বিদেশী গুপ্তচর – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৪৬
বিদেশী গুপ্তচর – বইটির এক ঝলকঃ
বিদ্যুৎবেগে এক পা এগিয়ে এল লোকটা, রানার হাতটা বের করে আনার আগেই প্রচণ্ড জোরে ঘুসি মারল রানার পেটে ।
মুহূর্তের মধ্যে পেটের পেশীগুলো শক্ত করে না নিলে এই এক ঘুসিতেই লিভার ফেটে মারা যেতে পারত রানা। ব্যথায় কুঁচকে গেল রানার চোখ-মুখ, সামনের দিকে বাঁকা হয়ে গেল শরীরটা। কিন্তু এক হাত পকেটে ভরা অবস্থাতেই দ্বিতীয় ঘুসি থেকে বাঁচার জন্যে ঝট্ করে মাথাটা সরিয়ে নিল সে একপাশে । থুতনি সই করে মারা ঘুসিটা চোয়ালে লেগে সাঁ করে বেরিয়ে গেল কানের পাশ দিয়ে ।
বাঁ হাতে ঘুসি মারল রানা একটা। ঘুসিটা লাগল লোকটার পাঁজরের নিচে ঠিক হৃৎপিণ্ড বরাবর। ঘোঁৎ করে একটা শব্দ বেরোল লোকটার মুখ দিয়ে । বেকায়দা অবস্থাতে চালানো রানার ঘুসির ওজন চমকে দিয়েছে ওকে । পিছিয়ে গেল এক পা । রানার ডান হাতটা বেরিয়ে আসছে কোটের পকেট থেকে, কাজেই আর কোন রকম সুযোগ না দেয়াই স্থির করল সে । দমাদম দুটো ঘুসি মারল রানার পাঁজরের উপর । এর কোন দরকার ছিল না, প্রথম ঘুসিতেই আসলে কাবু হয়ে গিয়েছিল রানা । টলটলায়মান অবস্থায় আরও দুটো ঘুসি খেয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে গেল মাটিতে। হামাগুড়ি দিয়ে উঠে বসল রানা, তারপর উঠে দাঁড়াবার চেষ্টা করল । হাঁটুতে জোর নেই, ঠক-ঠক করে কাঁপছে পা দুটো । সেই অবস্থায় টের পেল পালিয়ে যাচ্ছে মেয়েটা, দৌড়াচ্ছে প্রাণপণে ।
দড়াম করে পড়ল শেষ ঘুসিটা চোয়ালের ওপর । মাত্র ছ’ইঞ্চি দূর থেকে মারা ঘুসিটা খেয়ে বন্ করে ঘুরে উঠল রানার মাথা । একরাশ সর্ষেফুল দেখা গেল। ছিটকে গিয়ে ওপাশের দেয়ালের গায়ে ধাক্কা খেলো রানা, তারপর ঝুপ করে পড়ে গেল মাটিতে । এবং জ্ঞান হারাল । একটা সুরেলা নারী কণ্ঠ শুনে জ্ঞান ফিরল রানার । ‘মারা গেছে নাকি মানুষটা?”
রানা অনুভব করল তার শরীরটা নেড়েচেড়ে দেখছে কেউ । একটা পুরুষ কণ্ঠ বলল, ‘না, জ্ঞান হারিয়েছে বলে মনে হচ্ছে ।’
হামাগুড়ি দিয়ে উঠে বসবার চেষ্টা করল রানা। মাথাটা এপাশ-ওপাশ নাড়ল বন্য জন্তুর মত। চোখ মেলল। দামী কাপড়-চোপড় পরা দুজন তরুণ-তরুণী। উদ্বিগ্ন দুজোড়া চোখ চেয়ে রয়েছে ওর মুখের দিকে । রানাকে চোখ মেলতে দেখে মনে হলো হাঁফ ছেড়ে বাঁচল ।
‘দয়া করে নড়াচড়া করবেন না এখন । এক আধটা হাড়গোড় ভেঙে গিয়ে থাকতে পারে । নরম গলায় বলল লোকটা ।
‘না। ঠিকই আছি।’ উঠে বসল রানা। চোয়ালটাতে হাত বুলাল । পাকস্থলীতে কেমন যেন একটা চাপা ব্যথা অনুভব করছে সে । কপালের একপাশ ফুলে আছে, টের পেল হাত দিয়ে ছুঁয়ে। ডান হাতটা ওপরে তুলল সে । ‘একটু সাহায্য করুন ।’
চট্ করে রানার হাত ধরল মেয়েটা। উঠে দাঁড়াতে সাহায্য
করল রানাকে ।
উঠে দাঁড়িয়ে নিজেকে সামলে নিতে খানিক সময় লাগল রানার। সারা শরীর অবশ হয়ে গিয়েছিল, ধীরে ধীরে ফিরে আসছে আবার ওর শক্তি । গলিটার এপাশ থেকে ওপাশ চোখ বুলাল রানা একবার। তারপর বলল, ‘নাহ্, কিছু হয়নি। ঠিকই আছি ।’ হাত-পা ঝাড়া দিল । ‘কাউকে দেখতে পেয়েছিলেন?
‘না। পথ হারিয়ে ঘুরছি আমরা। আপনার ওপর আর একটু হলে হুমড়ি খেয়েই পড়ছিলাম । সত্যিই ঠিক আছেন তো?’
‘হ্যাঁ । কোন ভুল নেই তাতে। ধন্যবাদ । পকেটে হাত দিল রানা । কোটের পকেট থেকে মানিব্যাগটা গায়েব । নিজের ওপরই চটে গেল রানা । এতবড় ভুল করল সে কি করে? সেই মেয়েটার কপালে কি ঘটল কে জানে!
“ছিনতাই হয়েছে?’ জিজ্ঞেস করল মেয়েটা । ‘সেই রকমই মনে হচ্ছে।’
রাগে ফেটে পড়ল মেয়েটার সঙ্গী। ‘আশ্চর্য এই ইটালিয়ানগুলো! সব গুণ্ডা বদমাইশ। এখান থেকে সরে পড়া দরকার । আমরা হোটেল গ্রিটিতে উঠেছি। ইনি আমার ছোট বোন, লুইসা পিয়েত্রো। আমার নাম সিলভিও পিয়েত্রো। আমাদের যদি হোটেলে পৌঁছে দেন তাহলে দু’পেগ ভালো ব্র্যান্ডি খাওয়াতে পারি ।’
‘আহ্, সিলভিও, নিশ্চয়ই ভয়ানক কষ্ট হচ্ছে । আগে খানিকটা বিশ্রাম দরকার ওর ।’
‘না, ঠিক আছি।’ মেয়েটার দিকে ছোট্ট একটু বো করল রানা । ‘আমার জন্যে ভাববেন না। কোন অসুবিধে নেই এখন আর । আপনাদের রাস্তা চিনিয়ে দেব আমি, কিন্তু চেহারার যে হাল হয়েছে, এই অবস্থায় এখন হোটেলে না যাওয়াই ভাল। আমি বাসায় ফিরব । আমার নাম মাসুদ রানা ।’
‘মাসুদ রানা!’ এক পা এগিয়ে এল মেয়েটা। রানার মুখটা পরখ করে দেখবার চেষ্টা করছে আবছা আলোয় । ‘আমি তো চিনি আপনাকে! কোথায় যেন পরিচয় হয়েছিল আপনার সঙ্গে? ওমা, আজই তো আপনার সঙ্গে একই ট্রেনে ফিরলাম লিডো এয়ারপোর্ট থেকে । বান্ধবীকে পৌছে দিতে গিয়েছিলাম । আপনার পাশের সীটেই বসেছিলাম আমি । চিনতে পারছেন?’
রানার মনে পড়ল অপূর্ব সুন্দরী একটা মেয়ের পাশে বসে এসেছে সে লিডো থেকে ভেনিস। দু’এক টুকরো আলাপও হয়েছিল । কোন রকম ঘনিষ্ঠতার চেষ্টা করেনি সে কাজে আসছে বলে, কিন্তু স্পষ্ট অনুভব করেছিল আশ্চর্য এক আমোঘ আকর্ষণে টানছে মেয়েটা ওকে । তাজা, উষ্ণ একটা আকর্ষণ আছে মেয়েটার মধ্যে।
‘চিনেছি এবার, বলল রানা। কিন্তু আপনারা কি ইটালিয়ান নন ?’
“বাবা ইটালিয়ান, কিন্তু মা ফরাসী । আমরা ফ্রান্সে মানুষ হয়েছি।’ হাসল মেয়েটা। ‘নব্বই ভাগ ফরাসী, দশ ভাগ ইটালিয়ান আমরা।’
“চলুন, এগোনো যাক,’ বলল রানা। দুটোকে ভাগানো দরকার । ওর মাথায় একমাত্র চিন্তা এখন জুলি মাযিনি । কি হলো মেয়েটার? ধরা পড়ল শত্রুপক্ষের হাতে, নাকি কিছুক্ষণ আগের ব্যাপারটা সত্যিই একটা ছিনতাইয়ের ঘটনা? অনিলের সঙ্গে কোন যোগ নেই এর? কোটা ঠিক জানতে হবে রানাকে । খুব শীঘ্রি । ‘আপনাদের বড় রাস্তায় তুলে দিয়ে যাই ।’
উজ্জ্বল আলোয় এসে রানা দেখল, ভাই-বোনের প্রায় একই চেহারা । বোনের ওপর ভাইয়ের প্রভাব, না ভাইয়ের ওপর বোনের প্রভাব বোঝা গেল না। দুজনেই দেখতে ভাল। বাইশ থেকে সাতাশের মধ্যে বয়স। চকচকে বুদ্ধিদীপ্ত চোখ, মুখে কোমল একটা অমায়িক ভাব, সাজপোশাক সর্বাধুনিক, দামী ।
হাত বাড়িয়ে দিল সিলভিও রানার দিকে । ‘অসংখ্য ধন্যবাদ । ব্যাপারটা কি ঘটেছিল জানার জন্যে দারুণ কৌতূহল হচ্ছে । জানি জিজ্ঞেস করাটা অভদ্রতা, তাছাড়া এখন আপনার বিশ্রাম দরকার । পরে কোন একদিন যদি আপনার মুখে ঘটনাটা শুনতে পেতাম…’
“নিশ্চয়ই । আমি আছি আরও সাতদিন। এর মধ্যে একদিন আপনাদের হোটেলে গিয়ে শুনিয়ে আসব গল্পটা। ডেলা টলেটা বলে একটা প্যালাযোতে আছি আমি, স্যানসোভিনোর লাইবেরিয়া ভেচিয়ার কাছে । আপনারাও সময় পেলে একটা ফোন করে চলে আসতে পারেন যে কোন সময় । চলি এখন, কেমন?”
‘আপনি দুর্দান্ত লোক, সিনর মাসুদ রানা,’ বলল মেয়েটা। ‘চোয়ালে-কপালে যে দাগ দেখছি তাতে আঘাতের পরিমাণ বুঝতে অসুবিধে হচ্ছে না। এতবড় আঘাত হজম করাটা সোজা কথা নয়!”
বিনীত হাসি হাসল রানা। “ও কিছু নয়। অভিনয় করছি আসলে । বাসায় পৌছেই কান্নায় ভেঙে পড়ব । চলি, গুড বাই ।’ দ্রুত পায়ে হেঁটে চলল রানা বাসার দিকে ।
কলিংবেল টিপতেই দরজা খুলে দিল গিলটি মিঞা । অবাক হয়ে দেখল রানার বিধ্বস্ত চেহারা। এরকম মাঝেমধ্যে দেখে অভ্যাস আছে ওর । কোন প্রশ্ন করল না ।
ঘরে ঢুকেই কাপড় ছাড়ল রানা প্রথমে । একটা নেভি ব্লু রঙের প্যান্ট, গাঢ় কালচে-সবুজ রঙের শার্ট, আর কালো চামড়ার জ্যাকেট পরল । জুতো জোড়া বদলে রবার সোলের একজোড়া মোকাসিন পায়ে দিল। সুটকেসের গোপন একটা কম্পার্টমেন্ট থেকে বেরোল একটা ফল্স্ ঘড়ি-ঘড়ির মত কাঁটা-ডায়াল সবই আছে কিন্তু ভিতরে কোন যন্ত্রপাতি নেই । ব্যান্ডটা খুললেই ভারী একটা ধারাল অস্ত্রে পরিণত হবে সেটা। একটা খাপে পোৱা স্টিলেটো বেঁধে নিল রানা ডান ঊরুতে চামড়ার স্ট্র্যাপ দিয়ে । প্যান্টের পকেটের নিচ দিকটায় সেলাই নেই, হাত ঢুকিয়ে অনায়াসে বের করে আনা যায় ছুরিটা দরকারের সময় । তালা খোলার জন্যে বার্গলার্স কিট বের করে রাখল রানা হিপ পকেটে । বাঁ পকেটে রাখল একটা শক্তিশালী টর্চ, ইচ্ছে করলে এর রশ্মিকে ছোট করে দশ ফুট দূরে একটা সিকির সমান আলো ফেলা যায় । হাজার লিরার গোটা কয়েক নোট শার্টের বুক পকেটে রেখে খাটের ওপর বসল রানা। সিগারেট ধরাল ।
ধরে নিতে হবে, বেঁটে বক্সারটা অনিলের শত্রুপক্ষের কেউ । সাধারণ চোর বা গুণ্ডা হতে পারে, কিন্তু সতর্কতার খাতিরে ওকে বিরুদ্ধ-পক্ষের কেউ বলে ধরে নেয়া উচিত। তাহলে কি জুলি
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!