দ্য ক্রসিং – সামার ইয়াজবেক – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ তানজিনা বিনতে নূর
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২৭৮
দ্য ক্রসিং – বইটির এক ঝলকঃ
দেখতে কেমন, কতটা লম্বা ইত্যাদি। পরবর্তী সময়ে এখানকার কয়েকজন কর্মী সারাকেবে পতিত রাসায়নিক গোলার ওপর একটা দলিল তৈরি করে সেটি সারা বিশ্বের বিভিন্ন সরকারি এজেন্সিতে পাঠিয়েছিল। দুঃখজনকভাবে তাদের এসব প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছিল, কেননা বহির্বিশ্ব তাদের এই আশা ও ইতিবাচক মনোভাবের কোনো দামই দেয়নি, বরং ভয়ংকর এই লড়াইয়ে তাদের একা ছেড়ে দিয়েছিল।
একটু পর আবু ওয়াহিদ নামের মধ্য চল্লিশের এক বিবাহিত যুবক, যে বর্তমানে ফ্রি আর্মির একজন ব্যাটালিয়ন কমান্ডার, আমাদের নিতে পিকআপ নিয়ে হাজির হলো। আমরা বলতে আমি, আমার গাইড মোহাম্মদ ও মায়সারার শ্যালক মানহাল, যে আমার প্রথম ভ্রমণের সময় আমাকে সীমান্তবর্তী হাসপাতালটিতে নিয়ে গিয়েছিল। আমরা সবাই কয়েকটা গ্রাম এবং সেখানকার উদ্বাস্তু লোকদের দেখতে যাচ্ছিলাম। মিসাইলের শব্দ ছিল অনেক দূরবর্তী, তাই আমরা আশা করছিলাম, আজ হয়তো মৃত্যুর ছায়াও আমাদের থেকে দূরে থাকবে ।
বাজার ছাড়িয়ে আমাদের গাড়ি রওনা হয়ে গেল, কিন্তু আমি রাস্তায় কোনো মহিলা দেখলাম না। আমি শুধু একজন নেকাব দিয়ে মুখ ঢাকা মহিলা দেখেছিলাম, যে তার স্বামীর সঙ্গে পথ চলছিল। এই প্রথমবারের মতো আমি সারাকেবে কোনো নেকাব পরা মহিলা দেখেছিলাম, যাকে স্থানীয় ভাষায় ‘খিমার’ বলা হতো; সাধারণত নারীরা শুধু স্কার্ফ দিয়ে নিজেদের চুল ঢাকতেন।
আমরা একটা ব্যাটালিয়নের হেডকোয়ার্টারে যাব। তারা আমাদের একটা ‘মাউন্টেড গান’ দেখাবে, যেটা তারা বানিয়েছিল। এটা ছিল একধরনের কামান। আবু ওয়াহিদের তার পিকআপ দিয়ে সেটা কোনো এক জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার কথা রয়েছে।
শহরের নির্ঝঞ্ঝাট রাস্তার দুই পাশে ছোট ছোট সাইপ্রেস গাছের সারি। তার মাঝে ছোট বাচ্চারা সবজি আর জ্বালানি বিক্রি করছিল। তাদের কাছে নানা মাপের কনটেইনার ছিল, ‘ব্ল্যাক ডিজেল’ ও ‘রেড ডিজেল’ লেখা। দুটোর দামে পার্থক্য থাকলেও দুটোই ছিল অনেক সন্তা ও নিম্নমানের। জ্বলার সময় দুটো থেকেই অত্যন্ত তীব্র কালো ধোঁয়া সৃষ্টি হয়। আলেপ্পা-দামেস্ক হাইওয়ের পাশে ১০ জন ছেলের এমনই একটি দল অপরিশোধিত পেট্রল ও ডিজেল বিক্রি করছিল। এদের বেশির ভাগই বোমার ভয়ে স্কুলে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছিল। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, তাদের স্কুলশিক্ষকেরা এখনো সিরিয়া সরকারের কাছ থেকে বেতন নিয়ে যাচ্ছেন।
সূর্য ডুবে গিয়ে বাতাসে হালকা ঠান্ডাভাব অনুভূত হচ্ছিল, আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে পেট্রলের দরদাম করছিলাম। মানহাল একটা ছেলেকে এক ক্যানিস্টার ডিজেলের দাম জিজ্ঞেস করলে সে উত্তর দিল ‘২ হাজার ৫৫০ লিরা। এক বছর আগে এক ভ্যান তেলের দাম ছিল মাত্র ২৭০ লিরা।
‘ফেব্রুয়ারির বেলা এমনই’, আবু ওয়াহিদ বলল সূর্যের দিকে তাকিয়ে। তারপর সে আমার দিকে তাকাল। ‘ম্যাডাম, আমরা আমাদের লোকদের জন্য ন্যায়বিচার চাই। কিন্তু এ ব্যাপারে অন্য কোনো দেশের হস্তক্ষেপ আমাদের কাম্য নয়। হস্তক্ষেপ না করে তারা যদি বাশারের বিপক্ষে আমাদের একা লড়তে দেয়, সেটাই ভালো। তাদের হস্তক্ষেপে শুধু বাশার সরকারেরই লাভ হচ্ছে। আপনি দেখেন, আমরা কিন্তু এখনো এই শাসকের হাত থেকে মুক্তি পাইনি। আমি আইনের ছাত্র, বিল্ডিং কনস্ট্রাকশনের সঙ্গে জড়িত ছিলাম, যথেষ্ট সচ্ছল। আমি মূলত নাট্যকলায় পড়তে চেয়েছিলাম। মঞ্চ ও টিভি নাটকের প্রতি আমার আগ্রহ ছিল, কিন্তু নাট্যকলায় পড়া হলো না। আমার বাকি জীবনটাও মনে হয় শিল্পের ভক্ত হিসেবেই কেটে যাবে।’ সে হাসল ।
আমাদের গাড়ি খান আল-সাবাল গ্রামের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল, যেখানে বড় একটা খনি ছিল। একসময় এখানে বড় একটা সরকারি চেকপোস্টও ছিল। বিপ্লবীরা সেটা মুক্ত করেছে। আসাদ বাহিনী চলে যাওয়ার পর এই গ্রামের লোকেরাও তাদের ঘরে ফিরে গেছে। এখন সেখানে ফ্রি আর্মির চেকপয়েন্ট আছে, গাড়ি সেখানে থামল। আমাদের পিকআপ ছাড়া আর কোনো গাড়ি ছিল না। তবে হুডখোলা একটা ট্রাক ছিল, যাতে তিনজন সশস্ত্র সেনা মেশিনগান নিয়ে পেছনে বসা ছিল ।
জেরাদা গ্রামে পৌঁছে আমি বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলাম। ‘পুরো গ্রামটা পাথরের তৈরি!’ আমি চিৎকার করে বলে উঠলাম। সেখানে শত শত বছরের পুরোনো রোমান মুসোলিয়ামসহ আরও অজস্র ঐতিহাসিক স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ ছিল। এটা জাবাল জাভিয়া অঞ্চলের একটা এলাকা। আমি চারপাশে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম, কারণ এখানকার যোদ্ধারা এই এলাকার এই ধ্বংসস্তূপের ঐতিহাসিক মূল্য সম্পর্কে মোটেও সচেতন নয়, ছিনতাই তাদের যুদ্ধের একটা অংশ।
জেরাদা গ্রামটি মারাত আল-নুমান প্রদেশে অবস্থিত। মারাত আল-নুমান পপি ফুলের আরবি শব্দ ‘শাকায়িক নুমন’ থেকে এসেছে। রোমান স্থাপনার ফাঁকে ফাঁকে অনেক পপি ফুল উঁকি দিয়ে আছে। ধ্বংসস্তূপের পেছনে লাল ফুলের এক চওড়া গালিচা বিছানো, একেবারে দূরের রাবিহা গ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত। রোমান সমাধির মাঝে ছড়ানো পাথরের সমাধিগুলোকে ক্ষুদ্র প্রাসাদের মতো লাগছিল। আমার সাথিদের কাছে জানলাম যে বেশির ভাগ সমাধির পাথরই চুরি হয়ে গেছে।
আরেকটা মিলিটারি চেকপয়েন্ট পার হওয়ার পর আমরা একজন মহিলাকে দেখলাম তার তিন বাচ্চাসহ। জানতে পারলাম এখানকার লোকজন ভেড়া পালন এবং জলপাই বাগান থেকে জীবিকা নির্বাহ করে। এখানকার মাটি লাল ও বড় বড় পাথরসমৃদ্ধ। তারপর আমরা আরিহার আরেক পাশে পৌঁছালাম, যেখান থেকে সরকারি বাহিনী আমেনাস এবং স্মিথারিন পর্যন্ত বোমা বর্ষণ করেছিল। সারজা গ্রাম থেকে লাল মাটি শেষ হয়ে বালুকাময় মরুভূমি শুরু হয়েছে। অনেকগুলো ব্যাটালিয়ন এখানে তাদের চেকপোস্ট বসিয়েছে এবং ক্ষমতা ও নিয়ন্ত্রণের প্রদর্শনীর প্রতিযোগিতা করছে। সিরিয়ার ‘শহীদ ব্রিগেডের লিডার জামাল মারুফের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ‘দেইর সিম্বেল’ গ্রামেও এ রকমই ব্যাপার ছিল। সেখানে আমরা একটা ট্যাংক এবং নুসরা বাহিনী, আহরার আল-শামসহ আরও অনেক ব্যাটালিয়নের সামরিক চেকপয়েন্ট পেরিয়ে এলাম ।
ফ্রি আর্মির একজন অফিসার হিসেবে আবু ওয়াহিদ তখনো বিশ্বাস করছিল যে, সরকারের পতন হলেই বিদেশি যোদ্ধারা তাদের নিজ দেশে ফিরে যাবে। আমি সেটা মানতে পারলাম না। ‘সময়ই বলে দেবে—সে এটুকুই শুধু বলল ।
“কিন্তু তাদের কোনো দেশ নেই,’ আমি বললাম। ‘তাদের বিশ্বাসই তাদের দেশ ।
আবু ওয়াহিদের কারণে আমরা চেকপোস্টগুলো সহজেই পেরিয়ে গিয়েছিলাম; পরিচিত ব্যাটালিয়নের কোনো সদস্য সঙ্গে থাকলেই শুধু এমন নিরাপদে চলাচল করা সম্ভব। আমাদের সামনে শরণার্থীদের তাঁবুবাহী একটা ট্রাক ছিল। রাস্তার পাশে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে ছিল ধ্বংসপ্রাপ্ত ঘরবাড়ির দীর্ঘ সারি; অথচ এমন ভগ্নস্তূপের মাঝেও কাঠবাদাম ও জলপাইগাছ জন্মেছিল।
আমরা ‘রাবিয়া’ গ্রামে পৌছালাম, যে গ্রামের মাটির নিচের রোমান সমাধিগুলো শরণার্থীদের আশ্রয়কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। আমরা সেখানে থামলাম। সেখানকার নারীদের সাথে কথা বললাম ও তাদের গুহা-জীবন সম্পর্কে জানতে চাইলাম। জায়গাটা একসময় জলপাইগাছে ঘেরা ছিল। তবে এখন এদের বেশির ভাগই কাটা এবং জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে গেছে। কিছু গাছ অবশ্য বোমায় পুড়েছে, কিন্তু গুহার চারপাশে এখনো কিছু গাছ রয়ে গেছে, যেখানে ৩০টির মতো পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। এ রকম গুহার সংখ্যা ছয়-সাতটি, প্রতিটিতে বড় একটি গভীর, অন্ধকার পাতাল গর্ত রয়েছে।
ষোড়শী এক হিজাব পরিহিত তরুণী। একটি গুহায় প্রবেশমুখে বসে ছিল। বোমার আঘাতে তার দুটি পা-ই উড়ে গেছে। একটি উরু পর্যন্ত আরেকটি হাঁটু পর্যন্ত। তার চোখগুলো ভাবলেশহীন। সে বলল, তার ভাইবোনদের ছবি আঁকা শেখাতে চায়, কিন্তু তাদের কাছে আঁকার মতো কোনো সরঞ্জাম নেই। সে এ-ও বলল যে তার অনেকগুলো অপারেশন দরকার। তার ক্ষতগুলো সংক্রমিত হয়েছে এবং রক্ত দূষিত হয়ে যাচ্ছে। তার মুখের ভাবে কোনো পরিবর্তন দেখলাম না। আমরা তাদের গুহায় ঢুকলাম, সেখানে মেয়েটির মা ও অন্য ভাইবোনেরা ছিল। তার বাবা তার প্রথম স্ত্রী ও পাঁচ বাচ্চাসহ সামনের আরেকটি গুহায় আশ্রয় নিয়েছিল। মেয়েটির মা তার দ্বিতীয় স্ত্রী, নাম উম্মে মোস্তফা। তাদের আদি নিবাস ছিল কাফরুমা গ্রামে ।
গুহায় কোনো প্রাকৃতিক আলো ছিল না। দিনরাত সারাক্ষণই তারা একটি ওষুধের বোতলে তেল ঢেলে তাতে একটি কাঠি জ্বালিয়ে রাখত। এই হাতে বানানো ল্যাম্পের আলো ছিল খুবই কম এবং ধোঁয়ায় ভরা। বাচ্চাগুলো আমাকে ঘিরে ধরল এবং আমার হাতে থাকা মোমবাতিগুলোর দিকে গভীর আগ্রহে তাকিয়ে থাকল। তাদের বয়সের সীমা ছিল ৩ থেকে ১৫ পর্যন্ত। আমি তাদের কাছে জানতে চাইলাম স্কুলবিহীন এই অফুরন্ত ছুটির দিনগুলো তারা কীভাবে পার করছে। তাদের মা জানাল, যে সাহায্য তারা পেয়েছিল, তা তার স্বামী নিয়ে গেছে এবং তার অন্য স্ত্রীকে দিয়ে দিয়েছে। তার কোলে একটি শিশু ছিল এবং গর্ভে আরেকটি। সে আট ছেলেমেয়ে নিয়ে ধুলায় ভরা মেঝে এবং বৃষ্টির পানি চুইয়ে পড়া একটি গুহায় বাস করছিল এবং নবমটি প্রত্যাশা করছিল। তারা কম দিনেই এক বেলা খেতে পায়। প্রতিটি শিশুরই খালি পা এবং শতছিন্ন কাপড় পরনে। তাদের চেহারাগুলো মলিন, চামড়াগুলো শুকনো ও ফাটা। এই তীব্র ঠান্ডায় তাদের পেটগুলো ছোট পাহাড়ের মতো দেখাচ্ছিল।
মহিলাটির মেজো মেয়েটি বোমার শব্দে বধির হয়ে গিয়েছে। যখন তার বড় মেয়েটি সিঁড়ি দিয়ে নেমে এল, তখন বধির শিশুটি তার হাত শক্ত করে ধরল এবং আমি অবাক হয়ে আবিষ্কার করলাম, এত অন্ধকারের মধ্যেও তাদের চেহারায় সৌন্দর্য জ্বলজ্বল করছে। এমন পরিস্থিতিতে এ ধরনের সৌন্দর্য এক রহস্যই বটে।
চলে আসার সময় আমি আবু ওয়াহিদকে বললাম, আবু মোস্তফা তার স্ত্রীর সাহায্যের টাকা চুরি করছে। শুনে সে হাসল। আমি হাসতে পারলাম না ।
অন্য গুহাগুলোর অবস্থাও এ রকমই ছিল। শত শত লোক মাটির নিচের অন্ধকার গুহায় জীবন যাপন করছে যেন মৃত্যু সন্নিকটে দেখে একদল পশু নিজেরাই নিজেদের কবর খুঁড়ছে। তারপরও মাটির ওপর সবকিছু স্বাভাবিক মনে হচ্ছিল। একটা গুহার সামনে একদল বাচ্চা একটা গর্ত তৈরি করে তাতে একটা হলুদ বল ছুড়ে ফেলার খেলা খেলছিল। পুরো এলাকায় জীবনের চিহ্ন বলতে এটুকুই। একদল মানুষ অভুক্ত, ক্ষুধার্ত এবং অসহায় অবস্থায় এখানকার মাটির নিচে বসবাস করছে, ওপর থেকে দেখে তা বোঝার কোনো উপায় নেই। আমি সহ্য করতে পারছিলাম না। এ যেন নরকের এক টুকরো খণ্ডচিত্র।
আমরা নীরবে গাড়িতে ফিরে এলাম। পথে আমরা আরও গুহাক্ষেত্র দেখলাম, যেগুলোতে অনেক পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল। একদম সামনে বেশ কিছু বাড়ির চিহ্ন দেখলাম, যেগুলোকে সম্পূর্ণ মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। মনে হচ্ছিল, টাইম মেশিনে করে প্রস্তর যুগে ফিরে গেছি।
আকাশ ছিল গাঢ় নীল, সূর্যের তাপও ছিল প্রচণ্ড। আমরা হাস গ্রামের মধ্য দিয়ে পার হলাম। নুসরা বাহিনী এখানে ছিল কিন্তু এখন নেই। তারপর আমরা আল-হামিমিয়া গ্রামে পৌঁছালাম, দূর থেকে গ্রামটিকে সাইপ্রাস গাছের তৈরি একটি দুর্গের মতো দেখাচ্ছিল।
“কত ব্যাটালিয়ন কমান্ডার আর শান্তিকর্মী যে নিহত বা গ্রেপ্তার হয়েছে, ভার কোনো সীমাসংখ্যা নেই,’ আবু ওয়াহিদ বলল। ‘সবচেয়ে দক্ষ লোকগুলোও শেষ।’ সে তাদের প্রত্যেকের জন্য হৃদয়স্পর্শী প্রশংসা উক্তি শোনাল। তার স্মৃতিশক্তি আমাকে মুগ্ধ করল, কারণ সে প্রত্যেকের নাম, বয়স ও অভিজ্ঞতার কথা সূক্ষ্ম বর্ণনাসহ আমাদের শোনাচ্ছিল। আমি ঘাড় নেড়ে যাচ্ছিলাম, আমার দৃষ্টি ছিল রাস্তায় নিবদ্ধ। কানে ছিল আকাশ থেকে বৃষ্টি হয়ে ঝরা বোমার শব্দ।
‘তাকলা’ নামের দরিদ্র কৃষিভিত্তিক গ্রামটিতে এসে দৃশ্যপট খানিকটা বদলে গেল। গ্রামের নামটি ‘সেন্ট তাকলা’র নাম থেকে অনুপ্রাণিত। এখানে জলপাই বাগানের পাশাপাশি পাহাড় আর উপত্যকাও ছিল। আমরা এখানে
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!