কবি – তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
কবি – বইটির এক ঝলকঃ
নোটন ভাগিয়াছে শুনিয়া অপর পাল্লাদার কবি মহাদেব আসরে বসিয়া মনে মনে
আপসোস করিতেছিল। আজও পর্যন্ত নোটনের সহিত পাল্লায় কখনও সে পরাজয় স্বীকার
করে নাই, কিন্তু আজ সে সর্বস্ত:করণে নীরবে পরাজয় স্বীকার করিল-_সঙ্গে সঙ্গে
নোটনকে বেইমান বালয় গালও দিল। তাহাকে বলিলে কি সেও যাইত না!
আসরের জনতা ক্রমশঃ ধৈর্য হারাইয়া ফেলিতেছিল, সংবাদটা তখনও তাহাদের কাছে
পরিষ্কার হয় নাই। অধীর শ্রোতার দল কলরবে একেবারে হাট বাধাইয়া তুলিয়াছে।
অন্যদিকে একপাশে মেলার কর্তৃপক্ষ এবং গ্রাম্য জমিদারগণ নোটন-প্রসঙ্গ আলোচনা
করিতেছিলেন। মোহম্ত চিস্তিতভাবে দাড়িতে হাত বুলাইতেছেন। মধ্যে মধ্যে
বলিতেছেন__তারা, তারা!
নোটন ভাগিয়াছে, কবিগান হইবে না,_এই কথাটি একবার উচ্চারিত হইলে হয়, সঙ্গে
সঙ্গে এই দর্শকদল বাঁধভাঙা জলাশয়ের জলের মত চারিদিকে ছড়াইয়া পড়িবে। জলশৃস্ত
পুষ্করিণীর ভিজা পাকের মত জনশৃস্ত মেলাটায় থাকিবে শুধু পায়ের দাগ আর ধূলা।
ওদিকে আর একদল গ্রাম্য জমিদার একেবারে খড়ের আগুনের মত জলিয়া উঠিয়াছে।
এখনি পাইক লাঠিয়াল ভেজিয়া গলায় গামছা বাধিয়া লোটনকে ধরিয়া আনিয়া জুতা
হতভাগ্যের ভিটামাটি উচ্ছন্ন দিবার ব্যবস্থা পর্যস্তনানা উত্তেজিত কল্পনায় তৃণদাহী বহির মতই তাহারা লেলিহান হইয়া জলিতেছে।, এই জমিদারদের অন্যতম, গঞ্জিকাসেবী ভূতনাথনামে ভূতনাথ হইলেও দক্ষযজ্ঞনাশী বিরূপক্ষের মতই সে দুর্মদ ও দুর্দান্ত-সে হঠাৎ মালকোঁচ সাঁটিয়া লাফাইরা উঠিল। বলিল-দুটো লোক। বলিয়া দুইটা আঙুল তুলিয়া ধরিল। কিছুক্ষণ থামিয়া থাকিয়া বলিল-দোঠো আদমী হামার সাথ দেও, হাম আভি
যায়গা । দশ কোশ রাস্ত। আরে দশ কোশ তো ফুলকীমে চলা যায়গা। বলিয়া সে যেন
ফুলকী চালে চলিবার জন্য দুলিতে আরম্ভ করিল।
ঠিক এই সময়েই কে একজন কথাটা জানিয়া ফেলিয়া আসরের প্রান্ত হইতে হাঁকিয়া
উঠিল_উঠে আয় রে রাখহরি, উঠে আয়।
কেন রে? উঠে গেলে আর জায়গা থাকবে না।
জায়গা নিয়ে ধুয়ে খাবি? উঠে আয়-বাড়ী যাই_ভাত খাই গিয়ে ওরে নোটন দাশ
ভাগলবা, পালিয়েছে। কবি হবে না।
_ন। মিছে কথা।
- মাইরি বলছি। সত্যি।
রাখহরি রসিক ব্যক্তি, সে সঙ্গে সঙ্গে বলিয়া উঠিলবল হরি! সমগ্র জনতা নিম্নাডিমুখী
আলোড়িত জলরাশির কল্লোলের মতই কৌতুকে উচ্ছ্বসিত হইয়। ধ্বনি দিয়া উঠিল-হরি বে_ল! অর্থাৎ মেলাটির শবযাত্র ঘোষণা করিয়া দিল। সঙ্গে সঙ্গে তৃণ-দাহী বহ্ছি যেন
ঘরে লাগিয়া গেল। জমিদারবর্গ জনতার উপরেই ক্ষিপ্ত হইয়া উঠিল।
-_ কে? কৈ? কে রে বেটা?
_ধর তো বেটাকে, ধর তো। হারামজাদা বজ্জাত, ধর তো বেটকে!
ভূতনাথ ব্যাপ্রবিক্রমে ঘুরিয়া রাখহরির বদলে যে লোকটিকে সম্মুখে পাইল, তাহারই
চুলের মুঠায় ধরিয়া হুঙ্কার দিয়া উঠিল-_চোপ রও শালা।
অন্ত কয়েকজনে তাহকে ক্ষম্ত করিল- হাঁ-হাঁ-হা! কর কি ভূতনাথ, ছাড়, ছাড়। ও
রাখহরি নয়।
ভূতনাথ তাহাকে ছাড়িয়া দিল, কিন্তু বীরবিক্রমে শাসন করিয়া দিল-খবর- দা-র! একজন বিবেচক ব্যক্তি বলিল-মেলা-খেলায় ও-রকম করে মানুষ৷ রঙ তামাসা নিয়েই
তো মেলা হে। ভোলা ময়রা, কবিয়াল-জাড়া গারে কবি গাইতে গিয়ে জমিদারের মুখের
সামনেই বলেছিল-“কি ক’রে তুই বললি জগ, জাড়া গোলক বৃন্দাবন, যেখানে বামুন রাজা চাষী প্রজা_চারিদিকেতে বাঁশের বন! কোথায় বা তোর শ্যামকুণ্ডু কোথায় বা তোর
রাধাকু্ু_সামনে আছে মুলোকু্ডু করগে মুলো দরশন।” তাতে তো বাবুর রাগ করে নাই,
খুশীই হয়েছিল।
ভূতনাথ এত বোঝে না, সে বক্তাকে এক কথায় নাকচ করিয়া দিল-যা-যা-যাঃ। কিসে আর কিসে- ধানে আর তুষে।
-আরে তুষ হ’লেও তো ধানের খোসা বটে। চটলে চলবে কেন? দুতিন মাইল থেকে
সব তামাক টিকে নিয়ে এসেছে কবিগান শুনতে । এখন শুনছে__’কবিয়াল ভাগলব” ভা
ঠাট্টা ক’রে একটু হরিধ্বনি দেবে না? রেগে না।
মোহস্ত এখন মোহান্ত হইয়াছেন বটে, কিন্তু এককালে তিনি একজন পাকা পাটোয়ার
অর্থাৎ জমিদার-সেরেন্তার কুটবুদ্ধি নায়েব ছিলেন। গাজা তিনি চিরকালই থান। তিনি
এতক্ষণ ধরিয়া নীরবে কবিগানের কথাই চিন্ত করিতেছিলেন। তিনি হঠাৎ বলিয়া
উঠিলেন__আচ্ছ, আচ্ছ, কৰিগানই হবে। চিন্তা কি তার জন্তে? চিস্তামণি যে পাগলী
বেটার দরবারে বাধা, উীর চিনির ভাবনা। বলিয়া হা-হা করিয়া হাসিয়া উঠিলেন।
হইয়াছে, চিনির সন্ধান মিলিয়াছে। কবিগান চিনি কি না_ সে প্রশ্ন তখন কাহারও মনে
উঠিবার কথাও নয় সময়ও নয়। সুতরাং সে প্রশ্ন না করিয়া সকলে উৎসুক দৃষ্টিতে
মোহস্তের মুখের দিকে চাহিল। .
মোহস্ত বলিলেন–ডাক মহাদেবকে আর তার প্রধান দোয়ারকে। অতঃপর ঘাড় নাভিতে
নাড়িতে বলিলেনতাই হোক- গুরু-শিষেই যুদ্ধ হোক। রামরাবণেব যুদ্ধের চেয়ে দ্রোণ- অজুনের যুদ্ধ কিছু কম নয়। রামায়ণ সপ্তকাণ্ড, মহাভারত হ’ল অষ্টাদশ পর্ব। শোর-গোল উঠিল-মহাদেব! মহাদেব! ওহে কবিয়াল। ওন্তাদজী হে, শোন শোন।
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!