ঈমানদীপ্ত দাস্তান ৩য় খণ্ড – এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২৫৮
ঈমানদীপ্ত দাস্তান ৩য় খণ্ড – বইটির এক ঝলকঃ
মেয়েটি আতা আল-হাশেমীর হাত চেপে ধরে কাঁপা কাঁপা ক্ষীণ কণ্ঠে বলল, ‘আমি আপনার জীবন রক্ষা করেছি। বিনিময়ে আপনি আপনার খোদাকে বলুন, যেন তিনি আমার আত্মাকে তার আশ্রয়ে নিয়ে নেন। আমার জীবনটা পাপের মধ্যে অতিবাহিত হয়েছে। আপনি আমাকে নিশ্চয়তা দেন, -আল্লাহ এই একটি নেকীর বিনিময়ে আমার গোটা জীবনের পাপ ক্ষমা করবেন কিনা। আপনি আপনার কন্যার মাথায় যেভাবে হাত বুলান, আমার মাথায়ও সেভাবে হাত বুলিয়ে দিন।’
আতা আল-হাশেমী মেয়েটির মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, ‘আল্লাহ তোমার সব পাপ ক্ষমা করে দিয়েছেন। তুমি নিজে পাপ করনি, তোমাকে দিয়ে পাপ করানো হয়েছে। এতকাল কেউ তোমাকে আলোর পথ দেখায়নি।’
প্রচণ্ড ব্যথায় মেয়েটি কুঁকিয়ে উঠে শক্ত করে আতা আল-হাশেমীর ডান হাতটা ধরে বলতে থাকে-
‘এখান থেকে তিন ক্রোশ দূরে সুদানীদের একটি ঘাঁটি আছে। তারা সেখানে আপনাকে হত্যা করার পরিকল্পনা নিয়ে অবস্থান করছে। আপনার সৈন্যরা এতবেশী ছড়িয়ে পড়েছে যে, তাদের ভাগ্যে এখন মৃত্যু বা বন্দীত্ব ছাড়া অন্য কোন পথ খোলা নেই। আপনার প্রত্যেক কমান্ডার ও প্রতিটি সেনাদলের পেছনে আমার ন্যায় মেয়েদের লাগিয়ে রাখা হয়েছে। ঐ মেয়েটিকে সঙ্গে নিয়ে আমি এ পর্যন্ত আপনার চারজন কমান্ডারকে ফাঁদে ফেলে হত্যা করেছি। আপনি মিসরের কথা ভাবুন। খৃস্টানরা সেখানে ভয়ানক ও সূক্ষ্ম জাল পেতে রেখেছে। আপনার জাতি ও সৈনিকদের মধ্যে এমন অনেক মুসলিম কর্মকর্তা আছে, যারা খৃস্টানদের বেতনভোগী গুপ্তচর ও ওফাদার। তারা আমার ন্যায় রূপসী নারী আর অঢেল সম্পদ ভোগ করছে। আপনারা মিসরকে রক্ষা করুন। সুদান ত্যাগ করে চলে যান। গাদ্দারদের চিহ্নিত করে শায়েস্তা করুন। আমি কারো নাম জানি না । যা জানা ছিল বলে দিলাম । আপনিই প্রথম পুরুষ, যিনি আমাকে কন্যা আখ্যায়িত করলেন। আপনি আমাকে পিতার স্নেহ দিয়েছেন। তারই বিনিময়স্বরূপ আমি আপনাকে এসব তথ্য প্রদান করলাম। আপনি আপনার বিক্ষিপ্ত বাহিনীকে একত্রিত করুন এবং আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। আগামী দু’তিন দিনের মধ্যেই আপনার উপর আক্রমণ হবে। ফাতেমী ও ফেদায়ীদের থেকে সাবধান থাকুন। তারা মিসরে এমন বহু কর্মকর্তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে, যারা সুলতান সালাহুদ্দীন আইউবীর ও জাতির একান্ত বিশ্বস্ত ও অফাদার। ‘
ক্ষীণ হয়ে আসে মেয়েটির কণ্ঠস্বর। সে দীর্ঘ একটি নিঃশ্বাস ছেড়ে স্তব্ধ হয়ে যায় চিরদিনের জন্য । রাত কেটে ভোর হল। আতা আল-হাশেমী দু’টি লাশ ও জীবিত মেয়েকে নিয়ে তকিউদ্দীনের নিকট চলে যান। তকিউদ্দীনকে ঘটনা শোনান এবং নিহত মেয়েটির শেষ কথাগুলো তার কানে দেন। এসব নিয়ে তকিউদ্দীন পূর্ব থেকেই উদ্বিগ্ন। তিনি আরো বিচলিত হয়ে উঠেন। বললেন, ‘তবে আমি সুলতান আইউবীর অনুমতি ব্যতীত পিছপা হতে চাই না। আমি বিচক্ষণ ও দায়িত্বশীল এক কমান্ডারকে কার্ক পাঠিয়েছি। তোমরা তার ফিরে আসা পর্যন্ত অটল থাক।’
সুলতান আইউবী দূতের বিবৃত যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে ভাবনায় পড়ে যান। তিনি তার উপদেষ্টাদের ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি বললেন-
‘বিক্ষিপ্ত সৈন্যদের একত্রিত করে পেছনে সরে আসা সহজ কাজ নয় । দুশমন তাদেরকে একত্রিত হতে দেবে না। তাছাড়া পেছনে সরে আসলেই সৈন্যদেরও মনোবল ভেঙ্গে পড়বে, যারা মিসরে অবস্থান করছে। বিষয়টা তাদেরও উপর প্রভাব ফেলবে, যারা আমার সঙ্গে এখানে রয়েছে। জনগণের মনও ভেঙ্গে যাবে। তবে বাস্তবকেও অস্বীকার করার উপায় নেই। বাস্তবতার দাবী হল, তকিউদ্দীন তার বাহিনীকে প্রত্যাহার করে নিয়ে আসুক। আমরা এ মুহূর্তে তাকে সাহায্য করতে পারছি না। কার্ক অবরোধ প্রত্যাহার করে তাকে সহযোগিতা দেয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আমার ভাই বিরাট ভুল করল। আমার বড় মূল্যবান সৈন্যগুলো নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে।’
“সুদানের যুদ্ধ থেকে আমাদের হাত গুটিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্তই নেয়া উচিত’- পদস্থ এক কর্মকর্তা বললেন- ‘নেতা ও শাসকবর্গের ভুল পদক্ষেপের কারণে সেনাবাহিনীর দুর্নাম হচ্ছে। দেশবাসীকে আমাদের স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেয়া দরকার যে, সুদানে আমাদের পরাজয়ের জন্য সেনাবাহিনী দায়ী নয় ।
“সন্দেহ নেই যে, এটি আমার ভাইয়ের ভুল’- সুলতান আইউবী বললেন- ‘আর আমার ভুল হল, আমি তাকে এই অনুমতি দিয়ে রেখেছিলাম যে, কখনো কোন অভিযান পরিচালনা করার প্রয়োজন দেখা দিলে যেন আমাকে কিছু না জানিয়েই করে ফেলে। এখন বেচারা সাত-পাঁচ বিবেচনা না করেই এতবড় অভিযান পরিচালনা করে ফেলল এবং নিজেকে দুশমনের দয়ার উপর ছেড়ে দিল। কিন্তু আমি আমার ও আমার ভাইয়ের এই বিচ্যুতিকে দেশবাসী ও নূরুদ্দীন জঙ্গী থেকে গোপন রাখব না। আমি ইতিহাসকে ধোঁকা দেব না । আমি ইতিহাসের পাতায় লিখিয়ে রাখব যে, আমিই এই পরাজয়ের জন্য দায়ী – সেনাবাহিনী নয়। আমি সালতানাতে ইসলামিয়ার অনাগত শাসকদের জন্য এই নমুনা প্রতিষ্ঠিত করে যেতে চাই যে, তারা যেন নিজেদের ত্রুটি গোপন রেখে নির্দোষ লোকদেরকে অপদস্থ না করে। নিজের দোষ ঢেকে রেখে নিরপরাধ লোকদের উপর দায়-দায়িত্ব চাপানো এমন এক প্রবণতা ও প্রতারণা, যা বিশ্ব ভূমণ্ডলে ইসলামের প্রচার ও প্রসারে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।
সুলতান আইউবীর চেহারা লাল হয়ে যায়। কণ্ঠস্বর কাঁপতে শুরু করে । মনে হচ্ছিল, যেন তিনি ‘পেছনে সরে আস’ উচ্চারণ করতে চাইছে না। তিনি কখনো পিছপা হননি । তিনি অনেক কঠিন থেকে কঠিনতর পরিস্থিতিতে লড়াই করেছেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতির কাছে তিনি অসহায় । তিনি তকিউদ্দীনের প্রেরিত কমান্ডারকে বললেন-
‘তকিউদ্দীনকে গিয়ে বল, সে যেন তার বাহিনীকে গুটিয়ে নেয় এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দলে ভাগ করে পেছনে পাঠিয়ে দেয়। কোথাও দুমশন ধাওয়া করলে মোড় ঘুরিয়ে দৃঢ়তার সাথে মোকাবেলা করবে এবং এমন ধারায় লড়াই করবে, যেন দুশমন তোমাদেরকে ধাওয়া করতে করতে মিসরে ঢুকে না পড়ে। যখন যে দল মিসরে প্রবেশ করবে, তাদের সংঘবদ্ধ থাকার নির্দেশ দেবে, যাতে দুশমন মিসর আক্রমণ করলে সফলতার সাথে তার মোকাবেলা করা যায়। নিরাপদে সরে আসার জন্য গেরিলা বাহিনীকে ব্যবহার করবে। কোন সেনাদলকে দুশমনের বেষ্টনীতে অবরুদ্ধ অবস্থায় ফেলে আসবে না। পেছনে সরে আসার এ সিদ্ধান্ত আমি বড় কষ্টে সহ্য করছি। কারণ, আমার এই সংবাদ বরদাশত করা সম্ভব হবে না যে, তোমাদের কোন বাহিনী দুশমনের কাছে অস্ত্ৰ সমৰ্পণ করেছে। শত্রুর সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে পেছনে সরে আসা সহজ কাজ নয় ৷ অগ্রাভিযানের তুলনায় মান-মর্যাদা বজায় রেখে নিরাপদে সরে আসা অনেক কঠিন কাজ। তোমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখবে। দ্রুতগামী একদল দূত সঙ্গে রাখবে। আমি লিখিত পয়গাম প্রেরণ করছি না। কারণ, পথে ধরা পড়ে গেলে দুশমন বুঝে ফেলবে যে, তোমরা পেছনে সরে যাচ্ছ।’
সুলতান আইউবী জরুরী নির্দেশনা দিয়ে দূত কমান্ডারকে বিদায় জানান। দূত রওনা হয়ে যায় ।
দূতের ঘোড়ার পদশব্দ এখনো শোনা যাচ্ছে। এমন সময় জাহেদান কক্ষে প্রবেশ করলেন এবং বললেন- ‘কায়রো থেকে একজন দূত এসেছে।’ সুলতান আইউবী তাকে ভেতরে ডেকে পাঠান। লোকটি গোয়েন্দা বিভাগের একজন পদস্থ কর্মকর্তা। মিসরের আভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি সংক্রান্ত দুঃসংবাদ নিয়ে এসেছেন তিনি। তিনি জানান, মিসরে দুশমনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড দিন দিন বেড়েই চলেছে। আলী বিন সুফিয়ান তার পুরো বিভাগ নিয়ে তার মোকাবেলায় দিন-রাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। পরিস্থিতি এমন নাজুক রূপ ধারণ করেছে যে, সেনা বিদ্রোহেরও আশংকা দেখা দিয়েছে।’
সুলতান আইউবীর চেহারার রঙ বিবর্ণ হয়ে যায়। সমস্যা শুধু মিসরের হলে চিন্তার তেমন কারণ ছিল না। মিসরকে তিনি বহু আশংকাজনক সমস্যা থেকে রক্ষা করেছেন। খৃস্টান ও ফাতেমীদের অনেক ভয়ংকর নাশকতামূলক পরিকল্পনা তিনি ব্যর্থ করে দিয়েছেন। সমুদ্রের দিক থেকে আসা খৃস্টানদের ভয়াবহ হামলা তিনি সফলতার সাথে প্রতিহত করেছেন। খলীফাকে পর্যন্ত ক্ষমতাচ্যুত করে তিনি দেশের পরিস্থিতি নিজের অনুকূলে রেখেছেন। কিন্তু কার্ক অবরোধ করে এখন তিনি সেখানে আষ্টেপৃষ্ঠে আটকে গেছেন। এই ময়দানে তার অনুপস্থিতি যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। কার্ক অবরোধ ছাড়াও তিনি দুর্গের বাইরে খৃস্টানদের অবরুদ্ধ করে রেখেছেন। এই অবরুদ্ধ খৃস্টান বাহিনী অবরোধ ভেঙ্গে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত রয়েছে। বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে সুলতান আইউবী তাঁর দুশমনের জন্য আপদ হয়ে আবির্ভূত হয়েছেন। এই যুদ্ধ তাঁর তত্ত্বাবধান ছাড়া লড়া সম্ভব নয় ।
সুলতান আইউবীর আশংকা, তকিউদ্দীন যদি পলায়নের ধারায় পিছপা হতে শুরু করে, তাহলে শত্রু বাহিনী তাকে ওখানেই খতম করে সোজা মিসরে ঢুকে পড়বে। মিসরে যে পরিমাণ সৈন্য আছে, তারা হামলা প্রতিরোধের জন্য যথেষ্ট নয় ।
এদিকে সুলতান আইউবীর কার্ক অবরোধের আশু সাফল্য সংশয়পূর্ণ বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। উভয় রণাঙ্গনের সার্বিক চিত্র মিসরে বিদ্রোহের আশংকা জোরদার করে তুলছে, যার ফলে সুলতান আইউবীর সুদৃঢ় পা টলতে শুরু করেছে। তিনি কিছুক্ষণ মাথা ঝুঁকিয়ে তাঁবুর মধ্যে পায়চারী করতে থাকেন । খানিক পর মাথা তুলে বললেন-
‘আমি খৃষ্টানদের সকল সৈন্যের মোকাবেলা করতে পারি। আমি তাদের সেই বাহিনীরও মোকাবেলা করতে পারি, যাদেরকে তারা ইউরোপে সমবেত করে রেখেছে। কিন্তু আমার স্বজাতীয় গুটিকতক গাদ্দার আমাকে পরাজিত করে তুলেছে। কাফেরদের এই সহযোগীরা কেন নিজেদেরকে মুসলমান বলে দাবী করছে? বোধ হয় তারা জানে, যদি তারা ধর্ম পরিবর্তন করে নতুন পরিচয় ধারণ করে, তাহলে খৃষ্টানরা তাদেরকে এই বলে তিরস্কার করে তাড়িয়ে দিবে যে, তোমরা ঈমানবেঁচা গাদ্দার। তাই ওরাই এদেরকে শিখিয়ে দিয়েছে, তোমরা নাম-পরিচয়ে নিজ ধর্মে-ই থাক আর আমাদের থেকে বেতন-ভাতা নিয়ে গাদ্দারী কর।’
সুলতান আইউবী নীরব হয়ে যান। তাঁর তাঁবুতে যারা উপস্থিত ছিল, তারাও নীরব। সুলতান তাদের সকলের প্রতি একবার করে চোখ বুলিয়ে নিয়ে বললেন-
‘আল্লাহ আমাদের থেকে কঠিন পরীক্ষা নিতে চাইছেন। আমরা যদি ঈমানের উপর অটল থাকতে পারি, তাহলে আল্লাহ আমাদেরকে কামিয়াব করবেন। সুলতান আইউবী তার সঙ্গীদের সাহস বাড়ানোর লক্ষ্যে একথা বললেন বটে; কিন্তু তার চেহারা বলছে তিনি শংকিত।
সুলতান আইউবীকে শুধু এটুকুই জানানো হয়েছিল যে, মিসরে বিদ্রোহের আশংকা দেখা দিয়েছে এবং খৃষ্টানদের নাশকতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর বিস্তারিত তাকে জানানো হয়নি। এই সংক্রান্ত রিপোর্টের ব্যাখ্যা ছিল অত্যন্ত ভয়াবহ। তার অনুপস্থিতির সুযোগে তিন-চারজন মুসলিম কর্মকর্তা খৃষ্টানদের হাতের খেলনায় পরিণত হয়েছে। সুদান আক্রমণ করার দিনকয়েক পর ই তকিউদ্দীন মিসরে রসদ চেয়ে পাঠান। যত দ্রুত সম্ভব রসদ প্রেরণ করার নির্দেশ পাঠানো হয়। কিন্তু দু’দিন পর্যন্ত রসদ পাঠানোর কোন ব্যবস্থাই করা হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে জবাব আসে, একই সময়ে দু’টি ময়দান খোলা হয়েছে, এত রসদ আমি কোথা হতে দিব? এক পারি মিসরের বাহিনীকে উপোস রেখে সব খাদ্যসম্ভার ময়দানে পাঠিয়ে দিতে । এত পেট আমি ভরতে পারব না।
এই উক্তিটি যার, তিনি উচ্চপদস্থ একজন মুসলিম কর্মকর্তা এবং সুলতান আইউবীর ঘনিষ্টজনদের একজন। এমন এক ব্যক্তি, যার প্রতি সন্দেহ পোষণ করার প্রশ্নই আসেনা। ফলে তার জবাবের সত্যতা স্বীকার-ই করে নেয়া হল যে, আসলেই খাদ্যসম্ভারের অভাব রয়েছে। তথাপি তাকে অনুরোধ করা হল যে, যেভাবে সম্ভব ময়দানের যোদ্ধাদের জন্য কিছু রসদ পাঠিয়ে দিন। কর্মকর্তা কিছু রসদের ব্যবস্থা করলেন বটে, কিন্তু পাঠালেন আরো দু’দিন বিলম্ব করে ।
পঞ্চম দিবসে রসদের কাফেলা রওনা হয়। উট ও খচ্চরের দীর্ঘ এক বহর। কাফেলার সঙ্গে নিরাপত্তার জন্য একদল অশ্বারোহী সৈনিক দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু কর্মকর্তা তাতে দ্বিমত পোষণ করেন। তিনি যুক্তি দেখান, রসদ পরিবহনের সমস্ত পথ-ই নিরাপদ, নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রয়োজন নেই। তাছাড়া তিনি মিসরেও পর্যাপ্ত সৈন্যের উপস্থিতির আবশ্যকতাও ব্যক্ত করেন। অবশেষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই রসদবাহী কাফেলা রওনা হয়ে যায় । ছয়দিন পর সংবাদ আসে, রসদ পথে ই (সুদানের অভ্যন্তরে) দুশমনের কাছে আটকা পড়ে গেছে। সুদানী সৈন্যরা পশুপালসহ সমস্ত রসদ নিয়ে গেছে এবং পশুচালকদের হত্যা করে ফেলেছে।
কায়রোর শীর্ষ কর্মকর্তাগণ অস্থির হয়ে পড়েন। এই রসদ বহর ধ্বংস হওয়া মিসরের জন্য বিরাট এক ক্ষতি। সুদান রণাঙ্গনের বাহিনীর সংকট- অনুভূতি কর্মকর্তাদের আরো ভাবিয়ে তোলে। তারা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!