গৌড় থেকে সোনার গাঁ – শফিউদ্দিন সরদার – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ শফিউদ্দিন সরদার
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৪৪১
গৌড় থেকে সোনার গাঁ – বইটির এক ঝলকঃ
ফেলে রেখে তিনি খেলে বেড়ানোর ভঙ্গিতে এদিক ওদিক ঘুরে ঘুরে সাতগাঁয়ের চার পাশের এলাকাগুলো শত্রুমুক্ত করতে লাগলেন । এমনইভাবে একদিন তিনি হাজির হলেন ভূদেব রাজার রাজ্যে এবং ভূদেব রাজার প্রাসাদের দিকে অগ্রসর হলেন। কিন্তু ভূদেব রাজা বা ভূদেব নৃপতির রাজ্য অনেক বড় রাজ্য। অনেক তার সৈন্য বল। রণকৌশল ও সামরিক পারদর্শিতার দিক দিয়েও ভূদেব নৃপতির ফৌজের খ্যাতি আছে অনেক। এসব কোন খোঁজখবর না নিয়েই জাফর খান গাজী সাহেব একেবারেই প্রস্তুতিহীন অবস্থায় ভূদেব নৃপতির রাজ্যে এসে হানা দিলেন। তবু হয়তো বিপর্যয় কিছু আসতো না, যদি চোখ কান খাড়া রেখে অগ্রসর হতেন তিনি। কিন্তু মাননৃপতির ও অন্যান্য সামন্ত রাজদের শক্তি সাহস দেখে ভূদেব নৃপতির শক্তিকেও একেবারেই তুচ্ছ জ্ঞান করে তিনি পরিকল্পনাহীন ও ঢিলেঢালাভাবে অপরিচিত এলাকায় অচেনা শক্তির বিরুদ্ধে অগ্রসর হতে লাগলেন। হয়তো নিতান্তই অদৃষ্টলিপির কারণে তাঁর মতো বিখ্যাত এক রণবিশারদ এই কিসিমের ছেলে মানুষী করে বসলেন। জীবনে এই প্রথম তিনি শত্রুকে তুচ্ছজ্ঞানে অবহেলা করলেন, আর এইটেই তাঁর জিন্দেগীর শেষ ভ্রান্তি হয়ে রইলো।
ভূদেব নৃপতি সম্মুখ যুদ্ধে এলেন না। রাজধানী থেকে পালিয়ে যাওয়ার ভঙ্গিতে জাফর খান গাজীর সামনে তামাম পথ ফাঁকা করে রেখে ভূদেব নৃপতি সসৈন্যে এসে এক জঙ্গলাকীর্ণ সরু রাস্তার দুই পাশে ওৎ পেতে রইলেন। জাফর খান গাজী সসৈন্যে ঐ মরণ ফাঁদে পা দেয়ার সাথে সাথে দুইদিক থেকে অতর্কিতে ভূদেব নৃপতি চড়াও হলেন তাঁদের উপর। শুরু হলো যুদ্ধ। অত্যন্ত প্রতিকূল অবস্থায় থেকেও জাফর খান গাজী সাহেব বীরত্বের সাথে লড়তে লাগলেন। কিন্তু অকস্মাৎ জঙ্গলের ভেতর থেকে অদৃশ্য ও বিষাক্ত এক তীর এসে তাঁর বক্ষ ভেদ করলে তিনি অশ্ব থেকে পড়ে গেলেন এবং কয়েক লহমার মধ্যেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। তাঁর সেপাইরা তাকে বাঁচানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে রণভঙ্গ দিলেন এবং তাঁর লাশ নিয়ে শত্রুর চক্ষু এড়িয়ে পালিয়ে গেলেন ত্রিবেণীর দিকে ।
জাফর খান গাজীর ইন্তেকালের খবর যখন লাখনৌতিতে এসে পৌঁছলো তখন বিনামেঘে বজ্রপাতের মতো প্রথমে সবাই হতবুদ্ধি হয়ে গেলেন, পরে শোকে অভিভূত হয়ে গেলেন এবং সবশেষে ক্রোধে সবাই উন্মত্ত হয়ে উঠলেন। লাশের সৎকার করে এসেই পিতৃহত্যার বদলা নেয়ার আক্রোশে উলুগ জিয়া খান তৎক্ষণাৎ লাফিয়ে উঠলেন অশ্বের পিঠে। কিন্তু অশ্বের লাগাম টেনে ধরলেন শরীফ রেজা। যে ভুল তাঁর বহুদর্শী ওয়ালেদ জাফর খান গাজী করে গেলেন, পুত্র জিয়া খান ফের সেই ভুলই করুক, এটা কেউ চাইলেন না। সবাই বললেন বিখ্যাত বীর জাফর খান গাজী নিহত হলেন যেখানে, সেখানে ঝোঁকের মাথায় এমন হাল্কাভাবে অগ্রসর হওয়া আদৌ সমীচিন নয়। দেখেশুনে বুঝেসুঝে তবেই এগুনো বেহতর। শায়খ শাহ শফী বললেন – ইন্নাল্লাহা মাআ- চ্ছাবেরীন । সবুর তাঁকে করতেই হলো। সাতগাঁয়ের প্রশাসনিক শূন্যতা পূরণ হওয়ার আগে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব তাঁর হলো না। জাফর খান গাজীর মৃত্যুর খবর লাখনৌতিতে পৌঁছলে লাখনৌতির সুলতানও শোকাভিভূত হলেন এবং সাতগাঁয়ের ওয়ালী পদে জাফর খান গাজীর পুত্র উলুগ জিয়া বা জিয়াউদ্দীন খানকে নিযুক্তি দান করলেন। সাতগাঁয়ের ওয়ালী হয়ে বসেই উলুগ জিয়া খান তাঁর দোস্ত ও অনুজপ্রতীম শরীফ রেজাকে সাতগাঁয়ের ফৌজে সালার হিসাবে যোগ দেয়ার বিশেষ অনুরোধ করলেন। কিন্তু পরম উপকারী ও মহাপুণ্যবান দরবেশকে ছেড়ে এসে নকরী গ্রহণ করার কথা শরীফ রেজা চিন্তাই করতে পারলেন না। তিনি পূর্ববৎ তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে যথাসম্ভব সবসময়ই ফৌজ চালনা করার ব্যাপারে রাজী হলেন এবং শায়খ শাহ শফীও আগের মতোই লোকলস্কর নিয়ে সাথে সাথেই থাকবেন বলে উলুগ জিয়া খানকে ভরসা দিলেন।
প্রশাসনিক জটিলতা নিরসন করতে এবং অন্যান্য ঝুটঝামেলা সামাল দিয়ে নিতে অনেক সময় কেটে গেল। জাফর খান গাজীর মৃত্যু ও ভূদেব নৃপতির সাথে জাফর খান গাজীর যুদ্ধ অনেক পুরানো খবর হয়ে গেল ।
সবকিছু সামাল দিয়ে নিয়ে উলুগ জিয়া খান ও শরীফ রেজা এবার এদিকে নজর দিলেন। প্রাথমিকভাবে অল্প কিছু সেনা সৈন্য নিয়ে তাঁরা মাননৃপতির রাজ্যে চলে এলেন। বিশেষ একটি গোয়েন্দা দল পাঠিয়ে দেয়ার পরও, সেনা সৈন্যদের সেখানে সতর্ক করে রেখে ভূদেব নৃপতির রাজ্যের পথঘাট ও ভূদেব নৃপতির শক্তি সামর্থের সঠিক হদিস সংগ্রহ করার ইরাদায় উলুগ জিয়া খান ও শরীফ রেজাও ছদ্মবেশে বেরুলেন। জাফর খান গাজীর ঐ বিপর্যয়ই খোঁজ-খবরের জন্যে এই সবিশেষ তৎপরতার কারণ।
ছদ্মবেশে এসে তাঁরা ভূদেব নৃপতির রাজ্যের সীমান্তের পাশে প্রতিদিন ঘুরতে লাগলেন। ভূদেব নৃপতি ও মাননৃপতির রাজ্যের মাঝখানে একটা প্রশস্ত খাল এবং খালটির উভয় পাড়ে পাতলা পাতলা বনারণ্য। এই খালটাই এই দুই রাজ্যের সীমানা। প্রথমে তাঁরা ভূদেব নৃপতির রাজ্যের এই সীমান্তের পাশ দিয়ে দু’চারদিন ঘুরলেন। পারিপার্শ্বিক পরিচিতি সংগ্রহ করার পর তাঁরা খাল পেরিয়ে এলেন। খাল পেরিয়ে এসে তাঁরা বস্ত্র ব্যবসায়ীর ছদ্মবেশে ভূদেব নৃপতি রাজ্যের এই সীমান্তের প্রান্ত এলাকায় ঘুরতে লাগলেন এবং ব্যবসায়ের নামে ঘুরে ঘুরে ভূদেব নৃপতির লোক-লস্করের পরিমাণ, তাঁর রাজ্যের অভ্যন্তরে প্রবেশ করার রাস্তাঘাটও অন্যান্য হদিস সীমান্তবর্তী লোকজনের নিকট থেকে সংগ্রহ করতে লাগলেন। তাঁদের নিরাপত্তা বিধানে বিশেষ গোয়েন্দার অতিরিক্ত দ্বিতীয় আর এক দল গোয়েন্দা আরো খানিক অভ্যন্তরে অগ্রগামী হয়ে ভেতরের দিক আগলে ফিরতে লাগলো এবং বেশ কয়েকজন সুশিক্ষিত সেপাই ছদ্মবেশে তাঁদের আশেপাশেই রইলো।
এমনইভাবে খাল পেরিয়ে এসে সীমান্ত দেশে ঘোরাফেরা করার কালে উলুগ জিয়া খান একদিন পোঁটলা-পাটলী সহকারে শরীফ রেজাকে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ এক বৃক্ষতলে বসিয়ে রেখে পানির খোঁজে বেরুলেন। স্থানটি ছিল ভূদেব নৃপতির এই সীমান্তের এক আনন্দ বিহার বা প্রমোদ ভবনের কাছাকাছি। বিনোদনের নিমিত্তে বছরে দু’একবার কখনও রাজা নিজে বা কখনও তাঁর পরিবারবর্গের কেউ এ বিহারে এসে কয়েকদিন আমোদ-ফূর্তিতে কাটান এবং তারপরে ফের রাজ প্রাসাদে চলে যান। স্থানটি এই বিহারের কাছাকাছি হলেও তাঁরা বিশ্বস্তভাবে খবর নিয়ে জেনেছেন – ঝোপঝাড়ে ঘেরা এই স্থানটি ঐ বিহারটির একেবারেই এক মফস্বল এলাকা। এই হাল্কা পাতলা ঝোপঝাড়ের পশ্চিম দিকে খোলামেলা এক এলাকা ও লোক বসতি। লোক বসতির পরে তবেই সেই বিহার। এই বিহারে প্রায়ই কেউ থাকে না। এক্ষণে কয়জন আউরাত আছেন মাত্র। কয়েকজন পাইক নিয়ে বেড়াতে তাঁরা এসেছেন। প্রাসাদেরই আউরাত এঁরা। কয়দিন পরই প্রাসাদে আবার চলে যাবেন।
এই ঝোপঝাড় বা বনাঞ্চলটি দক্ষিণ-পশ্চিমে বেঁকে নিকটেই এক নদীর তীরে পৌঁছেছে। নদীর তীরে এসে বন যেখানে শেষ হয়েছে তার পাশেই এক প্রশস্ত নদীঘাট। ঘাটের পাশেই রাস্তা পথ, লোক বসতি এবং সবশেষে ঐ প্রমোদ ভবন বা বিহার। প্রমোদ ভবনের দিক থেকে ঘাটে আসার পথ আর বনাঞ্চলের দিকে থেকে ঘাটে আসার পথ কোণাকোণীভাবে নিকটবর্তী হতে হতে ঘাটে এসে এক হয়ে গেছে। বিহার থেকে ঘাটটি বেশ দূরে এবং বনাঞ্চলের এ পথে লোক চলাচল বিরল। তাই পাত্র হাতে জিয়া খান নিশ্চিন্তে নদীর দিকে এগুতে লাগলেন।
বনের ধার বেয়ে বেয়ে জিয়া খান নদীর কাছে এসে দেখলেন তাঁর ডাইনে একটু ভাটিতে সেই ঘাট। মাঝখানে অল্প একটু ফারাগ। ঘাটটি বেশ প্রসস্ত। কিন্তু সে তুলনায় লোকজনের ভিড় কম। পুরুষের ভিড় আরো কম। কিছু বয়সী ও দু’চারজন যুবতী মহিলা পুণ্যস্নানের উদ্দেশ্যে নদীর ঘাটে এসেছেন এবং পানিতে নেমে স্নানের সাথে গল্পগুজব ও হাসিঠাট্টা করছেন। গুটি কয়েক বালিকাও স্নানার্থে এসেছে এবং সাঁতার কাটার নামে স্রেফ হাতপাগুলো ছুঁড়ছে। সেই সাথে আরো দেখলেন ফিটফাট পোশাকের দুই তিন জন মাঝ বয়সী আউরাত ঘাটের পাড়ে বসে থেকে হাই তুলছেন পুনঃ পুনঃ ।
উলুগ জিয়া খানের হাতের বাঁয়ে ছোট আর এক ঝোপ এবং ঝোপের পরেই নদী। ঘাটে যাওয়া সমীচিন নয় বোধে জিয়া খান সেই ঝোপটি বাঁয়ে রেখে নদীতে নামতে গেলেন। এমন সময় ঝোপটির ধারে অকস্মাৎ এক হাসাহাসি, ধুপধাপ আর ডালপালা নড়ানড়ির শব্দে তিনি চমকে গেলেন। হাসাহাসিটি দ্বৈতকণ্ঠের এবং কন্ঠ দুইটিই আউরাতের। ব্যাপার কি দেখার জন্যে কয়েক কদম এগিয়ে একটু আড়াল থেকে যা তিনি দেখলেন – তা যেমনই রসোদ্দীপক তেমনই বিস্ময়কর। দুই দুইটি মেয়েছেলে। পরণে তাদের মূল্যবান ও রাজকীয় পোশাক। একটি মেয়ে যুবতী। যুবতীই শুধু নন তিনি, উপছেপড়া যৌবনের যুবতী। সুডৌল ও সুদৃশ্য দেহের গড়ন। মুখশ্রী সুন্দর, উজ্জ্বল ও আকর্ষণীয়। এক কথায় এক রূপবতী যুবতী। অপরটি কিশোরী। কিন্তু জিয়া খান সেই কিশোরীর দিকে তাকিয়ে আর চোখ ফেরাতে পারলেন না। এই বয়সেই এই কিশোরীর সর্বাঙ্গে যে রূপচ্ছটা বিদ্যমান জিয়া খান আর কোন রকম উপমা খুঁজে পেলেন না বা এমন খুবসুরাত জিন্দেগীতে আর কোথাও দেখেছেন বলে খেয়াল করতেও পারলেন না। তুলনাহীন রূপের এক সুদর্শনা কিশোরী। যুবতীটি নিঃসন্দেহে রূপবতী। কিন্তু এই কিশোরীটি এই বয়সেই যুবতীটির বিপুল ঐ রূপ লাবণ্য স্নান করতে চাইছে। কিশোরীটিকে দেখেই জিয়া খানের মনে হলো কিশোরোত্তীর্ণ যুবক শরীফ রেজার কথা। উপযুক্ত জুটি। এই কিশোরীর জুটি শরীফ রেজা ছাড়া বা শরীফ রেজার জুটি এই কিশোরী ছাড়া দুসরা কেউ হতে পারে – উলুগ জিয়া খান এমনটি আর ভাবতেই পারলেন না ।
কিন্তু এ খোয়াব তাঁর অধিক স্থায়ী হলো না। আর এক দফা হাসির ধাক্কায় ছুটে গেল খোয়াব তাঁর। তিনি দেখলেন মেয়ে দু’টির মাথার উপর ফল ভারে ভারী এক বৃক্ষের ডাল হেলে পড়ে আছে। ডালের সাথে থোকা থোকা টক-মিষ্টি স্বাদের এক কিসিমের পাকা ফল ঝুলছে। বালক-বালিকা কিশোর-কিশোরীর অত্যন্ত প্রিয় ফল। সেই ফলের দিকে হাত বাড়িয়ে পুনঃ পুনঃ লাফ দিচ্ছেন যুবতীটি । অল্পের জন্যে ব্যর্থ হয়ে সেই ব্যর্থতার গ্লানী তারা হাসির ঝংকার তুলে ঢেকে দিচ্ছেন। কিশোরীটি যুবতীর চেয়ে উচ্চতায় ঈষৎ খাটো হওয়ায় সে লাফ দেয়ার বদলে সতৃষ্ণ নয়নে ঐ ফলের দিকে চেয়ে থেকে যুবতীটির হাসির সাথে তাল মিলিয়ে হাসছে।
পুনঃ পুনঃ কোশেশ করলেন নওজোয়ানী। কিন্তু প্রতিবারেই ব্যর্থ হয়ে ক্লান্ত হতে লাগলেন। অথচ ঐ ডাল থেকে একটা লতা নেমে এসে তাদের পাশেই ছোট এক গুল্ম জাতীয় গাছের উপর উঠে আছে। ওটা ধরে টান দিলেই তামাম ফল একদম তাদের নাগালের মধ্যে চলে আসে। কিন্তু ওদিকে তাদের লক্ষ্য নেই বা ওটা তারা আদৌ খেয়াল করেননি। লাফিয়ে উঠে ফল নামানোর একমাত্র চিন্তা নিয়েই বিভোর হয়ে আছেন তারা। ইতিমধ্যেই বেশখানিক লাফিয়েছেন যুবতীটি। ঘেমে গেছেন রীতিমতো। জিয়া খান বুঝলেন আর একটু পরেই এ ফল খুব টক’ এই সান্ত্বনা নিয়েই তাদের ওয়াপস্ যেতে হবে।
মায়া হলো জিয়া খানের। কিন্তু কি করবেন তিনি এই মুহূর্তে তাও ঠিক করতে পারলেন না। শব্দ করলেই শরমে হয়তো দৌড় দেবেন আউরাতদ্বয়। কিংবা হয়তো ভয়ে চিৎকার দিয়েও উঠতে পারেন। চিৎকার দিলে ফলাফলটা নিতান্তই অপ্রীতিকর হবে। ভেবে কোন কুলকিনারা না পেয়ে জিয়া খান এমন ভাব করলেন যেন তিনি দেখতেই পাননি তাদের। এমনই ভাব করে তিনি সামনে এগিয়ে আসতে লাগলেন। মানুষের পায়ের শব্দ শুনে মেয়ে দু’টি থেমে গেলেন এবং জিয়া খানকে অবাক করে দিয়ে যুবতীটি হুকুমের সুরে ডাক দিয়ে বললেন, এয় কে ওখানে ? একটু এদিকে এসোতো ?
-জি বলুন ?
জিয়া খান এগিয়ে এসে বললেন- যুবতীটির ধারণা ছিল আশেপাশেরই চেনা বা অগ্রাহ্য কেউ হবে। কিন্তু জিয়া খান সামনে আসায় তিনি কিঞ্চিত থমকে গেলেন। কিন্তু তা ক্ষণিকের। ইতিমধ্যেই কিশোরীটি প্রশ্ন করলো
পারি।
জিয়া খান বললেন – যুবতীটি হুকুম করলেন কয়টা নামিয়ে দাওতো। প্রাথমিক ঐ কুণ্ঠাটুকুর পর কিছু রইলো না। তার কথার হেলিয়ে দিলে হবে না ?
গাছে চড়তে পারেন ?
তাহলে চড়ো দেখি এই গাছে। ঐ ফল
যুবতীর মধ্যে আর কোন কুণ্ঠা বা সংকোচ প্রেক্ষিতে জিয়া খান বললেন – ঐ ডালটা
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!