অচেনা বন্দর – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৩৩০
অচেনা বন্দর – বইটির এক ঝলকঃ
জ্ঞানের জাহাজ! সব জেনে বসে আছে! অনেক কষ্টে নিজেকে সামাল দিল সে। ‘সরি, এখনই আসছি। ইব্রাহিমকে নির্বাসনে যেতে বাধ্য করে ইরুবা বিদ্রোহীরা। ক্ষমতা দখল করে। কায়ারা পাল্টা ক্ষমতা দখল করে। এইভাবে- দুই বছরে চারবার ক্ষমতা হাত বদল হয় জাংগারোতে। দেশটির বর্তমান শাসক কায়া গোষ্ঠির। আধা উন্মাদ। নাম ফ্রান্সিস কিমবা । আর্মিতে কর্নেল ছিল। ক্ষমতায় বসেই দুই লাফে মেজর জেনারেল হয়েছে। তারপর ফিল্ড মার্শাল এবং রিপাবলিক অভ জাংগারোর আজীবন প্রেসিডেন্ট। তার ওপর আবার কায়াদের সো কলড্ ধর্মীয় নেতা সে। গত আট মাসে কম করেও ত্রিশ হাজার জাংগারান মারা গেছে তার বিশেষ বাহিনীর হাতে।’ ব্রিফকেসটার গায়ে হাত বোলাল সে ।
“উন্মাদ কিসিমের মানুষ। সবাই তার ভয়ে কাপে। সে যা-ই হোক, এখন দিন যত যাচ্ছে, ততই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে তার কাজকর্ম। প্রায় রাতেই তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র চলছে ধরনের “দুঃস্বপ্ন” দেখছে কিমবা, পরদিন তার সৈন্যরা সেসবের সাথে জড়িত সন্দেহে কাউকে না কাউকে পাকড়াও করে…’
থেমে তর্জনী গলায় বুলিয়ে জবাইয়ের ভঙ্গি করল যুবক। কাঁধ ঝাঁকাল । ‘আফ্রিকার এ ধরনের ব্যানানা রিপাবলিকগুলো সম্পর্কে মোটামুটি ভালই ধারণা আছে আপনার। কী বলেন? ‘
কপাল কুঁচকে মেঝের দিকে তাকিয়ে আছে রানা। হ্যারিসের প্রশ্ন শুনেও শুনল না। ‘তারপর?’
কয়েক মুহূর্ত চুপ করে থাকল হ্যারিস। হাসি হাসি ভাবটা মিলিয়ে গেছে চেহারা থেকে। মনে মনে কঠোর প্রতিজ্ঞা নিল সে, আজকের অপমানের শোধ না তুলে ছাড়বে না। ওই বেয়াড়া মুখটায় কয়েকটা লাথি না মারা পর্যন্ত শান্তি হবে না তার। আগে কাজটা শেষ হোক, তারপর দেখাবে সে কত ধানে কত চাল।
‘সর্বশেষ দেশের আর্মি চিফ, লেফটেন্যান্ট কর্নেল অ্যান্টনিও ববির পিছনে লেগে তাকেও দেশছাড়া করেছে সে। রাজধানী ক্লারেন্সে আধুনিক সুযোগ- সুবিধাওয়ালা একটা হাসপাতাল আছে। জাতিসংঘের টাকায় চলে। তো, কিমবার শালা সেটার জন্য পাঠানো কয়েক লাখ ডলারের ওষুধ লোপাট করে · দেয়ায় কর্নেল তার প্রতিবাদ করেছিল। কেন, তা সে-ই জানে।’
থেমে সোজা হয়ে বসল হ্যারিস ওরফে পিটার মার্টিন। কোটের পকেটে হাত ভরে দিল। “সিগারেট?’
‘না। ধন্যবাদ।’ আলোচনা কোনদিকে গড়াচ্ছে ভাবছে রানা। ব্যাটার মতলব এখনও বোঝা যাচ্ছে না ।
‘আমি পান করলে কিছু মনে করবেন না নিশ্চয়ই?’
নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করল রানা। সরাসরি তার চোখের দিকে তাকাল, ‘মনে করলে পান করবেন না বলতে চাইছেন?’
মেকি লজ্জিত হাসি হাসল যুবক। ‘নট রিয়েলি। আপনি ননস্মোকার হলে অবশ্য বিবেচনা করে দেখতাম।’ সিগারেট ধরাল সে। ধোঁয়া ছাড়ল এক গাল । ‘যা বলছিলাম। এই ঘটনায় প্রেসিডেন্টের মাথা পুরো বিগড়ে যায়। কর্নেলকে যেখান থেকে হোক ধরে আনার নির্দেশ দেয় সেনাবাহিনীকে। কিন্তু ববি জানে কী ভয়ঙ্কর বিপজ্জনক মানুষ সে। তাই আগেই সটকে পড়ে। বর্ডার পার হয়ে পাশের দেশে চলে যায়।’
অ্যাশট্রেতে ছাই ঝাড়ল। ববি হাফ ব্রিড। আধা ইরুবা, আধা কায়া । চল্লিশ বছর আগে দুই জাতির ভয়াবহ দাঙ্গায় ইরুবারা জয়ী হয়ে বিজয় উৎসবের নামে কায়া মেয়েদের পাইকারী ধর্ষণ করেছিল।’ থেমে শ্রাগ করল। ‘সবাই বলে তখনকার প্রোডাক্ট। আর্মিতে করপোরাল ছিল। পরে মেজর হয়। সিনিয়রদের নির্দেশ অমান্য করায় চাকরি হারাতে হয় তাকে, ছয় মাস আগে কিমবার দয়ায় সেটা ফিরে পায় আবার। কারণ ববি নাকি কিমবার সাথে দেখা করে ধর্মের নামে শপথ করে বলেছিল, সে কায়া। কিমবার প্রতি অনুগত থেকে দেশের সেবা করার সুযোগ চায়। কিমবাও মনে হয় ভেবেছিল, একজন পুরনো সৈনিক দলে থাকা ভাল। ট্রেইনিদের শেখাতে পারবে বন্দুকের নল কোনদিকে আর কুঁদো কোনদিকে। ববির কোনও আদর্শ নেই, যদ্দূর জানা গেছে। টাকাই তার আদর্শ। সিফিলিস আছে। সম্ভবত সে কারণেই কিছুটা পাগলাটে স্বভাবের।
সিগারেটের ছাই ঝাড়ল আবার হ্যারিস। রানার নীরবতা দেখে সন্দেহ হওয়ায় নড়েচড়ে বসল ।
‘মাফ করবেন। আপনি ফলো করছেন আশা করি?’
‘করছি। কিন্তু গল্পদাদুর আসর রেখে তাড়াতাড়ি আসল কথায় এলে উপকৃত হতাম।’
রানার খোঁচা মারা মন্তব্যটা ও শুনতে পেয়েছে বলে মনে হলো না। বলল, *এখন নিশ্চয়ই অভাবের মধ্যে আছে সে। টাকার লোভ দেখালে সুড়সুড় করে দলে ভিড়ে যাবে।’
রানা বসার ভঙ্গি বদলাল। ভাবলু, কর্নেল ববি অভাবে আছে না প্রাচুর্যে আছে, তার সঙ্গে এ বৈঠকের সম্পর্ক কী?
সিগারেট নিভিয়ে হেলান দিল হ্যারিস। টাই মসৃণ করে দুই হাত বুকে বেঁধে রানার দিকে তাকিয়ে থাকল একদৃষ্টে। ভাবখানা যেন, খেল খতম। আর কিছু বলার নেই ।
‘তারপর?’ প্রশ্ন করল রানা।
‘ব্যস, মাথা ঝাঁকাল সে ।
“এসব আমাকে বলার অর্থ? এর মধ্যে আমার ভূমিকা কী?’
‘নতুন অভ্যুত্থান সংঘটকের,’ মিটিমিটি হাসছে হ্যারিস ওরফে মার্টিন। বুঝলাম না,’ বলল ও, যদিও বুঝতে কিছুই বাকি রইল না।
‘না বোঝার কী আছে?’ এতক্ষণে যেন ওকে বাগে পেয়েছে, এমন একটা ভঙ্গি করল যুবক। হাসির বেড় আরও প্রসারিত হলো। ‘জাংগারোর ইতিহাসে আরেকটা কু যোগ করতে হবে আপনাকে। কিমবাকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে দিতে হবে যাতে আমরা কর্নেল ববিকে ক্ষমতায় বসাতে পারি।’
মার্টিন হয়তো ভেবেছিল এ কথা শুনে নিশ্চয়ই বিস্ময়ের সাগরে হাবুডুবু খাবে মাসুদ রানা। আর সে তার অসহায়ত্ব রসিয়ে রসিয়ে উপভোগ করবে। কিন্তু বাস্তবে সেরকম কিছু ঘটল না। নীরবে তাকিয়ে থাকল কেবল রানা। নির্বিকার।
ওকে দিয়ে কঠিন কিছু একটা করিয়ে নেয়ার জন্যই যে এত আয়োজন, তা বুঝতে বাকি ছিল না। মনে মনে সেজন্য প্রস্তুতও ছিল ও। কিন্তু সেটা যে এ ধরনের কিছু হবে, তা ভাবেনি। প্রশ্নটা নতুন করে উঁকি দিল মনে। কার প্রতিনিধিত্ব করছে এ লোক? পিছনের মাস্টারমাইওটি কে?
‘কাজটা এতই সোজা বলে মনে হচ্ছে আপনার?’ একটু পর মুখ খুলল রানা। ‘গেলাম আর কু ঘটিয়ে দিলাম?’
‘না, মাথা নাড়ল হ্যারিস। ‘তা কেন হতে যাবে? আমরা ওরকম কিছু ভাবছিও না। তবে এ কাজ আপনার জন্য যে কঠিন কিছু হবে না, সেটাও জানি। এসব আগেও অনেকবার করেছেন আপনি। করেছেন না?’
করেছি। কিন্তু তার পিছনে উপযুক্ত মানবিক কারণ ছিল। নীতি-আদর্শের প্রশ্ন ছিল।’
ঠোঁট বেঁকে গলে যুবকের। ‘আপনার কী মনে হয়, এইসব ছেঁদো কথায় পিছিয়ে যাব বলে এত আয়োজন করেছি আমরা? পিছিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে আপনার?’
চুপ করে থাকল রানা। না, স্বীকার করল মনে মনে। কার হয়ে কাজ করছেন আপনি, জানতে পারি?’
‘পারবেন, পরে। টেকনিক্যাল কিছু অসুবিধা আছে বলে এখনই বলা যাচ্ছে না। সে যাক। আপনি নীতি-আদর্শের প্রশ্ন তুললেন না? ফর ইওর কাইও ইনফর্মেশন, এটারও মানবিক দিক আছে। কিমবাকে হত্যা করাই হবে অনেক বড় মানবিক কাজ, অন্তত জাংগারোর জন্য। লোকটা মরলে শেয়াল-কুকুরও কাঁদবে না। এর মধ্যে তাকে মেরে ফেলার দুয়েকটা চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু লোকটা বেশিরভাগ সময় তার জাতভাই কায়া বডিগার্ডদের কড়া পাহারায় থাকে বলে কাজ হয়নি।’
সোফার হাতলে শরীরের ভর রেখে একটু কাত হয়ে বসল সে। ‘মাঝেমধ্যে নিজের গ্রামের বাড়িতে ছাড়া আর কোথাও খুব একটা যায় না সে। তা-ও হঠাৎ হঠাৎ যায়। গিয়ে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের নামে দুই-চার গ্রাম থেকে ধরে আনা কচি কচি মেয়েদের ধর্ষণ করে। প্রথমে নিজে করে, তারপর বডিগার্ড বাহিনীর মধ্যে হরিলুটের মাল হিসেবে বিলিয়ে দেয় ওদেরকে। তার প্রতিটা ট্রিপেই দু’-চারটা করে মেয়ে মারা পড়ে। লোকটা সম্পর্কে আরও অনেক কাহিনি চালু আছে যেসব শুনলে আপনার গায়ের পশম দাঁড়িয়ে যাবে।’
ব্রিফকেস থেকে একটা বড় বাদামি খাম বের করল ওয়াল্টার হ্যারিস। ওটার মধ্য থেকে বের হলো এক লোকের রঙিন ছবি। দশ বাই বারো ইঞ্চি। অতিরিক্ত এনলার্জ করায় চেহারা অস্পষ্ট হয়ে গেছে। কিনারাগুলো আবছা। তবে বোঝা যায় । রানার দিকে ওটা এগিয়ে দিল সে। ‘দেখুন।’
দেখল ও। মাঝ বয়সী এক আফ্রিকান, সিল্ক-টপ হ্যাট মাথায় দিয়ে বসে আছে। গায়ে কালো রঙের ফ্রক কোট, পরনে স্পঞ্জ-ব্যাগ ট্রাউজার্স। মুখটা লম্বাটে । কুঠারের মত বাঁকা। নাকের দু’ পাশের চামড়ায় দুটো নিম্নমুখী গভীর দাগ। সর্বক্ষণ নাক কুঁচকে রাখলে এরকম হয়। ঠোটের দুই কোনাও তেমনি। নীচের দিকে নেমে আছে। ঘৃণা অথবা কিছু মেনে না নিতে পারার ক্ষেত্রে এরকম অভিব্যক্তি হতে পারে ।
মানুষটার হাড়ের কাঠামো বিস্ময়কর রকম প্রশস্ত। এরকম সাধারণত খুব কমই চোখে পড়ে। ছবিটা সম্ভবত কোনও অনুষ্ঠানের সময় তোলা। অফ হোয়াইট রঙের বিশাল এক ভবনের সামনের সবুজ লনে সিংহাসনের মত চেয়ারে বসে আছে লোকটা। তার পিছনে, ভবনটার সিঁড়িতে কিছু আর্মি অফিসার দাঁড়ানো। ম্যানসনের ছাদ লাল টাইলের তৈরি ।
লোকটার চোখ দুটো দেখার মত। অন্ধকার রাতে বেড়ালের চোখ যেমন আলো পড়লে জ্বলে ওঠে, অনেকটা সেই রকম চকচক করছে। স্থির দৃষ্টিতে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে আছে। উন্মাদের দৃষ্টি এরকমই হয়, ভাবল মাসুদ রানা ।
“ইনি হচ্ছেন রিপাবলিক অভ জাংগারোর হিজ এক্সেলেন্সি, প্রেসিডেন্ট ফ্রান্সিস কিমবা,’ হ্যারিস বলল।
রানা জবাব না দিয়ে তার পিছনের ভবনটা দেখল। ওটার গঠন প্রকৃতি ঔপনিবেশিক আমলের কথা মনে করিয়ে দেয়। যার কথা বর্তমানে মানুষের স্মৃতিতে হয়তো নেই, তবে ভাণ্ডার থেকে একেবারে মিলিয়েও যায়নি।
নাকের ডগা চুলকাল হ্যারিস। ওর প্রতিক্রিয়া লক্ষ করছে। রানার অনেক মানবিক গুণ আছে, বস বলেছে তাকে। সেসবের অন্যতম হচ্ছে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের প্রতি দুর্বলতা। যেমন নারীজাতির অবমাননা সহ্য করতে পারে না ও । কিমবা ধর্মের নামে মেয়েদের নিয়ে অনাচার করে, সেসব রানার কানে তুলতে পারলে তাদের কাজ অনেক সহজ হয়ে যাবে ।
খামটা এগিয়ে দিল হ্যারিস। এর মধ্যে এই প্যালেসের কিছু স্যাটেলাইট ইমেজ আছে। লং, ক্লোজ, দু’রকমই। আপনার কাজ সহজ করে দিতে চাই আমরা, মিস্টার রানা। তাই কষ্ট করে নিজেরাই এগুলো জোগাড় করেছি। অনেক দিন লেগেছে। কিন্তু আর বেশি সময় নেয়া যাবে না। যা করার খুব তাড়াতাড়ি করতে হবে।’ শ্রাগ করল লোকটা। ‘বুঝতেই পারছেন।’
রানা চুপ। হাতে প্ল্যান্ট করা ডিভাইসটার কথা ভাবল। ওকে কিডন্যাপ করার নাটক সাজাতে এদেরকে অকল্পনীয় ঝুঁকি নিতে হয়েছে! ও কখন লণ্ডনে আসছে, খবরটা কষ্ট করে জানতে হয়েছে। সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা করতে হয়েছে। তারপর হাতের এটা… নিশ্চয়ই বেশ আগে থেকে ঠিক করা ছিল এটার সাহায্যে রানাকে এই কাজে বাধ্য করা হবে। ওর সত্যিকারের পরিচয় জানার পরেও! এদের স্পর্ধার কথা ভেবে অবাক হলো ও ।
একটা চাপা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। একবারই হাতের জিনিসটার কেরামতি বোঝানো হয়েছে ওকে, সেই ক্লিনিকে। তারপর থেকে আর সাড়া নেই। জিনিসটার কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়নি তো? নাকি… হ্যারিসের পরের কথায় চমক ভাঙল ওর ।
‘লোকটাকে মারলে আপনার পুণ্য বেশি হবে, মিস্টার রানা।’ রানা কিছু বলছে না দেখে অস্বস্তি বোধ করছে হ্যারিস।
আমার আমলনামা নিয়ে ভাবতে হবে না,’ বলল রানা। এর পিছনে আপনাদের আসল মতলবটা কী, তাই বলুন ।’
চাউনি কেঁপে গেল তার। ‘মতলব?’ মাথা নাড়ল। ‘ব্যবসা ছাড়া কোনও মতলব নেই। বিলিভ মি । ‘
রানা নীরবে তাকিয়ে থাকল তার দিকে ।
‘আপনার পরিচিত অনেক মার্সেনারি এক্স আর্মি ম্যান আছে, কমাণ্ডো আছে, আপনি বললে যারা এ কাজে খুশি মনে অংশ নেবে। তাদের যতজনকে প্ৰয়োজন মনে করেন, নিয়ে আসুন। সবাইকে উপযুক্ত পারিশ্রমিক দেয়ার ক্ষমতা থাকবে আপনার। যতো আর্মস দরকার, কিনে নিতে পারবেন। এসবের কানেকশনও তো আপনার ভাল জানা ।’
‘আমার অনেক খবরই রাখেন দেখছি,’ আনমনে বলল ও।
রাখতে হয়। ব্যবসা করতে গেলে কখন কোন্ পুঁজি খাটাতে হবে না জানলে চলবে কেন? ইচ্ছে করলে হাতে প্ল্যান্ট করা ডিভাইসটার সাহায্যে আপনাকে রাজি করানো যেতো। তাতে আমাদের কাজ অনেক সহজ হতো । কিন্তু আমরা বুঝি, সব কাজে মানুষকে বাধ্য করতে নেই।’
কিছুক্ষণ ওকে দেখল- হ্যারিস। ‘তারপর? কী ঠিক করলেন? নিজে থেকে করবেন কাজটা?’
শ্রাগ করল ও। যেখানে দর কষাকষির সুযোগই নেই, সেখানে অহেতুক সময় নষ্ট করে লাভ কি? এদের কথায় নাচা ছাড়া এখন কোনও পথ নেই ওর সামনে। কাজেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল ।
‘আপনার ব্যবসার গল্প পুরোটা বিশ্বাস করি না,’ বলল রানা। ‘তবু… উপায় কি
মনে মনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ল যুবক। একটা গোপন সার্চ লাইট জ্বলে উঠল তার মুখের চামড়ার নীচে। এখন আপনার প্রথম কাজ হচ্ছে ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং টার্গেট সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করা।’
‘আপনি ওদিকে গিয়েছিলেন শুনলাম যেন!’
মাথা নাড়ল হ্যারিস। ‘গিয়েছিলাম, কিন্তু জাংগারোতে ঢোকার সুযোগ করে উঠতে পারিনি। প্রতিবেশী লাইবেরিয়া থেকে যদ্দূর সম্ভব রিপোর্ট সংগ্রহ করে ফিরে এসেছি।’
“আপনাদের তো ব্যবসা আছে। ব্যবসা দেখাশোনার কথা বলে যেতে পারতেন।’
·
‘পাগল নাকি? কায়ারা কিছু টের পেলে জীবন নিয়ে ফিরে আসা যেতো? তার ওপর রাশান স্পাইরা আছে না?”
‘আপনাদের দূতাবাসের মাধ্যমে চেষ্টা করেননি কেন?’ ‘জাংগারোতে ব্রিটিশ দূতাবাস নেই।’
‘আমেরিকান?’
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!