কৃষ্ণপক্ষ – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

কৃষ্ণপক্ষ – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৮৪

কৃষ্ণপক্ষ – বইটির এক ঝলকঃ

মেয়েটি অঙ্কের জাদুকর। এখানকার কয়েকটি নাম করা রেস্টুরেন্টে অ্যাকাউন্টসের কাজ করেছে কিছুদিন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ওগুলোর মালিক চ্যাঙ লি স্বয়ং। যদি তাই হয়ে থাকে, চ্যাঙ লি না হোক, তার ঘনিষ্ঠজনদের কেউ না কেউ নিশ্চরই চেনে মেয়েটিকে। ও যদি নকল সু মিল্ক হয় অসুবিধে নেই। আসল হলেই বিপদ, কারণ ওকেই আশা করা হবে ওখানে।’
শাসানোর ভঙ্গিতে আঙুল নাচাল কপার। ‘ভুলে যাবেন না, লি-র মত ভয়ঙ্কর নিষ্ঠুর মানুষ পৃথিবীতে খুব কমই জন্মেছে। যদি উল্টোপাল্টা কিছু ঘটে যায়, প্রাণ নিয়ে ফিরে আসতে পারবেন না আপনারা কিছুতেই। আমাদের সিকিউরিটি ফোর্স আপনাদের হাড়-মাংসও সম্ভবত খুঁজে পাবে না জায়গামত পৌঁছে।’
কোন প্রতিক্রিয়া দেখা গেল না রানার মধ্যে। মাথা দোলাল ও। ‘হ্যাঁ, কাজ উদ্ধার করা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হবে বোঝা যাচ্ছে।’
‘সু মিঞ্চের ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে কত সময় লাগতে পারে?’ কগারকে প্রশ্ন করলেন রাহাত খান।
‘কাজ শুরু করে দিয়েছি আমি। বলা যায় না, বারো ঘণ্টা, এমনকি চব্বিশ ঘণ্টাও লেগে যেতে পারে ।
মুখ কালো হয়ে গেল বৃদ্ধের। বুঝতে পারছে রানা, ওর নিরাপত্তার কথা ভেবে ভীষণ উদ্বেগে আছেন মেজর জেনারেল । আপনমনে মাথা দোলালেন তিনি। ‘দেরি হয়ে যেতে পারে।’ অপারেশন সমন্বয়কারীর দিকে ফিরলেন। ‘কাল ক’টার মধ্যে ওদের এয়ারপোর্টে পৌঁছতে হবে?’
ইস্টার্ন টাইম সাড়ে এগারো, জেনারেল,’ বলল জেরাল্ড হিকি। ‘অর্থাৎ নিউ ইয়র্ক সময় রাত সাড়ে আটটায় জেএফকে-তে ল্যাও করবে জাপান এয়ারলাইনসের নাম্বার জিরো সিক্স ফ্লাইট। তার আগে।’
“আমার ধারণা তেমন খারাপ কিছু ঘটবে না, জেনারেল,’ বলল বুল। ‘সবকিছু ঠিকই থাকবে।
“আমারও তাই মনে হয়,’ মনের ভেতর যা-ই থাক, চেহারায় ড্যাম কেয়ার ভাব ফুটিয়ে রেখেছে মাসুদ রানা। যাতে বুড়োকে খানিকটা হলেও আশ্বস্ত করা যায়।
‘সেট-আপটা এরকম,’ বলল বুল, ‘নিউ ইয়র্ক অবতরণ করে ক্যাম্পবেলকে সান ফ্রান্সিসকোর একটা নাম্বারে ফোন করতে হবে। নিজের পরিচয় জানাতে হবে সাঙ্কেতিক কথাবার্তার মাধ্যমে। সে সব বের করে নিয়েছি আমরা ওদের পেট থেকে, চিন্তার কিছু নেই। সান ফ্রান্সিসকো নাম্বার আর্নেস্টের উত্তরে সন্তুষ্ট হলে আরেকটা টেলিফোন নাম্বারে যোগাযোগ করতে বলবে। ওটা নিউ ইয়র্কের। ওখানে যোগাযোগ করলে পাওয়া যাবে পরবর্তী নির্দেশ।
খুক করে কেশে উঠল রানা। একটা বিষয় পরিষ্কার হলো না। টোকিও-নিউ ইয়র্ক সরাসরি ফ্লাইটে কি করে উঠব আমরা।’
‘এখনই সব পরিষ্কার করে দিচ্ছি, মেজর।’
রাত দুটোয় শেষ হলো ব্রিফিং। বিশ্রাম নেয়ার জন্যে একটা কেবিনে রানাকে পৌঁছে দিয়ে রাতের মত বিদেয় নিল, কমাণ্ডার বিল ট্যানার। একা হওয়ামাত্র অজানা এক আশঙ্কা’ চেপে ধরল রানাকে। পদে পদে ফাঁদ আর অজানা বিপদের মধ্যে পা বাড়াতে যাচ্ছে ও আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে, ভাবতেই মাথার ভেতরটা কেমন করে উঠল। বড় চিন্তা রানার মেয়েটিকে নিয়ে। চেরির কাউন্টারপার্ট যদি আসল সু মিল্ক হয়ে থাকে, তাহলে কোন আশাই নেই।
রওনা হওয়ার আগে চেরির সঙ্গে আলোচনা করে নিতে হবে, সিদ্ধান্ত নিল মাসুদ রানা। ওর মনোভাব বোঝার চেষ্টা করতে হবে। ভেতরে ভেতরে বিপদের আশঙ্কায় যদি কুঁকড়ে থাকে মেয়েটি, সেটা হবে ওর জন্যে বোঝার ওপর শাকের আঁটি। বিছানায় ক্লান্ত দেহটা এলিয়ে দিল রানা। খানিক এপাশ ওপাশ করে তলিয়ে গেল ঘুমের রাজ্যে।
মিনিট পুরো হওয়ার আগেই ঘুমটা ভেঙে গেল, মনে হলো রানার। বাইরে জেট এঞ্জিনের প্রচণ্ড গর্জনে কানে তালা লেগে যাওয়ার দশা। বাইরের আলোয় কেবিনের ভেতরটা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। ব্যাপারটা কি। ভাবল রানা, আমি তো আলো নিভিয়েই শুয়েছিলাম। কি খেয়াল হতে হাতঘড়ির ওপর চোখ বোলাল ও, সঙ্গে সঙ্গে কেটে গেল ঘুমের রেশ। ভোর সোয়া পাঁচটা বাজে।
চট করে বাথরুম সেরে এল মাসুদ রানা। সাড়ে পাঁচটার দিকে টোকা পড়ল দরজায়। ব্রেকফাস্ট ট্রে নিয়ে ভেতরে ঢুকল কাল রাতের চার ওয়েটারের একজন। বেড সাইড টেবিলের ওপর ট্রে রেখে বলল সে, ‘মেজর জেনারেল ঠিক ছ’টায় আপনাকে তাঁর রূমে কষ্ট করে যেতে অনুরোধ করেছেন, স্যার।’
‘ঠিক আছে।’
‘আমি আসব আপনাকে নিয়ে যেতে।’
পায়ের নিচে ডেক দুলছে মনে হলো রানার। ‘আমরা কি সাগরে এসে পড়েছি?’
‘রাইট, স্যার। তীর থেকে মাইল ত্রিশেক দূরে আছি আমরা। এয়ারক্রাফট ল্যান্ডিঙের সুবিধের জন্যে।
‘আই সী।’
‘ছ’টা দুই মিনিটে মেজর জেনারেল রাহাত খানের জন্যে নির্ধারিত সি-ইন-সি- র কেবিনে পা রাখল মাসুদ রানা। ম্যান সঙ হিন্তু, জেরাল্ট হিকি আর রিচার্ড ডাইজার্ট আগে থেকেই উপস্থিত।
‘এসো, রানা,’ বেশ দরাজ গলায় আহ্বান জানালেন বৃদ্ধ। কিন্তু তাঁর চেহারা বলল অন্য কিছু। দু’চোখ লাল। নিচে হালকা কালির প্রলেপ। বোঝা যায় সারারাত ঘুমাতে পারেননি বৃদ্ধ। বিষম দোটানায় পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তার মুখে রানাকে ঠেলে দিয়ে।
সদ্য ফোটা তরতাজা এক গোলাপের মত লাগছে চেরিকে। ভয়ভীতির বিন্দুমাত্র রেশ নেই চেহারায়। ‘হাই! রানা।’
“হ্যালো।’
একটা কফি টেবিলে একগাদা কাগজপত্র নিয়ে বসে আছে সিআইএ-র পেপার বিশেষজ্ঞ। তার মুখোমুখি বসল রানা। সারারাত বসে গুদের দু’জনের পাসপোর্ট, ক্রেডিট কার্ড, রানার জন্যে আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাইসেন্স, চেরির জন্যে ক্যালিফোর্নিয়ার ড্রাইভিং লাইসেন্স, সোশ্যাল সিকিউরিটি ডকুমেন্টস, ব্লু-ক্রসর পিন্ড কার্ডসহ হাবিজাবি আরও অসংখ্য পেপারস তৈরি করেছে ডাইজার্ট।
সঙ্গে হংকঙের গোটা চারেক সিনেমা টিকেটের অবশিষ্টাংশ, টোকিওর হোটেল ও রেস্টুরেন্ট বিল ইত্যাদিও রয়েছে। যার যার কাগজপত্র আলাদা করে তুলে দেয়া হলো ওদের হাতে। শেষেরগুলো থাকল মাসুদ রানার হেফাজতে। এরমধ্যে কমাণ্ডার বিল ট্যানার এসে যোগ দিয়েছে ওদের সঙ্গে। রানাকে জানানো হলো, ট্যানার এবং অপারেশন সমন্বয়কারী জেরাল্ড হিকির সঙ্গে যাতে যোগাযোগ থাকে ওদের সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। দু’জনের সঙ্গেই দুটো ‘হোমার’ প্ল্যান্ট করা হয়েছে। চেরিরটা তার বেক্টের বাকল-এ, রানারটা ওর ডান হিলের গোপন কুঠুরিতে ওদের সঙ্গে রানা চেরির সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলবে ও দুটো।
এবার দু’জনকে আলাদা আলাদা করে আরেকবার পরীক্ষা নেয়া হলো। অবিরাম প্রশ্নবাণে অস্থির করে তোলা হলো ওদের। তবে শেষ পর্যন্ত একশোতে একশো পেল দু’জনেই।
এরপর শেষবারের মত বসতে হলো দু’জনকে বিল ট্যানারের সঙ্গে, ‘ফাইনাল চেক-আপের’ জন্যে। ওটা শেষ হতে লাঞ্চ। খিদে নেই, কিন্তু বুড়োর সামনে স্বাভাবিক থাকার জন্যে জোর করে খেলো রানা। লাঞ্চ শেষে বিশ্রামের জন্যে এক ঘণ্টার ছুটি পেল রানা ও চেরি।
এই ফাঁকে মেয়েটির সঙ্গে মিশন সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় আলোচনা সেরে নিল রানা। পাঁচ মিনিটেই বুঝে নিল রানা, মেয়েটি ওয়েল-ট্রেইনড্ এজেন্ট। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ অনিশ্চিত বুঝেও মোটেই ঘাবড়ায়নি।
‘ওখানে যদি আমি কখনও উচ্চারণ করি, “রিয়েল সুন”,” বলল রানা, ‘বুঝবে বিপদ ঘটতে যাচ্ছে। পালাবার রাস্তা খুঁজছি আমি।’
এ ধরনের আরও তিন চারটে সাঙ্কেতিক বার্তা এবং কোনটার অর্থ কি ধরতে হবে, শিখিয়ে দিল ও চেরিকে। কথা বলায় অসুবিধে থাকলে হাত বা চোখ ইশারায় বার্তা বিনিময় করতে হতে পারে, সে ক্ষেত্রে কোন সঙ্কেতের কি অর্থ হবে, উত্তর দেয়ার প্রয়োজন হলে কি ভাবে দিতে হবে তা-ও শেখাল।
অবশেষে নিশ্চিত হলো রানা, চেরিকে নিয়ে তেমন কোন সমস্যা দেখা দেবে না। ‘যদি এমন পরিস্থিতি দেখা দেয় হয় মারো, নয় মরো, হত্যা করতে দ্বিধা করবে তুমি?’ জানতে চাইল ও।
ডান ভুরু তুলে হাসল চেরি। ‘ঠাট্টা করছ!’
‘না, ঠাট্টা নয়।’
“দ্বিধা করার প্রশ্নই আসে না। মাটিতে পড়ার আগেই প্রাণ হারাবে শত্রু। আমিও তোমারই মত অ্যান্টি-টেররিস্ট ট্যাকটিকসের ওপর ট্রেনিং পেয়েছি, রানা। মাথা দোলাল রানা।” “হি হু হেজিটেট্‌স ইজ লস্ট”। “আরও আছে: “সো ইজ দ্যা উওম্যান হ ডাজন্‌ট”।”
মুচকি হাসল রানা। রেলিঙে ভর দিয়ে ওর মুখের দিকে চেয়ে আছে চেরি। মৃদু রহস্যময় হাসি। সাগরের হু হু বাতাসে খোলা চুল উড়ছে তার। ব্লাউজ সেঁটে আছে বুক-পেটের সঙ্গে, পিছনটা ফুলে আছে নৌকোর পালের মত। পত পত শব্দে পতাকার মত উড়ছে স্কার্টের প্রান্ত। অপূর্ব! ভাবল মাসুদ রানা।
বেরসিকের মত মোহনীয় পরিবেশটা ভেঙে দিল একটা ফাইটার জেট, টমক্যাট এফ-ফর্টিন’। গগনবিদারী আওয়াজ তুলে মাথার ওপর একটা চক্কর দিল ওটা। নেমে পড়ল ক্যারিয়ারের ডেকে। লেজে স্বয়ংক্রিয় ছাতা মেলে দিয়ে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত এক দৌঁড় শেষে থেমে দাঁড়াল জেট। এটা নিয়ে মোট হলো তিনটে ।
‘সব ঠিকই আছে। কিন্তু ওই জিনিসে চড়ে নিউ ইয়র্ক যেতে হবে ভেবে কেমন যেন লাগছে আমার,’ ইশারায় পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকা বিমান ‘তিনটে দেখাল চেরি।
‘কেন? ফ্লাইঙে অ্যালার্জি?:
‘তা নয়। এয়ার লাইনার আর জেট ফাইটারে ভ্রমণ কি এক হলো?’
‘মন্দ হবে না, চেরি। টেকনিক্যালি কোন অসুবিধে নেই। এগুলো বেশ দ্রুত চলে, এই যা পার্থক্য।’
সোয়া একটার সময় ওদের নিয়ে আসা হলো একটা কেবিনে। দু’জনের দুটো মাঝারি ট্রাভেল ব্যাগ আগেই গোছগাছ করে রাখা হয়েছে এখানে। আসল ক্যাম্পবেল আর সু মিঙের ব্যাগ ও দুটো, হাতলে লাগানো আছে কাই তাক ও নারিতা ইন্টারন্যাশনালের লাগেজ ট্যাগ ।
ভেতরে অপেক্ষা করছে বুল। ওদের মাপ নিয়ে তৈরি দুটো নীল কভারল তুলে দিল সে রানা ও চেরির হাতে। পিঠে হলুদ বড় বড় অক্ষরে লেখা: ব্যাগেজ হ্যাওলার। কাপড় চোপড়ের ওপরেই কভারল পরে নিল ওরা। এই সময় কেবিনে ঢুকল জি-সুট পরা বিল ট্যানার। রানা চেরির আধঘণ্টা আগে নিউ ইয়র্কের উদ্দেশে উড়াল দেবে সে। দ্রুত সংক্ষিপ্ত কিছু বাক্য বিনিময় করল সে ওদের সঙ্গে।
বেরিয়ে যাওয়ার আগে চওড়া হাসি দিল কমাণ্ডার। দেরি কোরো না। তোমাদের জন্যে টেবিল সাজিয়ে অপেক্ষা করব আমি ওখানে।’ হাত তুলে নাটকীয় প্রস্থানের ভঙ্গি করল লোকটা। তারপর বেরিয়ে গেল। কয়েক মুহূর্ত পর বাইরে হুঙ্কার ছাড়ল একটা টমক্যাট। ক্ষীণ হতে হতে এক সময় মিলিয়ে গেল ওটার আওয়াজ।
ততক্ষণে রানা আর চেরিও কভারলের ওপর ‘জি-সুট পরে নিয়েছে বুলের সাহায্যে। “আমাকে নভোচারীর মত দেখাচ্ছে না?’ আয়নার সামনে নিজেকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখল চেরি।
“ইয়েস, ম্যাম, বুলের বিশাল মুখে এই প্রথম হাসির আভাস ফুটতে দেখল রানা। ‘ভেরি প্রিটি অ্যাসট্রোনট।’ ‘আমার পাশের লটে তোমার শার্ট পার্ক করতে পারো তুমি,’ বলল রানা। এই সময় ঘরে ঢুকলেন ব্যস্ত সমস্ত রাহাত খান। ‘তোমরা তৈরি?’
তৈরি; স্যার,’ বলল রানা।
‘রামা, সু মিঙের ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি,’ ওর চোখের দিকে তাকাতে পারছেন না বৃদ্ধ। ‘চেষ্টা চলছে এখনও। তবে…
দুশ্চিন্তা করবেন না, স্যার। চোখ-কান খোলা রাখব আমরা।’
অভয় বাণীতে কোন কাজ হলো না। আশঙ্কার মেঘে ছেয়ে আছে ওঁর চেহারা। ওদের সঙ্গে খোলা ডেকে এলেন বৃদ্ধ। আরও অনেকেই এল। সবার মুখে বিষাদের ছায়া, যেন চির বিদায় জানানো হচ্ছে ওদের। সুইসাইড মিশনে চলেছে রানা আর চেরি। রাহাত খানকে মনে হচ্ছে যেন কোন শবযাত্রার পরিচালক ।
“নতুন কোন তথ্য পেলে সঙ্গে সঙ্গে ইনডেক্সারের মাধ্যমে তোমাকে জানাব, রানা,’ বললেন তিনি। বিল ট্যানারের ছদ্ম নাম ইনডেক্সার। রানার কাস্টডিয়ান এবং চেরির চেকলিস্ট। রানার কাঁধে হাত রাখলেন রাহাত খান। ‘গুড লাক, রানা।’
‘আপনি দুশ্চিন্তা করবেন না, স্যার,’ বলল ও। ‘এরচে’ অনেক কঠিন অ্যাসাইনমেন্টে গিয়েছি আমি। আবার ফিরেও এসেছি। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না।’
‘তাই যেন হয়,’ বিড়বিড় করে বললেন রাহাত খান ।
রানার সামনে এসে দাঁড়াল বুল। ‘মনে রাখবেন, জেএফকে-র প্রত্যেকটি ব্যাগেজ হ্যাগুলার আমাদের লোক। কোন অসুবিধে হবে না ওখানে আপনাদের। ঘড়ির কাঁটার মত চলবে সব।’
মাথা দোলাল রানা। ভুলিনি,’ বলল ম্যান সন্তু হিন্ত ।
ডেকের ও প্রান্তের এয়ার ক্রু ব্রিফিংরূম থেকে বেরিয়ে এল দুই পাইলট। দু’জনই অল্প বয়সী, প্রায় তরুণ। তাদের একজনের ব্যাজ দেখে বোঝা গেল এ অন্যজনের এক র‍্যাঙ্ক সিনিয়র।
‘আপনাদের ওয়ারপ্লেনে জার্নি করার অভিজ্ঞতা আছে, স্যার? ম্যা’ম?’ প্রশ্ন করল সিনিয়র।
‘আমার আছে,’ মাথা দোলাল রানা ।
‘আমি উঠিনি কোনদিন,’ বলল চেরি। চেহারা ফ্যাকাসে লাগছে মেয়েটির। *ও কে। আপনি তাহলে আমার সঙ্গে আসুন। আর আপনি ওর সঙ্গে যান, ‘ রানাকে বলল সিনিয়র।
সবার কাছ থেকে বিদেয় নিয়ে অপেক্ষমাণ দুই টমক্যাটের দিকে চলল ওরা। রানার এভিয়েটরের বয়স উনিশের বেশি হবে না। ‘আপনি জিআইবি সীটে বসবেন, স্যার,’ বলল সে। রানাকে প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকাতে দেখে বলল, ‘জিআইবি মানে, গাই ইন ব্যাক, স্যার। আরইও’জ স্টেশন। আরইও হচ্ছে…’ ‘রেডিও ইলেক্ট্রোনিকস্ অফিসার।

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top