বিষ নিঃশ্বাস – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২০৮
বিষ নিঃশ্বাস – বইটির এক ঝলকঃ
কেন?’
‘আর কিছু?’
একটু চিন্তা করল ডিউক। তারপর বলল, ‘দেশের জন্যে প্রাণপাত করছে এমন যে-কয়জন মানুষ দেখেছি আমি তাঁদের মধ্যে কর্নেল শফিকেই সবচেয়ে নির্দয় বলে মনে হয়েছে আমার। মিথ্যা কথা বলেন না, কোন ভুল ধারণা দেন না, কিন্তু হৃদয়ে মায়া-মমতা কম। পাষাণ। কেন?’
মাথা নিচু করে নিজের আঙুলের নখগুলো মনোযোগের সাথে লক্ষ করছে ইন্সপেক্টর। কর্নেলের সাথে দেখা করতে চাও?’ সহজ গলায় জানতে চাইল।
‘না, ধন্যবাদ,’ সাথে সাথে জবাব দিল ডিউক। মোড়া ছেড়ে উঠে দাঁড়াল ও। হাত দুটো মাথার ওপর তুলে আড়মোড়া ভাঙল। দেখা করার জন্যে এর আগেও খবর পাঠিয়েছেন কর্নেল। কেন, তা জানি না। জানতে চাইও না। কোন লাভ হবে না, ইন্সপেক্টর। তাঁর সাথে দেখা করতে উৎসাহী নই আমি।’
মুখের চেহারা গম্ভীর হয়ে উঠল তোয়াব খানের। কর্নেলের জন্যে একটা দুঃসংবাদ, সন্দেহ নেই। ভাল ছেলের অভাব বোধ করছেন তিনি। লোভনীয় প্রস্তাব নিয়ে বসে আছেন। কিন্তু মনের মত ছেলে পাচ্ছেন না। যাদেরকে তাঁর পছন্দ হয়, তারা আবার তাঁকে পছন্দ করে না। সেজন্যেই তোমাকে জিজ্ঞেস করে জেনে নিলাম, তাঁকে তোমার পছন্দ হয় কিনা। তাঁর সম্পর্কে তোমার ধারণা শুনে মনে হচ্ছিল, কর্নেলের একটা স্বপ্ন বোধ হয় সফল হতে যাচ্ছে। উৎসাহ বোধ না করার কারণটা কি তোমার, আমাকে বলবে? অস্বাভাবিক ভাল বেতন, রোমাঞ্চকর অ্যাসাইনমেন্ট, ফ্রী ট্রাভেল। খারাপটা কোন দিক থেকে?’
“খারাপ, তা তো বলিনি,’ বলল ডিউক। ‘কারও অধীনে কাজ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। স্বাধীনভাবে কাজ করার অধিকার আমার কাছ থেকে কেড়ে নেয়া হয়েছে, যদি কখনও সে অধিকার ফিরে পাই, আবার নতুন করে শুরু করব। কিংবা, কে জানে, তখন হয়তো মন থাকবে না।’
‘নিজেকে এভাবে নষ্ট করার কোন মানে হয় না।
‘আর কখনও ও-কথা বলবেন না আমাকে; কঠিন সুরে বলল ডিউক। কারও উপদেশ আমার সহ্য হয় না।’
‘বসো, ডিউক,’ নরম সুরে বলল ইন্সপেক্টর। ‘কর্নেল তোমার সম্পর্কে কতটা ভাল ধারণা পোষণ করেন তা তুমি কল্পনাও করতে পারবে না। কথায় কথায় সেদিন আমাকে বলছিলেন, এন. এস. আই-এ তোমাকে পেলে খুব ভাল হত। অন্ধের মত। বিশ্বাস করেন তোমাকে…
আমার এত খারাপ রেকর্ড থাকা সত্ত্বেও?’ ঠোঁট বাঁকা করে হাসন ডিউক। “একজন কুখ্যাত লোকের ওপর এত ভক্তি-লক্ষণ তো ভাল বলে মনে হচ্ছে না। কর্নেলকে আমি চিনি, ইন্সপেক্টর। বিপজ্জনক কোন কাজ করিয়ে নেবার মতলব, তাই আমাকে এত দরকার তার। উঁহু, তাঁর ফাঁদে পা দিতে রাজী নই আমি। একটু থেমে জানতে চাইল, ‘কিন্তু এর সাথে কর্নেল শফির সম্পর্ক কি?
“তুমি দেখছি মানুষের মনের কথা পড়তে পারো, হাসছে তোয়াব খান।
“ঠিকই ধরেছ, কর্নেল তোমার জন্যে একটা কাজ ঠিক করে রেখেছেন। ‘কি কাজ?’
“অত্যন্ত গোপনীয়, আমাকেও জানানো উচিত বলে মনে করেননি।
আর আমাকে জানাতে চাইলেও আমি জানতে উৎসাহী নই, বলল ডিউক। একটা সিগারেট ধরাল ও। একমুখ ধোঁয়া ছেড়ে বলল, ‘চললাম। দরজার দিকে পা বাড়াল ও ।
লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়ান ইন্সপেক্টর। ‘মাই গড!’ দ্রুত ডিউকের সামনে এসে ওর পথরোধ করে দাঁড়াল সে। তোমার মতলবটা কি? আমার চাকরি খেতে চাও?’
‘মানে?’ বিরক্তির সাথে জানতে চাইল ডিউক।
“আমার সব কথা শেষ হয়নি এখনও, বলল তোয়াব খান। ‘তাছাড়া, কর্নেলের নির্দেশ, তোমাকে সাথে করে নিয়ে যেতে হবে আমাকে।’
‘নির্দেশ?’ ঠাণ্ডা গলায় জানতে চাইল ডিউক, ‘আমি যদি না যাই?’
‘যাবে না কেন?’ সামান্য একটু হাঁপাচ্ছে ইন্সপেক্টর। ‘আমার সব কথা শোনার পর তুমি নিজেই যেতে রাজী হবে।’ দম নিল সে। তারপর আবার বলল, “শোনো তাহলে। কানিজের ওই আংটির ব্যাপারেই তোমার সাথে দেখা করতে চান কর্নেল। এর বেশি কিছু জিজ্ঞেস কোরো না আমাকে। তিনিই সব কথা বলবেন। মনে আছে, একটু আগে বলছিলাম, জীবনে কাকতালীয় ঘটনা কতই না ঘটে? এই কথা ভেবেই বলছিলাম। চলো, ডিউক। কর্নেল তোমার জন্যে অপেক্ষা করছেন।
“উহুঁ, বলল ডিউক, ‘তাঁর কাজের ধরন আমার পছন্দ নয়। তাঁর নিজেরই তো অনেক লোক রয়েছে, আমার ওপর নজর পড়ার কারণ কি? কই, আমি তাঁর কোন ক্ষতি করেছি বলে তো মনে পড়ে না।’
জেদ ধরো না, ডিউক। এটা একটা মার্ডার কেস। সহযোগিতার মনোভাব দেখানো উচিত তোমার।’
‘মার্ডার কেস। এর মধ্যে এ.এস.আই. কেন নাক গলাচ্ছে?’
‘হ্যাঁ, কাজটা নিয়ম ছাড়া হয়ে যাচ্ছে,’ বলল ইন্সপেক্টর। এ থেকেই বুঝতে পারছ, নিশ্চয় নাক গলাবার জোরাল কোন কারণ আছে, তাই না?’
নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে আছে ডিউক। যেন মনস্থির করতে পারছে না।
“তুমি চাও না যে-লোক কানিজের ওই অবস্থা করেছে সে ধরা পড়ুক, তার উপযুক্ত শাস্তি হোক?’ মৃদু গলায় বলল তোয়াব খান। ‘তোমার সাহায্য পেলে লোকটাকে ধরতে খুব বেশি সময় লাগবে না। কানিজকে তুমি সাহায্য করতে, তাই না? সে খুন হওয়ায় তোমার রাগ হচ্ছে না? শুনেছি, কানিজের মেয়েটাকে তুমিই স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছ…
ইন্সপেক্টরকে ঠেলে এগিয়ে গেল ডিউক দরজার দিকে। মুখটা যেন পাথরে খোদাই করা। দরজা খুলছে। বলল, ‘চলুন।’
গাড়িতে উঠে আপন মনে হাসছে ইন্সপেক্টর তোয়াব
ভুরু কুঁচকে একবার তাকাল শুধু ডিউক। কোন মন্তব্য করল না। ‘কর্নেলকে আমি বলেছিলাম ওয়ারেন্টের কোন দরকার হবে না। তুমি এমনিতেই তাঁর সাথে দেখা করতে রাজী হবে।’
‘ওয়ারেন্ট?’ অবাক হয়ে গেল ডিউক।
ডিউকের সামনে একটা হাত পাতল ইন্সপেক্টর। ‘সোনার সিগারেট কেসটা ফিরিয়ে দাও, ডিউক। তোমার ট্রাউজারের ডান পকেটে আছে।
নিঃশব্দে কয়েক সেকেণ্ড তাকিয়ে থাকার পর পকেটে হাত ভরল ডিউক। ইন্সপেক্টর ঠাট্টা করছে না, সত্যি একটা সিগারেট কেস রয়েছে ওর পকেটে। সেটা বের করে নেড়েচেড়ে দেখছে ও। গায়ে খোদাই করা রয়েছে কর্নেল শফির নাম। মুখ তুলে তাকাল ও। সেই পুরানো, নোংরা কৌশল। এখন বুঝতে পারছেন, কেন বলেছি, তাঁর কাজের ধরন আমার পছন্দ নয়?’
হাসছে ইন্সপেক্টর।
“তার মানে, বলল ডিউক, তাঁর কথায় না নাচলে মাস খানেক জেলের ঘানি টানতে হত আমাকে, তাই না?’
“অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে তোমার সাথে দেখা করতে চান কর্নেল,’ বলল তোয়াব খান। ‘তুমি জেদ ধরে বসে থাকলে… একমাস নয়, তোমাকে ছ’মাস জেলের ঘানি টানাবার ব্যবস্থা করতেন তিনি।’ হাসিটা আরও বড় হলো তার। “অবশ্য তুমি সহযোগিতা করতে রাজী হলেই জেল থেকে আবার বের করে আনার কষ্টটুকুও আনন্দের সাথে স্বীকার করতেন।
তিন
ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স। হেডকোয়ার্টার। চীফ কর্নেল (অবসর প্রাপ্ত) শফিকুর রহমানের চেম্বার
ডিউককে নিয়ে আউটার রূমে ঢুকল ইন্সপেক্টর তোয়াব খান। সামনে টাইপরাইটার নিয়ে বসে রয়েছে একটা মেয়ে। দেখেই চিনতে পারল ডিউক, চোখ ফিরিয়ে নিল সাথে সাথে। এমন কুৎসিত চেহারার মেয়ে জীবনে খুব কমই দেখেছে ও। মুক্তিযুদ্ধের সময় কর্নেলের ডান হাত ছিল মেয়েটা। এতগুলো বছর কেটে গেছে, কিন্তু বয়স বা চেহারা একটুও বদলায়নি। নাকটা ছোট আর চ্যাপ্টা, গায়ের রঙ মিশমিশে কালো, চোখ দুটো কুঁতকুঁতে, মাথার চুল উৎকট রকম কোঁকড়া আর ছোট। কাজের মেয়ে, মেকআপ ব্যবহারের সময় পায় না। পায়ের আওয়াজ পেয়ে মুখ তুলে তাকাল, কিন্তু কথা বলে সময় নষ্ট করল না। মাথা নেড়ে শুধু দেখিয়ে দিল . ভারী পর্দা ঝুলানো দরজাটা। ঝড়ের বেগে টাইপ করে চলেছে তো চলেছেই।
কর্নেল শফির জন্যে এর চেয়ে আদর্শ মেয়ে আর হতে পারে না। দেখতে যাই হোক, এর গুণের কোন ঘাটতি নেই। মেয়েটার উপস্থিত বুদ্ধি আর বিচক্ষণতা নাকি বিস্ময়কর। এত বছর ধরে কর্নেল শফির পার্সোন্যাল সেক্রেটারি হিসেবে কাজ করছে, এ থেকেই তার যোগ্যতার প্রমাণ পাওয়া যায়। অস্বাভাবিক গুণী না হলে কাছে পিঠে কাউকে ঘেঁষতে দেন না কর্নেল।
দরজার পর্দা সরিয়ে এগোল ইন্সপেক্টর। তার পিছু পিছু চেম্বারের ভেতর ঢুকল ডিউক
ওদের দিকে পেছন ফিরে দেয়াল-জোড়া জানালার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন কর্নেল শফি। পায়ের শব্দে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ালেন তিনি। দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরে আছেন একটা লম্বা পাইপ। হাতে নিলেন সেটা। ডিউকের আপাদমস্তকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি বুলিয়ে নিয়ে মৃদু হাসলেন। হ্যালো, রানা! তোমার জন্যেই অপেক্ষা করছি আমি দরাজ ভঙ্গিতে হাত নেড়ে একটা চেয়ার দেখালেন রানাকে। “বসো। অনেক দিন পর দেখা, তাই না? কেমন আছ তুমি?’
রানা? অবাক হয়ে গেল ইন্সপেক্টর তোয়াব খান। হু ইজ রানা !
‘পাইপটা আবার দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরেছেন কর্নেল। হাত দুটো পেছনে রেখে সটান দাঁড়িয়ে আছেন। ঝাড়া ছয় ফুট লম্বা কানের দু’পাশে পাক ধরেছে চুলে। ক্লিনশেভ। চোখে স্টাল রিমের চশমা। বয়স হলেও, চেহারা আর দাঁড়াবার ভঙ্গির মধ্যে পরিষ্কার ফুটে রয়েছে সামরিক দৃঢ়তা আর কাঠিন্য। একজন সৈনিকের চেহারা।
‘কেমন আছি তা আপনার অজানা নেই,’ মুচকি হেসে বলল রানা। ‘আপনি কেমন আছেন, কম্পে
“খুব ব্যস্ততার মধ্যে আছি, এইটুকু বলতে পারি তোমাকে,’ মৃদু হাসিটা এখনও লেগে আছে মুখে। দুঃখিত, তোমাকে আমি বিশ মিনিটের বেশি সময় দিতে পারব না। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জরুরী একটা অ্যাপয়েন্টমেন্ট আছে আমার।’
ডেস্কের সামনের একটা চেয়ারে বসল রানা। পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেট বের করে ধরাল একটা। ধোঁয়া ছাড়ার ফাঁকে কামরার চারদিকে চোখ বুলিয়ে নিল একবার। অস্বস্তিবোধ করছে ও। যতটুকু শুনেছে, কাজের লোকের অভাব দেখা দিয়েছে কর্নেলের। এই বয়সে তিনি নিজেও নাকি ঝুঁকি নিয়ে অনেক কাজে হাত দেন।
“কি ভাবছ, রানা?’ এগিয়ে এসে ডেস্কের পেছনে দাঁড়ালেন কর্নেল। একদৃষ্টিতে এখনও তাকিয়ে আছেন রানার দিকে।
“ভাবছি, আপনার রুচি আগের মতই আছে,’ মুচকি হেসে বলল রানা। আপনার পার্সোন্যাল সেক্রেটারির কথা বলছি। আর একটু সুন্দরী মেয়ে যদি পেতেন
রানাকে বাধা দিয়ে কর্নেল প্রশ্ন করলেন, ‘অন্য মেয়ে চাইব কেন? ও তো একটা প্রতিভা।’.
‘প্রসঙ্গটা ভুলে যান, বলল রানা। ওকে হয়তো আপনি দেখতেই পান না সে যাক, আপনি বরং ইন্সপেক্টরের দিকে একটু খেয়াল দিন। খবরটা শোনাবার জন্যে মরে যাচ্ছে বেচারা।
রানার পেছনে দাঁড়িয়ে রয়েছে ইসপেক্টর তোয়াব খান। কর্নেল তার দিবে তাকাতেই কোন ভূমিকা না করে বলতে শুরু করল সে, ‘মেয়েটাকে চেনে ডিউক… কানিজের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস দ্রুত আউড়ে গেল সে। তারপর বলল, ‘গতরাতে তার সাথে দেখা হয়েছিল ওর। ওকে সাদা জেড পাথরের একটা আংটি দেখিয়েছিল। সম্ভবত কোন খদ্দের ফেলে যায় কানিজের ঘরে।
‘সাদা জেড পাথরের আংটি?’ ধীরে ধীরে উচ্চারণ করলেন কর্নেল ।
*একজন ধনুর্বিদ তার বুড়ো আঙুলে পরে,’ বলল রানা। ‘অনেকবার বিদেশে গেছেন আপনি, কোন মিউজিয়ামে নিশ্চয় দেখে থাকবেন। ব্রিটিশ মিউজিয়ামে তো অনেকগুলো আছে। তবে কানিজের কাছে যেটা ছিল সেটা বোধহয় আসল নয়।’
নিঃশব্দে, রানার চোখে চোখ রেখে ওয়েস্টকোটের পকেটে একটা হাত ভরলেন কর্নেল। ছোট্ট একটা জিনিস বের করে ছুঁড়ে দিলেন ডেস্কের ওপর। রানার সামনে এসে থামল সেটা। ‘এটার মত?’ জানতে চাইলেন তিনি।
সাদা পাথরের আংটিটা ডেস্কের ওপর থেকে তুলে নিল রানা। নেড়েচেড়ে পরীক্ষা করল। তারপর মুখ তুলে তাকাল কর্নেলের দিকে। ‘হ্যাঁ। এটাই কি কানিজের কাছে ছিল? দেখে তো একই রকম লাগছে।’
এদিক ওদিক মাথা দোলালেন কর্নেল। ‘না, এটা সেটা নয়। এই রকম রিং অনেকগুলো আছে। অন্তত আমার তাই বিশ্বাস। ভেতরের দিকে তাকাও, দেখবে ওটার নাম্বার বারো। কানিজের আংটির ভেতরটা দেখেছিলে তুমি? ওটাতেও এনগ্রেভ করা কোন নাম্বার ছিল?’
চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়ল রানা। আংটিটা ভাল করে পরীক্ষা করার জন্যে জানালার সামনে গিয়ে দাঁড়াল ও। আংটির ভেতর দিকে ১ এবং ২ লেখা রয়েছে, পাথরের গায়ে গভীরভাবে খোদাই করা।
‘লক্ষ করিনি,’ বলল ও।
ইন্সপেক্টরের দিকে ফিরলেন কর্নেল। ‘সেটা পাওয়া যায়নি, তাই না?’ এস. আই. রমিজ সার্চ করছে এখনও,’ বলল তোয়াব খান ।
‘কিন্তু পাবে না,’ অস্বাভাবিক গম্ভীর গলায় বললেন কর্নেল। ‘ওটা না পেয়ে কানিজকে খুন করেনি ওরা।’
“ডিউক লোকটাকে দেখেছে,’ বলল ইন্সপেক্টর। কিন্তু চেহারাটা মনে করতে পারছে না।’
4.
ভুরু কুঁচকে রানার দিকে তাকালেন কর্নেল। অসম্ভব! যদি দেখে থাকে, চেহারাটা নিশ্চয়ই মনে আছে ওর। কি, রানা? তোমার ফটোগ্রাফিক’ চোখের বারোটা বেজে গেছে, প্লীজ, এ-কথা আমাকে যেন শুনতে না হয়।’
মৃদু হাসল রানা। “চোখ আমার ঠিকই আছে, কর্নেল। ধন্যবাদ। আসলে লোকটার চেহারা আমি দেখতে পাইনি।’
‘হুঁ।
এগিয়ে এসে ডেস্কের ওপর আংটিটা রাখল রানা। সিগারেটে একটা টান দিয়ে বলল, ‘কথা শেষ হয়ে থাকলে আমি বিদায় হই। আপনার তো আবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অ্যাপয়েন্টমেন্ট আছে।’
মস্ত শরীর নিয়ে হঠাৎ তাড়াহুড়োর সাথে দরজার দিকে এগোল ইন্সপেক্টর
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!