সালাহউদ্দীন আয়ুবীর কমান্ডো অভিযান – আসাদ বিন হানিফ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

সালাহউদ্দীন আয়ুবীর কমান্ডো অভিযান – আসাদ বিন হানিফ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ আসাদ বিন হানিফ

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৬১

সালাহউদ্দীন আয়ুবীর কমান্ডো অভিযান – বইটির এক ঝলকঃ

সালাহউদ্দীন আয়ুবী পকেট থেকে একটা চিঠি বের করে বললেন, ‘এটা নুরুদ্দীন জংগীর চিঠি। পাঁচ ছ’দিন আগে পেয়েছি আমি। তিনি লিখেছেন, ‘খেলাফত তিন ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। বাগদাদের অধিনস্ত দু’জন খলিফার ওপর এখন কেন্দ্রের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। মিসরের “খলিফাও যেন কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণমুক্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন । প্রয়োজনে সে খ্রিস্টান বা সুদানীদের সাথে গাঠছড়া বাধতে কুষ্ঠিত হবেনা। আমি ওদের ষড়যন্ত্রের আশংকা করছি। মিসরের অভ্যন্তরীণ অবস্থাও ভাল নয়, ওখানে আরেকটি বিদ্রোহের সম্ভাবনা রয়েছে। এ জন্য সতর্কতা জরুরী।
মিসরের খলিফাকে তার তৎপরতা প্রাসাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চেষ্টা করবেন। খ্রিস্টানদের সহযোগিতা নিয়ে তিনি যেন মুসলিম বিশ্বের কোন অনিষ্ট করতে না পারে সে ব্যাপারে আপনাকে সজাগ থাকতে হবে। প্রয়োজনে যে কোন কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা করবেন না। আমি আপনাকে সামরিক এবং আর্থিক সহযোগিতার আশ্বাস দিচ্ছি। সুদানীদের প্রতিও কড়া দৃষ্টি রাখবেন ।
-নূরুদ্দীন ।
চিঠিপড়া শেষ করে আয়ুবী বললেন, ‘খলিফা যে শ্বেতহস্তি এতে সন্দেহ নেই। আপনারা দেখেছেন, খলিফা ভ্রমণে বের হলে অর্ধেক ফৌজকে ছড়িয়ে দেয়া হয় তার নিরপত্তা দেখার জন্য।। তার চলার পথে গালিচা বিছিয়ে দেয়ার জন্য, ফুল ছোঁড়ার জন্য জনগণকে বাধ্য করা হয়। তার ভ্রমণের জন্য অপব্যয়ের টাকা জনকল্যাণে এবং দেশরক্ষার কাজে ব্যয় হতে পারত।’
সালাহউদ্দীন আয়ুবী তার বক্তব্য শেষ করলেন এই বলে, “মিসরের জনগণ এবং বিভিন্ন ধর্মের লোকদের বোঝাতে হবে যে, ইসলাম শুধু রাজা বাদশার ধর্ম নয়, ইসলাম মরুচারী বেদুঈন কৃষক-শ্রমিক এবং খেটে খাওয়া মানুষের ধর্ম। আল্লাহ মানুষকে যে মর্যাদা দিয়েছেন, ইসলাম মানুষকে সে মানবতাই শিক্ষা দেয়।’
সালাহউদ্দীন আয়ুবীর বক্তব্য শেষ হলে কথা বললেন বাহাউদ্দীন’ শাদ্দাদ, ‘নিজে শাসন ক্ষমতা দখল করার জন্যই খলিফার বিরোধিতা করছেন আপনার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আসতে পারে।’
‘সত্য সবসময় বিরোধিতার সম্মুখীন হয়েছে এবং হচ্ছে,’ বললেন সালাহউদ্দীন আয়ুবী। ‘আজকে মিথ্যা এবং বাতিলের শিকড় এতটা মজবুত হতে পেরেছে এজন্য যে, বিরোধিতার ভয়ে লোকেরা সত্য বলা আজ ছেড়েই দিয়েছে। বুকের ভেতর আটকে গেছে সত্যের কন্ঠ। রাজকীয় বিলাস ভ্রমণ এবং বাদশাহী দাপট প্রজাদের স্বাধীন চেতনা হরণ করেছে। সাধারণ মানুষকে ক্ষুধার্ত রেখে, মানুষের উপর জোর করে বাদশাহী চাপিয়ে দিয়ে তাদেরকে এমন শিকলে বাধা হয়েছে, আল্লাহর রাসুল (সা.) যে শিকল ছিড়ে টুকরো টুকরো করেছিলেন।
আমাদের রাজারা জাতিকে পতনের সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছে দিয়েছেন। ভোগ বিলাসের জন্য তারা খ্রিস্টানদের সাথে বন্ধুত্ব করছেন। ওদের ভোটগ্রহণ করছেন। ফলশ্রুতিতে খ্রিষ্টানরা ধীরে ধীরে দখল করে নিচ্ছে সমগ্র মুসলিম বিশ্ব। আপনি বিরোধিতার কথা বলেছেন শাদ্দাদ। এ বিরোধিতায় ভয় পেয়ে সত্যকে তুলে ধরা থেকে পিছিয়ে থাকলে আল্লাহ যেদিন পাকড়াও করবেন সেদিন কি জবাব দেবেন?’
‘মহামান্য আমীর’ সামরিক প্রধান আল নাসের বললেন, ‘আমরা বিরোধিতাকে ভয় পাই না। আপনি আমাদের যুদ্ধের ময়দানে দেখেছেন। অবরুদ্ধ হয়েও নিঃশঙ্কচিতে লড়াই করেছি আমরা। যুদ্ধ করেছি ক্ষুধা তৃষ্ণা নিয়ে। যখন আমরা নগন্য ছিলাম তখনও শত্রুর অগ্রযাত্রা রুদ্ধ করে দিয়েছি। সুলতান! আপনার একটা কথা সবসময়ই মনে পড়ে আমার। আপনি বলেছিলেন, ‘বাইরের আক্রমণ প্রতিহত করা সম্ভব কিন্তু ভেতর থেকে আক্রান্ত হলে চমকে গিয়ে ভাবতে হয়, এসব কি হচ্ছে। শাসক যখন দেশের দুশমনে পরিণত হবে তখন আপনার তরবারী খাপের মধ্যেই নিশপিশ করবে, বাইরে আসতে পথ পাবে না।’
‘আপনি ঠিকই বলেছেন, আমার তরবারী কোষের ভেতরই নিশপিশ করছে, শাসকদের বিরুদ্ধে কোষমুক্ত হতে চায় না। শাসকদের আমি সব সময়ই সম্মান করি। শাসকরা জাতির গৌরব, দেশের অহংকার। বলতে পারেন, আমাদের শাসকদের কি সে সম্মান পাওয়ার যোগ্যতা রয়েছে?
আমি শুধু খলিফা আল আযেদের কথাই বলছি না। আলীকে জিজ্ঞেস করুন। ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চের রিপোর্ট অনুযায়ী হলব, মুসেল, দামেস্ক, মক্কা এবং মদিনার খেলাফতও ভোগ বিলাসের স্রোতে গা ভাসিয়ে দিয়েছে। ওখানকার আমীর এবং গভর্নররা নিজেরাই স্বাধীন শাসক। খেলাফত এত দুর্বল হয়ে পড়েছে যে, আমীর ওমরা এবং গভর্নররা তাকে নিজ নিজ স্বার্থ সিদ্ধির জন্য ব্যবহার করছে।
আমি জানি, এ ছিন্নভিন্ন জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে গেলে এরা আরো বিচ্ছিন্ন হয়ে আমাদের সামনে বাঁধার পাহাড় দাড় করাবে। এরপরও আমি ভীত নই। আমার বিশ্বাস আপনারাও এতে ভয় পাবেন না । আপনাদের মতামতকে আমি সম্মান করি। আগামীতে কোন সুনির্দিষ্ট জরুরী কাজে ডাকলেই কেবল খলিফার আহবানে আমি সাড়া দেব। এখন থেকে খোত্বায় আর খলিফার নাম থাকবে না।’
সুলতানের সাথে একমত হলেন সবাই। এরপর সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে যে যার কাজে ফিরে গেলেন।
খলিফার খাস কামরা। দূত ফিরে গিয়ে বলল, ‘কোন জরুরী কাজ থাকলে সালাহ উদ্দীন আয়ুবী আসবেন। এখন তিনি ভীষণ ব্যস্ত । কি জন্য ডেকেছেন তা জানাতে বলেছেন তিনি।’
খাস কামরায় খলিফার পাশে বসেছিল উম্মে আমারা। দুতের মুখে সালাহউদ্দীন আয়ুবীর জবাব শুনে সে বলল, ‘সালাহউদ্দীন আপনার নফর। আপনিই তাকে মাথায় চড়িয়েছেন। এ বেয়াদবকে পদচ্যুত করছেন না কেন? সৈন্য পাঠিয়ে কেন তাকে বন্দী করছেন না?
‘পরিনাম ভাল হবেনা বলেই তাকে পদচ্যুত করছি না।’ খলিফার কন্ঠে ক্ষোভ। ‘সেনাবাহিনী তার হাতে। সে আমার বিরুদ্ধে সামরিক শক্তি ব্যবহার করতে পারে।
রজব ছিল সুদানী বাহিনীর এক সালার। বর্তমানে খলিফার গার্ড বাহিনীর কমান্ডার। গার্ড বাহিনীর সবাই ছিল সুদানী কাফ্রী। রজবই ওদের বাছাই করেছিল। সে ছিল চাটুকার এবং সুলতান আয়ুবীর ঘোর বিরোধী ।
দূতের খবর শুনেই তাকে ডেকে পাঠালেন সুলতান। রজব এসে কুর্নিশ করে দাঁড়াল একপাশে ।
ক্রোধকম্পিত কণ্ঠে খলিফা বললেন, ‘সালাহউদ্দীন আয়ুবী! আমি আগেই জানতাম কমবখত স্বাধীনচেতা বেয়াড়া। আমি তাকে ডেকেছিলাম, সে আসতে অস্বীকার করেছে। বলেছে কোন জরুরী কাজ থাকলে আসবে, নয়তো তার কাছে আমার ডাকের কোন গুরুত্ব নেই। এখন তার হাতে নাকি খুব জরুরী কাজ…..
বলতে বলতে খলিফার হেঁচকি উঠল। সাথে কাশি। দু’হাতে বুক চেপে ধরলেন তিনি। বিবর্ণ হয়ে গেল চেহারা। ক্ষীণ কণ্ঠে বললেন, ‘আমি যে অসুস্থ বদবখত তাও দেখল না। আমি হার্টের রোগী। রাগ করা ঠিক না। আমি শরীর স্বাস্থ্যের চিন্তায় অস্থির, আর সে আছে জরুরী কাজ নিয়ে।
‘আপনি তাকে কেন ডেকেছিলেন আমাকে বলুন।’
‘ডেকেছিলাম যেন সে বুঝে তার উপরও একজন আছে।’
বুক চেপে কাত্রাতে কারাতে বললেন খলিফা। ‘তুমি বলেছিলে সে স্বাধীন হয়ে যাচ্ছে। আমি বার বার তাকে এখানে ডেকে আনতে চাই । চাই নির্দেশ দিতে। যেন সে আমার সামনে মাথা নুইয়ে রাখে । কোন জরুরী কাজ হলেই তাকে ডাকব এমন তো কথা নেই।’
উম্মে আমারা মদের পিয়ালা খলিফার ঠোঁটের সামনে তুলে ধরল।
*আপনাকে একশ বার বলেছি রাগ করবেন না। হৃদরোগের জন্য রাগ ভীষণ ক্ষতিকর।
একটা স্বর্ণের কৌটা থেকে কিছু পাউডার জাতীয় জিনিস খলিফার মুখে তুলে দিল মেয়েটা। খলিফা তার রেশম কোমল চুলে বিলি কেটে বলল, ‘তুমি না থাকলে এতদিনে আমি মরেই যেতাম। সবার আকর্ষণ আমার সম্পদ আর আমার মর্যাদার সাথে। আমার কোন স্ত্রীও আমাকে ভালবাসে না। তুমি আছ বলেই আজো বেঁচে আছি।’
‘খলিফাতুল মুসলেমীন।’ রজব বলল, ‘আপনার মনটা খুব নরম। ভীষণ ভাল মানুষ আপনি। এ জন্যই সালাহউদ্দীন এত সাহস পায়। সে যে আরব বা ফাতেমী বংশের নয় বরং একজন কুর্দি, তা আপনি ভুলেই গেছেন। বাইরের লোককে এত বড় পদ না দিলে আজ এমন সমস্যা দেখা দিত না। মানি, সে একজন ভাল সৈনিক। সে যুদ্ধ করতেও জানে, করাতেও জানে, শুধু এজন্যেই তাকে মিসরের গভর্নর করতে হবে।’
খলিফা মন দিয়ে তার কথা শুনছে দেখে সে বলল, ‘একবারও কি ভেবে দেখেছেন, সেনাবাহিনীতে যখন সুদানীরা ছিল, নাজি এবং এডরোসের মত সেনাপতি ছিল, তখন প্রজারা আপনার কুকুরের সামনেও মাথা নোয়াত । আপনার নির্দেশ পালনের জন্য এক পায়ে খাড়া থাকত সুদানী সালাররা । এখন অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, অধিনস্তকে ডাকলেও সে আসতে সরাসরি অস্বীকার করার দুঃসাহস দেখায়। আমি অবাক হয়ে ভাবি, সুদানীদের এতবড় ফৌজকে যে খেলনার মত নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে, কোন দিন জানি সে আপনার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যায়।’
‘রজব!’ গর্জে উঠলেন খলিফা। এ জন্য তুমিই দায়ী।’

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top