ভেঙ্গে গেল তলোয়ার – নসীম হেজাযী – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

ভেঙ্গে গেল তলোয়ার – নসীম হেজাযী – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ আব্দুল মান্নান

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৪১০

ভেঙ্গে গেল তলোয়ার – বইটির এক ঝলকঃ

করে মারাঠার সাথে মিলিত হোলেন। হোলকার ও গনেশ পন্থের সেনাবাহিনী কাঠওয়ার থেকে অবরোধ তুলে নিয়ে নতুন মিত্রের সাহায্যের সংকল্প নিয়ে এগিয়ে গেলো শাহ্নূরের দিকে। বুরহানুদ্দীন মারাঠাদের অনুসরণ করলেন এবং শাহ্নূরের কাছে তাদের উপর হামলা করলেন। কিন্তু শাহনূরের নওয়াব ও মারাঠাদের মিলিত শক্তির সামনে তিনি টিকে থাকতে পারলেন না, পিছু হটে গেলেন। এরপর মারাঠারা কাঠওয়ার ও লক্ষেশ্বর এলাকার কয়েকটি কেল্লা দখল করে নিলো। খোলা ময়দানে মোকাবিলা করার মতো ফউজ বুরহানুদ্দীনের সাথে ছিলো না।
সেনা সাহায্য পৌঁছা পর্যন্ত তিনি আত্মরক্ষামূলক পদ্ধতিতে বিভিন্ন ময়দানে দুশমনদের যথাসাধ্য বিব্রত রাখার জন্য সচেষ্ট থাকলেন।
এই সময়ে নিযাম ও মারাঠাদের কাছ থেকে উৎসাহ পেয়ে কুর্গের যুদ্ধপিয়াসী নায়ার পুনরায় বিদ্রোহ করলো এবং সুলতান টিপুকে উত্তরের ময়দানের দিকে নযর দেবার আগে তাদেরই দিকে মনোযোগ দিতে হলো। কুর্গের বিদ্রোহ দমনের পর সুলতান বাংগালোরে পৌঁছলেন এবং সেখান থেকে এগিয়ে গেলেন উত্তরদিকে। বাংগালোর থেকে রওয়ানা হওয়ার সময়ে তাঁর সাথে ছিলো চল্লিশ হাজার জীবনপণ যোদ্ধা। তারা বহু ময়দানে দিয়েছে তাদের বীরত্বের পরিচয়। পথে করদ ও সামন্ত সরদাররা তাদের সৈন্যদল নিয়ে শামিল হতে থাকলেন তাঁর সাথে। বর্ষার মওসুম শুরু হয়ে গিয়েছিলো এবং সুলতান টিপু মারাঠাদের রসদ ও সেনা সাহায্যের পথ বন্ধ করার উদ্দেশ্যে নদী-নালায় প্লাবনের পুরোপুরি সুযোগ নেবার জন্য সচেষ্ট হলেন।
হায়দরাবাদ ও পুণার সেনাবাহিনীর সিপাহসালারদের বিশ্বাস ছিলো যে, সুলতানের প্রধান উদ্দেশ্য বুরহানুদ্দীনের সাহায্য করা, কিন্তু একদিন পুণা ও হায়দরাবাদের শাসকরা হয়রান হয়ে খবর শুনলেন যে, শেরে মহীশূরের সেনাবাহিনী আঘাত হেনেছে আধুনীর দরযায়। আধুনীর শাসনকর্তা মহাবৎ জঙ ছিলেন নিযামের ভাতিজা ও জামাতা। সুলতান টিপুর মতো বিচক্ষণ ও দূরদর্শী লোকের পক্ষে বুঝতে অসুবিধা ছিলো না যে, মীর নিযাম আলী তুংগভদ্রার দক্ষিণে তাঁর সব চাইতে মযবুত কেল্লা নিরাপদ রাখার দিকে মনোযোগী হবেন অবিলম্বে। সুলতানের বাহিনী যখন আধুনীর কেল্লার উপর গোলাবর্ষণ করছিলো, তখন মহাবৎ জঙের দূত নিযাম ও পেশোয়ার দরবারে ফরিয়াদ করছিলো যে, আধুনীর হেফাযতের প্রশ্ন দাক্ষিণাত্যের শাসক খান্দানের উ্যত ও সৌভাগ্যের প্রশ্ন। মহাবৎ জঙ আসন্ন ধ্বংসের আশংকায় প্রচুর অর্থ দিয়ে সুলতানের হাত থেকে বাঁচবার চেষ্টা করলেন, কিন্তু সুলতান টিপু তাঁর দূতকে জওয়াব দিলেনঃ ‘মহাব‍ জঙ যদি আমার বন্ধুত্ব কামনা করেন, তা’হলে স্বয়ং তিনিই আমার কাছে আসবেন । তিনি যদি মারাঠাদের সংগ ত্যাগ করেন তাহলে আমার কোনো দুশমনী নেই তাঁর সাথে।’
কিন্তু মহাবৎ জঙের নিযাম ও মারাঠার তরফ থেকে সাহায্য লাভের পুরো আশা ছিলো এবং তাঁর লক্ষ্য ছিলো শুধু কিছুদিনের জন্য সুলতানকে যুদ্ধ মুলতবী রাখতে রাযী করা। সুলতান টিপুরও পূর্ণ বিশ্বাস ছিলো যে, নিযাম ও মারাঠা আধুনীকে বিপদের মুখে রেখে নির্বিকার থাকবেন না। তাই মহাবৎ জঙের সেনাসাহায্য প্রাপ্তির আগেই তিনি আধুনী দখল করে নেবার ইচ্ছা করলেন।
তাহির বেগের বিবি আতিয়া ও পুত্রবধূ তানবীর তাদের আলীশান বাসভবনের দ্বিতলের এক কামরায় জানালার সামনে দন্ডায়মান। শহরের চারদিকে শুধু তোপ ও বন্দুকের মুহুর্মুহু আওয়ায শোনা যাচ্ছে। ধূম্রমেঘে আচ্ছন্ন হয়ে গেছে সারা আকাশ । সিঁড়ির দিকে কার পদশব্দ শোনা গেলো এবং তারা রুদ্ধনিশ্বাসে দরযার দিকে তাকাতে লাগলেন।
হাশিম বেগ হাঁপাতে হাঁপাতে কামরায় প্রবেশ করে বললেনঃ ‘আব্বাজানের হুকুম, আমি আপনাদেরকে কেল্লার ভিতরে পৌঁছে দেবো। শহরের উপর দুশমনের হামলা খুব তীব্র হয়ে উঠেছে। আপনারা আমার সাথে চলুন। নওকররা জিনিসপত্র নিয়ে আসবে।’
আতিয়া-বললেনঃ ‘তোমার আব্বাজান তো বলছিলেন যে, শহরে কয়েক হফতার জন্য কোনো বিপদ নেই।’
হাশিম বেগ বললেনঃ ‘আম্মাজান, আপনারা জলদী করুন। আপনাদের ওখানে যাওয়া এজন্যও প্রয়োজন যে, শাহবায খান যখমী হয়েছেন। তাঁর দেখাশোনার জন্য কোনো ভালো হাকীমের প্রয়োজন। তাই আমরা তাঁকে গৃহে না এনে কেল্লার ভিতরে পৌঁছে দিয়েছি।’
আতিয়া ও তানবীর কিছুক্ষণ মোহাচ্ছন্নের মতো হাশিম বেগের দিকে তাকিয়ে রইলেন। অবশেষে তানবীর চীৎকার করে উঠলোঃ ‘খালাজান, কি ভাবছেন আপনি? আল্লার ওয়াস্তে জলদী করুন।’ তারপর সে ক্রমাগত, প্রশ্নের পর প্রশ্ন করতে লাগলো হাশিম বেগের কাছেঃ ‘ভাইজান কখন যখমী হলেন? ওঁর অবস্থা এখন কেমন? সত্যি করে বলুন, তিনি যিন্দা আছেন তো?’
হাশিম বললেনঃ ‘এইমাত্র দুশমনের গোলাবর্ষণে শহরের পাঁচিলের এক বুরুজ ভেঙে পড়েছে। তখন তিনি নীচে এসে পড়েছেন। ইটের স্তূপের ভিতর থেকে তাঁকে আমরা টেনে এনেছি। তাঁর মাথা থেকে রক্ত ঝরছিলো। এখনও তাঁর হুঁশ রয়েছে। অস্ত্রচিকিৎসকের ধারণা, তাঁর যখম তেমন সাংঘাতিক নয়। খুব শীগিরই ভালো হয়ে যাবেন।’
কিছুক্ষণ পর আতিয়া ও তানবীর কেল্লার এক কামরায় শাহবাযের পাশে গিয়ে বসলেন। শাহবায খান শয্যার উপর শায়িত। তাঁর মাথায় পট্টি বাঁধা। রক্ত বন্ধ না হওয়ায় মাথায় পট্টির একাংশ লাল হয়ে গেছে। শাহবাযের মুখে অসহনীয় দৈহিক ক্লেশের আভাস সুস্পষ্ট। তবু তিনি বারবার বলেনঃ তানবীর, আমি ভালো আছি। আমি সম্পূর্ণ সুস্থ। তুমি পেরেশান হয়ো না।’
খানিকক্ষণ পর তিনি পানি চাইলেন। তানবীর ছুটে গিয়ে এক পেয়ালা পানি আনলো। আতিয়া তাঁকে ধরে তুললেন। শাহবায হাত বাড়িয়ে পেয়ালা ধরবার চেষ্টা করলেন, কিন্তু হাত ঠিক পেয়ালার দিকে না গিয়ে এদিক ওদিক ঢলে পড়ে যায়। তানবীর খালার দিকে তাকিয়ে কান্নার বেগ সংযত করে পানির পেয়ালা মুখে তুলে দিলো। পানি পান করিয়ে আতিয়া তাঁর মাথা বালিশের উপর রাখলেন। তানবীর তাঁর কম্পিত হাতখানি তাঁর চোখের সামনে এনে ভাইয়ের সিনার উপর মাথা রেখে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলো।
শাহবায তার মাথায় হাত বুলিয়ে হাসবার চেষ্টা করে বললেনঃ ‘খালাজান, ওকে বুঝিয়ে দিন, দেখুন, আমি সম্পূর্ণ সুস্থ।’
তানবীর বললোঃ ‘ভাইজান, আপনি আমার কাছে কিছু গোপন করবার চেষ্টা করবেন না। আমি আপনার বোন। কামরার ভিতরে ঢুকেই সব কিছু জানতে পেরেছি।’
ঃ ‘বলো, কি জানতে পেরেছো? শাহবায দিশাহারা হয়ে বললেন।
: ‘ভাইজান, আপনার চোখ!
শাহবায কয়েক মুহুর্ত নির্বাক থাকলেন। অবশেষে তিনি বললেনঃ ‘তানবীর, মাথায় আঘাতের দরুন কখনো কখনো চোখে অন্ধকার নেমে আসে। কিন্তু হাকীম বলছিলেন যে, কোনো বিপদের আশংকা নেই। দেখো, এখন আমি কামরার সব কিছুই দেখতে পাই। উঠে আমার সামনে বসে আমার পরীক্ষা নেও।’
আতিয়া বললেনঃ ‘মাথায় আঘাত লাগলে কখনো কখনো অমন হয়। তুমি একটু নিশ্চিন্ত থাক।’
শাহ্বায বললেনঃ ‘তানবীর, আমার কাছে ওয়াদা করো, আব্বাজানকে আমার যখমী হবার খবর দেবে না। তিনি আমায় এমন অবস্থায় এসে দেখেন, তা’ আমি চাই না। আমার বিশ্বাস, আমি খুব শীগ্‌গিরই ভালো হয়ে যাবো। হাকীম আমায় বহুত আশ্বাস দিয়ে গেছেন।’
সন্ধ্যাবেলায় তাহির বেগ ও হাশিম বেগ কামরায় এসে প্রবেশ করলেন। তাঁদের পায়ের আওয়ায পেয়ে শাহবায চোখ খুলে বললেনঃ ‘খালাজান, এখন আমার চোখ ভালো হয়ে গেছে। খালুজান ও হাশিম বেগকে দেখতে পাচ্ছি।’
তাহির বেগ এগিয়ে এসে এক কুরসীর উপর বসে বললেনঃ ‘শাহবায, আমি তোমার জন্য খুব ভালো খবর নিয়ে এসেছি। তাওয়ার জন্তু ও হরিপন্থ চল্লিশ হাজার সওয়ার নিয়ে এখানে পৌছাবন। তা’ছাড়া হুযূর নিযাম হায়দরাবাদ থেকে পঁচিশ হাজার সওয়ারসহ মোগল আলী খানকে পাঠিয়েছেন। মহীশূরের ফউজ শীগিরই অবরোধ তুলে নিতে বাধ্য হবে।’
কিন্তু শাবাঘের কাছে এ খবরের কোনো গুরুত্ব নেই। তিনি অধীর হয়ে বলে উঠলেনঃ ‘খালুজান, হাকীমকে ডাকুন। আমার চোখের সামনে আবার অন্ধকার নেমে আসছে।’
তাহওয়ার জঙ, হরিপন্থ ও মোগল আলী খানের সেনাবাহিনীর আগমন সংবাদ শুনে সুলতান টিপু অবিলম্বে আধুনী দখল করে নেবার জন্য কয়েকবার তীব্র হামলা চালালেন, কিন্তু আধুনীর আত্মরক্ষা ব্যবস্থার দরুন তিনি সফল হলেন না । তারপর যখন পঁয়ষট্টি হাজার সওয়ার আধুনীর কাছে পৌছে গেলো, তখন সুলতান শহর দখলের ইরাদা মুলতবী রেখে তাদের পথরোধ করার চেষ্টা করলেন।
নিযাম ও মারাঠাদের দ্রুত হস্তক্ষেপের ফলে সুলতান টিপু যদিও আধুনীর কেল্লার উপর চূড়ান্ত আঘাত হানতে পারলেন না, কিন্তু তাঁর একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কৌশল সফল হয়েছিলো। তিনি দুশমনের জন্য একটি নতুন ফ্রন্ট খুলে দিয়ে ঠিক বর্ষা শুরু হবার প্রাক্কালে তাদের বেশীর ভাগ সৈন্যকে তুংগভদ্রা নদী পার হয়ে এগিয়ে যেতে বাধ্য করলেন। সম্মিলিত সেনাবাহিনী যদি তাদের সামরিক পরিকল্পনা কার্যকরী করতো, তা’হলে তারা তুংগভদ্রার তীরে রসদ ও বারুদের ভান্ডার জমা করতো এবং ফউজী আড্ডা কায়েম করার আগে দক্ষিণদিকে অগ্রসর হত না। কিন্তু এখন তারা জরুরী ব্যবস্থাপনা ছাড়াই এগিয়ে চলে এসেছে। বর্ষা তখন আসন্ন এবং যে এলাকা দিয়ে প্লাবনের দিনে তারা রসদ পাবার আশা করতো, তুংগভদ্রা ও কৃষ্ণার মধ্যবর্তী সেই এলাকার বেশীর ভাগই তখন সুলতান টিপুর সেনাবাহিনীর অধিকারে। হরিপন্থ ও মোগল আলী খান উপলব্ধি করলো যে, বর্ষার প্লাবনের দরুন তাদের রসদ ও সেনা সাহায্যের পথ সম্পূর্ণ রুদ্ধ হয়ে যাবে। মহাবং জঙকে খবর পাঠানো হল, যেনো তিনি তার পরিবারবর্গসহ আধুনী থেকে বেরিয়ে রায়চূর চলে যান। মহাবৎ জঙ আধুনীর আমীরদের সাথে পরামর্শ করে হরিপন্থের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করলেন। সুতরাং একদিন আধুনীর কেল্লার দরযায় এসে দাঁড়ালো হাতী, ঘোড়া, পালকি ও বলদের গাড়ির সারি। মহাবৎ জন্তু ও অন্যান্য রইস সন্তান সন্ততি নিয়ে তা’তে সওয়ার হচ্ছেন। কতক মহিলা ডুলি চড়ে কেল্লার বাইরে যাচ্ছিলেন। কেল্লার ভিতরে একটি গৃহের প্রশস্ত কামরায় তাহির বেগের খান্দানের কতক লোক সমবেত হয়েছেন। শাহবায খান শয্যায় শায়িত এবং তানবীর কাতর অনুনয় করে তাহির বেগ, আতিয়া ও খান্দানের অন্যান্য মহিলাদের বললোঃ খোদার ওয়াস্তে ভাইজানকে সফর করতে বাধ্য করবেন না। হাকীম আপনাদের সামনেই বলেছেন যে, উনি কয়েক হফতা চলাফেরায় বিরত না থাকলে চিরদিনের জন্য দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলতে পারেন ।
তাহির বেগ বললেনঃ ‘বেটি, চিন্তা করো না। পথে যাতে ওঁর কোনো তকলীফ না হয়, তার জন্য সতর্কতা, অবলম্বন করা হবে। আমার নওকররা ওঁকে বিছানাসহ তুলে নিয়ে যাবে।’
তানবীর বললোঃ ‘খালুজান, খোদার দিকে চেয়ে এ ব্যাপারে যিদ করবেন না । আমি জানি, দুশমন পথে অবশ্যি হামলা করবে এবং ওঁর হেফাযত আপনাদের জন্য এক সমস্যা হয়ে পড়বে। ওঁকে এখানেই থাকতে দিন।’
তাহির বেগ বললেনঃ ‘কিন্তু মহীশূরের ফউজ যখন শহরে প্রবেশ করবে, তখন ওঁর কি হবে?’
ঃ ‘মহীশূরের সিপাহীদের আমি জানি। যখমী ও অসহায় মানুষের উপর তাঁরা হাত ভোলেন না।’
এক প্রৌঢ় বয়স্কা মহিলা বললেনঃ ‘মীর্যা সাহেব, আপনার পুত্রবধূর ধারণা নির্ভুল। শাহবাযের পক্ষে এ অবস্থায় সফর করা খুবই পীড়াদায়ক হবে। ওঁর চোখের দৃষ্টি হারাবার ভয় থাকলে আপনি যিদ করবেন না। তারপর আপনারা এখানে থাকলে ওঁর থাকতে ভয় কি?
তাহির বেগ বললেনঃ ‘আচ্ছা বেটি, তোমার ধারণা এই হলে আমার কোনো আপত্তি নেই, কিন্তু তুমি জলদী করো। কাফেলা তৈরী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।’
তানবীর চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ভংগীতে বললোঃ ‘আপনি খালাজানকে পাঠিয়ে দিন। আমি এখানেই থাকবো। ভাইজানকে এ অবস্থায় ফেলে যেতে আমি পারবো না। আমায় তাঁর প্রয়োজন হবে।’
শাহবায প্রশান্ত হয়ে এই বিতর্ক শুনছিলেন। তিনি উঠে বসলেন এবং চীৎকার করে বললেনঃ ‘তানবীর তোমায় আমার মোটেই প্রয়োজন নেই। খোদার দিকে চেয়ে তুমি এক্ষুণি খালাজানের সাথে চলে যাও।’
সাথে সাথেই শাহবায দু’হাতে মাথাটা চেপে ধরলেন। তানবীর জলদী এগিয়ে গিয়ে তাঁকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে বললেনঃ ‘ভাইজান, খোদার নাম করে আপনি শুয়ে থাকুন তো।’
শাহবায খান বললেনঃ ‘তানবীর, তুমি পাঁচ মিনিটের ভিতর এখান থেকে বেরিয়ে না গেলে আমি পায়দল কাফেলার সাথে যেতে তৈরী হবো। খালাজান, ওকে নিয়ে যান, নইলে আমি পাগল হয়ে যাবো।’

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top