বিপন্ন প্রহর – শফিউদ্দিন সরদার – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ শফিউদ্দিন সরদার
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২৯৭
বিপন্ন প্রহর – বইটির এক ঝলকঃ
অনেক ভিড়। প্রায়দিনই মাগরিবের আগে ফিরে আসতে পারেন না। ইমাম বাড়ীর আকর্ষণ আর যাঁরা বা যিনিই হোন, আফসারউদ্দীন সাহেবই তার যোগসূত্র। তাঁর সাথে মোলাকাত করাটাই প্রধান উপলক্ষ্য। অতীতের সম্পর্কটা একাধিকবার নবায়ন করা হয়েছে। এখন আফসারউদ্দীন সাহেবই নতুন উপসর্গ। সেই আফসারউদ্দীনের অবর্তমানে সেখানে গিয়ে হাজির হওয়াটা অনেকখানি গা-কাটা হয়ে যায়। অন্তত এইটেই দিলওয়ার আলীর ব্যক্তিগত অনুভূতি।
তাই মেঘ আকাশে দেখেও দিলওয়ার আলী বেরুলেন। কয়দিন ধরেই মেঘের এমন আনাগোনা দেখা যাচ্ছে। কিন্তু ঝড়বৃষ্টি নেই। এই কয়দিনের একদিনও হয়নি। আজকে যে হবেই, এমন কি কথা ! দিলওয়ার আলী নিরুদ্বেগে বেরুলেন।
কিন্তু ইমাম সাহেবের মকানের কিছু কাছাকাছি আসতেই কড়-কড়-কড়াৎ বুলন্দ কণ্ঠে জানান দিয়ে বিপুল বেগে ধেয়ে এলো মেঘ। ধূলোবালি উড়িয়ে এলো ঝড়ো হাওয়া এবং সঙ্গে সঙ্গে বড় বড় বৃষ্টির ফোঁটা। দিলওয়ার আলী ইমাম সাহেবের ফটকের খানিক দূরে থাকতেই মুষলধারায় বৃষ্টির সাথে শুরু হলো ঝড়ের মাতম। নিকটে কোন আশ্রয় আচ্ছাদন না থাকায় দিলওয়ার আলী দৌড়ের উপর এলেন। নসীব তাঁর ভাল। যে কারণেই হোক, ফটকটা সেদিনের মতো ভেতর থেকে অর্গল আঁটা ছিল না। ফটক উদোম করে দুই পাল্লা দুইদিকে শক্ত করে আটকে রাখা ছিল। হয়তো বা ঝড়-তুফানে আক্রান্ত হয়ে বাড়ীর কেউ এসে ফটকে আটকে না যায়, এই জন্যেই এই ব্যবস্থা করে রাখা।
দিলওয়ার আলী দৌড়ে এসে ফটকের উপর দাঁড়ালেন। কিন্তু ফল কিছু হলো না । ভেতর-বাহির — দুইদিক থেকেই ঝড়ের ঝাপটা আর বৃষ্টির ছিটা এসে তাঁকে অস্থির করে তুললো। ভিজে তিনি ইতিমধ্যেই সারা হয়ে গিয়েছিলেন। চুলের পানি টপ্ টপ্ করে ঘাড়ে ঝরে পড়ছিল। মরা কাকের চরকে কি ভয়। ফটকের উপর দাঁড়িয়ে থাকা অসহ্য হয়ে উঠায় তিনি ঊর্ধশ্বাসে দহলীজের দিকে দৌড় দিলেন। বাহির আঙ্গিনা পেরিয়ে তিনি দহলীজের বারান্দায় উঠে দেখলেন, গোসল তাঁর সমাপ্ত। ফারাগ শুধু, এ গোসলে ধূলোবালির আস্তরণটা ধুয়ে যায়নি, শরীরে আর লেবাসে আঠার মতো আটকে গেছে।
মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে তখনও। ঝড়ের বেগ কমলেও বাতাসের বেগ কমেনি। উল্টে-পাল্টে পাক খাচ্ছে বাতাস। দিলওয়ার আলী শীত অনুভব করতে লাগলেন। কিন্তু কোথাও কেউ নেই। মালিক-মুনিব, চাকর-নফর যে যার ঘরে খিল এঁটে দিয়েছে। দহলীজের দুয়ারেও শিকল তুলে দেয়া। মূল দালানটি দহলীজ থেকে অনেকখানি ফাঁকে । তবে দেখা যাচ্ছে স্পষ্টই। উপর-নীচ সব তলার সবক’টি কক্ষেরই দরজা-জানালা বন্ধ।
দিলওয়ার আলী সংকুচিত হয়ে গেলেন। এ রকম অপ্রস্তুত তিনি আর কখনো হননি। বিশেষ করে, এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে সৌজন্য সাক্ষাত করতে এসে এমন চুপানী খাওয়া ছাগল চেহারা নিয়ে তিনি বিব্রত হয়ে পড়লেন। স্থির করলেন, এখান থেকেই ওয়াপস্ যাবেন তিনি। কেউ যখন দেখতে পায়নি, বৃষ্টি একটু ধরে এলেই তিনি সরে পড়বেন এখান থেকে। এই হালত নিয়ে আর এগুবেন না। সে মওকা তিনি পেলেন না। চিন্তা করে না সারতেই মূল দালানের বারান্দা থেকে ছাতি হাতে লাফিয়ে পড়লো কিতাবউদ্দীন। প্রবল বর্ষণ উপেক্ষা করে সে ‘হায়-হায়’ রবে ছুটে এলো দহলীজের দিকে। বারান্দার কাছে এসেই সে ব্যাকুল কণ্ঠে বলতে লাগলো – কি মুসিবত ! কি মুসিবত ! আসুন হুজুর আসুন। এ হালতে এখানে আর এক লহমাও নয়। জলদি জলদি এসে পোশাক-আশাক বদল করে ফেলুন। বিমার উমার হলো বলে ।
বাক হারিয়ে দিলওয়ার আলী পলকখানেক দাঁড়িয়ে রইলেন। কিতাবউদ্দীন ঐ একইভাবে আকুতি-মিনতি করতে লাগলো। চমক ভাঙ্গতেই দিলওয়ার আলী সবিস্ময়ে বললেন – কি ব্যাপার । তুমি কোত্থেকে দেখতে পেলে ?
কিতাবউদ্দীন একইভাবে বললো – আমি দেখতে পাইনি। দেখতে পেয়েছেন আপামনি – মানে মাহমুদা খাতুন আপামনি।
ঃ সেকি ! তিনি কি করে দেখতে পেলেন ।
: জানালা খুলে দেখলেন। আপনার আজ আসার কথা। ঝড়-বাদলে পড়লেন কিনা – এই ভেবে জানালা খুলে দেখতে পেলেন আপনাকে ।
: আজ আমার আসার কথা মানে ?
ঃ ইশ্বরে । আপনি নাকি শুক্রবারে আসবেন বলে গিয়েছিলেন। গত তারিখে আসেননি। আজ আর না এসে পারেন ?
: তাই ?
ঃ
আপনার কথার দাম নেই। না এলে যে ওজন থাকে না আপনার !
: আচ্ছা !
: সেই দুপুর থেকেই আমাকে নিয়ে আপা ঐ ফুল বাগানে ছিলেন। মেঘ আসতে দেখেই তো সরে গেলাম আমরা।
: বলো কি ?
ফটক বন্ধ থাকলে আগের মতো আটকে যাবেন বলে ফটকটা — ঐভাবে খুলে রেখে গেলাম।
: তাজ্জব ! এতটা তোমাদের বিশ্বাস ?
: জি ?
ঃ আমি আসবোই, এ সম্বন্ধে এতটা নিশ্চিত হলে তুমি
ঃ আমি নই, ঐ আপামনি ।
: ও আচ্ছা।
কিতাবউদ্দীন পুনরায় অস্থির হয়ে উঠে বললো – আসুন-আসুন। দেরী হলে আমাকেই ধমক খেতে হবে।
পালাবার পথ নেই। আপত্তি নিতান্তই অর্থহীন দেখে দিলওয়ার আলী এগুলেন। ছাতা মাথায় আসার নামে দুইজনেই সমানে ভিজে দালান ঘরের বারান্দায় এসে উঠলেন।
খবরটা জানাজানি হয়ে যেতেই খটাখট খুলে গেল দরজা জানালা । আফসারউদ্দীন ও আবিদ হোসেন সাহেব মকানেই ছিলেন। তাঁরা সরবে ও দ্রুতপদে বেরিয়ে এলেন। তাদের সাথে বেরিয়ে এলেন আজিজুন নেছা বেগম। বেরিয়ে এসেই সকলে অভিযোগ তুলে বললেন – একি একি । এর মধ্যে বেরিয়েছেন কেন ?
দিলওয়ার আলী সলজ্জ কন্ঠে বললেন – জিনা, এর মধ্যে বেরোইনি। পথে আমাকে ঝড়-বৃষ্টিতে ধরেছে।
আবিদ হোসেন সাহেব বললেন – তাহলে মেঘটা দেখে বেরুবে ?
দিলওয়ার আলী হাসিমুখে বললেন – ওটা দেখতে গেলে বেরোনোই হতো না। আজ আসা না হলে, আবার ঐ আর এক জুম্মাবার আসার আমার ফুরসৎ খুবই কম । তবু এভাবে বারবার কথা রাখতে না পারলে, মকানে ঢুকতে দিতেন আপনারা ?
আজিজুন নেছা খোশ কণ্ঠে বললেন – ওমা ! ছেলের আমার কত সুন্দর বিবেচনা। বেশ করেছো বাপজান। ঝড়-বাদল যা-ই হোক, জরুর তুমি আসবে। তোমার কিছু তকলিফ হলো। কিন্তু আমাদের প্রতি তোমার টানটা যে কত মজবুত, আজকে তা প্রমাণ হয়ে গেল।
অসহিষ্ণু কণ্ঠে আফসারউদ্দীন বললেন – আহ্হা ! রাখুন না এখন ওসব কথা লোকটার অসুখ-বিসুখ একটা কিছু না বাধালেই নয়। আসুন-আসুন। আগে গোসল, লেবাস বদল, তারপর অন্য কথা।
— দিলওয়ার আলীকে তিনি ঠেলতে ঠেলতে গোসলখানায় নিয়ে গেলেন।
গোসল অন্তে আফসারউদ্দীন সাহেবের এক প্রস্থ পোশাক পরে দিলওয়ার আলী এলেন এবং বরাবরের মতো ঐ নির্দিষ্ট বসার ঘরে বসলেন। ঝড়টা আগেই থেমেছিল। বৃষ্টিটাও অনেকখানি ঝিমিয়ে এলো। তবে থেমে যাওয়ার তেমন কোন আলামত বোঝা গেল না । ঝুপঝুপ করে ঝরতেই লাগলো এক লয়ে ।
আফসারউদ্দীন ও আবিদ হোসেন সাহেবও সাথে সাথেই এলেন। দিলওয়ার আলী এসে বসতেই আজিজুন নেছা বেগম একপাত্র ঈষদোষ্ণ দুধ নিয়ে হাজির হলেন এবং দিলওয়ার আলীর আপত্তিতে কান না দিয়ে জোর করেই খাইয়ে দিয়ে গেলেন। অতপর শুরু হলো গল্পালাপ। দিলওয়ার আলী কি করে এই মুসিবতে পড়লেন, কোথায় তাঁকে ঝড়-বৃষ্টিতে ধরলো, কাছেকোলে আশ্রয় কিছু ছিল কিনা—এসব নিয়ে কথাবার্তা চলার মধ্যে পাশের কক্ষ থেকে মাহমুদা খাতুন মন্তব্য করে বসলো —আসলে এই রকমই হয় ভাইজান। উনার যা পাওনা তাতো উনাকে পেতেই হবে।
সকলেই থেমে গেলেন। আফসারউদ্দীন সেদিকে চেয়ে বললেন – তার মানে? মাহমুদা খাতুন বললো—ওয়াদাখেলাপকারীর উপর যে গজব নাযেল হয়, এটাতো মিথ্যে নয়।
ঃ ওয়াদা খেলাপকারী । কে ওয়াদা খেলাপ করলো।
ঃ আপনার ঐ মেহমান। মানে আপনার ঐ ভাই। ছুটির দিনে আসার কথা। গত জুম্মাবার ছুটির দিন গেল, উনি এলেন না। এলেন এই আজ। ওয়াদা ভঙ্গ হলো না ? আফসারউদ্দীন টিপ্পনী কেটে বললেন। — ওরে এলেমদার ! তাতে কি হয়েছে ?
: কি আবার হবে ? সেদিন এলে তো এই মুসিবতে পড়তেন না। আজ আসার জন্যেই এই মুসিবতে পড়েছেন । আবিদ হোসেন সাহেব সশব্দে হেসে উঠে বললেন – মারহাবা মারহাবা ! দাও হে সালার, এর জবাব কি দেবে এবার দাও দেখি।
দিলওয়ার আলী স্মিতহাস্যে বললেন – কথাটা উনার একদিক দিয়ে ঠিক, কিন্তু কোন চূড়ান্ত কথা নয় ।
মাহমুদা খাতুন প্রতিবাদ করে বললো – কেন নয়?
দিলওয়ার আলী সসংকোচে বললেন – ওয়াদা ভঙ্গের পাপেই যে এই মুসিবতে পড়েছি আমি, একথা ঠিক নয়। মানুষ ইচ্ছে করেই সবসময় ওয়াদা ভঙ্গ করে না, অনেক ক্ষেত্রেই বাধ্য হয়। বিশেষ করে, যারা পরের গোলামী করে তাদের পক্ষে কথা রাখা বড়ই মুস্কিল।
: মানে ?
ঃ যারা স্বাধীন, তারা সবকিছুই নিজের ইচ্ছেয় করতে পারে। কোথাও যাওয়া- না-যাওয়া বা কিছু করা-না-করা সবই তাদের ইচ্ছাধীন। কিন্তু যারা পরের অধীন, তাদের কি সেই স্বাধীনতা থাকে।
: কেন থাকে নাঃ
এটা বোঝাতে পারবো না। পরের অধীন হননি তো কোনদিন। হলে নিজেই আপনি বুঝতে পারতেন, কেন তা থাকে না। আবিদ হোসেন সাহেব আবার হেসে উঠে বললেন – ঠিক-ঠিক। সালার সাহেব ঠিক কথা বলেছেন ।
মাহমুদা খাতুন আপত্তি তুলে বললো – 1 -ঠিক কথা বলেছেন ? তাহলে কি দরকার ঐ পরের অধীন হওয়ার অমন অধীন না হলেই কি নয়।
জবাবে আবিদ হোসেন সাহেব বললেন – না, ইচ্ছে করলেই মানুষ মুক্তডানা পাখীর মতো সবসময়ই স্বাধীন থাকতে পারে না। গরজ বড় বালাই৷ একভাবে না একভাবে অন্যের কিছুটা অধীন হতেই হয় তাকে ।
: কি রকম ?
ঃ আবার কি রকম ! এই যে আজ স্বাধীন হয়ে আছো, এভাবে স্বাধীন হয়েই থাকতে পারবে চিরদিন ? একদিন না একদিন তোমাকেও তো কিছুটা পরের অধীন হতে হবে।
ঃ কেন, আমি তা হতে যাবো কেন ?
আফসারউদ্দীন ক্ষিপ্ত হলেন। বিরক্তিভরে বললেন – ওরে কচি খুকীরে ! হতে যাবো কেন ? দাঁড়াও, এতদিন ব্যস্ত ছিলাম বলে এদিকে কেউ নজর দিতে পারিনি। এবার এই বছরখানেকের মধ্যেই তোমাকে বুঝিয়ে দেয়া হবে, পরের অধীন হতে যাবে কেন ?
: ভাইজান !
ঃ অধীন না হলেও স্বাধীন চলাফেরায় কিছুটা বাধা পড়ে কিনা আর অন্যের কিছু তোয়াক্কা রাখতে হয় কিনা, সেটা বুঝিয়ে দেয়া হবে । আবিদ হোসেন সাহেব সপুলকে বললেন -ঠিক-ঠিক। আমি বলি, আবার বছরখানেক কেন ? বয়সটা তো কম হয়নি বহিনের তোমার । তুমি আছো, এই সালার সাহেব আছে, একটা ভাগড়া-তাজা যোগাড় করে এনে ফেলো না শিল্পির ! দাও না শিল্পির ছুঁড়িটাকে তার সাথে গেঁথে। কবে মরি, কবে বাঁচি, ধুমধামটা দেখে যাই আর ষ্টুড়িটাও বুঝুক, তাকে কিছুটা পরের তোয়াক্কা করতে হয় কিনা
মাহমুদা খাতুন ক্রোধভরে বললো – তবেরে ! ভাল হচ্ছে না দাদু ! আফসারউদ্দীন ধমক দিয়ে বললেন – চুপ কর । বক্ বক্ করিসৃনে, আমাদের কথা বলতে দে ।
থেমে গেল মাহমুদা খাতুন। এরপর কিছুক্ষণ গল্প আলাপ করে আফসারউদ্দীন ও আবিদ হোসেন সাহেব উঠে একটু এদিক ওদিক গেলেন। দিলওয়ার আলীকে একা পেয়ে মাহমুদা খাতুন আবার বললো – আজ আর আপনার উপায় নেই সালার সাহেব। আজ আপনি বন্দি ।
দিলওয়ার আলী হেসে বললেন – হওয়াই স্বাভাবিক। বন্দি করার উদ্দেশ্যেই যেখানে ফটকটা খুলে রাখা হয়েছিল, তখন আর সেটা বিচিত্র কি ?
: তার অর্থ ।
ঃ আর লুকানোর চেষ্টা করে লাভ নেই। কিতাবউদ্দীনের কাছে সব আমি শুনেছি। : যেমন
: সারাবেলা ফটক পাহারা দেয়া আর অবশেষে ফটকটা খোলা রাখার সব বৃত্তান্ত শুনেছি।
করে?
ঃ ওম্মা ! ইতিমধ্যেই
: জি। এবার বলুন, বন্দি হলেম কিসে ?
ঃ যাবেন কি করে ? বৃষ্টি আজ ছাড়বে না ।
: ছাড়বে না ?
: সে সম্ভাবনা কম।
: ছাতি মাথায় দিয়ে যাবো।
ঃ কিন্তু লেবাস ? ওগুলো তো ধুয়ে দেয়া হয়েছে। না শুকালে যাবেন আপনি কি
ঃ এই লেবাসেই যাবো। কাল আমার লোক এসে লেবাস পাল্টে নিয়ে যাবে । মাহমুদা খাতুন হতাশ কণ্ঠে বললেন — বারে । যাওয়া তবু চাই-ই ? এতই জরুরী।
ঃ জরুরী না হোক, খামাখা থেকে করবো কি ?
: গল্প করবেন। এতদিন পরে এসে দু’ এক কথা বলেই চলে যেতে চান কেন
: অধিক বলা কি ভাল ?
: তা জানিনে। তবে আমি বড় একা। ছোট ভাইবোন কেউ নেই। বোবা হয়ে থাকি । আপনি এলে তবু কিছুক্ষণ ফাঁপড়টা কাটে ।
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!