ঈমানদীপ্ত কাহিনী – মুহাম্মদ মফিজুল ইসলাম – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ মুহাম্মদ মফিজুল ইসলাম
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১১৩
ঈমানদীপ্ত কাহিনী – বইটির এক ঝলকঃ
কিন্তু তিনি কোন প্রবোধই মানেন নি ।
যে ছেলেকে নিয়ে জাব্বার সাহেব এত স্বপ্ন দেখে ছিলেন, সে ছেলের এমন নির্মম ও অপমানকর আচরণ তিনি সহ্য করতে পারেন নি। ফলে অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই তার মাথায় গন্ডগোল দেখা দিল। মাঝে মাঝে খাপ ছাড়া কথা বলেন। কখনো হাসেন, কখনো কাঁদেন। আবার অনেক সময় সুস্থ লোকের মতোও কথা বলেন। বাস এসোসিয়েশন থেকে তার চাকরি এখনো যায়নি। হয়ত যাবেও না। সবাই তাঁর প্রতি সংবেদনশীল । অফিসে আসেন। যতক্ষণ কাজ করেন মনোযোগের সঙ্গেই করেন। যখন কাজ কর্মে মন বসেনা, তখন মসজিদে চলে যান। তুমিইতো দেখেছো তিনি মসজিদে বসে আছেন । এ অবস্থা মানিকের সহ্য হয় না। তার সুন্দর-সুঠাম পড়তে শুরু করে। কাজে কর্মে মন বসাতে পারে না। কোনো কিছুতেই ভাল লাগে না তার। জীবনকে দুর্বিসহ মনে হয়। সে এখন বুঝতে পারে, আপন পিতা-মাতাকে সীমাহীন কষ্ট দেওয়ার ফলেই তার এই চরম পরিণতি। এভাবে কয়েক বছর দুর্বিসহ জীবন যাপনের পর জীবনের প্রতি মানিকের চরম অনীহা সৃষ্টি হয়। পৃথিবীতে চলাফেরা, উঠাবসা ও বেঁচে থাকাকে মনে হয় অর্থহীন-অসাড়। মনে হয় ভূ-পৃষ্ঠ যেন তার পদভার সইতেও নারাজ। এমনকি প্রিয়তম স্ত্রীর চোখেও সে আজ চরম ঘৃণিত এক নরঘাতক। কেননা বিশ্বস্তসূত্রে সেও ঘটনাটা জেনে গিয়েছিল।
কিছুদিন পর এক মোটর দূর্ঘটনায় মানিক মর্মান্তিকভাবে নিহত হয়। ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তার দেহ। তবে এ রহস্য আজও উদ্ঘাটিত হয় নি যে, মানিকের এই মৃত্যু কি নিছক দূর্ঘটনা ছিল, নাকি এটি ছিল দুঃসহ জীবন অবসানের জন্য স্বেচ্ছায় জীবন দান-আত্মহত্যা।
প্রিয় পাঠক! এই হলো জাব্বার সাহেবের কান্নার ইতিহাস। যাকে আপনারা বলতে পারেন লায়েক (!) সন্তানের প্রেষ্টিজ কাহিনীর মর্মান্তিক ইতিহাস । প্রাণভরে দোয়া করি, এমন মানিকদের পিতা যেন আল্লাহ পাক কোন জাব্বার সাহেবকে না করেন। পাশাপাশি ঐ শিক্ষা থেকেও আল্লাহর দরবারে পানাহ চাই- যে শিক্ষা জন্মদাতা পিতাকেও সঠিক পরিচয় দিতে বাধা দেয়। এমন শিক্ষায় শিক্ষিত ও বড় পদের চাকুরীজীবি থেকে মূর্খ ও কৃষক যুবক কি অধিকতর মহান নয়, যে তার পিতা-মাতাকে পরম ভালবাসায় আব্বা-আম্মা বলে ডাকে?
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত এক হাদীসে রাসূল সালাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, নিজের পিতার পরিচয় দিতে অনীহা বোধ করো না। কারণ যে ব্যক্তি নিজের পিতার পরিচয় দিতে অনিহা বোধ করল, সে কুফরি করল।
সা’দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত অপর এক হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি নিজের পিতা ছাড়া অন্য লোকদের নিজের পিতা বলে পরিচয় দেয়, অথচ সে জানে ঐ ব্যক্তি তার পিতা নয়, এমন ব্যক্তির জন্য জান্নাত হারাম ।
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন, আল্লাহ তা’আলা আপন ইচ্ছানুযায়ী সকল গুনাহ মার্জনা করেন, কিন্তু পিতা-মাতার অবাধ্যতার গুনাহ মার্জনা করেন না। বরং এইরূপ পাপিষ্ঠকে তিনি মৃত্যুর পূর্বে পার্থিব জীবনে যথাশীঘ্র শাস্তি প্রদান করে থাকেন। – – (বায়হাকী ) মুহতারাম পাঠক! এ পর্যায়ে আমাদের আরেকটি কথা খুব ভাল করে স্মরণ রাখা উচিত। তা হলো, সন্তান থেকে ভাল ব্যবহার পাওয়ার জন্য তাকে তো সেভাবে গড়ে তোলা পিতা-মাতারই অন্যতম দায়িত্ব। সন্তানকে শিষ্টাচার না শিখিয়ে, উত্তম শিক্ষায় শিক্ষিত না করে তার থেকে সুন্দর ব্যবহার আশা করার দৃষ্টান্ত তো ঠিক তেমন- যেমন কোনো ব্যক্তি তেতুল গাছ রোপণ করে মিষ্টি আম পাওয়ার আশা করে। অর্থাৎ তেতুল গাছ রোপণ করে যেমন মিষ্টি আমের আশা করাটা অমূলক ও হাস্যকর, ঠিক তেমনি সন্তানকে সদাচরণ শিক্ষা না দিয়ে, সুশাসন না করে, ধর্মীয় শিক্ষা না দিয়ে তার থেকে উত্তম আচরণের প্রত্যাশা করাটা চরম বোকামী বৈ কিছুই নয় ।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, পিতার উপর সন্তানের প্রথম দায়িত্ব হলো, সে আপন সন্তানের সুন্দর নাম রাখবে এবং শিষ্টাচার শিক্ষা দিবে । – (বায়হাকী )
সুন্দর নাম রাখার অর্থ হলো, নামটি চমৎকার অর্থবহ হওয়ার সাথে সাথে তাতে ফুটে উঠবে ধর্মীয় পরিচয়ও। নাম হবে ইসলামি সংস্কৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। একজন প্রকৃত মুসলমান তার সন্তানের নাম কখনো মিন্টু, পিন্টু, স্বপ্না, রত্না, হাসি, জুটি, অনু, তনু ইত্যাদি রাখতে পারেন না । কেননা এসব নামের কোনো কোনোটির তো ভাল অর্থই নেই। আর যেগুলোর মোটামুটি অর্থ আছে, সেগুলোও এমন, যদ্বারা মুসলমানের পরিচয়টাও পাওয়া যায় না। অর্থাৎ নাম শুনে বুঝার কোনো উপায় নেই যে, সে কি মুসলমান? না অন্য ধর্মাবলম্বী? আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।
রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি দীর্ঘ হাদিসের শেষাংশে বলেন, তোমরা নিজেরা পরিবারস্থ লোকদের জন্য সাধ্যনুযায়ী ব্যয় করবে এবং তাদের উপর থেকে কখনোই শাসনের লাঠি উঠিয়ে নিবে না। – (আহমদ)
শাসনের লাঠি না উঠানোর অর্থ হলো, ছেলে-মেয়ে ও পরিবারের অধিনস্থ লোকদের প্রতি উদাসীন না থাকা। যার ফলে তারা নির্ভীক হয়ে যা ইচ্ছে তা-ই করতে থাকে। বরং শরিয়তের গন্ডির মধ্যে থেকে সন্তানদেরকে আদব ও সুশিক্ষা প্রদানের নিমিত্তে মাঝে মধ্যে হালকা মারধর করা উচিত । কারণ মার ব্যতীত অনেক সময় সাবধান হয় না । বর্তমান যুগের অবস্থা হলো, প্রথম অবস্থায় ছেলে-মেয়েদেরকে অত্যধিক আদর করা হয়। শাসন করা হয় না। এতে তারা নির্ভীক হয়ে বদ অভ্যাসে মজবুত হয়ে গেলে পরে তাদের জন্য কান্না করতে থাকে । অথচ সন্তানকে কু-কর্ম থেকে ফিরিয়ে রাখা বা মারপিটকে আদর যত্নের পরিপন্থি মনে করা তাদের সাথে শত্রুতা ছাড়া আর কিছুই নয়। হযরত লোকমান (আঃ) বলেন- পিতার শাসন সন্তানের জন্য এমন প্রয়োজন, যেমন ক্ষেতের জন্য পানি। – (দুররে মানসুর) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এক ছা’ (সাড়ে তিন কেজি) খাদ্য সদকা করার চেয়েও সন্তানকে শাসন করা অধিকতর পূণ্যের কাজ। অন্য হাদীসে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি পরিবার পরিজনকে শাসন করার জন্য ঘরে বেত লটকিয়ে রাখে আল্লাহ তার উপর রহমত বর্ষণ করেন। অপর এক হাদীসে আছে, কোনো কোনো পিতার পক্ষ থেকে সন্তানের জন্য সর্বাধিক মূল্যবান পুরস্কার হলো, তাকে উপযুক্ত শিক্ষা দান করা ।
মুহতারাম পাঠক! প্রত্যেক পিতা-মাতাই তাদের সন্তানকে ভালবাসে। তাদের জন্য যে কোন ধরণের কুরবানি দিতে প্রস্তুত থাকে। কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো, যে প্রিয় সন্তানদের কল্যাণে আমরা নিজেদের সহায়-সম্পত্তি এমনকি প্রয়োজনে জীবন পর্যন্ত বিলিয়ে দিতেও কুণ্ঠিত হইনা, তাদেরকে যদি সদাচারী বানাতে না পারলাম, তাদের চিরস্থায়ী মঙ্গলের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় ধর্মীয় শিক্ষাটুকু দিতে না পারলাম, তবে আমাদের এ ভালবাসার দাবি কতটুকু যথার্থ? পিতা হয়ে, মাতা হয়ে যদি সন্তানদের দায়িত্ব পালনে অক্ষম প্রমাণিত হলাম, তবে এ ব্যর্থ পিতৃত্বের ও ব্যর্থ মাতৃত্বের কি সার্থকতা রয়েছে? আমি যদি আমার সন্তানকে সত্যিকার অর্থেই ভালবেসে থাকি, তাহলে আমার ভালবাসার দাবী কি এটা নয় যে, আর তার জন্য এমন কিছু করব যা সত্যিকার অর্থেই তার জন্য মঙ্গলজনক? তাই আসুন, পিতা-মাতার হকগুলো জেনে নেওয়ার পাশাপাশি সন্তানের হকগুলো জেনে নেই। তারপর এগুলোর উপর আমল করতে সচেষ্ট হই। তাহলে ফলাফল এই দাঁড়াবে যে, সন্তান থেকে চেয়ে শ্রদ্ধা আদায় করার প্রয়োজন পড়বে না। মোটকথা, আমি পিতা কিংবা মাতা হিসেবে যদি আমার দায়িত্ব একশত ভাবে আদায় করতে পারি, তবে সন্তানরাও তাদের দায়িত্ব পালন করবে, ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আমাদের বুঝবার তাওফীক দিন। আমীন! * সায়েমা ও সালেহা দুই বান্ধবী। তাদের বন্ধুত্ব বেশ পুরানো। প্রত্যেকেই একে অপরের খেলার সাথী, পড়ারও সাথী। সায়েমার বয়স বাইশ বছর। দেখতে শুনতে তেমন খারাপ নয়। গত দু’বছর হল সে বিয়ের পীড়িতে বসেছে। স্বামী একটি প্রাইভেট ফার্মের ম্যানেজার ।
সালেহা কুমারী। এখনো বিয়ে হয়নি। বয়স চব্বিশ-পঁচিশ হবে। সে বেশ সুন্দরী। তার কন্ঠে রয়েছে কুমারীত্বের আকর্ষণ ও যাদুময়ী প্রভাব । সে দক্ষ কন্ঠ অনুশীলনকারীদের মতোই কথাকে মোহনীয় করে বলতে জানে। তার ডাগর চোখের চাহনী যে কোনো দর্শকইে শরাঘাতের চেয়ে বেশি ঘায়েল করতে সক্ষম।
সালেহাদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা মোট তিন জন। তার আব্বা- আম্মা সাত-আট মাস আগে ইন্তেকাল করেছেন। বর্তমানে এক ভাই ও দু’বোন নিয়েই তাদের ছোট্ট সংসার। ভাই-বোনদের মধ্যে সালেহাই বড় ছোট ভাই আরাফাত মাদ্রাসায় পড়াশুনা করে। বোন রাহেলা ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী। পরিবারের উপার্জনক্ষম কোন পুরুষ না থাকায় একরকম বাধ্য হয়েই সালেহা একটি এনজিওতে চাকরি নিয়েছে।
বি.এ পাশ করার পর সায়েমার বিয়ে হয়। তার ইচ্ছে ছিল চাকরি করার। কিন্তু স্বামী আহসান উল্লাহ বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে তাকে চাকরি থেকে বিরত রেখেছে। তার কথা হল- আমার উপার্জন দ্বারা, যেহেতু স্বাচ্ছন্দের …সাথে সংসার চলছে, সেহেতু স্ত্রীকে চাকরি করার কোনো প্রয়োজন নেই ।
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!