বখতিয়ারের তোলয়ার – শফিউদ্দিন সরদার – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

বখতিয়ারের তোলয়ার – শফিউদ্দিন সরদার – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ শফিউদ্দিন সরদার

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৯৯

বখতিয়ারের তোলয়ার – বইটির এক ঝলকঃ

কন্য ধীমণ্ডি সংযুক্তাকে ধন্য ধন্য রব উঠলো চারদিকে। জয়চাঁদের পরাক্রমকে মসীলিপ্ত করে পৃথ্বিরাজের বীরত্বের উত্তপ্ত কাহিনী উত্তর ভারতের জনপদ মুখর করে তুললো।
এমনই এক ওয়াকে আর এমনই সব সুবিখ্যাত বীরবিক্রমের বিরুদ্ধে ভারতবর্ষে প্রবেশ করলেন দ্বীন ইসলামের সৈনিক মুঈজউদ্দীন মোহাম্মদ ঘোরী। তৌহিদের দুর্নিবার তলোয়ারের সামনে কদলী বৃক্ষের আকারে গুটিয়ে পড়তে লাগলেন দ্বীনের- রাহা অবরোধকারী তামাম বীর পালোয়ান প্রস্তুতির স্বল্পতা হেতু তরাইনের পয়লা রণে মোহাম্মদ ঘোরীর অগ্রগতি সাময়িকভাবে খানিকটা বিলম্বিত হলেও, তরাইনের দ্বিতীয় রূপে কাটা গাছের গুঁড়ির মতো গড়িয়ে পড়লেন উত্তর ভারতের তৎকালীন ঐ কিংবদন্তীর নায়ক চাহমান বীর পৃথ্বিরাজ। চন্দোয়ারের যুদ্ধে তৃণ শয্যায় শায়িত হলেন রাজসূয় যজ্ঞ সম্পাদনকারী রাজা গাড়বান বীর জয়চাঁদ। খামোশ হলো বিত্তাবধারী এমনই আরো অনেক আর্যবীরের বেশুমার আস্থালন। দিল্লী, আজমীর ও বারানসীতে কায়েমীভাবে প্রোথিত হলো পাক ইসলামের রাজা সিপাহসালার কুতুব উদ্দীন আইবকের উপর এই নয়া মৃতকের শাসন ভার অর্পন করে মোহাম্মদ ঘোরী পা বাড়ালেন নিজ মুলুক গজনীর অভিমূখে।
এই নয়া রাজ্য স্থাপন করে ওয়াপস আসার মুখেই মোহাম্মদ ঘোরীর সামনে পড়লো আফগানিস্তানের পরমশির। গরমশিরের এক পাশে বালি কাঁকড় পাহাড়াময় বিস্তীর্ণ এক প্রান্তর। মাঝে মাঝে কাঁটা গাছের ঝোঁপঝাড়। এই ঝোঁপঝাড় আর পাহাড় টিলার ফাঁক দিয়ে পথ। এই পথে ধূলি উড়িয়ে পথ ধরেছেন সুলতান মোহাম্মদ ঘোরী। লোকালয়ের অনেক খানি ফারাগ নিয়েই যাচ্ছেন তিনি। সঙ্গে তার বেসুমার লোক পঙ্কর হাতী ঘোড়া। গরমশিরের কাছে এসেই তার হস্তীবাহিনীর একটা হাতী ক্ষেপে গেল আচানক। বাহিনীর সেপাইরা হাতীটাকে কব্জা করার আগেই ঐ পাপনা হাতী ছুটে ভালো গরমশিরের রাস্তায় এবং নিপারা বানুর পালূকীর সামনে ছিটকে এসে পড়লো।
অল্প কিছু আগের ঘটনা এসব। বখতিয়ারের পাথর খেয়ে পাক খেয়েছে পাগলা হাতী। বিভ্রান্ত হয়ে দৌড় দিয়েছে পশ্চাৎ দিকে। দিলারা বানুর পালকীটাও উঠে গেছে ইতিমধ্যেই। বাহকেরা পাল্কী নিয়ে ছুটে গেছে অনেক দূরে। তারা এখন ঘটনাস্থলের লোক চক্ষুর আড়ালে। উৎসাহী কিছু ইনসানের বুচরো কথার জবাব দিয়ে বখতিয়ারও ধীরে ধীরে উঠে এসেছে রাস্তা থেকে। পথ এখন ফাঁকা।
এই ফাঁকা পথ পুনরায় সরগরম হয়ে উঠলো মোহাম্মদ ঘোরীর একদল সেপাই সেনার পদক্ষেপে। হাতীটা পাথর খেয়ে যেদিক দিয়ে দৌড় দিলো সেইদিক থেকে ধেয়ে এলো একদল অশ্বারোহী ও পদাতিক সেপাই। সংগে তাদের দিওয়ানা সেই হাতীটা। হাতীর পায়ে শিবল। কপালে সেই পাথর কাটা ক্ষত। শহর চিহ্ন লেগে আছে তখন মোহাম্মদ ঘোরীর মূল বাহিনী থেকে হাতীর খোঁজে ছুটে এসেছে বিপুল সংখ্যক সেপাই। চারদিক থেকে ঘিরে সবাই মিলে হাতীটাকে আটকিয়ে পায়ে তার শিকল পরিয়ে দিয়েছে। হাতী এখন শান্ত।
রাস্তার দুইপাশে ফের ভিড় করে ছুটে এলো গরমশিরের লোকজন। তারা একনজরে দেখতে লাগলো বা ঐ হাতী সহ সুলতানের সেপাইদের। বালবাচ্চারা অনেকেই সপুলকে আওয়াজ দিলো, সেই হাতী, সেই হাতী-
এই ফৌজের সামনে ছিলেন সুলতানের এক কম বয়সী ফৌজদার। ফৌজদার ফরমান আলী। দুই পাশের ইনসানদের উৎসুকভাবে হাতীর প্রতি ইঙ্গিত করে বাংচিৎ আর বালবাচ্চাদের তামাসা করতে দেখে ফৌজদারটি গরম কন্ঠে বললেন-এই, কেয়া হয়া। এত হতা কিসের?
ফৌজদারের মেজাজ দেখে রাস্তার পাশের লোকজন খামোশ হয়ে গেল। কারো মুখে আপাততঃ কোন কথা ফুটলো না। ফৌজদার সাহেবের মেজাজ আরো বিগড়ে গেল। তিনি হুংকার দিয়ে বললেন-কি হলো। সব বোবা বনে গেলে নাকি? এত তামাসা কিসের? আমরা কি আজব কোন চিড়িয়া যে, আমাদের দেখে তামাসা শুরু করেছো ?
জনতার মধ্যে থেকে একজন অদৃনা আদমী বলে উঠলো–না হুজুর, আপনাদের দেখে নয়, ঐ হাতী দেখে।
ফরমান আলী বললেন হাতী।
: জি হুজুর, একটু আগে এই হাতীটা এখানে এসে এক গজব পয়দা করেছিলো। এখন দেখছি, এক দাড়ান খেয়েই বাছা খামোশ হয়ে গেছে।
জাররা ফাঁপড়ে পড়লেন ফৌজদার। প্রশ্ন করলেন এক দাড়ান খেয়ে মানে? কে দাড়ান খেলো?
: ঐ হাতীটা। মোজাক!
: আমার বিশ বিশটে তাগড়া জোয়ান সেপাই এই ক্ষেপাহাতীর গতি ফেরাতে পারেনি, গোটা বাহিনী এনে হাতীটাকে পাকড়াও করতে হলো, আর তুমি একটা একমুঠো এক আদমী, তুমি ফেরালে পাগলা হাতীর গতি! যাপনা করার কোন ঠাঁই খুঁজে পেলে না।
বখতিয়ার এর জবাবে শানদার কণ্ঠে বললো- আমি কোন খনাসৃপনা করিনি। যন্ত্রাসপনা করেছে আপনার ঐ হাতীটা।
খামোশ!
কিছু মাত্র বিচলিত না হয়ে বখতিয়ার ফের প্রশ্ন করলো–এ হাতী কার?
ছোট্ট একটা লোককে এমন অচঞ্চল দেখে ফরমান আলী সাহেব তার কণ্ঠে বললেন-মানে।
: মানে, এ হাতীর মালীক কে?
: সে খবরে তোমার কি কাজ?
: আমার কোন কাজ নেই। হাতীর মাণীককে দিয়ে বলবেন, সামলাতে যা পারেন না, তা পোষার খাহেশ না থাকাই তার ভাল। এতে অন্যের অনেক মুসিবত হয়। ফৌজদার তাঁর তলোয়ার কোষমুক্ত করলেন। গর্জে উঠে বললেন-হুঁশিয়ার কমবখত।
ঘোড়ার লাগাম টেনে তিনি বখতিয়ারের দিকে ঘুরলেন। এতদৃশ্যে দুই পাশের লোকজন সম্রস্ত হয়ে সঙ্গে সঙ্গে দৌড় দিলো। এক ধাপও না নড়ে ওখানেই ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে বখতিয়ার ফের নিতীক কণ্ঠে বললো হাতে তলোয়ার আর সাথে ফৌজ থাকলে তামাম কণ্ঠই শানদার হয়। ন্যায় অন্যায় কোন কথায় কর্ণপাত করার জরুরতই তাদের থাকেনা। কিন্তু তাদের ইয়াদ রাখা উচিত, মাথার উপরে এমন একজন আছেন, যিনি কারো বেইনসাফী আদৌ বরদাস্ত করেন না।
তলোয়ার হাতে অশ্ব থেকে লাফিয়ে পড়লেন ফরমান আলী। সঙ্গে সঙ্গে সেপাইরাও তাদের অসি কোষমুক্ত করলো। বখতিয়ারের দিকে অগ্রসর হয়ে ফরমান আলী বললেন-তার অর্থ
অবিকৃত কণ্ঠে বখতিয়ার জবাব দিলো একজন নিরস্ত্র পথের লোকের বিরুদ্ধে একটা গোটা বাহিনী যেখানে এক সাথে তলোয়ার কোষমুক্ত করে সেখানে অর্থের ব্যাখ্যা অর্থহীন। আপনার দীনের খাহেশ হাসিল করে আপনি আপনার বাহাদুরী জাহির করে চলে যান। প্রাণের ভয়ে দৌড় দিয়ে আমি নিজের অসম্মান করবো না। কাঁচা বয়স হলেও ফরমান আলী এলেম হাসিল করা লোক। খানদান ঘরের শরীফ আদমী। বখতিয়ারের এ কথায় তিনি শরমিন্দা বোধ করলেন। হাত ইশারায় সেপাইদের নিরস্ত্র করে অপেক্ষাকৃত শান্ত কণ্ঠে বললো- বটে।
বখতিয়ার ফের বললো- অবশ্য সত্যি সত্যিই দৌড় দিলে বখতিয়ারের নাগাল ধরতে কোন অশ কোন দিন পারে নি, আজকেও পারবেনা। কিন্তু কোন ভীরুর ভয়ে গৌড় দেয়াকে আমি বেইজ্জতি মনে করি।
একটা মামুলী আদমীর এতবড় বুকের পাটা ফরমান আলী তাঁর জিন্দেগীতে দেখেননি। নিজের অজ্ঞাতেই হাতের অসি পুনবার উত্তোলন করতে গিয়ে নিজেকে সামলে নিলেন এবং হাতের অসি কোষবদ্ধ করে শ্লেষের সাথে বললেন- আচ্ছা! এ মাফিক বাহাদুর তুমি?
একইভাবে বললো-বাহাদুর
বখতিয়ারের বলার মধ্যে কোন উঠানামা নেই। সে আমি নই আর সে বড়াইও আমি করিনে। কিন্তু আমার বড় আফসোস, কে সেই বননসীব যিনি এমন একটা কমজোর আর বুনীল বাহিনী পয়সা দিয়ে পুষছেন।
সঙ্গে সঙ্গে ফরমান আলীর হাত আবার তরবারির বাঁটের উপর পতিত হলো। তিনি পিকণ্ঠে বললেন-খবরদার! অনেক বরদাস্ত করেছি। এবার জবাব দাও ঐ হাতীর জন্যে কি মুসিবত হয়েছে তোমার?
এবার বখতিয়ারের কণ্ঠে একটা পরিবর্তন এলো। সে কিছুটা উদাসকণ্ঠে বললো-না, আমার হয়নি। হয়েছিল এক আউয়াজের।
: আউরাতের। কি মুসিবত হয়েছে তার? ঘরবাড়ী তছনছ করে নিয়েছে।
জি না। তার জানটাই তছনছ করে দেওয়ার উপক্রম করেছিল। খানিকটা আমার -চেষ্টা আর অধিকটা আল্লাহপাকের রহমের জন্যেই দিলারা বানু নামের একটা খানদান ঘরের জেনানা আজ জান নিয়ে নিজ মুলুকে ওয়াপস্ যেতে পারলেন।
চমকে উঠলেন ফরমান আলী। বললেন দিলারা বানু। নিজ মৃদুকে ওয়াপস্ যেতে পারলেন মানে? তার বাড়ী কোথায়?
গজনীতে।
: গজনীতে। কোথায় ছিলেন তিনি?
ছিলেন নয়, এই পথ দিয়ে পালকীতে চড়ে আসছিলেন।
: আসছিলেন। কোথা থেকে আসছিলেন?
: তা জানিনে। মনে হয় সিস্তান থেকে।

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top