শেষ প্রান্তর – নসীম হেজাযী – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

শেষ প্রান্তর – নসীম হেজাযী – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ আবদুল মান্নান

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৩১১

শেষ প্রান্তর – বইটির এক ঝলকঃ

তাহির কামালের দিকে তাকালেন। কোন সওদাগরের মালপত্র লুট হয়ে গেলে তার যে অবস্থাটা হয়, কামালের অবস্থাটাও তাই। সে মুহূর্তের জন্য ফ্যালফ্যাল করে তাহিরের দিকে তাকিয়ে কাঁপা আওয়াজে বলল : ও হীরা আমার!
তাহির উঠে থলেটা তার হাতে দিয়ে বললেন : ঘাবড়িয়ে না। আমি শুধু জানতে চাই, এ হীরা ভূমি কোথায় পেলে?
: আমি ……..আমি…..আমি এ থলেটা….. তাতারীদের বিমায় পেয়েছিলাম ।
: তাহলে গুগুলো আমার কাছে দিয়ে দাও। তাতারীদের জিনিস তাদেরই কাছে পাঠিয়ে দেয়া যাবে।
: না, না, এ আমার – এ আমার ।
: তাহলে তোমার বলতে হবে, কার কাছ থেকে তুমি এগুলো পেয়েছিলে?
তাহির এক হাতে তার গলা চেপে ধরে, আরেক হাতে তার মুখের উপর জোরে এক চড় মেরে বললেন : সত্যি কথা বল, নইলে তোমার জান বাঁচবে না ।
কামাল গর্দান ছাড়িয়ে নেবার চেষ্টা করে বলল : আমি বেকসুর। আমি কিছু জানি না । তাহির তার মুখের উপর আর এক চড় মেরে বললেন : হীরাগুলো চেংগিস খান দিয়েছেন, তা কেন স্বীকার করছ না।
কামাল চীৎকার করে বলল : আল্লার ওয়াস্তে আমার উপর রহম কর। আবু ইসহাক আমায় মেরে ফেলবে।
তাহির বললেন : এই মুহূর্তে আবু ইসহাকের চাইতে আমারই হাত তোমার শাহ্-রগের ঢের কাছে। সত্যি কথা তোমায় বলতে হবে।
: চেংগিস খানের এক নওকর আমায় ওগুলো দিয়েছিল। তাহির তার গর্দান ছেড়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন ঃ এটা কি সত্যি নয়, সেদিন রাত্রে তোমরা যখন মাথা মুড়িয়ে ফিরছিলে, তখনও চেংগিস খানের সাথে মোলাকাত করে এসেছিলে?
কামাল মাথার টুপিটা ঠিক করে লাগাতে লাগাতে বলল : না, আমরা তাঁর সাথে দেখা করিনি।
তাহির বললেন : তোমার টুপিটা নামাও।
হুকুম তামিল করার পরিবর্তে কামাল দু’কদম পিছিয়ে গিয়ে দাঁড়াল। তাহির এগিয়ে এসে তার মাথা থেকে টুপি নামিয়ে নেবার চেষ্টা করলেন, কিন্তু সে দুহাত দিয়ে মাথায় টুপিটা চেপে ধরে বলল ঃ আল্লাহর ওয়াস্তে আমার উপর রহম কর। আবু ইসহাক আমায় মেরে ফেলবে।
তাহির তার মুখের উপর আর একটা চড় মেরে বললেন : চিৎকার কর না। তারপর তার মাথা থেকে টুপিটা দূরে ছুড়ে ফেললেন। কামালের মাথার তালু থেকে কালো রঙের তেলটা অনেকখানি উঠে গেছে। ছোট ছোট চুলের ভিতর দিয়ে তার উপর লাল রঙের কতকগুলো বিচিত্র চিহ্ন তাহিরের চোখে পড়ল। খুব মনোযোগ দিয়ে দেখলে সেগুলো তাঁর কাছে কতকগুলো অস্পষ্ট আরবী হরফ বলে মনে হল। কয়েক মুহূর্তের জন্য যেন তাহিরের গায়ের রক্ত জমে যাচ্ছিল। লাল রঙের পুরো লিপি পড়বার আগেই তিনি অনুভব করতে লাগলেন, যেন বাগদাদ থেকে গোটা আলমে ইসলামকে খুনের সমুদ্রে গোসল করাবার চক্রান্ত পূর্ণ হয়ে গেছে এবং সকল সতর্কতা সত্ত্বেও তাকেই বানানো হয়েছে সেই নাপাক মতলব হাসিলের যন্ত্র। তিনি রাগে ঠোঁট কামড়াতে কামড়াতে কামালের টুপিটা তার মাথায় রেখে দিয়ে তার বায়ু চেপে ধরে বাইরে বিডুলেন। কোতওয়াল বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাহির তাঁকে বললেন : আমি আপনার শোকরগুযারী করছি। আপনার আপত্তি না থাকলে লামি ওকে সাথে নিয়ে যেতে চাই ।
কোতওয়াল বললেনঃ আপনার অপরাধীকে শান্তি দেবার অথবা মাফ করবার হক রয়েছে, কিন্তু এই ধরণের সাথী সম্পর্কে আমি আপনাকে হুঁশিয়ার থাকতে পরামর্শ দিচ্ছি। তাহির বললেন : আপনি বিশ্বাস রাখবেন, এই ধরণের অপরাধীকে মাফ করতে আমি অভ্যন্ত নাই ।
বাইরে বেরিয়ে তাহির শাসনকর্তার মহলের কাছাকাছি এক ছোট্ট নদীর কাছে দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে কামালকে বললেনঃ এবার তোমার মাথাটা ধুয়ে সাফ কর।
কামাল কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ইতস্ততঃ করল, কিন্তু তাহির খনজর বের করে গর্জন করে উঠলেন : জলদী কর নইলে আমি ওই মূল্যবান লিপি পড়বার জন্য তোমার মাথাটা আলাদা করে নিতে দেরী করব না।
কামাল বসে-যাওয়া গলায় বললঃ এ তেল উঠবে না।
: তাহলে মাথা বালু দিয়ে ঘসে সাফ কর।
কিছুক্ষণ পর তাহির কামালের মাথার উপর অস্পষ্ট অক্ষরে লেখা লিপিখানি উদ্ধার করলেন। তাতে লেখা রয়েছেঃ
ইসলামী দুনিয়ায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। খারেযম শাহকে প্রস্তুতির সুযোগ দেয়া ঠিক হবে না। খলিফাতুল মুসলেমিন ও বাগাদাদের বাসিন্দাদের দোয়া আপনাদের জন্য রয়েছে। এ পয়গাম পাঠাতে বিলম্বের কারণ দূতের মুখে শুনতে পাবেন। খলিফার তরফ থেকে তাহির যা কিছু বলবেন, তাতে যেন আপনাদের কোন ভুল ধারণা না হয়। তাঁকে কেবল পথের অসুবিধা বিবেচনায় পাঠানো হচ্ছে।
দৌলতে আব্বাসীয়ার অনুগৃহীত ও আপনার খাস খাদেম ওয়াহিদুদ্দীন, উজিরে খারেজা। তাহির আবার যখন কামালের মাথায় টুপি পরিয়ে তাকে সাথে সাথে চলবার হুকুম দিলেন, তখনও সে অসীম বিনয় সহকারে বলল : আমার মাথার উপর কি লেখা হয়েছে, আমি জানি না। ওরা ভোর থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধারালো সূঁচ দিয়ে এসব লিখেছে। বেদনায় আমি তিন রাত ঘুমাতে পারিনি। ফিরে এলে তারা আমায় ইনাম দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আমি বেকসুর, আমার উপর রহম করুন।
তাহির বললেন : তুমি সত্যি কথা বললেই শুধু রহম পাবার হকদার হতে পারবে।
: আমার জান বাঁচাবার ওয়াদা করলে আমি সব কিছুই বলে দেব।
: আমি তোমার জান বাঁচাবার চেষ্টা করব। বল, এ চক্রান্তে কে কে শরীক ছিল?
ঃ তা আমি জানি না। মাহে রমজানের ক’দিন আগে আবু ইসহাক আমার চোখে পট্টি বেঁধে আমায় একটা বাড়ীতে নিয়ে যায়। সেখানে আমায় রাখা হয়েছিল মাটির নীচের এক কুঠরীতে। জামিলের সাথে ওখানেই আমার দেখা হয়। আমাদের দু’জনেরই মাথা মুড়িয়ে তালুর উপর কি যেন লেখা হয়। তারপর মাথায় আবার ছোট ছোট চুল গজিয়ে উঠলে আৰু ইসহাক বলল : যখন দরকার হবে, আমি তোমাদেরকে এক জরুরি অভিযানে নিয়ে যাব। আপাততঃ তোমাদেরকে উজিরে আজমের বাড়িতে চাকুরীতে বহাল করে দিচ্ছি। তখনও থেকে আমরা উজিরে আজমের আস্তাবলে চাকুরী করছিলাম। এখানে এসে জানলাম যে, আবু ইসহাক আস্তাবলের দারোগা। আবু ইসহাক আমাদেরকে দিয়েছিল পাঁচশ করে দিনার। অনশি। সাথে সাথে ধমকও দিয়েছিল যে, এ রহস্য তারুর কাছে ফাঁস হয়ে গেলে আমাদের দু’জনেরই মাথা কাটা যাবে।
তাহির প্রশ্ন করলেন ঃ এর মাঝে তোমরা কখনও উজিরে আজমের সাথে মোলাকাত করেছিলে?
ঃ তাঁকে অবশ্যি দেখেছি, কিন্তু কখনও কথাবার্তা হয়নি। কেবল শেষের দিন যখন আপনি উজিরে আজমের কাছে বসেছিলেন, তখনও আবু ইসহাক আমায় তাঁর কাছে নিয়ে যায়। তারপর তিনি আমাদেরকে যা বলেছিলেন, তা আপনি শুনেছেন ।
ঃ আস্তাবলের চাকুরী নেবার আগে তোমায় জমিনের তলায় যে কুঠরীতে রাখা হয়েছিল, তা উজিরে আজমের মহল থেকে কতদূর?
ঃ আমাদেরকে ওখান থেকে রাতের বেলায় চোখ বেঁধে নিয়ে গেছে। কিন্তু আমি অবশ্যি একটুকু বলতে পারি যে, বাড়িটা দরিয়ার অপর পারে হবে ।
: তুমি সাবেক উজিরে খারেজা ওয়াহিদুদ্দীনকে চেন?
ঃ আমি চিনি না, কিন্তু জমিনের নীচের কুঠরীতে যে লোকটি আমাদের মাথার উপর লিখিয়েছিলেন, তাঁর সম্পর্ক জামিলের ধারণা, তিনি উজিরে খারেজার দফতরেই এক বড় কর্মচারী ।
: না।
আস্তাবলে চাকুরী নেবার পর তুমি তাঁকে আর কখনও দেখেছ?
ঃ আবু ইসহাক তোমার উজিরে আজমের কাছে নিয়ে তোমার মাথার লিপি তাঁকে দেখিয়েছিল?
ঃ আপনি যেদিন ওখানে ছিলেন, সেদিন ছাড়া আর কখনও আমাদেরকে তাঁর সামনে নেয়া হয়নি ।
তাহিরের দীল যেন ভারমুক্ত হয়ে আসছিল। কম সে কম তিনি বিশ্বাস করতেন যে, এ চক্রান্তে উজিরে আজম শরীক নন, বরং তাঁর অজ্ঞাতে উজিরে খারেজার তরফ থেকেই ঘটছে পুরো ব্যাপারটা। উজিরে আজমের আস্তাবলের দারোগা এতে যন্ত্র হিসাবে কাজ করছে। বিদায় বেলায় তাঁকে উজিরে আজম বলেছিলেন : আমি বাইরে কোন লোককে না পাঠিয়ে আমারই দু’তিনটি নওকর আপনার সাথে দিচ্ছি। ওয়াহিদুদ্দীনের প্রথম ষড়যন্ত্র ধরা পড়ে গিয়েছিল, কিন্তু আত্মগোপন করবার আগেই তিনি আর এক চক্রান্ত তৈরী করে ফেলেছিলেন। খলিফার সম্পর্কেও তাহির তাঁর দীলকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন যে, তিনিও উজিরে আজমের মত এ চক্রান্তের খবর জানেন না। কিন্তু চিত্রের অপর দিকটাও ভেসে উঠছে তার মনে। যতই তিনি ভাবেন, ততই পেরেশান হয়ে ওঠেন। তাঁর মনের ভাল ধারণা যখন খারাপ ধারণায় রূপান্তরিত হয়, তখনও তিনি ভাবেনঃ হতে পারে, এসব কিছুই উজিরে আজমের ইশারায় ঘটেছে, আর তিনি হুঁশিয়ার লোক বলেই এ লোকগুলোকে দূরে দূরে রেখেছেন, কেননা যদি এরা প্রথম বারের মত ধরা পড়েই যায়, তথাপি যেন এমন কোন প্রমাণ না থাকে যে, উজিরে আজমও এ চক্রান্তে শরীক ছিলেন। কিন্তু তাঁর দীলের উদারতা উজিরে আজমের বিরুদ্ধে এ সন্দেহের চিন্তায় বাধা দিচ্ছিল। তিনি আবার কামালকে প্রশ্ন করলেন ঃ এর ভিতরে তোমারা কখনও খলিফার সাথে মোলাকাত করেছিলে?
: ा?
: সেদিন সন্ধ্যায় তোমাদেরকে চেংগিস খানের সামনে নেয়া হয়েছিল।
: হ্যাঁ, আৰু ইসহাক আমদেরকে চেংগিস খানের মুসলমান কর্মচারীর কাছে নিয়ে গিয়েছিল এবং সে আমাদের মাথা মুড়িয়ে চেংগিস খানের সামনে পেশ করেছিল?
: তুমি জামিল ও আবু ইসহাকের মাথার উপরে লেখা লিপি পড়ে দেখেছিলে?
ঃ জামিলের মাথায় এরই ফরাসী তরজমা আর আবু ইসহাকের মাথার চীনা ভাষায় কিছু লেখা ছিল। তাও হয়ত এরই তরজমা হবে।
তহির বললেন : তুমি চলে যাও। আমি তোমার পিছু পিছু আসছি। কিন্তু আবু ইসহাককে কিছু বললে অথবা পালাবার চেষ্টা করলে তার পরিণাম তোমার জন্য খুব খারাপ হবে।
কামাল কোন কথা না বলে তাহিরের আগে আগে চলে গেল।
তাহির এক গভীর চিন্তার বোঝা মাথায় নিয়ে ধীর পদক্ষেপে চলতে লাগলেন। তারপর এক সময়ে গিয়ে প্রবেশ করলেন হাকিমে শহরের মহলে। সেখানে তিনি নিজের কামরায় না। ঢুকে তাঁর সাথীদের কামরার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে গেলেন। দরজার একটা দিক বন্ধ ও অপর দিকটা খোলা ছিল। কামাল তাহিরের ইশারা পেয়ে ভিতরে ঢুকলে আৰু ইসহাক চিৎকার করে বলল : তুমি তো ভারী বে-অফ। আমরা সারা শহর খুঁজে এসেছি। এতক্ষণ ছিলে কোথায়?
কামাল ধরা গলায় জবাব দিল আমি এখানেই ছিলাম।
: তাহিরকে তুমি দেখেছো?
ঃ তাহিরকে?….. কেন, তিনি এখানে নেই।
ঃ তুমি যেখানে খুশী চলে যাও। আমাদের উপর কোন মুসিবৎ আসলে তোমারই জন্যে আসবে।
তাহির নীরবে কামরায় প্রবেশ করলেন। আবু ইসহাক অমনি বলে উঠল : আমরা আপনারই অপেক্ষা করছিলাম। আপনি কোথায় ছিলেন? আমি বড়ই পেরেশান হয়ে পড়েছিলাম।
তাহির তার প্রশ্নের জবাব না দিয়ে বললেন : তোমার আর তোমার সাথীদের পরিচ্ছন্ন থাকতে এত আপত্তি কেন? আমার মনে হয়, এখনও তোমাদের মধ্যে কেউ মাথা সাফ করে সেই কালো রঙের তেলগুলো তুলে ফেলার চেষ্টাও করনি।
আবু ইসহাক তার পেরেশানী চাপা দেবার চেষ্টা করে জবাব দিল : তাতারীদের এ তোহফা আমরা বাগদাদে নিয়ে যেতে চাচ্ছি। ওখানে যদি কোন তাতারী থাকে, তাহলে তাদের সাথেও যাতে এমণি আচরণ করা হয়, বাগদাদের বাসিন্দাদের কাছে আমরা সেই দাবীই করব।
তাহির বললেন : তোমার টুপিটা একটু নামাও।
আবু ইসহাক খানিকটা ইতস্ততঃ করে টুপি নামিয়ে আবার তখুনি সেটা মাথায় রাখতে রাখতে বলল : আমার সতর্কতা সত্ত্বেও তেল উঠে গেছে।
ঃ বাগদাদে কাল রঙের তেলের কমনি নেই। এখানে তোমার মাথা ধুয়ে সাফ করে ফেল। বাগদাদে গিয়ে না হয় আবার নতুন করে কালি মাখাবে। আর জামিল ! তোমার মাথাটাও একবার দেখ ।
জামিল আবু ইসহাকের দিকে তাকাল। তার ইশারা পেয়ে সে একবার টুপি নামিয়ে- আবার তখুনি মাথায় রাখল ।
তাহির বললেন ঃ কামাল, তুমিও বুঝি এখনও মাধা ধোনি।
কামাল একে একে আবু ইসহাক, জামিল ও তাহিরের দিকে তাকাল। তারপর তাহিরের ইশারায় ঝট করে মাথার টুপিটা খুলে ফেলল।
আবু ইসহাক ও জামিল মুহূর্তের মধ্যে হতভম্ব হয়ে গেল। তাহির বললেন : আবু ইসহাক কামালের মাথার তালুতে কি যেন লেখা দেখাচ্ছে। একবার পড়ে শোনাও না! আৰু ইসহাক বলে উঠলঃ তাহলে আপনি সবই জেনে ফেলেছেন।
তাহির জবাব দিলেন ঃ না, এখনওও তোমাদের দু’জনের মাথার তালু আমার দৃষ্টির আড়ালে রয়েছে।
আবু ইসহাক উঠে দাঁড়াল। তার একহাত তখনও খনজরের হাতলের উপর। তাহির জলদী করে তাঁর খনজর বের করে গর্জন করে বললেন : বিশ্বাসঘাতক বুজদীল হয়ে থাকে, তোমার বীরত্ব দেখানোর চেষ্টায় আমার সে রায় বদলে যাবে না।
আবু ইসহাক এবার তাহিরের পরিবর্তে তার সাথীদের দিকে তাকাতে লাগল। কামালের নির্লিপ্ততা তাকে হতাশ করে দিচ্ছিল। জামিল কয়েকবার উঠবার চেষ্টা করল কিন্তু তাহিরের দৃষ্টির আগুন তাকে বসে থাকতে বাধ্য করল ।
তাহির বললেন : সালতানাতে খারেযমের কাছে তোমাদের মাথার দাম অনেক বেশী । যদি তোমাদের মাথা এখানে বাজেয়াপ্ত করা হয়, তাহলে আমি তোমাদেরকে আশ্বাস দিচ্ছি, তোমাদের বাকী দেহ বাগদাদে পৌঁছে দেয়া যাবে।
কামাল বলে উঠল; আমার সাথে আপনার ওয়াদা…….!
তাহির তার কথায় বাধা দিয়ে বললেনঃ তুমি চুপ কর।
আবু ইসহাক ধরা গলায় বলল : আপনি আর আমরা সবাই খলিফার খেদমতে লিপ্ত। যেমন নেক নিয়তের সাথে আপনি আপনার কর্তব্য সম্পন্ন করেছেন, আমাদের উপর ন্যস্ত কর্তব্যও আমরা তেমনি নেক নিয়তের সাথেই সম্পন্ন করেছি। এখনও এখানে ঝগড়া না করে। বাগদাদে ফিরে সব ঝগড়ার ফয়সলা খলিফার উপর সপে দেয়াই কি ভাল নয়?
তাহির বললেন; তুমি মিথ্যা বলছ। খলিফা তোমার ও উজিরে খারেজার নাপাক চক্রান্তে শরীক থাকতে পারেন না।
ঃ এটা কি ভাল নয় যে, আপনি কোন রায় কায়েম করবার আগে বাগদাদে পৌঁছে খলিফার কাছে জিজ্ঞেস করুন। যদি তাঁর সাক্ষ্য….. ।
আবু ইসহাক তাহিরের পেছনে আধ-খোলা দরজার বাইরে কোন লোককে দাঁড়ানো দেখে থেমে গেল। তারপর গলায় আওয়াজ পরিবর্তন করে বলল, আপনি খারেমের ইনাম পাবার লোভে আমাদের ফাঁসীতে দিয়ে নিজেও রেহাই পাবেন না-আপনি খলিফার কাছ থেকে ইনাম পাবার লোভে আমাদেরকে এই নাপাক মতলব হাসিল করবার যন্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছেন। আর এখনও খারেযম শাহের ইনাম পাবার জন্য আমাদেরকে বিক্রি করে দিতে চান। হায়! আমাদেরকে মাথার তালুর উপর কি লিখিয়েছেন, তা যদি আগে জানতাম !

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top