যায় বেলা অবেলায় – শফিউদ্দিন সরদার – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

যায় বেলা অবেলায় – শফিউদ্দিন সরদার – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ শফিউদ্দিন সরদার

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২২১

যায় বেলা অবেলায় – বইটির এক ঝলকঃ

রাজা গণেশকে একা পেয়ে সহদেব রায় বললেন, মধু খাঁর মতো এমন একজন তুখোড় রণবিদ খোলা ময়দানে দিল্লীর ফওজের সামনা-সামনি দাঁড়ানোর মতো এমন একটা মারাত্মক প্রস্তাব কেমন করে রাখলেন? ব্যাপারটা বুঝলাম না তো দাদা?
রাজা গণেশ বললেন, মূর্খ। ষাড়ের শত্রু বাঘে মারলে লোকসানটা কোথায়?
পান্ডুয়ার পাশেই একডালা দুর্গ। দুর্গের তিনদিকে থৈ থৈ পানি। নদীর মতো গভীর করে তিনদিকে পরিখা কাটা। এক দিকে বন। দুর্ভেদ্য আর বিশাল।
এই সুরক্ষিত একডালা দুর্গে এসে সপরিবারে আশ্রয় নিলেন সুলতান সিকান্দার শাহ। সঙ্গে রইলো সেনা-সৈন্য, পাত্র-মিত্র ও তাদের পরিবার-পরিজন। আর রইলো পর্যাপ্ত রসদ ও অস্ত্রশস্ত্র। পাণ্ডুয়া শহরের সাধারণ নাগরিকদের কিছুদিনের জন্যে স্থানান্তরে আশ্রয় নেয়ার নির্দেশ দেয়া হলো ।
বিনা বাধায় দিল্লীর ফৌজ পাওয়ায় এসে পৌঁছলো। জনশূন্য শহরে বিজয় নিশান উড়িয়ে দিয়ে তারা দুর্গের দিকে ধাবিত হলো এবং পরিখার অপর পাড়ে এসে সমবেত হলো। পরিখার এপার থেকে পাণ্ডুয়ার ফেওজ তীর-ধনুকের সাহায্যে বাধা দেয়ার চেষ্টা করলো। উভয় পক্ষের মধ্যে কিছুক্ষণ তীর ধনুকের লড়াই চললো। কিন্তু দিল্লীর ফৌজ সংখ্যায় অনেক গুণে বেশী হওয়ায় সেদিক থেকে বৃষ্টির মতো তীর নিক্ষেপ হতে লাগলো। পাণ্ডুয়ার ক্ষুদ্রাকার বাহিনী বিশাল বাহিনীর এই শরবৃষ্টির বিরুদ্ধে বিশেষ সুবিধে করতে পারলো না। তারা ফিরে এসে দুর্গের মধ্যে আশ্রয় নিলো।
কাদামাটির দুর্গ। অত্যন্ত চওড়া ও অনেক উঁচু তার আবেষ্টনী দেয়াল। দেয়ালের মাথার উপর ঘন ঘন বাংকার জাতীয় খুপরী। খুপরীর মধ্যে তীরন্দাজ ও বল্লমধারী সেপাইরা মোতায়েন । দুশমনকে দেখামাত্র অদৃশ্য থেকে তীর বল্লম ছুঁড়ে মারার সুচারু ব্যবস্থা রেখে খুপ্রীগুলো তৈরি করা। এ অবস্থায় বাইরে থেকে হামলাকারীদের বিপদ পদে পদে। কখন কোন্‌দিক থেকে তীর-বল্লম-নেজা এসে ঘায়েল করবে তাদের, সে ব্যাপারে তারা একেবারেই অনিশ্চিত। অপরপক্ষে খুপরীর মধ্যে অবস্থিত পাণ্ডুয়ার সেপাইরা সম্পূর্ণ নিরাপদ। ফৌজ নিয়ে ফিরোজ শাহ কয়েকদিন পরিখার ওপারেই তাঁবু গেড়ে রইলেন। পরে পরিখার উপর পুল তৈরি করে সেনা সৈন্য পার করলেন। হাতি ঘোড়াগুলোকে সাঁতরিয়ে পার করানো হলো। এপাড়ে এসে দিল্লীর ফৌজ দুর্গের উপর বার বার হামলা চালাতে লাগলো। কিন্তু প্রতিবারেই অনেক প্রাণ খেসারত দিয়ে তাদের পিছু হটতে হলো। হাতি নিয়ে হামলা করেও তারা কামিয়াব হতে পারলো না। অতর্কিত ও অব্যর্থ বর্শার আঘাতে প্রাণ দিলো অনেক মাহুত, আহত হলো অনেক হাতি। দুর্গের চারদিকেই খুপূরী। চারদিকেই সশস্ত্র সেপাই। এদের একখানা অস্ত্রও অপচয়ে যাচ্ছে না। বাগের মধ্যে এলে একঘায়েই এক একজনকে ধরাশায়ী করছে। তীর-ধনুক, নেজা-বল্লম আর ঢাল-তলোয়ারের লড়াই। কাজেই পাণ্ডুয়ার ফৌজ দিল্লীর ফৌজের তুলনায় অত্যন্ত ক্ষুদ্রকায় হলেও অবস্থানের গুণে তারা এখন দুর্জেয়।
পয়লা বারের মতো ফিরুয শাহ তোঘলক এবারও প্রমাদ গুণলেন। পাণ্ডুয়ার ফৌজকে দুর্গের বাইরে না পেলে বা দুর্গের মধ্যে প্রবেশ করতেনা গারলে পাণ্ডুয়া অভিযান তাঁর এবারেও ব্যর্থ হয়ে যাবে। দিনের পর দিন গড়িয়ে যাচ্ছে। বর্ষা মৌসুম আসন্ন। তাঁবুর ভেতর দিল্লীর সুলতান ছটফট করতে লাগলেন। পুরোপুরি বর্ষার নামার আগেই তাঁর সোপাইদের বাংলা থেকে সরিয়ে নিতে না পারলে কমপক্ষে অর্ধেকটাকে বন্যার স্রোতে ভাসিয়ে দিয়ে যেতে হবে। গতানুগতিক আক্রমনের ফল হচ্ছে না দেখে, তিনি কৌশল অবলম্বনের কথা চিন্তা-ভাবনা করলেন।
একদিন তিনি তাঁর তামাম সালারদের তলব দিলেন। সালাররা এসে হাজির হলে তিনি সখেদে বললেন, আর কতদিন এইভাবে কাটাতে হবে আমাদের? এতগুলো হাতি থাকতে তুচ্ছ ঐ মাটির দেয়াল এতদিনেও ভাঙ্গতে তোমরা পারলে না?
সালার হিসামুদ্দীন বললেন, জাঁহাপানা, কোশেশ তো কিছু কম করছিনে আমরা। কিন্তু দেয়ালের পাশে হাতিগুলোকে ভেড়ানোই যাচ্ছে না। অদৃশ্য হাত থেকে বৃষ্টি মতো নেজা, বল্লম আর তীর ছুটে আসছে।
ফিরুয শাহ বললেন, এক জায়গায় কামিয়াব হতে না পারলে দুস্রা জায়গায় হামলা চালিয়ে দেখো। এতবড় বেষ্টনীর সব জায়গাতেই সমানভাবে ফৌজের অবস্থান নাও থাকতে পারে?
শাহজাদা ফতে খাঁ বললেন, সব জায়গারই একই অবস্থা, আব্বাহুজুর! সিপাহসালার তাতার খাঁ, মালিক দিলবর, আমি আর এই হিসামউদ্দীন সাহেব – আমরা এমন জায়গা রাখিনি যেখানে হামলা চালানো হয় নি। কিন্তু তামাম জায়গায় পাণ্ডুয়ার ফৌজ সমপরিমাণে মোতায়েন ।
হিসামউদ্দীন বললেন, অর্থাৎ তারা তাদের তামাম ফৌজ ঐ দেয়ালের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে রেখেছে। কয়েক লহমার জন্যেও কোন ফাঁকা জায়গা পেতাম যদি, হস্তি বাহিনী চালিয়ে ঐ মাটির দেয়াল মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে পারতাম!
ফিরুয শাহ তোঘলক বললেন, সব লড়াই-ই শুধু বল দিয়ে জেতা যায় না, কলা-কৌশলেও অনেক লাড়ায়ে জিততে হয়। ছল-চাতুরির আশ্রয়ও রণের ক্ষেত্রে অপ্রযোজ্য নয়। কৌশলের আশ্রয় নাও। ফাঁকা জায়গা না থাকলে একটা জায়গা ফাঁকা করে ফেলো।
শাহজাদা ফতে খাঁ বললেন, কিভাবে?
ঃ পাণ্ডুয়ার দরবারে যারা আছে, সবাই তারা আসমানী পুরুষ নয়। গান্দারও অনেক পাবে সেখানে। দিমাগটা এবার এইদিকে ঘুরিয়ে নিয়ে পাত্তা লাগাও তাদের সাথে। মোটা ইনাম আর অর্থের লোভ দেখাও। ভরাট জায়গা ওরাই নিজ গরজে ফাঁকা করে দেবে। সেইদিকেই দিমাগ ঘোরালেন দিল্লীর সালারেরা। পাণ্ডুয়ার গাদ্দারদের হদিস নিতে লাগলেন। অল্পদিনের মধ্যেই একাধিক গাদ্দারের তালিকা তাঁদের হাতে এসে পৌঁছলো। এবার তাঁরা গাদ্দারদের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের রাহা খুঁজতে লাগলেন।
বৃষ্টিভরা মেঘ নীল আকাশে আনাগোনা করছে। অল্প দিনেই ঢল নামবে। ঢল নামলেই বর্ষা। এতদিনও দিল্লীর ফৌজ তাদের কেশাগ্রও স্পর্শ করতে না পারায় একডালা দুর্গের মধ্যে খোশ প্রবাহ বইতে লাগলো। রাজা গণেশকে সামনে পেয়ে সহদেব রায় হাসিমুখে বললেন, রাজা সাহেব, শেষ অবধি বোধ হয় জিতেই গেলাম আমরা। পরিখার ধারে বসে বসে মশা মারা ছাড়া দিল্লীর ফৌজের আর কোন তৎপরতাই নেই ।
দু’জনেরই কাঁচা বয়স। রস করেই কথাটা সহদেব রায় বললেন। কিন্তু বয়সের তুলনায় গণেশ অনেক বুদ্ধিমান। সহদেব রায়ের দিকে কড়া নজরে তাকিয়ে তিনি বললেন, বুঝতেই যখন পারছো সবই, তখন কাজকামগুলো বেয়াকুফের মতো করছো কেন?
সহদেব রায় ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে রইলেন। রাজা গণেশ বললেন, সামনে এবার অনেকেরই অনেক উত্থান-পতন ঘটবে। মূর্খের মতো খুপ্রীর মধ্যেই গাধা-খাটুনি না খেটে সুলতানের সামনে এসে দৌড় ঝাঁপ কিছু করো। নজরে না পড়লে দিনরাত গরুর মতো খেটেও কোন ফায়দা নেই।
মিয়া মোস্তাককে দেখে রাজা গনেশ আদাব দিয়ে বললেন, কি ব্যাপার। উজিরে আযমকে ইদানীং একটু বেশী খুশী মনে হচ্ছে?
মিয়া মোস্তাক খোশ দীলে বললেন, বিপদটা বোধ হয় কেটেই গেলো, হে রাজা! সুলতানে আলার যে সত্যিই দূরদর্শিতা আছে, এ কথা স্বীকার আমাদের করতেই হবে। : ঠিক বুঝলাম না।
: মুখোমুখী লড়াইয়ের চেয়ে একডালা দুর্গের মধ্যে আশ্রয় নেয়ার জিদ সুলতানই ধরেছিলেন। আমরা তো বরং অন্য কথা বলেছি। এখন দেখছি, তাঁর পরিকল্পনাই ঠিক। ঃ তাই এত খুশী দেখাচ্ছে আপনাকে?
: ব্যাপারটা তো খুশীরই বটে!
: কিন্তু উজির সাহেব, বেল পাকলে কাকের কি?
উজির সাহেব এ কথায় সচেতন হয়ে উঠলেন। বললেন, মানে?
ঃ মানে, এর ফায়দাটা তো পুরোপুরি আলী আসগারই লুটবে। আমার আপনার খুশী হওয়ার ফাঁকটা কেথায় এখানে?
ঃ আলী আসগারই ফায়দা লুটবে?
ঃ লুটবে না? সুলতানের মতকে সমর্থন দিয়ে সে তখনই অনেক বাহবা কুড়িয়েছে। এখন আবার দিনরাত সে সমানে সবার উপর খবরদারি করে বেড়াচ্ছে। কাউকে এক লহমার জন্যেও পাশ ফিরাতে দিচ্ছে না। যেন সে-ই এই দুর্গের একমাত্র মুহাফিজ ! সুলতানও আলী আসগারকেই তাঁর ডান হাত বানিয়েছেন। হামেশা তার সাথেই শলাপরামর্শ করছেন। এ যুদ্ধে জয় হলে আলী আসগারের হবে না তো, আমার আপনার হবে?
মিয়া মোস্তাক গম্ভীর হয়ে গেলেন। বললেন, বয়সটা কম হলেও কথাটা তো ঠিক ধরেছেন। খামাকাই আমরা ছাইয়ের দড়ি পাকাচ্ছি!
ঃ ব্যাপারটা এবার বলুন!
সারার নজিবুল্লাহকে এক পাশে পেয়ে মিয়া মোস্তাক বললেন, পরিস্থিতি সম্পর্কে জাঁদরেল সালার নজিবুল্লাহ সাহেবের কোন মতামত পাচ্ছিনে। এ ব্যাপারে আমাদের কিছু বলুন?
সালার নজিবুল্লাহ নিষ্প্রাণ কণ্ঠে বললেন, এইভাবে আর কিছুদিন গেলে জয় আমাদের সুনিশ্চিত। তবে –
: তবে?
: আপনি বিজ্ঞ ব্যক্তি। সবই তো বুঝতে পারছেন।
ঃ তবু আমাদের মধ্যে বোঝার কোন ফাঁক থাকলে চলবে না। আপনার অভিমতটা পরিষ্কারভাবে বলুন।
: পরিষ্কার মানে, এ জয় নিয়ে উৎফুল্ল হওয়ার মতো তেমন কোন কারণ নজরে আমার পড়ছে না।
ঃ কেন – কেন?
ঃ আমরা তো এ লড়াইয়ে সামনের কাতারের লোক নই। সামনের কাতারের লোক হলেন খান আসকান, আলী আসগার, আব্দুল আজিজ, হাসান মাহমুদ এঁরা। সুলতানের কাছে এঁদের ইযত দিন দিন বাড়ছে। এ লড়াইয়ে বিজয় যদি আসেই, তাহলে সে কৃতিত্বের কতটুকু হিস্সা পাবো আমরা?
ঃ তাজ্জব! আপনার দীলেও তাহলে
একই প্রশ্ন?
ঃ শুধু আমার একার দীলেই নয়, নবীন-প্রবীণ সবার সাথেই কথা হয়েছে আমার। রাজা গণেশ, আতাহার বেগ, মাখন লাল, কাশিম খাঁ, সহদেব রায় সবারই দীলে এখন এই একটাই আফসোস্ !
ঃ অবশ্য ভুল আমাদেরও আছে। আমরা যদি সকলেই আগাগোড়া তৎপর থাকতাম, তাহলে পরিস্থিতি এ কিসিমের হতো না। ছেলে-ছোকড়াদের কথা শুনে কি বুঝলেন আপনারা – আমাদের কাউকেই তৎপর হতে দিলেন না। ভাবলেন, সুলতানকে শিক্ষা দেবেন একটা। এখন সে শিক্ষাটা ঘুরে এসে আমাদের ভাগেই পড়লো।
ঃ সবাইতো ঠিকই ছিলো। কিন্তু ঐ ব্যাটা আলী আসগার যে এতটা মরিয়া হয়ে এই লড়াইয়ের পেছনে খাটবে, তা কি কেউ সোচ্ করতে পেরেছি!
উভয়েই চিন্তান্বিত হয়ে উঠলেন।
কয়দিন পরই হঠাৎ সন্ধির প্রস্তাব নিয়ে দিল্লীর এক দূত দূর্গের মধ্যে প্রবেশ করলো। সন্ধির শর্তগুলোর একটাও মেনে নেয়ার উপযুক্ত ছিলো না। তবু এ প্রস্তাব নিয়ে দূত এলো দুর্গের ভেতর এবং সুলতান সিকান্দার শাহর অস্বীকারোক্তি শুনে আবার সে বেরিয়ে গেলো দূর্গ থেকে। সন্ধির প্রস্তাব ব্যর্থ হলো। কিন্তু দূতের এই দুর্গের মধ্যে আগমনটা আদৌ ব্যর্থ হলো না। এই দূতের মারফত মিয়া মোস্তক পত্র পেলেন ফিরু
শাহ তোঘলকের।
কয়েক দণ্ডের জন্যে দুর্গের দেয়ালের যে কোন অংশের তৎপরতা বন্ধ রাখার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ফিরুয শাহ। বিনিময়ে মিয়া মোস্তাককে এবং তাঁর পক্ষের লোক জনদের অভাবনীয় ইনামের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। সেই সাথে জানিয়েছেন, পাণ্ডুয়া জয়ের পর পাণ্ডুয়ার হর্তাকর্তা তাদেরই তিনি বানিয়ে যাবেন। সিকান্দার শাহর গোলামী করার বদলে পাণ্ডুয়ার মালিক হবেন তারাই।
পত্র পেয়ে মিয়া মোস্তাক আকাশের চাঁদ পেলেন হাতে। সঙ্গে সঙ্গে স্বগোত্রীয় সাবুদদের নিয়ে গোপন বৈঠকে বসলেন। ফিরুয শাহর প্রস্তাব সকলেই লুফে নিলো। এত বড় খোশ কিস্মতি তাদের অপেক্ষায় আছে দেখে সকলেই আনন্দে আত্মহারা হলো। ব্যাটা আলী আসগার! খাড়াও এবার!
দুর্গের উত্তর-পশ্চিম কোণে দেয়ালের খুপ্রীর মধ্যে যে সব সেপাই পড়ছিলো, সবাই তোরা এদের লোক। স্থির হলো, ওদেরকে সরিয়ে নিয়ে ওখানকার তৎপরতা বন্ধ করে দেয়া হবে। সময়টাও নির্ধারণ করা হলো এবং খবরটা দিল্লীর শিবিরে পৌঁছে দেয়া হলো।
যথাসময়ে দিল্লীর ফৌজ একডালা দুর্গটাকে আর একবার ঘিরে ফেললো। দুর্গের উত্তর-পশ্চিম কোণের দিকে ধাবিত হলো হস্তিবাহিনীর সাথে দিল্লীর ফৌজের বিরাট এক অংশ। সবারই মূল লক্ষ্য উত্তর-পশ্চিম কোণ। নামকাওয়াস্তে দুর্গের চারদিকে ঘিরে ফেলাটা যুদ্ধের একটা কৌশল। পাণ্ডুয়ার বাহিনীকে চারদিকেই ব্যস্ত রাখা, যাতে করে তারা উত্তর-পশ্চিম কোণের দিকে নজর রাখার ফুরসুত করতে না পারে।
কথা মাফিক কাজ হলো। দুর্গের উত্তর-পশ্চিম কোণ থেকে তীর-বল্লম কিছুই নিক্ষিপ্ত হলো না। বাধা না পেয়ে হস্তিবাহিনী বিপুল বেগে দেয়ালের কাছে চলে এলো। দলে দলে হাতি এবার দেয়ালের গায়ে ধাক্কা মারতে লাগলো। শতাধিক হাতির সমবেত ধাক্কায় দেয়ালের এক জায়গায় ফাটল ধরলো এবং একটু পরই এক অংশ সশব্দে ভূপতিত হলো। প্রশস্ত ফটকের মতো প্রায় বিশ ত্রিশ হাত ফাঁকা বেরিয়ে এলো। দুর্গের মধ্যে প্রবেশের পথ তৈরি হলো ।

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top