বিষনাগিনী – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৩৪০
বিষনাগিনী – বইটির এক ঝলকঃ
‘ফাঁদ না হয়েই যায় না,’ বলল পিটার লারসেন ।
স্যান ডিয়েগোর নামকরা এক হোটেলের ওপর তলার সুইটে প্রকাণ্ড জানালার সামনে দাঁড়িয়ে আছে মাসুদ রানা ।
বাইরে ঝোড়ো হাওয়া, ঝমঝম বৃষ্টি পড়ছে। বারবার আকাশ চিরে এঁকেবেঁকে ঝলসে উঠছে অত্যুজ্জ্বল নীলচে-সাদা বিজলি । খাটে বসে আছে লারসেন, পাশেই খোলা ব্রিফকেস। কোলে ল্যাপটপ কমপিউটার ।
ঘরের কোণের চেয়ারে পেঁচা।
‘ফাঁদে ফেলে কী পাবে?’ তুমুল বৃষ্টির দিক থেকে মুখ না ফিরিয়ে বলল রানা ।
‘তোমাকে বাগে পাওয়াই যথেষ্ট নয়?’ বলল লারসেন, ‘প্রথম টোপ ডগট্যাগ। এরপর র্যাপিং পেপারে তোমার নাম। তারপর তুমি জানলে হার্টিগানদের বাড়িতে যে পৌঁছে দিয়েছে ওসব, তোমার হাতেই মারা গেছে সে।’
‘নিশ্চিত হওয়ার উপায় নেই, সে ওই লোকই,’ ঘুরে দাঁড়িয়ে বলল রানা, ‘প্রমাণ বলতে শুধু একটা স্কেচ। অবশ্য যে বর্ণনা পেয়েছি, তা মেলে তার চেহারার সঙ্গে। আজকাল বাম পায়ে খুঁড়িয়ে হাঁটে।’
আলোচনায় যোগ দিল ব্রিয়া: ‘কাকতালীয় কিছু বিশ্বাস করি না। যাকে মৃত বলে ভেবেছ, সে আসলে কে?’
‘ভিয়েতনামিয পুলিশ কমিশনার, নাম কুয়েন আন টু।
ইন্টেলিজেন্স ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র অফিসার। খুবই অত্যাচারী ও দুর্নীতিপরায়ণ ছিল। কাজ করত ড্রাগ উৎপাদনকারী আর স্মাগলারদের হয়ে। প্রমাণ করা কঠিন ছিল সে ঘুষখোর ও খুনি।’ রানা চুপ হয়ে যেতেই জানতে চাইল লারসেন, ‘আদালতে তার বিচার হয়নি?’
‘না। প্রমাণ জোগাড় করার আগেই একরাতে পালিয়ে যায়। পরের রাতে রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়েই বুঝলাম, গলির ভেতর অপেক্ষা করছে কেউ। আকাশে চাঁদ ছিল না। দু’জনের মাঝে ছিল পনেরো ফুট ফারাক। ওদিক থেকে গুলি আসতেই পাল্টা গুলি করলাম। এত কাছ থেকে সাধারণত মিস করি না।’
‘লোকটা পড়ে যেতে চেক করোনি?’ জিজ্ঞেস করল ব্রিয়া।
‘উপায় ছিল না। কয়েক দালান দূরেই এক পতিতালয়ে রেইড করেছিল পুলিশ। তারা ছুটে আসতে লাগল। দেরি না করে সরে পড়লাম।’
সামনে ঝুঁকল লারসেন। ‘পরে তার সম্পর্কে আর কিছু শুনতে পাওনি?’
‘না, সময় বা সুযোগ হয়নি। পরদিন ট্যান সন নাট এয়ারপোর্ট থেকে বিমানে উঠে নামলাম গিয়ে ব্যাংককে। পরে আর ফেরা হয়নি ভিয়েতনামে।’
ল্যাপটপে কী যেন করছে লারসেন, মুখ তুলল। ‘ওই পুলিশ অফিসার… কুয়েন আন টু… তাকে ভাল করে চিনতে? ‘মাত্র কয়েক দিনে যতটা চেনা যায়।’
“তুমি নিশ্চিত সে-ই গুলি করেছিল?’ জানতে চাইল পেঁচা। ‘হ্যাঁ। গুলি করার আগে বলছিল কেন আমাকে খুন করছে।’ কি-বোর্ডে ঝড় তুলছে লারসেন। তারই ফাঁকে বলল, ‘মনে পড়ে কোন্ রাতে গোলাগুলি হয়েছিল?’
‘সেটা জানা কি খুব জরুরি?”
‘হ্যাঁ, সম্ভব হলে ওই শহরের সব হাসপাতালের রেকর্ড ঘাঁটব। জানতে হবে সে সত্যিই মারা পড়েছে, না বেঁচে আছে।’ মৃদু হাসল লারসেন। ‘এটা জানা ডিটেকটিভদের কাজ। যথেষ্ট তথ্য দিতে পারছ না তুমি। আসলে জানোই না কীভাবে তদন্ত করতে হয়।
ভয়ঙ্করভাবে ভুরু কুঁচকে ব্রিয়ার দিকে তাকাল রানা। ‘পেঁচা, এই বুড়োভাম ভুলে যাচ্ছে খরচপাতি আমিই দিচ্ছি!’
‘ঠিকই বলেছে রানা,’ গম্ভীর মুখে বলল ফুলজেন্স। ‘কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, বুড়ো গাধাটার মগজ ওর বিচির চেয়ে সামান্য বড়।’
‘মনে হয় আমাকে নানানভাবে অপমানের চেষ্টা হচ্ছে,’ কঠোর সুরে বলল লারসেন। ‘কিন্তু ভুললে চলবে না, দুধের শিশুদের কথায় রাগ করলে চলে না জ্ঞানীগুণীদের। …রানা, মনে করার চেষ্টা করো তারিখটা। জানতে হবে, বছরের বায়ান্নটা সপ্তাহের কোন্ সপ্তাহ ছিল ওটা।’
ভাবতে গিয়ে আধমিনিট পর বলল রানা, ‘ক্রিসমাসের আগের সপ্তাহ। বৃহস্পতিবার রাত। চার বছর আগে।’
কমপিউটারের কি-বোর্ডে টাইপ করছে লারসেন। ‘ল্যাপটপের ক্যালেণ্ডার দেখে বের করে নেব তারিখ। ‘
অন্য দু’জনকে বিস্মিত করে উঠে দাঁড়াল পেঁচা। সাধারণত গা নাড়াতে চায় না, এখন পায়চারি করছে। যেন ঘরে রানা নেই, এমন ভঙ্গিতে পিটারের উদ্দেশে মুখ খুলল: ‘ওই কুয়েন আন টু। সে যদি বেঁচেই থাকে, হয়তো প্রতিশোধ নিতে চাইছে। কিন্তু সেজন্যে চার বছর বসে থাকল কেন? ওই ডগট্যাগ যদি টোপ হয়, তো সে জানে জর্জ হার্টিগানের বাবা খুঁজে বের করবে রানাকে। কিন্তু নিজে সে জানত না রানা আছে ব্রাসেলসে, নইলে নিজেই গিয়ে খুন করে ভাগত ।
‘ঠিক,’ সায় দিল লারসেন, ‘রানাকে ভিয়েতনামে নিয়ে যেতে
চাইছে কুয়েন আন টু। আমার ধারণা, অনেক আগেই মারা পড়েছে জর্জ হার্টিগান। ডগট্যাগ আর কাগজের লেখা আসলে টোপ। তার মানেই কুয়েন আন টুর পিছনে অন্য কেউ আছে। বড় কাতলা।’
এবার আলাপে যোগ দিল রানা, ‘কীভাবে এসব জানা গেল, আমাদের ব্রিলিয়ান্ট ডিটেকটিভ পিটার লারসেন… স্যর?’
কোল থেকে ল্যাপটপ নামাল লারসেন। ডালা বন্ধ করে অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে ওটাকে বিছানায় শুইয়ে দিল। উঠে দাঁড়িয়ে কুকুরের মত হাউ-উ-উ আওয়াজ তুলে আড়মোড়া ভাঙল। চোখেমুখে এমন ভঙ্গি নিয়ে রানার দিকে তাকাল, যেন সবই জানে সে। ‘এমন কী জিনিয়াসরাও মাঝে মাঝে শুধু অন্তরের কথাই শোনে। যে-কেউ বুঝবে, ভিয়েতনামের বড় কোনও চাঁই বারোটা বাজাতে চাইছে তোমার। ওই দেশে কতজন ক্ষমতাশালী শত্রু আছে তোমার, রানা?’
মাত্র তিন সেকেণ্ড ভেবে নিয়ে চট্ করে হাতঘড়ি দেখল রানা। ‘আগে চলো, পেটে কিছু দিই। পরে ভেবে বিরাট এক লিস্ট দেব তোমাকে।
সাত
প্রথম দর্শনে মনে হবে সে সুন্দরী। দ্বিতীয়বার যুবতীকে দেখলে পাল্টে যাবে মনোভাব। স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু চোয়াল। শিকারি পাখির চঞ্চুর মত বাঁকা হয়ে নিচে নেমেছে নাকের ডগা। তার চেয়েও বড় কথা, যে কারও গলা শুকিয়ে দেবে শীতল ওই চোখ দুটো। অনেকে পিছনে ডাকে ‘বিষনাগিনী’ বলে। ওই নাম হয়েছে চাহনির বিষের কারণে। কিন্তু কারও সাহস নেই মুখের ওপর এ কথা বলবে।
আসল নাম দায়না বেলগুতাই। চরম নিষ্ঠুর শুধু নয়, নিজের কাজে অত্যন্ত দক্ষ। সাধারণত পরে ডিযাইনার কালো জিন্স। অন্তরটাও কুচকুচে কালো। এ মুহূর্তে তার সামনে টেবিলের ওপাশে বসে আছে দামি পোশাক পরা এক থাই ব্যবসায়ী। দায়না বেলগুতাইয়ের অতীত সম্পর্কে যথেষ্ট শুনেছে সে। এ মেয়ের বাবা ছিল ড্রাগ উৎপাদনকারী, কুখ্যাত স্মাগলার ও নৃশংস খুনি। নাম জন বেলগুতাই, মোঙ্গল ও আমেরিকান বর্ণসংকর। ড্রাগসের ব্যবসার মাধ্যমে নব্বুই দশকের শেষ দিকে হয়ে ওঠে মস্ত বড়লোক। ভিয়েতনাম ও ক্যামবোডিয়া জুড়ে মূল্যবান পাথর ও নানান বেআইনী ব্যবসা চালু করে। টাকা, ড্রাগ্স্, মেয়েমানুষ ও মদের বিনিময়ে কিনে নেয় ঘুষখোর সরকারী কর্মকর্তাদেরকে।
চার বছর আগে রহস্যজনক এক আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে সে হংকঙের নিউ টেরিটোরির এক প্যাগোডায় ।
দায়না বেলগুতাইয়ের মা ছিল অত্যন্ত সুন্দরী এক ক্যামবোডিয়ান পতিতা।
লেখাপড়া করাতে একমাত্র সন্তানকে ফ্রান্সে পাঠিয়ে দিয়েছিল দায়নার বাবা। ভাল রেজাল্ট করে ক্যামবোডিয়ায় ফিরল দায়না, বিয়েও করল উচ্চপদস্থ এক সরকারী কর্মকর্তাকে। তবে স্বামীর অন্য মেয়েমানুষের অভ্যাস আছে টের পেতেই নিজ হাতে খুন করেছে তাকে। দায়নার বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বাবার দুর্দান্ত কালো ব্যবসা-বুদ্ধি এবং মা’র পুরুষদের সন্তুষ্ট করার অবিশ্বাস্য ক্ষমতা— দুটোই পেয়েছে দায়না। ফলে ওর সামনে
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!