বিষাক্ত থাবা – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৭১
বিষাক্ত থাবা – বইটির এক ঝলকঃ
কিছুদিন আগে বাবা মারা যাওয়ায় এখন বিশাল সম্পত্তি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের মালিক। মাস দুয়েক আগে নিজের পছন্দের পাত্র হ্যারিকে বিয়ে করেছে। সে-ও জাহাজ ব্যবসায়ে জড়িত, যদিও স্ত্রীর ‘সানরাইজ শিপিং কোম্পানির’ তুলনায় চোখে খোঁচা মারার মত নিতান্তই ছোট সেটা। বিয়ের মাত্র একদিন পর বাবা মারা যাওয়ায় ব্যবসা বুঝে নিতে হয়েছে ক্লারিসাকে, ফলে হানিমুনে যাওয়া হয়ে ওঠেনি। এই জন্যে মিশর যাওয়ার প্রস্তাবটা লুফে নিয়েছে ওরা দু’জনেই, আনঅফিশিয়ালি ‘হানিমুন ট্রিপ’ ঘোষণা করেছে এটাকে।
যেমন হাসিখুশি, তেমনি আমুদে স্বভাবের মানুষ ওরা দুজন। . প্রথম দর্শনেই ভাল লেগেছে রানার। পুরো চব্বিশ ঘণ্টাও হয়নি পরিচয় হয়েছে, অথচ রানার সাথে ওদের আচরণ দেখলে মনে হয় না জানি কত যুগের ঘনিষ্ঠতা।
প্রফেসর কার্টারের কেবিন করিডরের ওপাশে, রানার- ডানদিকের তৃতীয় কেবিনের মুখোমুখি। জাহাজে উঠলে বরাবর যা হয়-যাত্রা শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সী সিকনেসে আক্রান্ত হলেন তিনি। টানা তিনদিন কেবিন থেকে বেরই হতে পারলেন না । মাঝেমধ্যে অবস্থা দেখতে যাওয়া বাদে বৃদ্ধকে ছাড়াই সময়টা পার করল রানা, হ্যারি ও ক্লারিসা।
ডেকে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গল্প-গুজব আর অফিসার্স মেসে তাস, বিলিয়ার্ড খেলে একঘেয়ে সময় কাটতে লাগল । চতুর্থ দিন সুস্থ হলেন ডক্টর কার্টার। দুপুরের পর দলে তাঁকে পেয়ে হাঁপ ছাড়ল সবাই। এ ক’দিন অনবরত বমি ও প্রায় না খেয়ে থাকতে হয়েছে বলে যথেষ্ট শুকিয়ে গেছেন ভদ্রলোক, চেহারা ফ্যাকাসে, তবু বন্দীদশা থেকে মুক্তি পেয়ে তিনিও খুশি।
পরের তিনদিনের বেশিরভাগ সময় মিশরের প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে তাঁর জ্ঞানগর্ভ আলোচনা শুনে কাটল ওদের। সপ্তম দিন’ দুপুরের দিকে মার্সেই ভিড়ল এস.এস. হ্যাম্পশায়ার। ফার্স্ট ক্লাসের কয়েকজনসহ প্রচুর যাত্রী উঠল
প্রথম দলের একজন ফরাসী, দু’জন আমেরিকান ট্যুরিস্ট, সস্ত্রীক, দু’জন এশীয়, এবং একজন আরব। এশীয় দু’জনের একজনের ওপর চোখ পড়ল রানার। প্রফেসরের সারিতে চারটা কেবিনের পরের কেবিনে উঠল সে। পোশাক-আশাকে পুরো ইওরোপীয় কেতাদুরস্ত।
ছয় ফুটের ওপর লম্বা মানুষটা, একহারা গড়ন। বয়স চল্লিশের মত হতে পারে, দেখে অনুমান করা যায় না। মুখের আকৃতি ডিমের মত । নাকে হাতলবিহীন চশমা। হাতের কব্জি রানার প্রায় দেড়গুণ চওড়া, পাঞ্জাও তেমনি। ওতেই প্রমাণ হয় কি পরিমাণ শক্তি ধরে সে। অভিজাত চেহারা। সঙ্গে এক ভ্যালে আছে, তার লটবহর সামলাতে ব্যস্ত। বডি বিল্ডিঙে সম্ভবত মিস্টার ইউনিভার্স লোকটা। লম্বায় মনিবের সমান, কিন্তু দেহখানা মাশাল্লাহ্! বয়স বিশ-বাইশের বেশি হবে না ।
বুনো ষাঁড়ের মত গর্দান । কোটের তলায় পেশীর নড়াচড়া স্পষ্ট অনুভব করা যায়। মুখ সামান্য বাঁকা, অনেকটা কুঠারের মত 1 লোকটার হালকা ফিরোজা চোখের শীতল চাউনি দেখলে অস্বস্তি লাগে। জাহাজের রূম সার্ভিসকে কেবিনের ভেতরে পা রাখার সুযোগই দিল না সে। গোছগাছ যা করার সব নিজেই করল ।
এক ঘণ্টা পর কেবিন থেকে বেরোল বডি বিল্ডার, কোনদিকে না তাকিয়ে নিচে চলে গেল। যাত্রীটি সম্পর্কে জানতে হবে, ভাবল রানা। তেমন বিশেষ কোন কারণে নয়, সাধারণ কৌতূহল। কিন্তু ওই পর্যন্তই, ক্লারিসা নতুন এক প্রসঙ্গ তুলতে কথাটা তখনকার মত ভুলে গেল । তিন ঘণ্টা বিরতির পর মার্সেই ছাড়ল জাহাজ। আঁধার ঘনিয়ে এসেছে তখন। মেঘহীন নীল আকাশ। একটা দুটো করে তারা ফুটতে শুরু করেছে। নীল সাগরের বুক চিরে আঠারো নট গতিতে এগিয়ে চলেছে এস.এস. হ্যাম্পশায়ার। প্রমিনেড ডেক প্ৰায় খালি হয়ে এসেছে, যাত্রীরা যে যার কেবিনে ফিরে গেছে ডিনারের জন্যে তৈরি হতে। ওরাও উঠল ।
দু’দিন পর ফর্মালিটির ঝামেলা এড়াতে হ্যারি ক্লারিসার স্টেটরূমে ডিনার সারল ওরা সবাই। এরপর প্রফেসর রাতের মত বিদেয় নিলেন, রানা উঠল দশটার দিকে। কেবিনে এসে শুয়ে পড়ল সর্বশেষ সংখ্যা টাইমস নিয়ে। পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ল, টেরই পেল না ।
রাত আড়াইটার দিকে আচমকা ঘুমটা ভেঙে গেল ওর। কেন ভাঙল জানে না। পুরো চোখ মেলে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকল রানা, পরিপূর্ণ সজাগ। ঘুমের রেশমাত্রও নেই। কেন ভাঙল গভীর ঘুমটা? নিজেকে প্রশ্ন করল ও। বেডসাইড ল্যাম্প জ্বেলে রেখেই ঘুমিয়ে পড়েছিল, এ মুহূর্তে বড্ড বেশি চোখে লাগছে আলো ।
তবু ওটা অফ করল না রানা। চারদিকে নজর বোলাবার ফাঁকে একই কথা ভাবছে, কেন ভাঙল ঘুম? কেবিনে চোর ঢোকেনি, সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। তাহলে? কেউ নক্ করেছে দরজায় না। করে থাকলে এরমধ্যে আবারও করত । টেলিফোন বেজেছে? না। সে ক্ষেত্রেও আবার বাজত। তো? গভীর ঢেউয়ে দুলছে জাহাজ ।
আস্তে আস্তে উঠে বসল ও। ঠিক তখনই একজোড়া ভারী পায়ের দৌড়ের আওয়াজ উঠল বাইরে, পায়ের মালিক যে ‘ আওয়াজটা চাপা দিতে চেষ্টার ত্রুটি করছে না, তাও স্পষ্ট বোঝা গেল। দূরে সরে যেতে যেতে মুহূর্তের জন্যে থামল আওয়াজটা, একটা দরজা বন্ধ হওয়ার মৃদু আওয়াজ উঠল, তারপর আবার সেই পা টিপে দৌড়। পিছনের গ্যাংওয়ের দিকে যাচ্ছে।
ওর নিজেরই অজান্তে শরীরের রিফ্লেক্স কাজ শুরু করে দিল, চোখের পলকে বালিশের তলায় হাত ঢুকিয়ে ওয়ালথারটা বের করে আনল রানা, পরমুহূর্তে দুই লাফে দরজার কাছে পৌঁছে ঝট্কা মেরে খুলে ফেলল। উঁকি দিল বাইরে। কেউ নেই-সিলিঙের ঘোলা আলোয় করিডরের এ-মাথা ও-মাথা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে, ফাঁকা। খোলা বাতাসে শীত শীত লেগে উঠল। ঘন ঘন ডানে-বাঁয়ে তাকাতে লাগল রানা ।
চোখ কুঁচকে আছে চিন্তায়। ব্যাপার কি! এক এক করে দু’দিকের দরজাগুলোর ওপর চোখ বোলাল ও, সব বন্ধ। এঞ্জিনের একটানা গোঁ-গোঁ আর বাতাসের মৃদু গোঙানি ছাড়া কোথাও সাড়াশব্দ নেই। ফিরে আসতে যাচ্ছিল ও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে, হঠাৎ কি খেয়াল হতে থেমে গেল, প্রফেসরের বন্ধ দরজার দিকে তাকাল । দেখে সন্দেহ হওয়ার মত কিছু নেই, ওটাও বন্ধ। তবু . কেন যেন খুঁতখুঁত করে উঠল মন ।
“মুখ টেনে নিল । না, গুলি হলো না। অন্য কোন রকম আক্রমণও এল না। তবু আবারও একই কাজ করল ও, তারপর ঢুকে পড়ল কেবিনে। অজানা আশঙ্কায়, উত্তেজনায় ধড়ফড় করছে বুক। আলো জ্বেলে দিল, পরক্ষণে থমকে গেল ভেতরের দৃশ্য দেখে। দু’হাতের মধ্যে উপুড় হয়ে পড়ে আছেন প্রফেসর কার্টার, তাঁর দুই শোল্ডার ব্লেডের ঠিক মাঝখানে আমূল গেঁথে আছে বড় এক ছোরা। রক্তে ভেসে যাচ্ছে কার্পেট। পরীক্ষা করার দরকার হলো না, এক পলক দেখেই রানা বুঝল বেঁচে নেই মানুষটা। সারা ঘর লণ্ডভণ্ড হয়ে আছে।
বৃদ্ধের বড় ট্রাঙ্কটার তালা ভাঙা, সামনেই হাঁ হয়ে আছে ওটা। ভেতরের কাপড়-চোপড় সব বাইরে। ওর মধ্যেই ফলকটা ছিল, রানা জানে। এখন নেই। নিয়ে গেছে খুনী।
চট্ করে দরজা লাগিয়ে দিল ও। কিছুক্ষণ বোকার মত তাকিয়ে থাকল মৃতদেহটার দিকে । ডান হাত মুঠো পাকিয়ে আছে বৃদ্ধের, চেহারায় বেদনার ছাপ। রক্ত এখনও পড়ছে একটু একটু, জমাট বাঁধতে শুরু করেছে। ট্রাঙ্কের ওপর নজর স্থির হলো ওর। মাথার মধ্যে জট পাকিয়ে যেতে আরম্ভ করেছে। এলোমেলো চিন্তা দূর করে পরবর্তী করণীয় নিয়ে ভাবতে লাগল ও।
কিছুক্ষণ পর দরজা খুলে বাইরে উঁকি দিল, কেউ নেই নিশ্চিত হয়ে বেরিয়ে এসে টেনে লাগিয়ে দিয়ে হ্যারি-ক্লারিসার দরজায় নক্ করল । ওর চাপা ডাক শুনে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে এল হ্যারি, তাজ্জব হয়ে গেল ওর হাতে অস্ত্র দেখে।
‘কি হয়েছে?” রুদ্ধশ্বাসে জানতে চাইল যুবক ।
‘এদিকে এসো!’ বলেই হাঁটতে শুরু করল ও।
বুঝতে না পেরে কয়েক মুহূর্ত ওর দিকে তাকিয়ে থাকল হ্যারি, তারপর নিঃশব্দে বেরিয়ে এসে দরজা ভিড়িয়ে দিল।
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!