নাঙ্গা তলোয়ার ১ম ও ২য় খণ্ড – এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২৪০
নাঙ্গা তলোয়ার ১ম ও ২য় খণ্ড – বইটির এক ঝলকঃ
ইউহাওয়া বলে – “লাইছ বিন মোশান উপস্থিত হয়ে ব্যাপারটা খুলে বললে ভাল হয় না? এ ব্যাপারে ঐ শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তির অবদানই বেশি।”
“ঐ বৃদ্ধ যাদুকরকে এখন কি করে ডেকে পাঠাব?” কা’ব বিন আসাদ অসন্তুষ্টির একটু ভাব নিয়ে বলে— “তুমি বলতে থাক। তোমার উপর আমাদের পূর্ণ বিশ্বাস রয়েছে।”
বৃদ্ধ ইহুদী নড়েচড়ে বসে বলে- “এখানেই তিনি আছেন।” আমরা তাকে সঙ্গে করে নিয়েই এসেছি। শুধু তাই নয়, মুহাম্মাদকে যে কতল করবে তাকেও নিয়ে এসেছি। আর এখন আমরা বিলম্ব করতে পারি না। আমাদের একান্ত আশা ছিল, কুরাইশ, গাতফান এবং অন্যান্য সহযোগী গোত্রগুলো সম্মিলিতভাবে ইসলামের নাম-নিশানা দুনিয়া থেকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দিবে। কিন্তু আশায় গুড়ে বালি হয়েছে। প্রতিটি রণাঙ্গনে তারা শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছে। আমরা তাদেরকে মদীনা আক্রমণে প্ররোচিত করেছিলাম। তারা এ পর্যন্ত এসেও চরম কাপুরুষতার পরিচয় দিয়ে পালিয়ে গেল। ইহুদীদের খোদার কসম। কা’ব ! মুসলমানদের উপর পেছন দিক থেকে আক্রমণ না করে খুবই অনুচিত কাজ করেছ। “
কা’ব বিন আসাদ কিছুটা বিব্রত হয়ে বলে- “ ইতোপূর্বে তার কারণ ব্যাখ্যা করেছি। কারণ সঠিক ছিল না ভুল?” বৃদ্ধ বলে- “সুযোগটি হাতছাড়া হয়ে গেছে এখন আমরা কুরাইশদের বিজয়ের অপেক্ষা করতে পারি না।” সাথে সাথে ইউহাওয়াকে উদ্দেশ করে বলে- “লাঈছ বিন মোশানকে ডাক। অপরজন আপাতত বাইরে থাকুক।” ইউহাওয়া রুম থেকে বেরিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরই লাঈছ বিন মোশানকে নিয়ে ফিরে আসে। সে ছিল ৭০ থেকে ৮০ বছরের মাঝামাঝি বয়সের এক বৃদ্ধ। তার চুল-দাড়ি দুধের ন্যায় সাদা হয়ে গিয়েছিল। দাড়ি ছিল বেশ লম্বা। চেহারা লাল টুকটুকে। লাল-সাদায় মিশ্রিত গোধুমবর্ণ। পৌরুষদীপ্ত উজ্জ্বল কান্তি শরীর। তবে শরীরের ভাঁজে ভাঁজে বার্ধ্যকের ছাপ। উষ্ট্র রঙ্গের আলখেল্লা পরিহিত ছিল সে। হাতে ছিল বৃদ্ধকালের সাথি ‘লাঠি’। লাঠির উপরাংশ কারুকার্য খচিত ছিল। লাঠি মাটিতে রেখে দিলে মনে হত যেন জীবিত একটি সাপ ফনা তুলে আছে।
ইহুদী জগতে লাঈছ বিন মোশান একজন জাদুকর হিসেবে সুপরিচিত ছিল। নযরবন্দী এবং জাদু প্রদর্শনে সে খুব দক্ষ ছিল। মক্কা-মদীনার মধ্যবর্তী কোন এক গ্রামে তার বাসস্থান। সমাজে তার সম্পর্কে অনেক ধরনের কথা প্রচলিত ছিল। মৃতকে স্বল্প সময়ের জন্য জীবিত করতে পারত। যে কোন পুরুষ কিংবা মহিলাকে মুহূর্তে আয়ত্ত করা ও ভক্ত করার ক্ষমতা তার ছিল। ইহুদীরা তাকে বিশপ ও পাদ্রী বলে মান্য করত। সে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন, বিচক্ষণ ব্যক্তিত্ব ছিল।
সে কক্ষে প্রবেশ করা মাত্রই সবাই দাঁড়িয়ে যায়। সে আসন গ্রহণ করলে এক এক করে সকলেই বসে পড়ে।
“মোশানের বংশ-মর্যাদা সম্পর্কে কে না জানে?” কা’ব বিন আসাদ বলে- “ইহুদীদের খোদার কসম। আমাদের মধ্য হতে কেউ আপনাকে ডেকে পাঠানোর সাহস করতে পারে না। মনে হয় ইউহাওয়া আপনাকে নিয়ে এসেছে।”
“আমি কোন গয়গম্বর নই কা’ব।” লাঈছ বিন মোশান বলে- আমি এ জাতীয় আকর্ষণীয় শব্দ শুনতে চাইনা। সম্মান এবং মর্যাদা দেখানোর সময়ও নেই । কেউ না ডাকলেও আমি আসতাম। তোমরা গুরুদায়িত্ব পালন করতে সময় নষ্ট করে ফেলেছ বহুত। তোমাদের চেয়ে এই মেয়েটি শতগুণে ভাল। কারণ যে কাজ তোমাদের করার কথা সে তা নিজেই সম্পন্ন করেছে।”
কা’ব বিন আসাদ বলে- “শ্রদ্ধাভাজন ইবনে মোশান! আমরা এখনও এমন চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিয়ে চিন্তা করিনি। মুহাম্মাদকে হত্যার মত ভয়ানক সিদ্ধান্ত নিলেও কোনক্রমেই ইউহাওয়াকে এ কাজে ব্যবহার করতাম না। এমন অসাধারণ সুন্দরী এবং যুবতী মেয়েকে আমরা ব্যবহার করতে পারি না। “
লাঈছ উদ্বেগের সাথে জানতে চায় – “কেন পারনা? সারা দুনিয়ার ইহুদীদের খোদার রাজত্বের কথা কি ভুলে গেছ?… দাউদের তারকার শপথ, গোটা মানব জাতির উপর বনী ইসরাঈলের রাজত্ব কায়েম করতে আমাদের বিরাট কুরবানী করতে হবে। মানুষের স্বভাবজাত দুর্বল বিষয়গুলো চিহ্নিত করে করে নিশানা করতে হবে। একজন পুরুষ কি চায় জান?… একদিকে ইউহাওয়া আর অন্যদিকে উন্নতজাতের বিশটি ঘোড়া এবং বিশজন গোলাম দাঁড় করিয়ে দিয়ে কাউকে যদি ইচ্ছামত গ্রহণ করার অধিকার দেয়া হয়, তাহলে দাউদের তারকার শপথ করে বলতে পারি, সে ঘোড়া এবং গোলামের পরিবর্তে ইউহাওয়াকেই গ্রহণ করবে।”
কক্ষে কিছুক্ষণের জন্য সুনসান নীরবতা নেমে আসে। কারো মুখে কোন কথা নেই। বিস্ফোরিত চোখগুলো চেয়ে থাকে লাঈছের দিকে।
“আমার অনুমান তোমরা আমার কথার মর্ম বুঝতে পারনি।” লাঈছ বলে “তোমাদের মন-মস্তিষ্কে নারী ও তার রূপযৌবনের পবিত্রতা বন্ধমূল হয়ে আছে।… আমার কথা মনোযোগ সহকারে শোন। লাজ-শরমের সাথে পবিত্রতার কোন সম্পর্ক নেই। এটি একটি শ্রেষ্ঠতম হাতিয়ার। শত্রুকে অচল ও তার চিন্ত শিক্তি ভোঁতা করতে এ অস্ত্রের কোন তুলনা নেই। শত্রুকে ঘায়েল করতে এ অস্ত্র আমাদের ব্যবহার করতেই হবে। সৎ কাজ কাকে বলে? অসৎ কাজের সংজ্ঞা কী? আমি জানি, তোমরা কি জবাব দেবে। অবশ্যই তোমাদের জবাব যথার্থ। তবে দুনিয়ার আনাচে-কানাচে ইহুদীবাদের মর্মবাণী পৌঁছাতে হলে সৎ-অসৎ’ এর অর্থ তখন পাল্টে যাবে। মুহাম্মাদ অশ্লীলতা ও নাশকতার মূলোৎপাটনে বদ্ধপরিকর। আমাদেরকে তা জ্যান্ত রাখতে হবে এবং অভিনব পন্থায় নতুন নতুন অশ্লীলতা ও নাশকতা সমাজে জারী করতে হবে। তাই বলে আমরা নিজেরা নাশকতামূলক কর্মে জড়িয়ে পড়ব না। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিজেদের গোলামীর শিকলে বন্দি করতে চাইলে অ-ইহুদীদেরকে পৃথিবীতেই বেহেশত দেখাতে হবে। বেহেশতের হুর তাদের সামনে ধরতে হবে। দামী মদ পান করাতে হবে। মানুষের মধ্যে পশুসুলভ প্রবৃত্তি রয়েছে। এই পশুত্ব কয়েকগুণে বাড়াতে হবে। ভাল-মন্দের বিচারের সময় এখন নয়। এখন একমাত্র লক্ষ্য, ইহুদীদেরকে দুনিয়ার ড্রাইভিং সিটে বসাতে হবে। এর জন্য যা করা দরকার সবই আমাদের করতে হবে। তা যতই মন্দ ও কুরুচীপূর্ণ হোক না কেন। অল্প থেমে সে ইউহাওয়ার দিকে তাকিয়ে বলে— “ইউহাওয়া! তাদেরকে, ব্যাপারটা ভাল করে বুঝিয়ে দাও। *
ইউহাওয়ার ঠোঁটে মুচকি হাসির আভা খেলে যায়। পরিকল্পিত ভঙ্গিতে দুই ঠোঁটের ওঠা-নামায় সে আভা দ্যুতিময় হয়ে কণ্ঠকে মোহনীয় করে তোলে। এক অজানা আকর্ষণে উপস্থিত সকলেই ইউহাওয়ার কান্তিময় হুররূপী চেহারার দিকে অপলক নেত্রে চেয়ে থাকে। কারো চোখে পলক পড়ে না। ইউহাওয়া তার কাহিনী বলতে শুরু করে।
কয়েক মাস পূর্বে মক্কা থেকে ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। ইউহাওয়া লাজ- শরমের মাথা খেয়ে বলতে থাকে যে, খালিদ, ইকরামা ও সফওয়ান-তিন প্রখ্যাত কুরাইশ সেনাপতিকে সে তার রূপ-যৌবনের জাদুতে পৃথক পৃথকভাবে বন্দি করতে চায়। তাদেরও পরস্পরের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘর্ষ সৃষ্টিরও চেষ্টা করে কিন্তু তিনজনের কেউই তার জালে বন্দি হয় না। কাউকে সে ফুসলিয়ে প্ররোচিত করতে পারে না। তিন সেনাপতির অন্তরে কুরাইশ দলপতি ও সর্বাধিনায়ক আৰু সুফিয়ানের প্রতি বিদ্বেষ সৃষ্টি করারও জোর প্রয়াস চালায় ।
ইউহাওয়া বলে-“কিন্তু খালিদ মানুষ নয়, পাথর। স্পষ্টভাবে সে আমাকে প্রত্যাখ্যানও করে না আবার ঐ আকর্ষণও দেখায় না, আমি যা কামনা করছিলাম। আমার বিশ্বাস, ইকরামা এবং সফওয়ানের উপর খালিদেরই প্রভাব রয়েছে। এই তিন সেনাপতি যুদ্ধ প্রেমিক। যুদ্ধ-বিগ্রহ বিনে তারা আর কিছুই বোঝে না। দ্বিতীয় কোন বিষয় চিন্তাও করেনা । ”
ইউহাওয়া হাল ছাড়ে না। অব্যাহত রাখে তার চেষ্টা। খালিদ থেকে দ্রুত দৃষ্টি ঘুরিয়ে নেয়। কারণ তার মন-মানসিকতায় একমাত্র এ চিন্তা বন্ধমূল হয়ে আছে যে, মুসলমানদেরকে রণাঙ্গনে সরাসরি পরাস্ত করতে হবে এবং যুদ্ধবন্দী কিংবা লড়াইরত অবস্থায় মুহাম্মাদ (স) কে হত্যা করতে হবে।
একদিন ইউহাওয়া মক্কা থেকে চার মাইল দূরের এক গ্রামে যায়। বিকেলে সেখান থেকে রওনা হয়। তার সাথে আরো দুইজন মেয়ে এবং তিনজন পুরুষ ছিল। এরা সবাই ইহুদী। দুটি ঘোড়ার গাড়িতে সওয়ার হয়ে তারা ফিরে চলে। অর্ধেক রাস্তা যেতে না যেতেই ভয়াবহ সাইমুম শুরু হয়। এতে বালুর টিলাগুলো কমতে কমতে এক সময় অস্তিত্বহীন হয়ে যায়। এ ঝড়ের গতি এতই তীব্রতর হয় যে, দেহের কোন স্থান খোলা থাকলে উৎক্ষিপ্ত বালু সেখানে ক্ষেপণাস্ত্রের মতো আঘাত হানত। বালুকণা চামড়া ভেদ করে ভেতরে প্রবেশ করত। উট- ঘোড়া নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশে এদিক-ওদিক ছুটে পালাত ।
দুনিয়া থেকে আসমান পর্যন্ত উঁচু একটি কৃত্রিম দেয়াল আচমকা উত্থিত হয়ে আঘাত হানে এবং প্রাচীরটি নিমিষে ইহুদীদের বহনকারী ঘোড়ার গাড়িটি ধ্বংস করে দেয়। আকাশ রক্তিম হয়ে ওঠে। সমুদ্রে সৃষ্ট তুফানের প্রবল তরঙ্গরাশি যেমন জাহাজের উপর আছড়ে পড়ে তাকে ডুবিয়ে দেয়ার উপক্রম করে, ঠিক তেমনি ঘুর্ণির প্রবল ঝাপটা শক্তিশালী থাবা হয়ে তাদের ভূপাতিত করতে থাকে। বালুর ঢিবিগুলোর মুলোৎপাটন করে চলে। মরুঝড় চলাকালে দাঁড়িয়ে থাকলে বিপর্যয় ডেকে আনে। বেলচা দ্বারা বালু নিক্ষেপ করলে যেমন বালুর স্তুপ জমে তেমনি উৎক্ষিপ্ত বালু গায়ে আছড়ে পড়ে নিচে পড়ে জমা হয়। এভাবে বালু জমতে জমতে অল্পক্ষণের মধ্যে সেখানে বালুর ঢিবি হয়ে যায়। মানুষকে কেন্দ্ৰ করে এই স্তুপ গড়ে ওঠার কারণে সে ব্যক্তি কৃত্রিমভাবে তার মধ্যে জীবিতই দাফন হয়ে যায় । কিন্তু সে জীবিত থাকে না। বালুর চাপে দম আটকে মারা যায় ।
“ঘূর্ণিঝড় আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে আসে।” ইউহাওয়া শোনায় – “ঘোড়া ধূলিঝড় সহ্য করতে না পেরে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে যায়। ঘূর্ণির দিকে মুখ করে ঘোড়াগুলো গাড়ি নিয়ে ছুটতে থাকে। এ পথে অস্বাভাবিক ছোট বড় গর্ত পড়ে। ঘোড়ার গাড়ি জোরে লাফিয়ে উঠে ঢুলতে থাকে। আরোহীও গাড়ি ঘোড়ার করুনার উপর উড়ে চলতে থাকে। গাড়ির ভিতরে এভাবে বালি বৃষ্টি হতে থাকে যে, নিজে নিজেকে পর্যন্ত দেখা যাচ্ছিল না।…
“এক জায়গায় এসে গাড়ির এক পাশের ঢাকা গভীর গর্তে পড়ে যায়।” ইউহাওয়া একটু থেমে আবার সেই ভয়াল স্মৃতি মন্থন করে- “অথবা অন্য পাশের চাকা অস্বাভাবিক উঁচুতে উঠে যায়। গাড়ি এক দিকে এত উঁচু হয়ে যায় যে, কাত হয়ে উল্টে যাচ্ছিল। কিন্তু উল্টে না। তবে গাড়ি তীব্র ঝাঁকুনি খাওয়ায় উঁচু সাইড দিয়ে আমি বাইরে পড়ে যাই। গাড়ি নিজ গতিতে ছুটতে থাকে। গাড়ি থেকে পড়ে আমি গড়াগড়ি খেতে থাকি। এক সময় নিজকে সামলে নিয়ে উঠে দাঁড়াই এবং সাথিদের নাম ধরে ডাকতে থাকি। কিন্তু ঝড়ের তীব্র ঝাপটা এবং শো শো আওয়াজের কারণে আমার ডাক নিজের কান পর্যন্তই পৌঁছে না। সম্ভবত সাথিরা আমার পড়ে যাওয়া খেয়াল করতে পারেনি। আর খেয়াল করলেও কারো হিম্মত ছিল না যে, আমার নিঃসঙ্গতা দূর করতে সেও গাড়ি থেকে লাফিয়ে পড়বে। ”
“এমন ভীত-সন্ত্রস্ত আমি আর কোনদিন হইনি।” ইউহাওয়া চেহারায় কৃত্রিম উদ্বেগ সৃষ্টি করে বলে- “ এবং এমন ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ে পড়িনি। যেমনি ঝড় তেমনি অন্ধকার, চোখে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। আমার আশেপাশে কোন রাস্ত ↑ও ছিল না। ঘোড়া মূল রাস্তা ছেড়ে যে এদিক-ওদিক চলছিল তাও আমার খেয়াল ছিল। আমি কোন উপায়ান্তর না করে কাপড়ে মুখ ঢেকে বাতাসের গতি লক্ষ্য করে চলতে থাকি। হাঁটছিলাম কিন্তু বাতাসের তীব্র দাপটে পা মাটিতে ঠিকমত রাখতে পারছিলাম না।”
ঘুর্ণিঝড় ইউহাওয়াকে ধাক্কা মেরে মেরে নিয়ে চলে। ঝড়ের শো শো আওয়াজ হঠাৎ বিকটরূপ ধারণ করে। ইউহাওয়া ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে নিচের দিকে চলে। ঝড় তাকে দ্রুত নিয়ে চলে। এখানে এসে একটি দেয়ালের সাথে ধাক্কা খায়। এটি ছিল বালির দেয়াল। ইউহাওয়া দেয়াল ধরে ধরে সামনে এগিয়ে চলে। এটা নিম্নভূমি হওয়ায় এখানে মাটির টিলা এবং ডাল-পালাবিহীন মরুবৃক্ষ ছিল। পরিবেশ ও প্রকৃতিগত কারণে ঝড়ের আওয়াজ অনেক নারীর একযোগে চিৎকারের মত শোনা যায়। মাঝে মধ্যে এমন আওয়াজও শোনা যায় যার সাথে ঝড়ের আওয়াজের কোন সম্পর্ক ছিল না। মানুষের আওয়াজ বলেও মনে হয়নি। প্রেতাত্মা ও হিংস্র জানোয়ারের আওয়াজের মত মনে হচ্ছিল।
ইউহাওয়া নিজেকে অত্যন্ত সাহসী মনে করলেও এখানে এসে ভয়ে কেঁদে ফেলে। তার বিশ্বাস ছিল, এক সময় ঘূর্ণিঝড় থেমে যাবে। সাথে সাথে এ কথাও সে ভুলে না যে, কোন পুরুষের কবলে পড়লে সে তাকে তার বাড়িতে নয়; বরং নিজের বাড়িতে নিয়ে যাবে। এ সম্ভাবনাও তাকে অস্থির করে তোলে যে, সুযোগ
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!