ব্লাইন্ড মিশন – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৮১
ব্লাইন্ড মিশন – বইটির এক ঝলকঃ
তোমার সঙ্গে আমরা তিনজন থাকব, তবে তোমাকে মাঝে-মধ্যে বিশ্রাম দেয়ার জন্যে হুইল ধরব আমি একা।’
রানা হাসল না। ‘কেন ভাবছ তোমার প্রস্তাবে আমি রাজি হব? শুধু কৌতূহল মেটাচ্ছি। চারজন মানে গাড়ি ভর্তি লোক। সঙ্গে কিছু থাকবে না?’
‘শুধু একটা বাক্স,’ বলল কাপলান। ‘শক্ত কাঠের তৈরি ওটা, মাত্র দু’ফুট উঁচু।’
‘কী আছে বাক্সটায়? হেরোইন?’
মাথা নাড়ল কাপলান। ‘কী আছে জানি না। তবে জানি যিনি এই কাজটা আমাকে দিয়েছেন, তিনি জীবনে কখনও হেরোইনের ব্যবসা করেননি, করবেনও না।’
‘এবার টাকার অঙ্কটা বলে ঘাবড়ে দাও দেখি আমাকে।’
‘কাজটা পাঁচ মিলিয়ন ডলারের। তোমাকে আমি পাঁচ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিতে পারব…’
‘হোয়াট!’
মাথা ঝাঁকাল কাপলান। তারপরও আমার হাতে ওই একই পরিমাণ ডলার থাকবে। অর্থাৎ দশ মিলিয়ন ডলারের কাজ এটা, সব খরচ তাঁর।’
‘কার?’
‘আগে তুমি আমাকে কথা দাও সাহায্য করবে, তারপর তোমাকে আমি ভদ্রলোকের কাছে নিয়ে যাব,’ বলল কাপলান ।
“সব মিলিয়ে দু’তিন হাজার মাইল গাড়ি চালিয়ে দু’জনে প্রত্যেকে পাঁচ মিলিয়ন ডলার করে পারিশ্রমিক পাব,’ বলল রানা । ‘এরকম কথা কেউ কোনদিন শুনেছে? এর মানে কাজটা নিশ্চয়ই বেআইনী ।’
*রেনর, এই কাজে আমার ভূমিকা আয়োজকের। আমাকে সবকিছু ম্যানেজ করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। যিনি আমাকে দায়িত্বটা দিয়েছেন তিনি নিজের পরিচয় গোপন রাখতে চান। তবে তাঁর সম্পর্কে এই সার্টিফিকেট আমি দিতে পারি -তিনি অত্যন্ত সম্মানী ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন একজন মানুষ। কি বলছি বুঝতে পারছ আশা করি। তোমার বেশিরভাগ প্রশ্নেরই কোন উত্তর দিতে পারব না, কারণ আমি নিজেও জানি না। এখন বলো, তুমি কি আমার এই উপকারটা করবে?’
মার্কাস কাপলানকে হ্যাঁ-না কিছু না বলে রেন্ট-আ-কার কোম্পানির মার্সিডিজ নিয়ে নিজের হোটেলে ফিরছে রানা। চিন্তাটা আগেই মাথায় এসেছে, রাস্তার পাশে গাড়ি দাঁড় করিয়ে এই মুহূর্তে সেটা যাচাই করে দেখছে ও। পাবলিক ফোন বুদে ঢুকে মাস্টার কার্ড ব্যবহার করে ডায়াল করল সুইটজারল্যান্ডের একটা নম্বরে, জানে এই নম্বরে আরও অন্তত তিনদিন পাওয়া যাবে সোহেলকে। ওর ধারণা ‘বুড়ো’ নিশ্চয়ই কিছু জানেন। তবে সরাসরি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার আগে সোহেলের সঙ্গে কথা বলে দেখা যাক কোন আভাস-ইঙ্গিত পাওয়া যায় কিনা।
‘হ্যালো?’ অপরপ্রান্তে রিসিভার তোলা হতে জিজ্ঞেস করল রানা ।
উত্তরে বিশুদ্ধ বাংলায় গালিগালাজ শুরু করল সোহেল, ‘নেংটি ইঁদুর কোথাকার! কোন আক্কেলে সাদা দিলের একটা মেয়েকে ফেলে রেখে গেছিস এখানে, কবে আসবে কবে আসবে করে জান আমার কাবাব বানিয়ে ফেলল! টেলিফোন করে বলে দে, তোর অভাব যেন আমাকে দিয়ে মিটিয়ে নেয়…
রানা নিজের গলা যতটা পারা যায় বদলে আলাজিভ ব্যবহার করে জার্মান ভাষায় জিজ্ঞেস করল, ‘আমি কি হের সোহেল আহমেদের সঙ্গে কথা বলছি?’
ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেছে সোহেল, নিজেকে সামলে নিয়ে বলল, ‘জ্বী, হ্যাঁ, আমি সোহেল আহমেদই বলছি। কিন্তু আপনি আমার এই নম্বর পেলেন কোথায়? এটা শুধু একজনকেই দিয়েছি আমি। কে আপনি?
‘আমি ব্র্যাক বোডেনডিক। এর বেশি কিছু জানতে চাইবেন না। মার্কাস কাপলান নামে একজন প্রাক্তন গ্রাঁ প্রি চ্যাম্পিয়ান আপনাদের হের মাসুদ রানাকে বলা যায় এক রকম বন্দিই করে রেখেছে। কাপলান চাইছে হের রানা কাঠের একটা বাক্স আর তিনজন আরোহী নিয়ে গ্রিসের উত্তরে যাবেন, তারপর আবার বার্লিনে ফিরে আসবেন। হের রানা জানতে চাইছেন, এ ব্যাপারে আপনারা কিছু জানেন কিনা। কথা শেষ করে জার্মান ভঙ্গিতেই খুকখুক করে কাশল রানা।
‘না, জানি না। কিন্তু হের রানাকে কোথায় বন্দি করে রাখা হয়েছে?’ সোহেল উৎকণ্ঠিত।
‘বন্দি মানে ঠিক বেঁধে রাখা হয়নি, আপনি এটাকে বন্ধুত্বের বন্ধনও বলতে পারেন-এত খাতির করছে যে হের রানা বাইরে বেরিয়ে এসে আপনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। তাহলে তাঁকে গিয়ে বলি যে মার্কাস কাপলানের বার্লিন-টু-গ্রিস অ্যান্ড গ্রিস-টু-বার্লিন রোড অ্যাডভেঞ্চার সম্পর্কে আপনি কিছুই জানেন না?’
‘না, আমি অন্তত কিছু জানি না,’ বলল সোহেল। ‘আপনি যদি দয়া করে এক ঘণ্টা পর ফোন করেন, আমাদের চীফের কাছ থেকে জেনে নিয়ে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জবাব দিতে পারব…’
‘কেমন উল্লুক বানালাম, বুদ্ধ?’ হেসে উঠে বাংলায় বলল রানা। ‘অ্যাই ব্যাটা, তোর সাহায্য নিতে হবে কেন, আমি বুড়োর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারি না? শোন, উজবুক কাহিকে আমার অভাব পূরণ করবার অনুমতি তোকে দেয়া হলো, কিন্তু সাদা মূর্যিকা কামড়ে দিলে আমার কোন দোষ নেই…’
‘রানা, দাড়া, তোকে আমি….
সোহেলকে আর কিছু বলবার সুযোগ না দিয়ে যোগাযোগ কেটে দিল রানা। আধ মিনিট চিন্তা করল, তারপর আগের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে বিসিআই হেডকোয়ার্টার ঢাকায়, সরাসরি বসের প্রাইভেট নাম্বারে ডায়াল করল আবার ।
রিঙ বাজছে। রিসিভার তোলা হলো। ‘হ্যাঁ, বলো।’
রানার বিষম খাবার অবস্থা। ‘সার, আমি। আমি রানা…’ ‘জানি। আরেক লাইনে সোহেল রয়েছে। বলো।’
“তাহলে তো সব শুনেছেনই। এ সম্পর্কে কিছু জানেন আপনি?’
“কিছুটা শুনলাম । তোমার মুখ থেকে পুরোটা শুনতে চাই।’
কী ঘটেছে সংক্ষেপে জানাল রানা। সবশেষে কাপলানের একটা কথা বিশেষ জোর দিয়ে দ্বিতীয়বার শোনাল, ‘সে বলছে, আমি যদি সত্যি তার উপকার করতে চাই, গাড়ি নিয়ে এই আসা- যাওয়া সম্পর্কে কোন প্রশ্ন তুলতে পারব না।’
অপরপ্রান্তে রাহাত খান দীর্ঘক্ষণ চুপ করে রয়েছেন। এক সময় রানার সন্দেহ হলো লাইনে উনি আছেন কিনা। ‘সার?’ বাধ্য হয়ে তাগাদা দিতে হলো রানাকে ।
‘ডু ইট ইফ ইউ ওয়ান্ট টু,’ জবাব দিলেন বিসিআই চীফ। ‘তোমার যদি মন টানে ওদের এই কাজটা তুমি করে দিতে পারো, এম.আর-নাইন।’
‘এটা কেমন হলো, সার!’ রানাকে প্রায় বিহ্বলই বলা যায় । ‘আপনি আমাকে হুকুম করুন।
‘এর আগেও অনেকবার এরকম হয়েছে, রানা মনে করে দেখো,’ বললেন রাহাত খান। ‘আমি চেয়েছি কাজটা তুমি করো, কিন্তু হুকুম দিতে পারিনি। কেন পারিনি, সেটা উহ্যই থাক। এটাও সেরকম একটা ব্যাপার। এই কাজটায় আমি তোমাকে হুকুম দিতে পারি না। তবে কয়েকটা প্রশ্ন করতে পারি।’
“বিসিআই এতদিন তোমাকে কী শিখিয়েছে? কোথাও কোন জুলুম হলে রুখে দাঁড়াওনি তুমি? অন্যায় যুদ্ধ আর দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে লড়োনি? অন্যায়ভাবে কাউকে যদি খুন করার জন্যে খোঁজা হয়, তাকে তুমি নিরাপদ আশ্রয় দাওনি?’
এ-সব প্রশ্ন আসলে উজ্জ্বল আলো ছড়াচ্ছে রানার মনের আনাচে-কানাচে, ফলে নিজের অনেক প্রশ্নের জবাব নিজেই পেয়ে যাচ্ছে ও। ‘জ্বী, সার, বুঝতে পারছি আপনি কী বলতে চাইছেন।’ ‘তবে সাবধান,’ প্রিয় শিষ্যকে হুঁশিয়ার করে দিলেন বিসিআই চীফ। ‘কাউকে বিশ্বাস কোরো না।’
‘সার, কাপলানের প্রস্তাবটা একটা ধাঁধার মত,’ বলল রানা। ‘আপনি যদি…’
“ধাঁধার সমাধান তুমি নিজেই বের করতে পারবে,’ রানাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন রাহাত খান। ‘গ্রিসের একটা ফোন নম্বর টুকে রাখো। তুমি এখানে পৌঁছানোর পর এই নম্বরে ফোন কোরো…’ জরুরী আরও দু’একটা নির্দেশ ও পরামর্শ দিয়ে যোগাযোগ কেটে দিলেন বস্ ।
বার্লিন স্টেডিয়ামের কাছাকাছি একটা বার-এ আবার পরস্পরের সঙ্গে দেখা করল ওরা। লাঞ্চ ও আলাপ সেরে ওখান থেকে বেরিয়ে একটা পাবলিক ফোন বুদে ঢুকল কাপলান। কার সঙ্গে যেন সাত মিনিট ধরে কথা বলল সে। তারপর বেরিয়ে এসে রানার মার্সিডিজে চড়ার আগে ক্রাচটা দু’ভাঁজ করে সিটের পাশে রাখল। ‘পরিস্থিতি তেতে উঠছে, হে, রানাকে বলল সে। ‘আমরা আজ সন্ধ্যার পরই রওনা হচ্ছি।
“কিন্তু আমাকে না তোমার গাড়িটা দেখাবার কথা? এ-ধরনের একটা ড্রাইভের আগে সব কিছু ঠিকমত টেস্ট করে নিতে হবে। আমি নিশ্চয়ই কিছু মডিফিকেশন চাইব।’
কাপলান তার রোদে পোড়া তামাটে কব্জিতে বাঁধা হাতঘড়ির দিকে আড়চোখে একবার তাকাল। ‘আধ ঘণ্টা পর ডক্টর আলতাফ বিন ওয়াসির বাসরা-র সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্ট আছে আমাদের।
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!