কে কেন কিভাবে – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

কে কেন কিভাবে – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৪২

কে কেন কিভাবে – বইটির এক ঝলকঃ

চিমটাটা দু’ফাক করল সে, ফাঁকের ভেতর আনল টেলিভিশন ক্যামেরার তার, ডিমটার মাথার সাথে শক্তভাবে আটকে গেল সেটা। প্লাগ থেকে তার ছাড়তে ছাড়তে সুড়ঙ্গের ভেতর দিয়ে কামরার আরেক প্রান্তে এসে পকেট থেকে হুবহু একই রকম দেখতে আরেকটা চিমটা বের করল সে, দ্বিতীয় টেলিভিশন ক্যামেরার তারটাকেও একইভাবে চিমটার মাথায় আটকাল। এরপর মেইন সকেটে প্লাগটা ঢোকাল সে, ডাই-এর ওপর দ্রুত একবার চোখ বুলিয়ে সুইচ অন করল। সঙ্কটময় মুহূর্ত কি হয় বলা যায় না। ক্যামেরার ওয়্যারে চিমটার যে তার সে জড়িয়েছে তার ফলে পিকচার ইমেজ ফেটে গিয়ে ঝাপসা আর অস্পষ্ট দেখানোর কথা। এই মুহূর্তে যারা মনিটর স্ক্রীনে চোখ রেখে বসে আছে তারা ভাববে ত্রুটিটা মনিটরের, কাজেই সেটা অ্যাডজাস্ট করার জন্যে ব্যস্ত হয়ে উঠবে। কুণ্ডলী পাকানো তারের সাহায্যে চার্লি ফ্রানসি যে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক এফেক্ট সৃষ্টি করেছে তা আবিষ্কার করার জন্যে ক্যামেরার ওয়্যার পরীক্ষা করতে হবে, সন্দেহ না হওয়ায় এখুনি সে কাজে হাত দেবে না কেউ। মাথার ওপর থেকে স্টীল প্লেটটা সরাল সে, চ্যানেল থেকে উঠে এল কামরায়, হাতে দুটো কার্ডবোর্ড কমপিউটার রুমের ছবি আঁকা রয়েছে গুগুলোয়, প্রতিটি ক্যামেরা লেগের অবস্থান থেকে তাকালে ঠিক যেমনটি দেখাবে। প্রতিটি ছবি সংশ্লিষ্ট ক্যামেরার সামনে আটকাল সে, ত্রিশ সেন্টিমিটার দূরত্বে। তারপর চ্যানেলে ফিরে গিয়ে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক কয়েল-এর সুইচ অফ করল। মনিটর স্ক্রীনে এখন পরিষ্কার ছবি ফুটছে, স্ক্রীনের সামনে যারা বসে আছে তারা মনে করবে কমপিউটর কমই দেখতে পাচ্ছে।
আগামী পঞ্চাশ মিনিটের জন্যে কমপিউটর রমের ভেতর সম্পূর্ণ স্বাধীন চার্জি ফ্রানসি, যা খুশি করতে পারে, কেউ তাকে দেখতে পাবে না। ডিকসন আর জন খেতে গেছে, হঠাৎ করে তারা ফিরে আসবে সে সম্ভাবনা নেই।
হাতে প্রচুর সময় থাকলেও দ্রুত কাজ শুরু করল চার্লি ফ্রানসি, ঠিক কি করতে হবে ভাল করেই জানা আছে তার। ওডার রাইড সুইচ অন করল সে, সাথে সাথে জ্যান্ত হয়ে উঠল কমপিউটর, ছোট কয়েকটা আলো জ্বলে উঠল কনসোলে। ইনপুট ব্যাংকের সামনে চলে এল সে, খালি এক বার ডিঙ্গ বেছে নিয়ে মেশিনে চড়াল। চ্যানেলে নেমে গিয়ে নিজের সুটকেসটা আনল চার্লি। মেগা-বক্সটা রয়েছে ভেতরে এরইমধ্যে টিউন করা আছে ক্যারিয়ার ওয়েডের নিবে। ক্যারিয়ার ওয়েভের উৎস হলো পিলমোর সেন্ট্রাল অফিস লিখুন আর শহরের বাইরে পিলমোর ফ্যাক্টরি, ওয়েভটা বেছে নিয়েছে চার্লি আর্লি বার্ড স্যাটেলাইট-এর মাধ্যমে। কর্ম দিবসের প্রতিটি মুহূর্ত বিরতিহীন সক্রিয় রাখা হয় ক্যারিয়ার ওয়েত, ওটার সাথে পিলমোর কোম্পানীর সমস্ত অ্যাকাউন্ট খুলতে থাকে। চার্লি শুধু তার মেগা-বক্সের সাহায্যে ওই ক্যারিয়ার ট্যাপ কবল, অ্যাকটিভেট করল পিলমোর অ্যাকাউন্টে ডাটাবেস, কপি করল নিউ ইয়র্ক কমপিউটরের সাহায্যে মেশিনে সদ্য চড়ানো ডিঙে, শুধু যে অংশটুকু তার দরকার। সে যে-ধরনের ডিস্কের বাক্স ব্যবহার করছে, এতে পাঁচশো মিলিয়ন বাইট স্টোর করা যায়। গোটা পিলমোর অ্যাকাউন্ট আর তার অ্যাকটিভেটিং সিস্টেম রেকর্ড করতে চার্লির মাত্র বিশ মিলিয়ন দরকার। কাজটা শেষ করতে সময় লাগল তিন মিনিট। এরপর সে একে একে ইউনিক প্রিন্টিং ইংল্যান্ড, ডেল্টা টিউবস নিউ জার্সি, ফ্যাবরিক ফ্যাবরিক মিউনিক-এর সিস্টেম ও অ্যাকাউন্ট কপি করল। আবার মেগা- বক্সের বোতামে চাপ দিল সে, পেরুর রাজধানী লিমার সাথে যোগাযোগ করা দরকার। লিমা আর টোয়েমেনকো টোকিওর মাঝখানে একটা ক্যারিয়ার ওয়েভ আছে, প্রাইভেট ওয়েড, সেটা ব্যবহার করতে হবে তাকে। প্যাসিফিক স্যাটেলাইটের মাধ্যমে টোকিও থেকে সাড়া পেল সে, সঙ্কেত পরিষ্কার এবং জোরাল-খুশি মনে ইউ.এম.পি. লিমা থেকে ইনফরমেশন পাবার জন্যে প্রস্তুত হলো। কিন্তু না। কোন তথ্য আসছে না। ইউ.এম.পি. ক্যারিয়ার কাজ করছে না। হাতঘড়ির ওপর চোখ বোলাল সে। ধেয়েরি, কাজ না করার কি কারণ ঘটল। ঠিক এই সময়ে এখানে তার আসার কারণই হলো রাত্রিকালীন বিরতির পর লিমা কমপিউটর আবার চালু হয়েছে। আবার বোতামে চাপ দিল সে। নাহ। সুটকেস থেকে ছোট একটা বই বের করে পাতা ওল্টাল। ইউ.এম.পি. ফ্যাক্টরি সান মিশুয়েল আর মিডো প্লান্টিক অফিসের মাঝখানে লিঙ্ক আছে, খুঁজে বের করল টেলিফোন কোডটা। কোডটাকে ইলেকট্রনিক্যাল সিগন্যালে রূপান্তর করে ট্র্যান্সমিট করল। কিছু না। ডাটা বেস আগের মতই অপারেট করতে ব্যর্থ হলো। এদিকে সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে, কমপিউটর রুমটাকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হাতে আর মাত্র পনেরো মিনিটের মত পাওয়া যাবে। আরেকবার চেষ্টা করে দেখল উঁই। সাম মিগুয়েলের কমপিউটর কাঠের মত মৃত একটা ব্যাপার। রাগে গজ গজ করতে করতে ডাটা বেস বক্সে সাঁটার জন্যে দ্রুত একটা লেবেল লিখল চি ফ্রানসি EXPERIMENTAL HOLD FOR S 2. মেশিন থেকে ডাটা বেস বের করে নিল, বাক্সে ভরল, তারপর বাক্সটা শেলফের ওপর প্রকাশ্যে রেখে দিল এক্সপেরিমেন্টাল এন-টু লেবেল থাকায় কেউ ওটায় হাত দেবে না। সুইচ টিপে কমপিউটর বন্ধ করল সে, চ্যানেলে নেমে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ডের সুইচ অন করল। মনিটর স্ক্রীনে আবার এখন ছবির বদলে এলোমেলো আর আঁকাবাঁকা রেখা ও ব্লড ছাড়া কিছুই দেখা যাবে না, ধরা পড়ার কোন ঝুঁকি ছাড়াই ফটো কার্ডগুলো সরিয়ে নিতে পারে সে। কার্ডবোর্ড দুটো নিয়ে আবার ড্যানেলে নেমে এল, চ্যানেলের মাধ্যয় জায়গা মত বসিয়ে দিল স্টাল প্লেট ঢাকনি, তার আগে কমপিউটর রমের চারদিকে তীক্ষ্ণ নজর বুলিয়ে নিতে ভোলেনি। না, নিজের উপস্থিতির কোন চিহ্ন সে রেখে যাচ্ছে না।
ঢাকনি বন্ধ করে টর্চ জ্বালল সে। ইলেকট্রোম্যাগনেটের সুইচ অফ করল, ভারগুলো জড়াল, তারপর সুড়ঙ্গের ভেতর হয়ে লিমার অদ্ভুত ব্যাপারটা নিয়ে চিন্তা করতে লাগল। কয়েক সেকেন্ড পরই কমপিউটর রুমে ঢুকল ডিকান আর জন। ঢুকেই তারা কমপিউটর চালু করল। কনসোলের আলোগুলো এদের উদ্দেশে চোখ টিপল আর হাই স্পীড প্রিন্টআউট জানা GMORN, GMORN
কমপিউটর মেধা চার্লি ফ্রানসি জানল না তার কাজে এরইমধ্যে বাধা সৃষ্টি করে বসেছে মাসুদ রানা নামের সাধারণ এক এসপিওনাজ এজেন্ট। রানার একটা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ফলেই ইউ.এম.পি. লিমার সাথে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়েছে সে। ছয় কমপিউটর একটা মেশিন ছাড়া কিছুই নয়, ওটা ইলেকট্রনিকের সাহায্যে নির্দেশ পালন করে, কোন রকম চিন্তা-ভাবনা ব্যতিরেকেই। নির্দেশগুলো প্রোগ্রামের ভেতর থাকে, আর ইনফরমেশনগুলো থাকে একটা ডাটা ব্যাংকের ডাটা বেস-এ। মিডো হেডকোয়ার্টার জুরিখের একটা ডাটা বেসে এই বিশাল করপোরেশনের সব ক’জন কর্মচারীর প্রাসঙ্গিক সমস্ত ইনফরমেশন রেকর্ড করা আছে। উদাহরণ হিসেবে, একটা প্রোগ্রাম লেখা সম্ভব, যা কিনা কমপিউটরকে নির্দেশ দিয়ে বলবে কর্মচারীদের সবার সবগুলো ফাইল ‘পড়ো’ এবং তাদের মধ্যে যারা ফরাসী ভাষা জানে তানের নামগুলো প্রিন্ট করো। মানুষের সাথে তুলনায় কমপিউটরের শ্রেষ্ঠত্ব হলো মানুষের ভুল হয়, কিন্তু কমপিউটরের হয় না, কাজেই প্রতিবার প্রতি মুহূর্তে শতকরা একশো ভাগ নির্ভুলতার জন্যে তার ওপর নির্ভর করা যায়, তাছাড়া কমপিউটর কাজ করে মানুষের চেয়ে অনেক অনেক দ্রুতগতিতে। সকল কর্মচারীর সব কটা ফাইল পরীক্ষা করতে মিডো কমপিউটরের লাগবে পাঁচ সেকেন্ডেরও কম সময়, তারপর বের করে আনা ইনফরমেশনটা ছাপা শেষ করবে অবিশ্বাস্য দ্রুতবেগে। মাসুদ রানার লিখিত অনুমতি-পত্র নিয়ে হেডকোয়ার্টার জুরিখ কমপিউটর রুমে হাজির হলো পাপিয়া রহমান । হেড প্রোগ্রামার একজন কানাডিয়ান মেয়ে, হেলেন জার্মান, বয়স পঁচিশ, স্বর্ণকেশী। কমপিউটর সম্পর্কে কিছুই জানে না পাপিয়া, কাজেই কি তার দরকার ব্যাখ্যা করতে হলো, ‘যাদের ফাইল দেখে ইঙ্গিত পাওয়া যায় কোন না কোন সময় কমপিউটর নাড়াচাড়া করেছে বা কমপিউটর সম্পর্কে আগ্রহ দেখিয়েছে তাদের একটা তালিকা।
‘সে তালিকায় আমার নামও থাকবে,’ বলল হেলেন জার্মান।
‘জানি।’
‘কাজেই, ধরো, আমার জানার অধিকার আছে কেন তুমি তালিকাটা চাইছ?’ ‘হ্যাঁ, আমিও একমত, জানতে চাওয়াটা অন্যায় কিছু নয়।’ জবাব দিল পাপিয়া। কিন্তু এরবেশি আর কিছু তুমি বলবে না।
‘মুশকিল হলো শুধু এটুকু বলারই অধিকার দেয়া হয়েছে আমাকে।’
একটা তথ্য-উদ্ধার প্রোগ্রাম তৈরি করতে মাত্র পাঁচ মিনিট লাগল হেলেন জার্মানের। আরও পাঁচ মিনিট লাগল নির্দিষ্ট ডাটা বেসগুলো মেশিনে চড়াতে। তারপর কমপিউটর রমের একটা কনসোলে বসল সে। ফিলিপস আইডহোডেন- এর কনসোল ডিজাইন আমাদের চেয়ে ভাল গল্প শুরু করল হেলেন জার্মান, কিন্তু হাত থেমে নেই। কী-বোর্ডে প্রজাপতির মত উড়ছে তার আঙুল, সেটা দেখতে সাধারণ একটা টাইপরাইটারের মত, কিন্তু সচল কোন প্ল্যাটন নেই, পাশে রয়েছে ছয় ইঞ্চি কিউবিক একটা বাক্স। কাজ শেষ করার পর বাক্স থেকে অক্সাইড মোড়া -ব্রাউন একটা কার্ড বের করল সে। সাধারণত আরেকজন অপারেটরকে নিয়ে এটা ভেরিফাই করিয়ে নেয়ার নিয়ম,’ বলে হাসল একটু। তবে এক্ষেত্রে নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে পারি।’ পাপিয়াকে দেয়া রানার অনুমতি পত্রে যে কোড নম্বর লেখা আছে তার অর্থ হলো এই ইনফরমেশন টপ সিক্রেট এবং টপ প্রায়োরিটি। পাপিয়া ছাড়া আর শুধু হেলেন জার্মান এই কার্ড দেখতে পারবে।
অনেকেই আজকাল পিওর ক্রোমিয়াম কার্ড ব্যবহার করছে,’ বলল সে । নতুন টেপ রেকর্ডারে যেমন দেখা যায়… কথা বলে গেলেও আসল কাজে তার গভীর মনোযোগ রয়েছে। একটা রিডার-এ কার্ড ঢোকাল সে, কার্ডের ইলেকট্রনিক প্রতীকগুলো বিশ্লেষণ করে কমপিউটরে ট্র্যান্সফার করতে সময় লাগল রিডারের মাত্র এক মাইক্রোসেকেন্ড। কমপিউটর এখন জানে কি তাকে করতে হবে, এবং বোতাম টিপে হেলেন জার্মান কাজ শুরু করার নির্দেশ নিতেই বোতাম থেকে হাত সরাবার আগেই কাজটা শেষ করে ফেলল। ‘এবার চলো ওদিকে যাই, বলল হেলেন জার্মান, হেঁটে প্রিন্টিং সেকশনে চলে এল ওরা দুজন। এখানে মেশিনগুলো আকারে বড়, স্ট্যান্ডের ওপর বসানো রয়েছে টাইপরাইটার-টাইপ প্ল্যাটন, স্ট্যান্ডগুল্মে আকারে তিন বর্গ ফুট, লম্বায় চার ফুট। স্ট্যান্ডের সাথে কাগজও রয়েছে, মেশিনের পিছন দিককার একটা বার থেকে আসছে ওগুলো, দাঁত লাগানো চাকার মাধ্যমে প্ল্যাটন হয়ে ফিরে যাচ্ছে মেশিনের পিছনদিককার আরেক বারে। হেলেন জার্মান যে প্রোগ্রাম লিখেছে সেটা একটা ‘হোল্ড কোড’ সম্বলিত, সে না চাইলে প্রিন্টআউট বেরুবে না। একজন লোক ট্রপি করা যায় না নামানো পর্যন্ত অপেক্ষা করল সে। ‘সি. আই. কেনেথ।’
কাজ থামাল কেনেখ, দীর পারে প্রিন্টআউট সেকশন থেকে বেরিয়ে গেল, হাত ইশারায় ডেকে নিয়ে গেল আরও দু’জন অপারেটরকে। কামরার এদিকের অংশটুকু, খালি হবার পরই শুধু মেশিনে কার্ডটা ঢোকাল হেলেন জার্মান, এটাই প্রিন্টআউট শুরু করার নির্দেশ হিসেবে কাজ করবে। কাগজের উদিগরণ শুরু হলো, গতি এত দ্রুত যে চোখ নিয়ে অনুসরণ করা যায় না, ছাপা হয়ে যাচ্ছে নামের একটা তালিকা, স্টাফ নাম্বার, লোকেশন, কমপিউটর সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা। পরিষ্কার করতে ছাপা হত কাটা ঘরের ভেতর কলামগুলো নির্দিষ্ট মাপের তালিকার নামগুলো এল বর্ণানুক্রমিক নিয়মে, কর্মস্থলের নামও সেভাবে এল। জুরিখ হেডিডের নিচে ইনফরমেশনগুলো ছাপা শেষ হতে প্রিন্টারের সুইচ অফ করে দিল কমপিউটর, তারপর আবার শুরু করল তার দৈনন্দিন রুটিন বাঁধা কাজ অ্যাকাউন্টিং, স্টক কন্ট্রোল, সেলস অ্যানালাইসিস।
পাপিয়া বিষম বিস্মিত। ‘এরইমধ্যে পেয়ে গেছ?’ জানতে চাইল সে। মাত্র দশ মিনিট হলো এখানে এসেছি আমি।’
একটা কার্ড তুলে নিল হেলেন জার্মান। ‘শেষ নেই এমন সব সংখ্যা নিয়ে কাজ করতে অভ্যন্ত আমরা, হেসে উঠে বলল সে। ‘কথাটার মধ্যে যদি আত্মপ্রসাদের ভাব টের পেয়ে থাকো, বলব ঠিক ধরেছ, এইমাত্র আমরা সাতচল্লিশ মিলিয়ন বাইট- এর ভেতর অনুসন্ধান চালিয়েছি—
‘বাইট কি?’
ইনফরমেশনের একটা ইউনিট। আমার নাম, জার্মান, মানে ছয় বাইট-সাত, যনি আমি প্রথম অক্ষরটা ক্যাপিট্যাল লেটারে চাই।
‘বলছ, এইমাত্র আমরা সাতচল্লিশ মিলিয়ন বাইটের ভেতর অনুসন্ধান চালিয়েছি।” “হ্যাঁ। আর ছেপেছি দু’লাখেরও বেশি।’
মেশিন থেকে কাগজ বের করে নিয়েছে হেলেন জার্মান। সেটা একটা মেটাল কেসে ভরল, বন্ধ করে লক করল কেস, দেরাজ থেকে লেড সীল বের করে লকের ওপর বসাল, সীল রিপার দিয়ে আটকে দিল শক্ত করে। এরপর কি?’ জানতে চাইল
সে।
‘আমরা জানতে চাই-ক, তালিকার লোকদের মধ্যে কাদের বুক-কিপিং বা অ্যাকাউন্টিং এক্সপিরিয়েন্স আছে। কিংবা ধ, কারা জার্মান, স্প্যানিশ ও ফ্রেঞ্চ ভাষায় কথা বলতে পারে। কিংবা-গ, কোম্পানীর তরফ থেকে অফিশিয়ালি বাদেরকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে, অথবা প্রমোশন আটকে রাখা হয়েছে। যারা ক খ গ এই তিন শ্রেণীতেই পড়বে তাদের আলাদা একটা তালিকা চাই।’
‘আমি তাহলে বাদ পড়লাম, ‘ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলল হেলেন জার্মান। স্প্যানিশ বা জার্মান জানি না, বুক-কিপিং বা অ্যাকাউন্টিণ্ডের অভিজ্ঞতাও আমার নেই, তাছাড়া সদ্য প্রমোশন পেয়েছি—
কথা বলছে, কিন্তু কাজ তার থেমে নেই। মনটাকে একাধিক কাজে ব্যস্ত রাখার এই কৃতিত্ব লক্ষ করে মুগ্ধ হলো পাপিয়া। সে লক্ষ করণ, একনিকে কথা বলছে হেলেন জার্মান, আরেকদিকে জটিল কমপিউটর প্রোগ্রাম তৈরি করছে, অথচ যখনই কোন কাজে ‘কনসোলটাকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে কেনেথ অ্যান্ডারসন, যেন নিজের অজান্তে অভ্যেসবশত তার দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসছে সে, হাত তুলে ঠিকঠাক করে নিচ্ছে চুল। কেনেথ অ্যান্ডারসনের বয়স এখনও ত্রিশ পেরোয়নি, দেখতেও সুপুরুষ। হেলেন জার্মান দক্ষ কমপিউটর প্রোগ্রামার হলে কি হবে, নারীসুলভ বৈশিষ্ট্য বিন্দুমাত্র হারায়নি।
দু’জন হেঁটে এল প্রিন্টার সেকশনে। ওরা অপেক্ষা করছে, আবার একবার সেকশন ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হলো কেনেথকে। মন্থরগতি একটা প্রিন্টারে কাজ হচ্ছিল, হঠাৎ করে কী-র ছন্দবন্ধ ব্ল্যাক-ক্ল্যাক ব্ল্যাক শব্দ মুহূর্তের জন্যে বিরতি নিল। হেলেন জার্মান অলসভঙ্গিতে সেনিকে একবার তাকাল, তারপরই তার ভুরু কুঁচকে উঠল। প্রিন্টারটা ইনভয়েস প্রিন্ট করছে, প্রতিটি কাগজের শীটে একটা করে ইনভয়েস, সাথে কোম্পানীর নাম, সরবরাহ করা পণ্যের বর্ণনা, ইউনিট প্রতি মূল্য এবং চূড়ান্ত হিসেবে সর্বসাকুল্যে দেয় মূল্য। ইনভয়েসগুলো মেশিন থেকে নামানো হলে আপনাআপনি ভাঁজ হয়ে ঢুকে যাবে উইন্ডো এনভেলাপে, তারপর চলে যাবে ডাকবাক্সে। কিন্তু খানিক পরপর, মনে হলো, প্রিন্টারটা যেন হেঁচকি তুলছে, আর একবার হেঁচকি তুললেই গোটা একটা পাতা বাদ পড়ছে থামছে একমুহূর্ত, তারপর লাফ দিয়ে চলে যচ্ছে পরবর্তী পাতায় অর্থাৎ পরবর্তী ইনভয়েসে, এবং দেখে মনে হলো একেবারে নিখুঁত ছাপা হচ্ছে সেটা।
‘অদ্ভুত তো,’ বলল সে, চেহারার শুধু কৌতূহল নয়, উদ্বেগও ফুটে আছে।
হাই-স্পীড মেশিনে কার্ড ঢোকাল সে, পাপিয়ার চাওয়া তথ্যগুলো উপরে দিল

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top