কিসরার মুকুট – নাসীম আরাফাত – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

কিসরার মুকুট – নাসীম আরাফাত – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ নাসীম আরাফাত

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১১৪

কিসরার মুকুট – বইটির এক ঝলকঃ

রবীয়া ইবনে কা’ব। মদীনার এক যুবক ছেলে। নবযৌবনের জোয়ার
লেগেছে তার গায়। প্রাণ প্রাচুর্যে টইটুম্বুর তার হৃদয়। আকাশের নীলিমা ছাড়িয়ে গেছে তার আশা আকাঙ্ক্ষা। জীবনে বহু দূরে যাবে। অনেক কিছু করবে। খ্যাতিমান সুপুরুষ হবে। ইত্যাদি বহু তার কামনা। বহু তার আশা। এগুলোকে বাস্তবায়িত করতে যখন জীবন যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো ঠিক তখনই কাকতালীয় ভাবে রাসূলের সাথে তার দেখা হয়ে গেলো। আর অমনি ইসলাম গ্রহণ করে ফেললো।
রবীয়া (রা) বলেন, আমি যখন রাসূলকে দেখলাম, তাঁর অমিয় বাণী শুনলাম। মনের অজান্তে তাঁর ভালবাসা আমার শরীরের কোষে কোষে মিশে গেলো। রক্তের কণিকায় কণিকায় ছড়িয়ে পড়লো। আমি অধীর চঞ্চল হয়ে পড়লাম। রাসূলকে ছেড়ে আমি কোথাও থাকতে পারি না । রাসূলকে না দেখলে মন আমার স্থির হয় না। তাঁর সান্নিধ্য আমার হৃদয় জুড়ে শাস্তির কোমল পরশ বুলিয়ে দেয়।
একদিন আমার বিবেক আমাকে ডেকে বললো, ছি-ছি, রবীয়া! তুমি তো এখনো রাসূল থেকে বহু দূরে। যাও, এখনই তাঁর নিকট যাও। নিজেকে তাঁর খিদমতে, তাঁর সেবায় সঁপে দাও। তিনি যদি কবুল করেন তবে তো মহাসৌভাগ্য। ইহকাল ও পরকালের সব কামিয়াবী তোমার হাতের মুঠোয় চলে আসবে। যাও, এক্ষুণি যাও। বিবেকের তিরষ্কারে অস্থির হয়ে রাসূলের দরবারে ছুটে এলাম। মনের ব্যাকুলতা, অস্থিরতা আর আকুতির কথা খুলে খুলে রাসূলকে বললাম। রাসূল তা শুনে খুব খুশী হলেন। মুগ্ধ হলেন। শিশির ধোয়া স্বচ্ছ সুন্দর বিমল হাসি ছড়িয়ে পড়লো তাঁর ওষ্ঠাধরে।
সেদিন থেকে রবীয়া রাসূলের খাদেম। রাসূলের খিদমত করা, আর রাসূলের সেবা করাই তার কাজ। রাসূল যেখানে যান রবীয়া (রা) ও সেখানে যান। কোন কিছুর প্রয়োজন হলে তিনি তা এগিয়ে দেন। সারাদিন রাসূলের সেবায়, রাসূলের খেদমতে কাটিয়ে দেন। এশার পর রাসূল বিছানায় গেলে রবীয়া (রা) চলে যান।
এভাবে বেশ কিছুদিন কেটে গেলো। তারপর হঠাৎ আমার বিবেক আবার কষাঘাত শুরু করলো। আরে রবীয়া! তুমি তো এখনো রাসূলের সার্বক্ষণিক খাদেম হতে পারলে না। রাসূলকে রেখে রাতে কোথায় চলে যাও? এটা বড় অন্যায়, বড় দুর্ভাগ্য। সেদিন থেকে আমি রাতে কোথাও যেতাম না। রাসূলের গৃহের দরজায় বিনিদ্র রজনী কাটিয়ে দিতাম। খিদমতের আশায় বুক বেঁধে পড়ে থাকতাম। রাতে রাসূলকে ভিন্ন অবস্থায় দেখতাম। কখনো নামাযে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে রাত কাটিয়ে দিতেন। কখনো ভাবাবেগে তন্ময় হয়ে সূরা ফাতেহা কার বার পড়তে থাকতেন। আর কপোল বেয়ে অশ্রুর ধারা বয়ে যেতো। আবার কখনো ‘ছামি আল্লাহু লিমান হামিদা’ পড়তে পড়তে নিশিরাত হয়ে যেতো। এমনিভাবে রাসূলের খিদমতে আমার দিনগুলো বেশ আনন্দেই যাচ্ছিলো।
একদিন দেখি রাসূলের চেহারা আনন্দে ঝিলমিল করছে। দারুন সুন্দর, অত্যন্ত অপরূপ সে দৃশ্য। হাতের ইশারায় তিনি আমাকে কাছে ডাকলেন। মায়া মায়া আবেগ ভরা তাঁর কণ্ঠ। বললেন, হে রবীয়া! তুমি আজ কি চাও? যা চাবে তাই দেবো। রাসূলের আবেগ ভরা কথায় আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম। আমার চিন্তাশক্তি বিকল হয়ে গেলো। কী চাইবো? কী বলবো? এই ছোট্ট প্রশ্নবোধক চিহ্নটি আমার দু’চোখে ধীরে ধীরে বিরাট আকার ধারণ করলো। আমি কিছুই চিন্তা করতে পারছিলাম না। অগত্যা বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাকে একটু সময় দিন। চিন্তা করবো।
রাসূলের মুখে হাসি ফুটে উঠলো। বললেন, বেশ, তাই কর। তখন আমার অবস্থা দারুন অসচ্ছল। অত্যন্ত কষ্টদায়ক। দরিদ্র, বিত্তহীন মুসলমানদের সাথে মসজিদে নববীতে পড়ে থাকতাম। ছদকার কিছু এলে রাসূল তা আমাদেরকে দিতেন। আমরা তা খেতাম। আর হাদিয়া কিছু এলেও প্রায়ই তাই করতেন। এভাবে কষ্টেসৃষ্টে আমাদের দিন কাটতো। তাই নফস এবার কচ্ছপের মতো তার কুৎসিত মাথাটি বের করে বললো, আরে রবীয়া! এই তো মহাসুযোগ। রাসূল থেকে দুনিয়ার কিছু সম্পদ চেয়ে নাও। সারাজীবন সুখে থাকতে পারবে। কোন কষ্ট থাকবে না । নিশ্চিন্তে, নির্বিঘ্নে ছন্দময় জীবন যাপন করবে। কিন্তু পরক্ষণেই আমার বিবেক তীব্র তিরষ্কার করলো। ছি ছি, ক্ষণস্থায়ী এই দুনিয়ার মোহে তুমি পড়ে গেলে। শোন, রিযিকের জিম্মাদার আল্লাহ। তিনি তা বন্টন করে রেখেছেন। সুতরাং রাসুলের কাছে পরকালের কামিয়াবীর দু’আ চাও। নফস আর বিবেকের এই আলো-আঁধারের দোলায় আমি বিবেককেই প্রাধান্য দিলাম। ইহকালের পরিবর্তে পরকালকেই বেছে নিলাম ।
তারপর ধীরপদক্ষেপে রাসূলের নিকট এলাম। রাসূল আমাকে দেখেই হেসে ফেললেন। মিষ্টি মধুর নির্মল সেই হাসি। নিখুঁত সুন্দর নিটোল সেই হাসি। আমার হৃদয়ে এবার সাহসের আনাগোনা। বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি জান্নাতে আপনার চিরসাথী হতে চাই।
আমার আবদার শুনে রাসুল অপ্রস্তুত হয়ে গেলেন। দারুন বিস্মিত হলেন। বললেন, তোমাকে এ কথা কে শিখিয়ে দিয়েছে? বললাম, কেউ না। তবে আমার বিবেক বলেছে, আমি যেন আপনার কাছে পরকালের কিছু চেয়ে নেই। রাসূল বললেন, রবীয়া! এছাড়া অন্য কিছু কি চাবে? আমার কণ্ঠ তখন অত্যন্ত দৃঢ়। দারুন মজবুত। বললাম, না, তা হয় না। এছাড়া আর কিছুই আমি চাই না।
রাসূল তখন বেশ তন্ময় হয়ে গেলেন। কিছুক্ষণ ভাবলেন। ভাবনার জগতে যেন হারিয়ে গেলেন। তারপর তিনি মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে বললেন, বেশ, তাহলে বেশী বেশী সিজদার মাধ্যমে আমাকে তোমার আশা বাস্তবায়নে সাহায্য কর। রাসূলের ভালবাসা, রাসূলের মুহাব্বত রবীয়া ইবনে কা’ব (রাঃ)এর হৃদয়ের পরতে পরতে মিশে একেবারে একাকার হয়ে গেছে। এখন রাসূলই তার জান। রাসূলই তার প্রাণ। রাসূলের খিদমতে সারাদিন কাটিয়ে দেন। কি সকাল, কি দুপুর, কি সন্ধ্যা, কি রাত। সর্বদা রাসুলের পাশেই থাকেন। ক্ষণিকের তরেও তাঁর মন রাসূল থেকে দূরে থাকতে চায়
না।
রবীয়া (রা) বলেন, এভাবে দিনগুলো বেশ ভালই যাচ্ছিলো। এরই মধ্যে একদিন রাসুল আমাকে কাছে ডাকলেন। তাঁর ওষ্ঠ প্রান্তে তখন নির্মল ঈষৎ হাসির ঝিলিক। বললেন, রবীয়া! তুমি কি বিয়ে থা করবে না? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার খিদমত থেকে আমাকে বিমুখ রাখবে এমন কিছু করতে আমি পছন্দ করি না। তদুপরি আমার কাছে অর্থকড়িও নাই যা থেকে মোহর দিবো। ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবো। আমার কথা শুনে রাসূল নিরব হয়ে গেলেন। আর কিছু বললেন না।
এর কিছুদিন পর রাসূল আবার আমাকে কাছে ডাকলেন। তাঁর ওষ্ঠ প্রান্তে তখন সেই অপূর্ব নির্মল হাসির ঝিলিক। বললেন, রবীয়া! তুমি কি বিয়ে করবে না? আমি তখন পূর্বের ন্যায় একই উত্তর দিলাম। কিন্তু তারপর থেকে আমার মনে এক অভূতপূর্ব অস্থিরতা বিরাজ করতে লাগলো। একটু একাকী হলেই মনের মাঝে এক অশান্তি দাপাদাপি শুরু করে। সারা মন জুড়ে এক ধিক্কার ধ্বনি বেজে চলে। ছি-ছি-ছি, রবীয়া ! তুমি এ কী করলে? রাসূল তো তোমার দ্বীন-দুনিয়া সম্পর্কে সমধিক জ্ঞাত। তাহলে কেন তোমার এই বিমুখতা? কেন এই অস্বীকৃতি? এভাবে চলতে চলতে এক পর্যায়ে আমার মন অত্যন্ত প্রত্যয়ের সাথে বললো, হাঁ, এরপর যদি রাসূল এ প্রসঙ্গে আলোচনা করেন তবে আর বিমুখতা নয়। আর অস্বীকৃতি নয় ।
এর কয়েক দিন পরই রাসুল আমাকে আবার ডাকলেন। বললেন, রবীয়া! তুমি কি বিয়ে থা করবে না? আমি তখন এমনই একটি সময়ের, একটি মুহূর্তের অপেক্ষায়ই ছিলাম। তাই আর দেরী করলাম না। বিনীত কণ্ঠে বললাম, কিন্তু আমার মত নিঃস্ব বিত্তহীন যুবকের হাতে কি কেউ তার প্রাণপ্রিয় কন্যাকে তুলে দিবে? মুখে তখন যাই বললাম; কিন্তু আমার কণ্ঠে তখন অদ্ভূত নির্ভরশীলতা ও চরম আস্থা বিরাজমান ছিলো।
আমার উত্তর শুনে রাসূল কেমন যেন একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেলেন। কপালে যেন চিন্তার কয়েকটি কুঞ্চন রেখা দেখা দিলো। তাঁর চিন্তাশক্তি তখন বিদ্যুৎগতিতে ছুটে বেড়াতে লাগলো মদীনার ঘরে ঘরে, কবীলায় কবীলায়। তারপর আবার তা ফিরে এলো। এবার রাসূলের ঠোঁটের কোণে মিষ্টি হাসির একটু ঝিলিক খেলে গেলো। বললেন, যাও, অমুক বংশে গিয়ে তাদের বল, রাসূল তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন যেন আমার সাথে তোমাদের অমুক মেয়েকে বিয়ে দাও।
রাসূলের কথা শুনে আমি লজ্জায় একেবারে মরে গেলাম । ভাবাবেগের চূড়া থেকে ধীরে ধীরে বাস্তবতার কঠিন ভূমিতে নেমে এলাম। বুদ্ধিসুদ্ধি যেন গুলিয়ে যায় যায়। কিন্তু কী করবো? রাসূলের নির্দেশ তো মানতেই হবে। বাস্তবায়িত করতেই হবে। ফলে একরাশ লজ্জার ডালি মাথায় নিয়ে আশার আলোতে দোল খেতে খেতে সেই কবীলায় গিয়ে পৌঁছলাম। বললাম, রাসূল আমায় পাঠিয়েছেন, যেন আপনারা আপনাদের অমুক মেয়েকে আমার সাথে বিয়ে দেন।
,
চরম বিস্ময়, অত্যন্ত হতবুদ্ধিতার ভাব ফুটে উঠলো তাদের চোখে মুখে। তারা যেন থতমত খেয়ে গেলো। বিস্ময়ের এই ধাক্কা সইতে না পেরে বললো, আচ্ছা, অমুক মেয়ে! আমি বললাম, হাঁ। আমার কণ্ঠের স্থিরতা, দৃঢ়তা ও অবিচলতায় তারা যেন সম্বিত ফিরে পেলো। বিস্ময়তায় ভরা তাদের কণ্ঠস্বর এবার মিষ্টি মধুর হয়ে উঠলো। বললো, আল্লাহর রাসূলকে অশেষ ধন্যবাদ আর তাঁর প্রতিনিধিকেও অশেষ ধন্যবাদ। ইনশা আল্লাহ, রাসূলের প্রতিনিধি তাঁর অভিলাষ পূরণ না করে

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top