সফেদ দ্বীপের রাজকন্যা – নসীম হেজাযী – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

সফেদ দ্বীপের রাজকন্যা – নসীম হেজাযী – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ আমীর হোসাইন

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২৫৭

সফেদ দ্বীপের রাজকন্যা – বইটির এক ঝলকঃ

আরো তিন দিন গরম গরম আলোচনা, পর্যালোচনা ও বাগবিতগুতার পর সংশ্লিষ্ট সব মহল ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে ছয়জন প্রার্থী একই মানের নির্বোধ, সমান বেকুব, নির্বাক, সুবিধাবাদী, সুযোগ সন্ধানী ও সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে সক্ষম। এ জন্য তাঁদের মধ্য থেকে এমন এক ব্যক্তিকে বেছে নেওয়া যেতে পারে, যাঁর ধৈর্য ও সহ্যশক্তি সর্বাপেক্ষা বেশি। তাই একজন প্রস্তাব করল, প্রার্থীদের সবাইকে দাঁড় করিয়ে রাখা হোক আর যিনি সর্বাধিক সময় দাঁড়িয়ে থাকতে সক্ষম, তাঁকেই উজিরে আজম পদে নিযুক্ত করা হোক।
অপর একজন প্রতিবাদ জানিয়ে বললেন, এই কর্মপদ্ধতি সঠিক নয়। তা থেকে বরং এমন প্রার্থী কামিয়াব হতে পারে, যিনি সবার থেকে বেশি শারীরিক কষ্ট সহ্য করতে পারেন। কিন্তু আমাদের মনস্তাত্ত্বিকভাবেও সহ্যশক্তির পরীক্ষা নেওয়া উচিত। আমার দৃষ্টিতে এ জন্য সর্বোত্তম প্রত্যাশা এটা হতে পারে যে প্রার্থীদের সবাই পর্যায়ক্রমে আমাদের সামনে এসে দাঁড়াবে এবং প্রত্যেক গোত্রের সদস্যরা একে একে উঠে প্রথমে তাঁদের কষে গালমন্দ করবে। তারপর আচ্ছারকমভাবে জুতা লাগাবে । অনন্তর যে প্রার্থী হাস্যোজ্জ্বল চেহারার স্বাক্ষর রাখতে পারবে, তাঁকেই উজিরে আজমের সম্মানিত পদে নিযুক্ত করা হবে।
প্রত্যেক মহলই এ প্রস্তাবক সদস্যদের বুদ্ধিমত্তা ও বিচক্ষণতার যারপরনাই প্রশংসা করল এবং মনের দরজা খুলে তাকে ধন্যবাদ জানাল। আর এই প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে পাসও হয়ে গেল। কিন্তু তিনজন প্রার্থী এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে কঠোর মন্তব্য পেশ করলেন এবং তাঁদের নাম প্রার্থী তালিকা থেকে তুলে নিলেন। একজন প্রার্থী তো কিছু গালি শোনার পরই তাঁর নীরবতা ও ধৈর্যের বন্ধন হারিয়ে ফেলেন। তাই সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। পঞ্চম প্রার্থী গালমন্দের পর্যায়ে তো দর্শকদের মুচকি হাসি উপহার দিতে দিতে চলে গেলেন । কিন্তু যখন জুতার ঘা খাওয়ার সুযোগ এল, তখন তাঁর সহ্যের বাঁধও টুটে গেল। ষষ্ঠ প্রার্থীর নাম ছিল সুশীলং। তিনি গালিগালাজ শোনার সময় অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছিলেন আর জুতার ঘা খাওয়ার সময় তাঁর চোখে-মুখে মৃদু হাসির রেখা খেলে যাচ্ছিল। ক্রমান্বয়ে একেকজন প্রতিনিধি তাঁকে বাকপটু ও কটূ ভাষায় উন্নতমানের গালমন্দে ভূষিত করার পর তাঁর মাথার ওপর পাঁচ পাঁচটি জুতা ঝুলিয়ে দিলেন। তারপর তাঁর গলায় ফুলের মালা ঝুলিয়ে ব্যান্ড বাজিয়ে হিজ ম্যাজেস্ট্রি কিং সায়মন ও হিজ ম্যাজেস্ট্রি কুইন ওয়ায়েট রোজের গমানগমন পথে হাঁকিয়ে নিয়ে চললেন। বেগম ও বাদশাহ উভয়ে এক কক্ষ থেকে বেরিয়ে এসে একের পর এক সুশীলংয়ের সঙ্গে করমর্দন করলেন এবং তাঁকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় আন্তরিক মোবারকবাদ জানালেন ।
পরদিন তথ্য বিভাগের একজন উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তার নির্দেশে দেশের সব সংবাদপত্রে এই ব্যবস্থাপনার বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করার সঙ্গে সঙ্গে উজিরে আজম সুশীলংয়ের নিঃস্বার্থপরায়ণতা, প্রজ্ঞা, সুযোগ সন্ধানী দৃষ্টিভঙ্গি এবং ধৈর্য ও সহ্যশক্তির প্রশংসায় নিবন্ধ লেখা হয়। শহরের কোনো কোনো রাজনৈতিক ফোরামে আনন্দ-উল্লাসের অনুষ্ঠান পালন করা হয়। কিন্তু তৃতীয় দিন সংবাদপত্রে শহরের একজন সিগারেট ব্যবসায়ীর এই বিবরণ প্রকাশ পায় যে সুশীলং আবাল্য আমার খুব কাছের বন্ধু মানুষ। সেই সুবাদে আমি জোর দিয়ে বলতে পারি যে আমার সহ্যশক্তি তাঁর থেকে অনেক বেশি। আমি এ ব্যাপারে অত্যন্ত মর্মাহত যে এর সহ্যক্ষমতার পরীক্ষা নেওয়ার জন্য যে জুতা ব্যবহার করা হয়েছে, তা ছিল জাপানের তৈরি এবং এর ওজনও ছিল এক পাউন্ডের কম। খুবসম্ভব, তার তলা ছিল রবারের। কিন্তু আমি ঘোষণা দিচ্ছি, যদি আমাকে উজিরে আজম মনোনীত করা হয়, তাহলে আমি ওই রকম আরো অনেক ভারী জুতার আঘাত খেয়েও হাসতে থাকব। অধিকন্তু সুশীলংয়ের মাথা চুলে পরিপূর্ণ ছিল, যে কারণে জুতার যা হয়তোবা সে তেমন বোধ করেনি। আমি ক্ষুর দিয়ে মাথা একেবারে মুক্তিয়ে ময়দানে অবতীর্ণ হতে প্রস্তুত । মহামান্য বাদশাহর সমীপে যথাযোগ্য সম্মানের সঙ্গে আরজ এই যে তিনি যেন আমাকে সহ্যশক্তির মহড়া প্রদর্শনীর সুযোগ দেন। জুতা যদি সেনাবাহিনীর স্ট্যান্ডার্ড হয় এবং তার তলায় লৌহনির্মিত পেরেক লাগানো থাকে, তবু আমি অতি উৎসাহের
সঙ্গে তা বরদাস্ত করে নেব।
বাদশাহ আলমপনা এ দাবির কোনো জবাব দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি। তাই সুশীলং নিজেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে পুলিশকে নির্দেশ দিলেন যে এই পাগল ও মাথা খারাপ লোকটির গলায় জুতার মালা পরিয়ে মিছিলে বের করা হোক এবং তাঁকে শহরের প্রত্যেক চৌরাস্তায় একেক ডজন জুতার যা লাগানো হোক ।
আমি স্বচক্ষে সে লোকের মিছিল দেখেছিলাম। বস্তুত জুতার আঘাত খাওয়ার সময় মুচকি হাসির ঝলক দেখা যাচ্ছিল। আমার বিস্ময়ের কোনো অন্ত থাকল না । পরদিন শুনতে পেলাম যে মহামান্য বাদশাহ তাঁকে মধ্যাহ্ন ভোজে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তাঁকে সরকারের কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়নি যদিও, তথাপি তাঁকে শাহী মহলে অবাধে যাতায়াতের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আর বাদশাহ আলমপনা এক স্পেশাল নির্দেশ দ্বারা পুলিশকে এই হেদায়েত প্রদান করেন, তাঁকে যেন কোনো প্রকার কষ্ট দেওয়া না হয়। মহামান্য বাদশাহ তাঁর ওপর এ জন্য এত দয়ার্দ্র ও সহানুভূতিশীল ছিলেন যে যদি কখনো সুশীলংয়ের মনমানসিকতায় কোনোরূপ পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়, তখন তাঁকে যেন এই বলে সতর্ক করে দেওয়া যায় যে উজিরে আলার পদের জন্য তোমার থেকেও উত্তম প্রার্থী মজুদ রয়েছে।
কিন্তু সুশীলংকে কাছে থেকে দেখার পর আমার মনে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস জন্মেছে যে সময়ের কাঁটার বড় রকমের কোনো পরিবর্তনও তাঁর মনমানসিকতায় কোনো পরিবর্তন সূচিত করতে পারবে না। নিজের গদি সংরক্ষণের জন্য বাদশাহ বরং ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ও তার কেবিনেট সদস্যরা তাঁকে প্রত্যেক অপমান ও অসম্মান সহ্য করার জন্য পাবে সদা প্রস্তুত ।
মাস্টার সুশীলংয়ের উজিরে আজম পদে বরিত হওয়ার এক সপ্তাহ পর জাতীয় পরিষদের চৌদ্দজন শিক্ষিত সদস্য বিভিন্ন দেশ ভ্রমণে রওনা হয়ে গিয়েছিলেন। তাঁদের বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর আমি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হই যে তাঁরা মহামান্য বাদশাহ কিং সায়মনের বাদশাহ ও মাস্টার সুশীলংয়ের মন্ত্রিত্বের সময় আর দেশে ফিরে আসবেন না ।
কিং সায়মনের আগমনের আগে প্রথমবার এই দেশ পরিদর্শনার্থে ভ্রমণের পর কয়েকটি বিষয়ে অত্যন্ত প্রভাবিত হয়েছিলাম আমি। জনগণ স্মৃতিবিজড়িত অতীত নিয়ে গর্ব করছিল। তারা পরিস্থিতির ওপর ছিল পরিতৃপ্ত, মুগ্ধ ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ছিল আশাবাদী। তারা তাদের সীমিত সম্পদ সামর্থ্য সত্ত্বেও সুখে-শান্তিতে জীবনযাপন করছিল। ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে এমন ব্যবধান ছিল না, যা উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর জন্য একটা চিন্তা-ভাবনা ও মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন গোত্র ও সম্প্রদায়ের সরদাররা এবং সর্বস্তরের জনসাধারণের সার্বিক জীবনযাত্রার মানে কোনো পার্থক্য ছিল না । কৃষকরা সুখে- স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করছিল। ছোট কুটিরশিল্পগুলো উন্নতি করে যাচ্ছিল। ট্যাক্সের পরিমাণ ছিল খুবই সামান্য । জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে তা পরিশোধ করে দিচ্ছিল। ঘুষখোরীকে মারাত্মক অপরাধ ও নিন্দনীয় কাজ বলে মনে করা হতো। জনসাধারণ অত্যন্ত কঠোরভাবে দুশ্চরিত্র সরকারি কর্মকর্তাদের সমালোচনা করত। বহির্বিশ্ব থেকে শুধু ওই সব পণ্য সামগ্রী আমদানি করা হতো, যা অত্যন্ত জরুরি বলে বিবেচিত হতো। কিন্তু কালো ভেড়ার দল প্রত্যেক সমাজেই পাওয়া যায়। তাই এমন কিছু লোকও ছিল, যারা গোপনে ও লোকচক্ষুর অন্তরালে নিষিদ্ধ দ্রব্যের ব্যবসাও করত। কোথাও কোথাও কোনো দুর্লভ জিনিসের কালোবাজারির আলোচনাও শোনা যেত। কিন্তু জনসাধারণের সমালোচনাশক্তি এত তীক্ষ্ণ ছিল যে, দুশমন লোকদের জন্য মাথা গোঁজার জায়গা ছিল না সামাজের কোথাও। খাদ্য ও পানীয় সামগ্রীতে ভেজাল দেওয়াকে খুবই নিকৃষ্ট অপরাধ বলে বিবেচনা করা হতো। যদি কোনো দোকানদার এই অপরাধে গ্রেপ্তার হতো, তখন তাকে অত্যন্ত কঠোর শাস্তি দেওয়া হতো। সাধারণ মানুষ দেশমাতৃকার প্রতি আন্তরিক প্রেম ও ভালোবাসার সম্পর্ক রাখত । নিজ দেশের রসম-রেওয়াজ, আবহাওয়া, সরকারপদ্ধতি এমনকি জন্মভূমির মাটির প্রশংসা পর্যন্ত তাদের আনন্দিত করত। প্রত্যেক চাষি, রাখাল, মৎস্যজীবী, ব্যবসায়ী শিল্পপতি ও সরকারের সর্বস্তরের কর্মচারী নিজ নিজ কাজকর্ম সম্পাদনের সময় উপলব্ধি করত যে সে নিজ দেশ ও জাতির উন্নতি, অগ্রগতি ও স্বাচ্ছন্দ্য বৃদ্ধি করে চলেছে। যে জিনিস আমাকে সর্বাপেক্ষা বেশি মুগ্ধ করেছিল, তা ছিল তাদের আতিথেয়তা। আপনি কোনো গ্রাম, শহর, লোকালয় অথবা জনপদের যেখানেই যাবেন, সেখানেই আপনাকে সাদরে বরণ করার লোক মজুদ দেখতে পাবেন ।
সুধী পাঠকদের জন্য এটি বিস্ময়ের কারণ হবে যে শ্বেতশুভ্র উপদ্বীপবাসীর সামাজিক জীবনে এত বেশি সাম্য বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও কিং সায়মনের আগমনের আগে প্রত্যেক গোত্রের সর্দারা বাদশাহীর মসনদ লাভ করার জন্য ছিল অস্থির । এমন সোসাইটির কয়েক ব্যক্তির ক্ষমতার দণ্ড হস্তগত করার উদগ্র কামনা যেন অস্বাভাবিক বলে মনে হয়। কিন্তু অনেক করে খোঁজ-খবর নেওয়ার পর আমি জানতে পেরেছি, ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সদস্যদের মধ্যে বাদশাহী লাভের আকাঙ্ক্ষা করার কারণ এটা ছিল না যে তারা জনসাধারণের ওপর তাদের আধিপত্য বিস্তার করতে চাচ্ছিল। বরং তার কারণ ছিল এই যে এখানে প্রত্যেক গোত্র কোনো না কোনো ভালো কাজে অপর গোত্রের ওপর বেশি কৃতিত্ব লাভের অভিলাষী ছিল। এই লোকদের খেয়াল ছিল যে একজন সাধারণ মানুষ অপেক্ষা গোত্রের সরদার ও একজন সরদারের তুলনায় একজন বাদশাহ আল্লাহর বান্দাহদের সেবা করার সুযোগ বেশি পেয়ে থাকে। অতএব, সংগত কারণেই প্রত্যেক সম্প্রদায়ের মধ্যে এই অনুভূতি ছিল বেশ সোচ্ছার ও সক্রিয় যে ওই সেবার ক্ষেত্রে আমি যেন অন্য কোনো সম্প্রদায়ের তুলনায় পেছনে পড়ে না থাকি ।
শ্বেতশুভ্র উপদ্বীপের অধিবাসীদের সম্মুখে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল দেশমাতৃকার স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের নিরাপত্তা ও সংরক্ষণ। কালো উপদ্বীপের বাসিন্দারা ছিল তাদের সর্বাপেক্ষা বড় দুশমন। সেখানকার রাষ্ট্রক্ষমতাও ছিল এমন লোকদের হাতে, যারা তাদের জনসাধারণকে সর্বদা সাদা উপদ্বীপের শাস্তি প্রিয় জনগণের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করত ও খেপিয়ে তুলত। তদুপরি কালো উপদ্বীপের লোকসংখ্যা ছিল অনেক বেশি এবং আয়তনেও ছিল তা বেশ বড়। অর্থনৈতিক উপায়-উপকরণের দিক থেকে সাদা উপদ্বীপ ছিল অনেক এগিয়ে। এতদসত্ত্বেও সাদা উপদ্বীপের জনগণের দেশপ্রেম ও বীরত্বের কারণে কালো উপদ্বীপের সরকার বিগত ত্রিশ-চল্লিশ বছরের নিরলস প্রয়াস-প্রচেষ্টা ও প্রস্তুতি সত্ত্বেও সাদা উপদ্বীপের ওপর আক্রমণ করার দুঃসাহস করেনি। অতএব কালো উপদ্বীপের সরকার এটি জরুরি মনে করেছিল যে হামলা করা ও অভিযান পরিচালনার আগে সাদা উপদ্বীপের অধিবাসীদের অভ্যন্তরীণ বিবাদ ও পারস্পরিক সংঘাত লেলিয়ে দেওয়া যেতে পারে। দেশে আমার আগমনের কয়েক সপ্তাহ আগে সাদা উপদ্বীপের পুলিশ বাহিনী কালো উপদ্বীপের ত্রিশজনের একদল গুপ্তচরকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গিয়েছিল। এই গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার একপর্যায়ে এটি ফাঁস হয়ে পড়েছিল যে তারা টাকা-পয়সা দিয়ে বশীভূত করে সাদা উপদ্বীপে কিছু গাদ্দার তথা দেশ ও জাতির দুশমন সৃষ্টি করে ফেলেছে। এ গাদ্দাররা দেশের ক্ষমতার হাতবদলের পর কালো উপদ্বীপের সঙ্গে মিলিত হওয়ার আন্দোলন পরিচালনা করবে। একজন গোয়েন্দার কাছ থেকে কালো উপদ্বীপের প্রধানমন্ত্রীর যে লিখিত বিবরণ উদ্ধার করা হয়, তাতে সাদা উপদ্বীপের একজন প্রখ্যাত অধ্যাপক কাঁচুমাচুর সঙ্গে ওয়াদা করা হয়েছিল যে যদি তুমি আমাদের দেশের সঙ্গে মিলিত হওয়ার প্রচেষ্টায় সফল হয়ে যাও, তাহলে তোমাকে আজীবন সাদা উপদ্বীপের গভর্নর পদে বহাল রাখা হবে। আর তোমার সঙ্গীদের খেদমতেরও যথাযোগ্য স্বীকৃতির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে। কাঁচুমাচু ছিল প্রতিটি মানুষের প্রিয় ব্যক্তিত্ব। কিন্তু সাদা উপদ্বীপের জনগণ তার সম্পর্কে এটি মেনে নিতে আদৌ প্রস্তুত ছিল না যে সে কালো উপদ্বীপের উজিরে আজমের সঙ্গে তার উপদ্বীপের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব টিকিয়ে দেওয়ার গোপন আঁতাত করতে পারে । তথাপি তার একজন ছাত্র ওস্তাদ ও তার সঙ্গীদের ধ্বংসাত্মক তৎপরতার হাঁড়ি হাটে ভেঙে দিয়ে দিল। ফলে তাদের সবাইকে কারাগারে আটক করে রাখা হলো।

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top