বিপদে সোহানা – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

বিপদে সোহানা – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২৪০

বিপদে সোহানা – বইটির এক ঝলকঃ

‘না,’ বলল রানা দৃঢ়কণ্ঠে। ইনিই রানা এজেন্সি, নিউ ইয়র্ক শাখার বর্তমান চিফ। ইনি থাকবেন। যা বলতে এসেছেন, এঁর সামনেই বলুন।’ আবছা ইঙ্গিতে দু’জনকেই বসতে বলল রানা ।
‘ভেঁড়িয়ে থাকতেই ভাল্লাগচে, সার!’ বলল বত্রিশ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বেঁটে লোকটা। ক্যালক্যাটা থেকে বাংলাদেশে মাইগ্রেট করা দাগী চোর ছিল সে একসময়। জেল খেটেছে জীবনের বেশিরভাগ সময়। সব ছেড়ে রানার সঙ্গে জড়িয়ে গেছে মানুষটা একসময় ভালবাসার বন্ধনে। রানাকে এতই শ্রদ্ধা করে যে ওর সামনে কিছুতেই চেয়ারে বসবে না গিলটি মিয়া। ‘কিছু মনে করবেন না, সার। সেই সক্কাল থেকে তো বসেই আচি… ‘
আর একবার গিলটি মিয়ার উপর অসন্তুষ্ট দৃষ্টি বুলিয়ে নিয়ে রানার সামনের চেয়ারে বসল লইয়ার ক্লিপটন। বড় একটা শ্বাস ফেলে বলল, ‘একজন লোককে খুঁজছি আমি। এটাই কাজ।’
‘এই কাজ নিয়ে আমাদের কাছে এসেছেন কেন? পুলিশকে জানান। কিংবা কোনও প্রাইভেট আই-কে দিন কাজটা।’
“এটা পুলিশের কোনও ব্যাপার নয়, মিস্টার রানা,’ যেন রানার নিরাসক্তি হতাশ করেছে ওকে। ‘কী ব্যাপার, কাজ দরকার নেই নাকি আপনাদের?’
‘কাজের অভাব নেই, আবার তেমন একটা চাপও নেই । আসল কথা, এটা আমাদের লাইনের কাজ নয়।’
“যা চাইবেন সেই ফি পেলে কি…’
‘আমাদের ফি সম্পর্কে ধারণা আছে আপনার?”
মাথা নাড়ল লইয়ার । ‘বলুন, রুত দিতে হবে আপনাকে?’ গিলটি মিয়ার দিকে ফিরল রানা। ‘শোনাও দেখি, গিলটি মিয়া, কত পেলে করবে তুমি কাজটা?’
লোকটার উপর চোখ বুলাল গিলটি মিয়া। মনে মনে বলল, ‘নাহ্! এ-লোককে এট্টুও পচোন্দ হচ্চে না আমার!’ মুখে বলল, ‘সব কতা না শুনে, কদ্দিনের কাজ না জেনে লিদ্দিষ্ট কিছু তো বলা যায় না, সার। একটা আন্তাজ দিতে পারি বড়জোর । আমাদেরকে লিলে পেত্যেক দিনেৱ লেগে দু’ থেকে পাঁচ হাজার টাক… থুড়ি, ডলার মজুরি গুনতে হবে। আগাম দিতে হবে দু’দিনের ফিশ।’
কথাগুলো অবশ্য বাংলায় বলেনি ও, নিউ ইয়র্কের সাদা লোকগুনো বাংলা বোজে না। তাই ইংরেজি-বাংলা-হিন্দি-জার্মান- ফ্রেঞ্চ-ইটালিয়ান, মোটকথা পৃথিবীর তাবৎ ভাষা মিলিয়ে কাজ চালানোর মত নিজের একটা বুলি তৈরি করে নিয়েছে ও। আর আশ্চর্য হলেও সত্য, ওর কথা বুঝতে কারও অসুবিধে হয় না, সবাই কী করে জানি বুঝে নেয় কী বলছে। এই লোকও বুঝেছে।
‘অতিরিক্ত হয়ে যাচ্ছে না?’ ফি-র বহর শুনে ভিরমি খেল লইয়ার। ‘শুনে তো মনে হচ্ছে, আইন ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে এ- রকম একটা অফিস নিয়ে বসলেই ভাল করতাম।’
‘আপনাকে আঁটকাচ্চে কে? সেইটেই করুন না, মিশটার, একগাল হেসে নিষ্পাপ চোখ মেলে বলল গিলটি মিয়া। ‘আপনার এই কেস লিয়েই আরাম্ব কত্তে পারেন ব্যবসা।’
গিলটি মিয়ার দিক থেকে চোখ সরিয়ে রানার মুখের দিকে চাইল ক্লিপটন। ‘ঠিক আছে, উপযুক্ত ফি দিতে রাজি আছি আমি । ব্যাপারটা হয়েছে কী…
‘প্লিজ, ওর সঙ্গে যান। ওর অফিসে বসে কাজটা বুঝিয়ে দিন । খাতায় নোট নিতে হবে ওর, অগ্রিম টাকা নিয়ে রসিদও দেবে ও-ই । আমার ধারণা, দু’দিনের বেশি লাগবে না ওর এই কাজে।’ ‘কিন্তু আপনি শুনবেন না…’
*শুনব। এই ঘর থেকে আপনাদের সব কথাই শোনা যাবে।’ দেয়ালে বসানো স্পিকার দেখাল রানা ইঙ্গিতে। “কাজটা ও-ই করবে, তবে কাজ শুরু হওয়ার পর প্রয়োজনে আমার পরামর্শ নেবে। যান।’
মাস দুয়েকের জন্য গিলটি মিয়াকে রানা ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির নিউ ইয়র্ক শাখার দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়েছে ঢাকা থেকে। যদিও এই দেশটা ওর পচোন্দো নয়, রানার নির্দেশে আসতেই হয়েছে লিতান্ত বাদ্য হয়ে। ক্লিপটনকে সঙ্গে নিয়ে নিজের কামরায় ফিরে বিশাল সেক্রেটারিয়েট টেবিলের ওপাশে বসল সে রিভলভিং চেয়ারে। আইনজীবী বসল সামনের গদিমোড়া চেয়ারে। বার দুই দোল খেয়ে নিয়ে বেল টিপল গিলটি মিয়া। জিজ্ঞেস করল, “কী খাবেন, মিশটার আদম? চা না কপি? ‘
সামনের লোকটা মাথা নাড়ছে দেখে বেয়ারাকে বলল, “কেবিন সায়েবকে পেঠিয়ে দাও দিকিন, বাছা।’
ক্যাভিন এসে বাউ করতেই তার দিকে কলম আর প্যাড এগিয়ে দিল গিলটি মিয়া। ‘এ ভদ্দরনোক যা বলেন, লিকে ল্যাও তো, ভাই। জানই তো, আমি এক্কেবারে বকলম; আবার এ-ও জান, বুজতে পারি সব। কাজেই সাবদানে লিকবে, স্যাঙাৎ, কিছু যেন ছুটে না যায়। ঠিক আচে?’
‘ইয়েস, বস্,” বলে একটা চেয়ারে বসে পড়ল স্যাঙাৎ। গত দেড়টি মাস গিলটি মিয়াকে পরম গুরু মেনে নিয়ে মন দিয়ে শিখছে ক্যাভিন হাওয়ার্ড গোয়েন্দাগিরির নিত্যনতুন, অভূতপূর্ব সব কলা-কৌশল ।
শুরু করল অ্যাডাম ক্লিপটন ।
‘আমি খুঁজছি রবার্ট স্ট্যানলি নামের এক লোককে। বছর দেড়েক আগে স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে মোট বিশ লাখ ডলারের সম্পত্তি রেখে মারা গেছেন এই লোকের চাচা, আর্থার হেনরি। উইলে এই রবার্ট স্ট্যানলিকে দিয়ে গেছেন তিরিশ হাজার ডলার । তখন থেকেই উইলের এগজিকিউটার হিসেবে খুঁজছি আমি ওই লোককে । ওকে না পেলে উইলটা কার্যকর করা যাচ্ছে না। অনেক খোঁজাখুঁজির পর মাসকয়েক আগে লোকটাকে লোকেট করা গেল ফ্রান্সের নিস-এ। জানা গেল, স্ট্যানলি ওখানে হিপ্পি আদর্শের গাঁজা খাওয়া বিদ্রোহী এক অখ্যাত তরুণ পেইন্টার। সঙ্গে সঙ্গে আমি এয়ারমেইলে চিঠি দিয়ে তাকে জানালাম তার প্রাপ্য টাকার কথা, ওটা নেয়ার জন্যে ওকে এখানে আসতে হবে, তা নইলে অন্যান্য ভাগীদারদের কাউকেই সম্পত্তির ভাগ দেয়া যাচ্ছে না। সাধারণ ডাকে উত্তর এল সে-চিঠির। ও জানতে চায়: টাকাটা পাঠিয়ে দিলে কী হয়, কেন ওকে কষ্ট করে নিউ ইয়র্কে যেতে হবে। বার কয়েক চিঠি চালাচালির পর শেষ পর্যন্ত সপ্তাহ দুয়েক আগে প্লেনে উঠেছিল ও এখানে আসবে বলে। তুমি… আপনি হয়তো খবরটা পড়েছেন, প্লেনটা কেনেডি এয়ারপোর্টে ক্র্যাশ করে আগুনে পুড়ে ভস্ম হয়ে যায়।’
‘লে হালুয়া! তাহালে ওকে আর এই দুনিয়ায় খুঁজে লাব কী? ওপারের কোনও ডিটেকটিকে….
‘খবরের কাগজে লিখেছে: ওই দুর্ঘটনায় যে তিনজন প্রাণে বেঁচেছিল, স্ট্যানলি তাদের একজন।’
*ও, তা-ই বলুন, বেড়ালের জান। তারপর?’
‘পিছনের দিকে সিট পেয়েছিল ও। অ্যাকসিডেন্টের ধাক্কায় প্লেনের লেজটা’ খসে যাওয়ায় ছিটকে বাইরে পড়ে আগুন আর মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে গিয়েছে।’
‘হাঁ। কপালের জোর আচে বলতে হবে। পঁচালব্বই জনের মদ্যে বেরালব্বই জনই যকোন খতম, তকোন এটাকে কপাল ছাড়া আর কী বলা যায়, বলুন।’
লইয়ার বুঝে নিল, সব খবরই রাখে এই পিচ্চি জোকার—একে ছোটনজরে দেখা ঠিক হবে না ।
‘কাছেই ব্রুক হাসপাতাল, সেখানে নিয়ে যাওয়া হলো ওকে। দেখা গেল, নিশ্চিত মৃত্যুর কবল থেকে বেঁচে যাওয়ায় কিছুটা উদভ্রান্ত, কিন্তু সারা শরীরে কোথাও কোনও জখম নেই ওর। এটা জেনে পরদিন সকালে হাসপাতালে ফোন করে ওর সঙ্গে কথা বলতে চাইলাম। ওরা বলল: ‘হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই বাইরে কোথাও ফোন করেছিল ও, কয়েক মিনিটের মধ্যে এক সুন্দরী মহিলা এসে নিয়ে গেছে ওকে। এরপর থেকে আর কোনও খবর নেই— হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে রবার্ট স্ট্যানলি কয়েকটা কাগজে বিজ্ঞাপন ছেপে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।’
“খবর লিয়ে দেকেচেন, এই ইস্ট্যানলি ওর পরিবারের লোকেদের সাতে যোগাযোগ করেছে কি না?’
‘করেনি। এ হচ্ছে সম্পত্তির মালিক পরলোকগত আর্থার হেনরির ছোট ভাইয়ের পোষ্যপুত্র। পরিবারের কেউ ওকে দু’চোখে দেখতে পারে না। ছোটবেলা থেকেই নাকি বেয়াড়া কিসিমের ছিল রবার্ট, কারও সাথেই পড়তা পড়ত না। ওর পালক বাপ-মা সাত বছর আগে রোড অ্যাক্সিডেন্টে মারা যাওয়ার পর আরও বেপরোয়া হয়ে যায় ও, কিছুদিনের মধ্যে চলে যায় দেশ ছেড়ে, তারপর থেকেই লাপাত্তা। আর্থার হেনরির মৃত্যুর পর সঙ্গত কারণেই তাঁর উত্তরাধিকারীরা অস্থির হয়ে উঠেছে তাদের প্রাপ্য বুঝে নেওয়ার জন্য; অনেক টাকার ব্যাপার তো, সারাক্ষণ খোঁচাচ্ছে আমাকে।’
চুপচাপ খানিকক্ষণ চিন্তা করল গিলটি মিয়া। তারপর বলল, ‘কত বললেন? তিরিশ হাজার? বেকার এক আটিশের লেগে এ তো অনেক টাকা। বে থা করেচে?’I
“না, আমি যদ্দূর জানি, করেনি। আমি আসলে চিনি না ওকে, একটা ফটো পর্যন্ত দেখিনি। পরিবারের সবাই শেষ দেখেছে ওকে বহু বছর আগে, ওর যখন চার বছর বয়স। ওর পালক বাপও কিছুটা উদ্ভট কিসিমের লোক ছিল, বিয়ে করেছিল এক রেড ইণ্ডিয়ান মেয়েকে। ওর চাচা যে মনে করে ওকে উইলে কিছু দিয়ে গেছে, তা দেখে পরিবারের সদস্যরাই শুধু নয়, আমিও তাজ্জব হয়ে গেছি। কারও সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখেনি বলেই ওকে খুঁজে বের করতে এত সময় লেগেছে আমার।
‘ওর খোঁজ পেলেন কী করে, মিশটার আদম ব্যাপা, থুড়ি কিলিপটন? ‘
“আমি না, ওরই এক কাজিন কাগজে ওর নামটা দেখে আমাকে ফোন করেছিল। নিসের আমেরিকান কনসুলেটের সামনে

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top