ব্ল্যাক ম্যাজিক – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

ব্ল্যাক ম্যাজিক – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২০২

ব্ল্যাক ম্যাজিক – বইটির এক ঝলকঃ

করেননি কেন? তমা চৌধুরীকে যখন প্রথম দেখলেন, সে কি তখনও বেঁচে ছিল? আবার প্রথম থেকে শুরু করুন।
ব্রিটিশ সিক্রেট সার্ভিসের সাথে রানা এজেন্সির সম্পর্ক ভাল হলেও, সেটা গোপন সম্পর্ক, স্কটল্যাণ্ড ইয়ার্ডের তা জানার কথা নয়। স্কটল্যাণ্ড ইয়ার্ড ইংল্যাণ্ডের সব ক’টা ইনভেস্টিগেশন ফার্মকে সন্দেহের চোখে দেখে, এমনকি কোন কোনটাকে প্রতিযোগী বলেও মনে করে, এ-সব ফার্মের বিরুদ্ধে অভিযোগেরও অন্ত নেই তাদের, সে-সব অভিযোগ সবগুলোই যে ভিত্তিহীন নয় তা-ও জানা আছে রানার। সেজন্যেই ওদের জেরার মুখে ধৈর্য হারায়নি ও, বরং সহযোগিতা করারই চেষ্টা করেছে। তাছাড়া, তমার মৃত্যু প্রচণ্ড আঘাত হয়ে দেখা দেয়ায় অন্তত প্রথম কয়েক ঘণ্টা নিজেকে অসম্ভর ক্লান্ত আর অসহায় বলে মনে হয়েছে ওর। গোটা পরিস্থিতিটা এখনও অবাস্তব লাগছে ওর কাছে ।
তারা ওকে শাওয়ার সেরে কাপড় পরার অনুমতি দেয়। দু’জন ইন্সপেক্টর ওকে নিয়ে লণ্ডন অফিসে আসে, কাগজ-পত্র পরীক্ষা করার জন্যে, হত্যার মোটিভ সম্পর্কে সূত্র পাবার আশায়। পুলিস অফিসারদের মনে সবচেয়ে গুরুতর হয়ে দেখা দেয় যে প্রশ্নটি, তা হল, খুনীরা রানার বাড়ির দরজায় কেন তমা চৌধুরীকে ক্রুশে বিদ্ধ করল? রানা এজেন্সি অতীতে কি কোনও আসামীকে জেলে পাঠাতে সাহায্য করেছিল, ছাড়া পেয়ে প্রতিশোধ নিয়েছে সে? অন্যান্য পুলিস অফিসাররা তমার ডেভন স্ট্রীটের অ্যাপার্টমেন্টে তল্লাশি চালায়, কিন্তু তারাও কোন সূত্র খুঁজে পায়নি ।
অফিসের সময় শুরু হতে যাচ্ছে দেখে রানাকে একা রেখে ফিরে গেছে ইন্সপেক্টররা। যাবার সময় বলে গেছে দিনের কোনও এক সময় স্কটল্যাণ্ড ইয়ার্ডে গিয়ে একটা লিখিত জবানবন্দী দিয়ে আসতে হবে ওকে। তদন্তের এই পর্যায়ে রিপোর্টারদের বেশি কিছু না জানাবার অনুরোধ করে গেছে তারা। নিষেধ করে গেছে, গন্তব্য সম্পর্কে তাদেরকে না জানিয়ে রানা যেন লণ্ডন ত্যাগ না করে ।
অফিসে এসে রানাকে তমার ডেস্কেই বসে থাকতে দেখল শারমিন ।
তমার “ফিস কামরার দরজা খোলা দেখে, গায়ের কোট না খুলেই, ছাতা ঝাঁকিয়ে পানি ঝরাতে ঝরাতে সেদিকে এগোল শারমিন। ‘তমা আপা…,’ দরজার ভেতর মাথা লিয়ে দিল সে, রানার টকটকে লাল চোখ ও এলোমেলো চুল দেখে বিস্ময়ে হাঁ হয়ে গেল। ‘মাসুদ ভাই, আ-আপনি! আমি ভাবলাম…’
‘ভেতরে এস, শারমিন, শান্ত স্বরে বলল রানা, তীক্ষ্ণ অন্তর্ভেদী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ।
প্রথমে বিস্ময়ে হতচকিত, তারপর উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ল শারমিন। মাসুদ ভাই তার দিকে ওভাবে তাকিয়ে আছেন কেন? ‘মাসুদ ভাই, আপনি কি অসুস্থ?’
জবাব না দিয়ে রানা বলল, ‘চেয়ারটায় বস, শারমিন। যা জিজ্ঞেস করব ভেবেচিন্তে উত্তর দেবে।
যন্ত্রচালিত পুতুলের মত ডেস্কের সামনের চেয়ারটায় বসে পড়ল শারমিন, নিঃশব্দে মাথাটা একবার কাত করল। ছাতাটা এখনও তার হাতে।
‘গত হপ্তায় এমন কোনও কেস নিয়ে কাজ করছিল তমা, কেস বুকে যা তোলা হয়নি?’
চট করে রানার সামনে ডেস্কে পড়ে থাকা লাল কেস বইটার দিকে একবার তাকাল শারমিন। উপলব্ধি করল তার মাথা ঠিকমত কাজ করছে না। ‘গত হপ্তায় দু’বার কোর্টে গেছেন তমা আপা, মঙ্গল ও বুধবার। মেয়ার’স চেইন স্টোর-এর চুরির কেসটা তদন্ত করেছেন। এ-সবই তো কেস বুকে তোলা হয়েছে।’
‘জানি, আমি দেখেছি। এই চুরির কেসে কাউকে সন্দেহ করা হচ্ছে কিনা জান?’
‘না। মনে হয় না। সবেমাত্র তদন্ত শুরু করেছেন।’ হাতঘড়ির ওপর চোখ বুলাল শারমিন। ‘তমা আপা এখুনি চলে আসবেন, উনি বলতে পারবেন—
‘শারমিন,’ রীনার অস্বাভাবিক শান্ত গলা শুনে থেমে গেল শারমিন । তমা আসছে না।’
হতভম্ব হয়ে রানার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকল শারমিন। তার মন বলছে, সাংঘাতিক একটা কিছু ঘটেছে।
গত হপ্তায় তমা কি কি করেছে না জানা পর্যন্ত শারমিনকে অন্ধকারে রাখতে চাইছে রানা। ভেবে দেখ, শারমিন। আমার অনুপস্থিতিতে তমা অন্য কোনও কেসে জড়িয়ে পড়েছিল কিনা। তমার পরিণতি সম্পর্কে জানার পর শারমিন ওর কোনও প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে বলে মনে হয় না।
মাথা নাড়তে শুরু করে হঠাৎ স্থির হয়ে গেল শারমিন। ‘হ্যাঁ, মানে…কিন্তু…’ অপেক্ষা করে থাকল রানা, কিন্তু শারমিন ইতস্তত করছে। ‘জানলে বল, শারমিন। ব্যাপারটা হয়ত গুরুত্বপূর্ণ।’
‘আপনি ফিরে এলে তমা আপা নিজেই আপনাকে জানাবেন বলেছেন। নিষেধ করেছেন আমি যেন কিছু না জানাই।’ ‘তবু বল, শারমিন।’
‘সেই ভদ্রলোক…গত হপ্তায় যিনি আপনার সাথে দেখা করলেন… মি. স্পিলম্যান… তমা আপা তাঁর একটা কাজ হাতে নিয়েছেন।’
‘ইস!’ লাফ দিয়ে উঠল শারমিন, ডেস্কের ওপর প্রচণ্ড ঘুসি মেরেছে রানা। ‘আমি ওকে বারণ করেছিলাম, ওদের কেস নেয়া যাবে না!’
উনি···তমা আপা বললেন আমাদের হাতে তেমন কোনও কাজ নেই। শুধু একজন নিখোঁজ লোকের হদিস বের করতে হবে…। উনি এসে সব বলবেন আপনাকে…’
‘সে আর আসবে না, শারমিন। তমা বেঁচে নেই।’
দাঁড়াতে গিয়ে আবার বসে পড়ল শারমিন, হাত থেকে খসে পড়ল ছাতাটা, মুহূর্তে সমস্ত রক্ত নেমে গেল মুখ থেকে ।
চেয়ার ছেড়ে তার পাশে চলে এল রানা, শারমিনের কাঁধে হাত রাখল। এখন ভেঙে পড়লে চলবে না, শারমিন। তমাকে আমরা হারিয়েছি, ও আর কোনদিন ফিরে আসবে না।’
‘কিভাবে, মাসুদ ভাই?’ ফিসফিস করে জানতে চাইল শারমিন। ‘বৃহস্পতিবার বাইরে থেকে ফিরে এলেন হাসিমুখে, বললেন তিন-চারদিনের মধ্যে নিখোঁজ লোকটার খোঁজ বের করে ফেলবেন তিনি। এর মধ্যে এমন কি ঘটল…?’
‘শেষবার তাকে তুমি তখনই দেখেছ?’ জানতে চাইল রানা।
‘হ্যাঁ, বৃহস্পতিবার সকালে।’ রুমাল দিয়ে চোখের কোণ মুছল শারমিন। ‘আমাকে বললেন, শুক্রবার সম্ভবত সারাটা দিনই বাইরে থাকতে হবে তাঁকে। কি ঘটেছে, মাসুদ ভাই? তমা আপা মারা গেলেন কিভাবে?’
‘তমা খুন হয়েছে, শারমিন। কাল রাতে। সেজন্যেই তার কাজ সম্পর্কে জানতে চাইছি আমি।’
‘খুন হয়েছেন? কিন্তু কে…?’
‘এখনও জানি না। পুলিস আজ কোনও এক সময় তোমাকে জেরা করতে পারে।’
মুখের ভেতর ভাঁজ করা হাতের গিঁট ঢুকিয়ে ফুঁপিয়ে উঠল শারমিন। তার মাথায় হাত বুলিয়ে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করল রানা। তিমা কবে স্পিলম্যানের সাথে দেখা করে জান?’ শারমিন খানিকটা শান্ত হতে জিজ্ঞেস করল রানা।
‘সেদিনই, আপনি যেদিন ভদ্রলোকের সাথে কথা বললেন। তাঁর হোটেলে বিকেলে দেখা করার ব্যবস্থা করেন তমা আপা ।’
*হোটেলটার নাম জান?
মাথা ঝাঁকাল শারমিন। ‘আমার প্যাডে লেখা আছে।’ চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াল সে। ‘কে, মাসুদ ভাই? আমাদের তমা আপাকে কে খুন করতে পারে। ‘জানি না, শারমিন। তবে জানি, সে যে-ই হোক, তার নিষ্কৃতি নেই।’
হোটেলটা লণ্ডনের উত্তর-পশ্চিমে, বেলসাইজ পার্কের কাছাকাছি। আধুনিক মোটর মোটেল, শহরে অল্প দু’চারদিন থাকার জন্যে আসা ব্যবসায়ীরা এ ধরনের মোটেল বিশেষভাবে পছন্দ করে। এখান থেকে খুব সহজেই শহরের মাঝখানে পৌঁছানো যায়, অথচ পরিবেশটা মফস্বল এলাকার মত শান্ত ও নিরিবিলি -এসপিওনাজ এজেন্টদের আস্তানা গাড়ার জন্যে আদর্শ জায়গা।
ট্যাক্সির ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে ফুটপাথে উঠল রানা, সুইং-ডোর ঠেলে হোটেলের রিসেপশনে ঢুকে পড়ল । শারমিনকে টমাসের হাতে ছেড়ে দিয়ে এসেছে ও। কর্নেল ওয়াকি স্পিলম্যানের ঠিকানা খুঁজছিল শারমিন, এই সময় রতনকে নিয়ে অফিসে পৌঁছায় অপারেটর টমাস হুক। কাল রাতে তমার কপালে কি ঘটেছে সংক্ষেপে ওদেরকে জানায় রানা। ওদের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়স রতনের, শোনার পর ভয়ে ফ্যাকাসে হয়ে গেছে বেচারির চেহারা। শারমিনের আকুল কান্না থামাতে বেশ বেগ হতে হয়েছে ওদেরকে। একা শুধু টমাসের আচরণে কোনরকম ভাবাবেগ প্রকাশ পায়নি। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড তাকেও স্তম্ভিত করে দিয়েছে, এ-ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই, তবে তার অভিজ্ঞতা ও অমঙ্গলকে মেনে নেয়ার ক্ষমতা থাকায় আবেগের রাশ টেনে রাখতে অসুবিধে হয়নি। শারমিন ও রতনকে সান্ত্বনা দিতে ব্যস্ত হয়ে ওঠে সে। পরে, রানা যখন বেরুবে, সে-ও ওর সাথে আসার জন্যে জেদ ধরে। কিন্তু রানা তাকে বুঝিয়েছে, রতন ও শারমিন যতক্ষণ না ধাক্কাটা সামলে ওঠে ততক্ষণ ওদের সাথে একজনের থাকা দরকার। তাছাড়া, অফিসে যে-সব কাজ রয়েছে সেগুলোও তো সারতে হবে। টমাসকে আরেকটা দায়িত্ব দিয়ে এসেছে রানা, রিপোর্টারদের ঠেকিয়ে রাখতে হবে। যুক্তিগুলো উপলব্ধি করার পর টমাস আর চাপাচাপি করেনি। অফিস থেকে বেরুবার আগে ব্রিটিশ সিক্রেট সার্ভিস-এর চীফ মারভিন লংফেলোর একটা ফোন পায় রানা। স্কটল্যাণ্ড ইয়ার্ড তমা হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছে তাঁকে। আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছেন ভদ্রলোক । জানিয়েছেন, এ-ব্যাপারে আলোচনা করার জন্যে তাঁর একজন এজেন্টকে রানার কাছে পাঠাবেন তিনি।
রানাকে দেখেই ভুরু জোড়া কুঁচকে উঠল রিসেপশনিস্টের। তার দোষ দেয়া যায় না। রানার স্যুটের ভাঁজ নষ্ট হয়ে গেছে, এলোমেলো হয়ে আছে চুল। দাড়ি কামানো হয়নি, চেহারায় রাত্রি জাগরণের ছাপ। ওকে দেখে অবাঞ্ছিত ভাবাটাই স্বাভাবিক । তবে কে কি ভাবল না ভাবল সেদিকে খেয়াল নেই রানার। সরাসরি জানতে চাইল ও, কর্কশ স্বরে, ‘কর্নেল স্পিলম্যান নামে এক ভদ্রলোক আছেন এখানে । রূম নম্বরটা বলুন।’
রানার কথার মধ্যে কর্তৃত্বের ভাব ও বিশুদ্ধ ইংরেজি উচ্চারণ সচকিত করে তুলল রিসেপশনিস্টকে । তাড়াতাড়ি গেস্ট লিস্ট-এর ওপর চোখ বুলাল সে। তিনশো বার নম্বর কামরা, স্যার। চারতলা। মি. স্পিলম্যানকে ফোন করে জানিয়ে দিচ্ছি আপনি এসেছেন । কি নাম বলব, স্যার?’
‘ডোন্ট বদার।’ এলিভেটরের দিকে এগোল রানা ।
‘এক মিনিট, স্যার,’ পিছন থেকে দ্রুত বলল রিসেপশনিস্ট, কিন্তু এরইমধ্যে খুলে গেছে এলিভেটরের দরজা, একদল ব্যবসায়ীর পিছু পিছু ভেতরে ঢুকে পড়ল রানা। ছোঁ দিয়ে ফোনের রিসিভার তুলে নিয়ে ডায়াল করার জন্যে হাত তুলল রিসেপশনিস্ট।
চারতলায় উঠে এল এলিভেটর, দরজা খুলে গেল। কার্পেট মোড়া করিডরে বেরিয়ে এসে কামরাগুলোর নম্বর দেখছে রানা। করিডরে আরেক মাথার একটা দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে এলেন পীস ফর অল-এর এজেন্ট কর্নেল ওয়াকি স্পিলম্যান। অবাক হয়ে রানার উদ্দেশে একটা হাত উঁচু করলেন তিনি ।
সেদিকে এগোল রানা, চোখের দৃষ্টি ইহুদি ভদ্রলোকের ওপর স্থির হয়ে আছে। এখনও স্লীপিং গাউন পরে আছেন স্পিলম্যান, বোঝাই যায় এত সকালে কেউ তাঁর সাথে দেখা করতে আসবে বলে আশা করেননি
*আপনি এসেছেন সেজন্যে আমি কৃতজ্ঞ, মি…..’ রানার চোখের দৃষ্টি লক্ষ্য করে তার কণ্ঠস্বর নিস্তেজ হয়ে এল। এসপিওনাজ জগতের মানুষ, চোখে খুনের নেশা থাকলে চিনতে না পারার কথা নয় ।
পেশীবহুল বিশাল শরীর, তবু রানার মার খেয়ে অসহায় বোধ করলেন স্পিলম্যান। রানার চোখের ওই দৃষ্টি হতভম্ব ও আড়ষ্ট করে রাখল তাঁকে। প্রচণ্ড এক ঘুসি খেয়ে কামরার ভেতর ছিটকে পড়লেন তিনি। একটা গড়ান দিয়ে বসতে চাইছেন, হাঁটু দুটো শরীরের নিচে ভাঁজ করলেন, এবার তার পাঁজরে লাথি মারল রানা। আবার ছিটকে পড়লেন স্পিলম্যান। এগিয়ে এসে ঝুঁকল রানা, বুকের কাছে শার্ট খামচে ধরে হ্যাঁচকা টান দিয়ে দাঁড় করাল তাঁকে।
‘মি. রানা, ডোন্ট…!’ চিৎকার করলেন ভদ্রলোক, চিৎকারটা চটাস শব্দে চাপা পড়ে গেল, চড় খেয়ে যেন আগুন ধরে গেল স্পিলম্যানের গালে, মাথাটা প্রচণ্ড ঝাঁকি খেল। তার ওপর গালে আরেকটা চড় কষল রানা ।
‘ইউ ইউজড হার, ইউ বাস্টার্ড। হিসহিস করে বলল রানা। ‘প্রথমে আপনারা নাহিনকে ব্যবহার করেছেন! তারপর আমাকে ব্যবহার করতে চেয়েছেন! এখন খুন করেছেন তমাকে!’
“মি. রানা, কি বলছেন আপনি!’
“তমা!’ চিৎকার করে বলল রানা। ‘তাকে আপনারা খুন করেছেন!’
আরও একটা ঘুসি খেয়ে আবার মেঝের ওপর ছিটকে পড়লেন স্পিলম্যান, এগিয়ে এসে তাঁর মুখে লাথি মারার জন্যে পা তুলল রানা ।
‘যথেষ্ট হয়েছে, মি. রানা। খবরদার, এক চুল নড়বেন না!’ বেডরূমের দোড়গোড়া থেকে ভেসে এল নির্দেশটা।
ঝট করে ঘাড় ফেরাল রানা। দোরগোড়ায় জাপানী পুতুলের মত দাঁড়িয়ে রয়েছে একটা মেয়ে, হাতে ছোট্ট একটা বেরেটা। ছোট্ট, তবে ব্যারেলটা অস্বাভাবিক লম্বা-তারমানে সাইলেন্সার লাগানো। মেয়েটাকে চিনতে পারল রানা। এক হপ্তা আগে একেই রানা এজেন্সির লণ্ডন শাখার বাইরে কর্নেল স্পিলম্যানের সাথে নীল কটিনায় বসে থাকতে দেখেছিল ।
‘প্লীজ, এমন কিছু করবেন না যাতে গুলি করতে বাধ্য হই আমি,’ মেয়েটার গলায় আবেদনের সুর, নার্ভাস ভঙ্গিতে স্পিলম্যানের দিকে তাকাল একবার । যদিও রানার বুকে তাক করা অস্ত্রটা এক চুল নড়ল না ।
প্রয়োজনে মেয়েটা গুলি করবে, বুঝতে পারল রানা। মেঝেতে পড়ে থাকা স্পিলম্যানের সামনে থেকে পিছিয়ে এল সে, এই সুযোগে খানিকটা এগোল মেয়েটার দিকে, সামান্য একটু অসতর্ক হতে দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়ার সুযোগ
নেবে।
মেয়েটা সুন্দরী, দুই নগ্ন কাঁধে স্তূপ হয়ে আছে ভিজে চুল। সদ্য বাথরূম থেকে বেরিয়েছে, পরনে পুরুষদের বাথরোব, সম্ভবত স্পিলম্যানের। গায়ের চামড়া অত্যন্ত কোমল, রঙটা মাখনের মত হলদেটে। সামান্য একটু খাটো হলেও, দৈহিক গড়ন ভারি আকর্ষণীয় ।
‘ঠিক আছে, ইমালিন, ঠিক আছে, অস্থির হয়ো না,’ তাড়াতাড়ি বললেন স্পিলম্যান, ঠোঁটের কোণ থেকে হাতের উল্টোপিঠ দিয়ে রক্ত মুছলেন। গুলি কোরো না অন্তত এখনই নয়।’
টলতে টলতে সিধে হলেন স্পিলম্যান, দরজার দিকে এগোলেন, কবাট বন্ধ করার আগে উঁকি দিয়ে দেখে নিলের বাইরেটা। করিডর ফাঁকা, কাউকে দেখা গেল না। সতর্কতার সাথে রানার পিছনে চলে এলেন তিনি, অভ্যস্ত হাতে সার্চ করে রানার রিভলভারটা শোল্ডার হোলস্টার থেকে বের করে পকেটে ভরলেন। মেয়েটার দিকে এগোলেন এবার, চোখ থাকল রানার ওপর। মেয়েটার, পাশে দাঁড়িয়ে হাত পাতলেন। তাঁর হাতে অস্ত্রটা তুলে দিল ইমালিন। এবার ব্যাখ্যা করুন। আপনার এরকম উদ্ভট আচরণের কারণ কি?’ হাতের অস্ত্রটা রানার দিকে তাক করে

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top