার সৌররশ্মি পায়। মৃতপ্রায় জমিন পানির ছোঁয়া পেলে তার থেকে সবুজ পত্র-পল্লব উদ্গত হয়। আর হৃদয় যদি জ্ঞান-বিদ্যায় টইটম্বুর হয় তখন সে হয় সহনশীল । ইবনে আব্বাস (রা.) সব সময়ই এক জ্ঞানসূর্য ছিলেন, ঊর্বর জমি ছিলেন ও বিদ্যায় ভরপুর ব্যক্তিত্ব ছিলেন। ছিলেন আলেম, আবেদ ও সহনশীল। খুব সহজে কথা বলতেন না। রূঢ় আচরণ কাকে বলে তিনি জানতেন না। জানবেন কী করে- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর গৃহে যিনি লালিত, দরবারে নবুওয়াতে যিনি দীক্ষিত, উদারনৈতিক পরিবেশে যিনি পালিত; তাঁর পক্ষে রূঢ় আচরণ সম্ভবপর হয় কী?
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!