অন্তর্ধান – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৫২৬
অন্তর্ধান – বইটির এক ঝলকঃ
একপাশে সরিয়ে আনল সেডান। পার্ক করা একসারি গাড়ির সঙ্গে ঘষা খেতে থাকল বামপাশ—একের পর এক হেডলাইট আর ফ্রন্ট বাম্পার ধ্বংস করছে, তবে মেয়েটার শরীরের ছ’ইঞ্চি পাশ দিয়ে বেরিয়ে যেতে পারল । রিয়ারভিউ মিররে মেয়েটাকে থরথর করে কাঁপতে দেখল রানা-বেচারি নিজের ভাগ্যকে বিশ্বাস করতে পারছে না। ড, সিদ্দিকীর চোখেও অবিশ্বাস — নিশ্চিত একটা অ্যাকসিডেন্ট কীভাবে ফাঁকি দিল এই লোকটা? পরমুহূর্তে পিছনে টায়ারের কর্কশ শব্দ আর হর্ন শোনা গেল—পণ্টিয়াক থেমে যেতে বাধ্য হয়েছে। রানার মত মেয়েটির পাশ দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় তাদের পক্ষে। মুচকি হাসল রানা। যাক, মেয়েটা অন্তত একটা কাজের কাজ করেছে। শত্রুদের থামিয়ে দিয়ে পালাবার একটা সুযোগ সৃষ্টি করেছে—এটা কাজে লাগাতে হবে ।
পার্কিং লটে আর ঘোরাফেরা করে কাজ নেই, দিক পাল্টে মলের এন্ট্রান্সের দিকে সেডান ছোটাল রানা। বড় বড় কাঁচের দরজাগুলোর সামনে এসে ব্রেক কষে থামল ও। ‘ড. সিদ্দিকী, বেরিয়ে পড়ুন
গাড়ি ছেড়ে দেয়ার কথা শুনে চোখ বড় হয়ে গেল বিজ্ঞানীর, বাহনটার ভিতরেই নিরাপদ বোধ করছিলেন তিনি। প্রতিবাদের সুরে বলতে চেষ্টা করলেন, ‘কিন্তু … ‘
‘কোনও কথা নয়, বেরোন!”
‘সেডান থেকে ছিটকে বেরিয়ে এল রানা আর ড. সিদ্দিকী। দৌড়তে শুরু করল এন্ট্রান্সের দিকে। দরজা পেরিয়ে যখন ঢুকে যাচ্ছে, তখন পিছনে ব্রেক কষার শব্দ হলো। এক পলকের জন্য মাথা ঘুরিয়ে তাকাল রানা-ধাওয়াকারীরা এসে পড়েছে, কালো পণ্টিয়াকটা থামানো হয়েছে ঠিক সেডানের পিছনে । অ্যাসল্ট অপারেশনের নিয়মকানুন দাঁড়ি-কমা মেনে
অনুসরণ করছে এরা। রানা বুঝতে পারল, ড্রাইভার গাড়িসহ সেডানের কাছে থাকবে, বাকি তিন আরোহী এসে ঢুকবে ওদের খোঁজে। এটাই নিয়ম—টার্গেটের এস্কেপ ভেহিকল চোখে চোখে রাখতে হয়। তা ছাড়া ওয়্যারলেসে যোগাযোগও থাকবে ওদের মধ্যে। সেডান ফেলে রানারা যদি অন্য কোনও রাস্তায় পালাবার চেষ্টা করে, ড্রাইভার চোখের পলকে সেখানে হাজির হয়ে যেতে পারবে। লোকগুলোর এই নিয়মানুবর্তিতাকেই কীভাবে নিজেদের সুবিধায় ব্যবহার করা যায়, ভাবতে শুরু করল রানা।
মলের ভিতরে ঢুকে পড়েছে ওরা। বিল্ডিংটা দোতলা, সুপ্রশস্ত অভ্যন্তর—ডেকোরেশনও করা হয়েছে চমৎকারভাবে। ভিতরটা লোকে লোকারণ্য— হারিয়ে যেতে কষ্ট হবে না। আশপাশের দোকানগুলোর উপর চঞ্চল দৃষ্টি বোলাল রানা-বামে একটা ইলেকট্রনিক্স স্টোর নজর কাড়ল ওর। ড. সিদ্দিকীর আস্তিনে টান দিয়ে বলল, ‘এদিকে আসুন।’
লোকজনের ভিড় ঠেলে দোকানটার দিকে এগোল রানা, সিগ-সাওয়ারটা ধরে রেখেছে হাতে, জ্যাকেটের আড়ালে লুকিয়ে ম্যাগাজিন বদলে নিল। নতুন একটা ভরেছে, চেম্বারেও ঢোকাল একটা সিঙ্গেল বুলেট— অস্ত্রটা এখন পুরোপুরি
লোডেড।
ভেজা পোশাক পরা দুজন মানুষকে স্টোরে ঢুকতে দেখে একটু বিস্ময় ফুটল অল্পবয়েসী ক্লার্কের চেহারায়। ভুরু কুঁচকে রানা আর ড. সিদ্দিকীকে দেখল সে, বোঝার চেষ্টা করছে—আসলেই কিছু কেনার মত সামর্থ্য আছে কি না নবাগত দুই কাস্টোমারের। সেডান দখল করবার সময়ই উদ্বাস্তুদের ওভারকোটদুটো ফেলে দিয়েছিল বলে তা-ও কিছুটা রক্ষা, নইলে অমন পোশাক দেখে লোকটা দূর-দূর করে খেদাত
ওদের ।
‘কী হলো?’ একটু বিরক্তি ফুটিয়ে বলল ও। ‘আমাদের পছন্দ হচ্ছে না?’
ঝট্ করে সোজা হলো ক্লার্ক, কথা বলার দৃঢ়তা আর চেহারার আভিজাত্য দেখে সন্দেহ দূর হয়ে গেছে। মুখে হাসি ফুটিয়ে বলল, ‘হাউ মে আই হেল্প ইউ, সার?
পিস্তলটা ইতিমধ্যে হোলস্টারে রেখে দিয়েছে রানা, চোখ বোলাল ভিতরে সাজিয়ে রাখা হরেক রকম টিভি আর ডিভিডি প্লেয়ারের দিকে। ‘আমরা যা খুঁজছি, তা স্টোরের পিছনদিকে আছে,’ বলল ও।
‘প্লিজ, আসুন,’ হাঁটতে হাঁটতে বলল ক্লার্ক। ‘দেখান কী প্রয়োজন আপনাদের।’
অল্প কিছু কাস্টোমার রয়েছে স্টোরের ভিতরে, তাদের পাশ কাটিয়ে পিছনের কাউন্টারের দিকে এগোল রানা, ড. সিদ্দিকী অনুসরণ করলেন ওকে ।
‘যা চান, তা-ই পাবেন এখানে, সার, ক্যানভাসারের ভঙ্গিতে বলল ক্লার্ক। ‘চমৎকার সময়ে এসেছেন, এই হপ্তায় আমরা সব বিক্রির ওপর বিশেষ ডিসকাউণ্ট দিচ্ছি…’
লোকটার কথায় কান দিল না রানা। কাউন্টারটার একপাশে একটা দরজা চোখে পড়েছে ওর, দোকানের স্টোররুমে যাওয়া যায়। বিজ্ঞানীকে নিয়ে সেদিকে গেল ও, নব মুচড়ে খুলে ফেলল পাল্লা।
“করছেন কী, সার?’ প্রায় চেঁচিয়ে উঠল ক্লার্ক। ‘কাস্টোমারদের স্টোররুমে যাবার নিয়ম নেই !
‘কিন্তু স্টোররুমটাই তো খুঁজছি আমরা!’ বলে টান দিয়ে ড. সিদ্দিকীকে নিয়ে ঢুকে পড়ল রানা, ক্লার্ক কিছু বুঝে ওঠার আগেই দরজাটা বন্ধ করে ভিতর থেকে ছিটকিনি লাগিয়ে দিল ।
কিল পড়ল দরজায়। চাপা আওয়াজ ভেসে এল, ‘সার! দরজা খুলুন।’
অনুরোধটা গ্রাহ্য করল না রানা। হাঁটতে শুরু করল স্টোররুমের বিপরীত দিকটা লক্ষ্য করে।
‘এখানে ঢুকলেন কেন?’ বিস্মিত কণ্ঠে জানতে চাইলেন সিদ্দিকী।
জবাব না দিয়ে আঙুল তুলে দ্বিতীয় একটা দরজা দেখাল রানা – সার্ভিস ডোর। ওখান দিয়ে বাইরে থেকে দোকানের সমস্ত মালামাল এনে ঢোকানো হয় স্টোররুমে। আমেরিকার সমস্ত শপিং মলের নিয়ম এটা—স্টোররুম থাকলেই সেটার আলাদা সার্ভিস ডোর থাকতে হবে। এই ব্যবস্থায় আড়াল থেকে সব ধরনের ডেলিভারি ও সাপ্লাই সম্পাদন করা যায়, সামনে থাকা কাস্টোমারদের অসুবিধে হয় না মালামাল আনা-নেয়ার ফলে ।
নানা ধরনের কার্টনে ভরা অনেকগুলো র্যাক রয়েছে স্টোররুমের ভিতরে, সেগুলোর মাঝ দিয়ে এগোল রানা আর ড. সিদ্দিকী। দরজার সামনে পৌঁছুল। তালা দেয়া আছে পাল্লায়, তবে সেটা রানার জন্য কোনও বড় সমস্যা নয়, এক গুলিতে নবটা উড়িয়ে দিল ও, তারপর সঙ্গীকে নিয়ে বেরিয়ে এল মলের বাইরে… বৃষ্টির মধ্যে ।
অ্যাসল্ট টিমের সদস্যরা তখন মলের ভিতরে ওদের খুঁজে মরছে, খুব শীঘ্রি তাদের বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা নেই। বিল্ডিং থেকে বেরুনোর মূল পথ আর ফায়ার একজিটগুলোর দিকে নজর রাখবে ওরা, কিন্তু সার্ভিস ডোরের দিকে খেয়াল করবে বলে মনে হয় না… সম্ভবও নয়।
একটু ঘুরপথে এন্ট্রান্সের দিকে এগোল রানা, মাথায় দুষ্টবুদ্ধি খেলছে। যা ভেবেছিল, তা-ই। সেডানের পাছায় প্রায় নাক ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে কালো গাড়িটা। প্রয়োজনে দ্রুত ছোটার সুবিধার্থে ইঞ্জিন বন্ধ করা হয়নি। টাকমাথা ড্রাইভার ড্রাইভিং সিটে বসে সতর্ক চোখে তাকিয়ে রয়েছে মলের দরজার দিকে, অন্য কোনোদিকে মনোযোগ নেই ।
পিছন থেকে অগ্রসর হলো রানা, পণ্টিয়াকের রিয়ারভিউ আর সাইডভিউ মিরর থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে। হাতে বেরিয়ে এসেছে সিগ-সাওয়ারটা। নিচু হয়ে ড্রাইভারের দরজার পাশে চলে গেল ও, তারপর ঝট্ করে উঠে দাঁড়াল। এতক্ষণে সচকিত হলো ড্রাইভার, মাথা ঘুরিয়ে তাকাল অনাহূত আগন্তুকের দিকে, তবে দেরি করে ফেলেছে সে। পিস্তলের বাট দিয়ে জানালার কাঁচে সজোরে আঘাত হানল রানা, ভাঙা কাঁচের আঘাত থেকে বাঁচতে মাথা নামিয়ে ফেলল লোকটা, হাত বাড়িয়ে দিল পাশের সিটের দিকে—ওখানে তার পিস্তল, সেলফোন, সিগারেট আর লাইটার রাখা ।
না!’
‘খবরদার!’ বুক কাঁপানো স্বরে ধমকে উঠল রানা। ‘নড়বে
থমকে গেল ড্রাইভার। ফ্যাল ফ্যাল করে তাকাচ্ছে রানার দিকে।
‘নামো!’
চকিতে নিজের পিস্তলের দিকে তাকাল টাকমাথা, হিসেব কষছে—ওটা নিতে পারবে কি না /
‘বোকামি কোরো না,’ বলল রানা। ‘লক্ষ্মী ছেলের মত নেমে এসো গাড়ি থেকে। ‘
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!