কালো ছায়া – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

কালো ছায়া – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৩৪২

কালো ছায়া – বইটির এক ঝলকঃ

রাখা যাচ্ছে । আলফ্রেড শেঙ্গি, তার সেকেণ্ড-ইন-কমাণ্ড, সহজেই সংগ্রহ করতে পারবে টিনের কৌটাটা। তার বরং এখানে থেকে অস্ত্র ডেলিভারি নেয়ার জন্যে ড্রপ-সাইট মনিটরিং করা উচিত। সেই যুক্তি দেখিয়েই এখানে রয়ে গেছে সে। যদিও মনে মনে জানে, এখানে থেকে যাবার আসল কারণ সেটা নয়।
আসল কারণ হলো, জীবনে এই প্রথম ভয় পেয়েছে ডেকা বারগাম।
পায়চারি থামিয়ে দরজার গায়ে সরু ফাটলে চোখ রাখল সে। দশ টনি একটা ট্রাক সিমেন্ট নিয়ে যাচ্ছে, ধোঁয়া আর ধুলো উড়ছে চারদিকে। রাস্তার কিনারা থেকে এক ছেলে একটা পাথর তুলে নিয়ে ছুঁড়ল, ড্রাইভিং কেবিন লক্ষ করে। ব্যথায় গুঙিয়ে উঠল ড্রাইভার, রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে পড়ল ট্রাক। ছেলেটা চোখের পলকে হাওয়া হয়ে গেছে ।
দরজার কাছ থেকে পিছিয়ে এল বারগাম। এ-ধরনের দৃশ্য কয়েকশো বার দেখেছে সে। এ সমাজে কিছুই যেন কখনও বদলায় না, বদলাবেও না। কিভাবে বদলাবে? দেশটাকে কেউ ভালবাসলে তো! সবাই যে যার ভাগ্য বদলাবার তালে আছে। হ্যাঁ, সবার মত তাকেও নিজের ভাগ্য বদলাবার জন্যে কাজ করে যেতে হবে। করছেও তাই। দলটাকে আরও বড় করবে সে, আধুনিক অস্ত্রে সাজাবে। শ্বেতাঙ্গ অশ্বেতাঙ্গ কোন বাছবিচার নেই, স্বাধীনতা আন্দোলনের নামে সবার বাড়িতে হানা দেবে, কেড়ে নেবে সোনা আর টাকা।
‘শুনতে পাচ্ছি তুমি নাকি একটা খনি পেয়েছ?’ গামবুটিও বোতল থেকে সরাসরি জিন খাচ্ছে। ‘খুবই নাকি দামী জিনিস। দামী আর নরম, সুন্দর আর রসালো । সত্যি নাকি?
“কার কাছে শুনলে?’
‘শুনলাম।’ বোতলটা নামিয়ে রেখে কাঁধ ঝাঁকাল গামবুটি। ‘আরও শুনলাম, সে এমন একটা খনি, তাকে নাকি সবদিক থেকে উপভোগ করা যায়।’
এগিয়ে এল বারগাম। একটা হাত বাড়িয়ে গামবুটির শার্টের কলার ধরে হ্যাঁচকা টান দিল, তুলে ফেলল শূন্যে, তারপর ওভাবে ধরে রেখেই ঘন ঘন ঝাঁকাল। ‘কি শুনেছ ভুলে যাও। আর যদি কখনও তার কথা তোমার মুখে শুনি, জ্যান্ত কবর দেব। মনে থাকবে?’ কথা শেষ করে গামবুটিকে ছুঁড়ে দিল এক কোণে। মেঝেতে একটা ভারি বস্তার মত পড়ল সে, থরথর করে কাঁপছে।
পিছিয়ে আবার দেয়ালের কাছে ফিরে বাক্সটার ওপর বসল বারগাম । ছেলেটা নিশ্চয়ই মুখ খুলেছে, ভাবল সে। বাহাদুরি দেখাবার জন্যে ডোরা ডারবির সঙ্গে তার কি সম্পর্ক ব্যাখ্যা করে শুনিয়েছে গামবুটিকে। গামবুটি ডোরা ডারবি সম্পর্কে জানে, এটা একটা দুঃসংবাদ। যদিও যথেষ্ট ভয় পেয়েছে গামবুটি, এ-প্রসঙ্গে আর কথা বলবে না সে। তবে ছেলেটার ব্যাপারে একটা কিছু করতে হবে তাকে। গামবুটি বিপদ হয়ে দেখা দিতে পারে, এটা তার রাগের কারণ নয়। মাথায় রক্ত চড়ে গিয়েছিল তার বলার সুরে নোংরা ইঙ্গিত থাকায়
ডোরা ডারবি। যখনই তার কথা মনে পড়ে, বারগামের সব কিছু ওলটপালট হয়ে যায়। আশ্চর্য কিছু স্মৃতি ভিড় করে আসে মনে, বুকের ভেতর উথলে ওঠে আবেগ, অনুভূতিগুলো পরস্পরের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধিয়ে দেয়। মেয়েটা শ্বেতাঙ্গিনী। অত্যন্ত বদরাগী, জেদী আর অস্থির। তার সামনে যত বড় বাধাই আসুক, চরম নিষ্ঠুরতা দেখিয়ে সব ভেঙেচুরে একাকার করে দিয়ে এগিয়ে যাবে, কেউ তাকে রুখতে পারবে না ।
কালো হোক আর সাদা, জীবনে এরকম মেয়ে দ্বিতীয়টি দেখেনি ডেকা বারগাম। প্রথম পরিচয় তাঞ্জানিয়ায়, ডোরা ডারবিরই ক্যাম্পে। মাত্র কয়েক মিনিটের পরিচয়, সহজ সুরে তাকে একটা ফরমাশ করল সে। সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়া হয় তার, অপমানে জ্বালা করে ওঠে গা । তারপর হঠাৎ করেই উপলব্ধি করে সে, তার গায়ের রঙের সঙ্গে ব্যাপারটার কোন সম্পর্ক নেই। সে সাদা নাকি কালো, ডোরা ডারবি তা খেয়ালই করেনি। ডোরা ডারবির দৃষ্টিতে দুনিয়ার বুকে মাত্র দু’ধরনের প্রাণী আছে— পশু আর মানুষ। প্রথমটা সম্পর্কে তার দরদ আর শ্রদ্ধাবোধ সীমাহীন, দ্বিতীয়টা সম্পর্কে কোন মাথাই ঘামায় না ।
ওখানে দু’হপ্তা ছিল বারগাম, ডোরা ডারবির দ্বারা সম্মোহিত। তার সঙ্গে গল্প করেছে মেয়েটা, লেকচার দিয়েছে ঘন্টার পর ঘন্টা, গড়গড় করে বলে গেছে আফ্রিকার ইতিহাস, বন্যপ্রাণীদের কাহিনী – যা আগে কখনও কারও মুখে শোনেনি সে। ক্ষুধার্ত বারগাম তার বক্তব্য গোগ্রাসে গিলেছে, কালো আফ্রিকা ও নিজের ইতিহাস জেনেছে, মনে হয়েছে এতকাল অন্ধকারে থাকার পর আলোর জগতে পা ফেলেছে সে।
মেয়েটার সঙ্গে তার প্রেম হয়নি, না। হায় ঈশ্বর, এরকম একটা মেয়েকে কিভাবে ছোঁয়া যায়! ডোরা ডারবির মত মেয়েকে কেউ কোন দিন পায় না । ওদের দু’জনকে নিয়ে যে গল্প রটেছে তা তারই বানানো, পুরুষদের খোরাক হিসেবে পরিবেশিত । এ-সব রটিয়ে নিজের ভাবমূর্তি বাড়িয়ে নিয়েছে সে, বাড়িয়ে নিয়েছে দলের ভাবমূর্তি সাদা এক ভদ্রমহিলাকে ভোগ করার কৃতিত্ব ক’জন কালো লোক দেখাতে পারে?
তারপর কালাহারিতে ডোরা ডারবির নতুন ক্যাম্পে গেল বারগাম । সেই থেকে অদ্ভুত একটা মানসিক অস্থিরতা পেয়ে বসেছে তাকে। নিজেকে তার বিব্রত মনে হয়, দিশেহারা বোধ করে। ডোরা ডারবি তার হাতে বন্দী, অথচ মনে হয় ঘটেছে আসলে উল্টোটা, সেই যেন ডোরা ডারবির হাতে বন্দী। নতুন ক্যাম্পে ওকে দেখে খুশি হয় ডোরা ডারবি, খুব খাতির-যত্ন করে। সে কি চায় ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বারবার তোতলায় বারগাম, ঘেমে গোসল হয়ে যায়। অথচ প্রস্তাবটা শুনেই রাজি হয়ে গেল ডোরা ডারবি, একটুও ইতস্তত করেনি। শুধু একটা শর্ত দেয়, তার কাজে যেন কোন রকম বিঘ্ন ঘটানো না হয়। তার প্রস্তাবে সানন্দে রাজি হয়ে মেয়েটা যেন তাকেই বন্দী করে ফেলেছে। তার কথাগুলো স্পষ্ট মনে আছে বারগামের। ‘আমাকে পুঁজি করে তুমি যদি লাভবান হতে পারো, আমার কোন আপত্তি নেই।’
এই মুহূর্তে মরুভূমিতে রয়েছে ডোরা ডারবি, পাঁচশো মাইল দুর্গম উত্তরে, এমন স্বাভাবিকভাবে নিজের কাজ করে যাচ্ছে যেন কিছুই ঘটেনি।
“এখনও তোমার কাজ শেষ হলো না?’ জিজ্ঞেস করল বারগাম, ঝাঁকি খাবার পর থেকে মাথা নিচু করে কাজ করছে গামবুটি। ‘তাড়াতাড়ি করো।’
দরজা খুলে ভেতরে উকি দিল ছেলেটা। ‘পেট্রল…এদিকেই আসছে।’
দড়াম করে বন্ধ হয়ে গেল দরজা। ব্যস্ত হাতে ম্যাপটা ভাঁজ করে পকেটে গুঁজে রাখল গামবুটি, পর্দা সরিয়ে কুঁড়েঘরের আরেক অংশে চলে গেল বারগাম ।
পুলিস নিয়মিতই টহল দেয় এদিকটায়। প্রতিবারের মত এবারও হয়তো তারা পাশ কাটিয়ে চলে যাবে। তবে ওরা যদি গোপন সূত্রের খবর পেয়ে এসে থাকে, কুঁড়েঘরটাকে ঘিরে ফেলবে। সেক্ষেত্রে সুড়ঙ্গপথে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করতে হবে বারগামকে, যদিও শেষ রক্ষা সম্ভব কিনা নির্ভর করে নিয়তির ওপর।
সুড়ঙ্গের মুখে শুয়ে গাড়ির আওয়াজ শুনছে বারগাম, আর ডোরা ডারবির কথা ভাবছে। গামবুটির কথাটা মিথ্যে নয়, সে একটা খনিই বটে। তার জীবনে সবচেয়ে মূল্যবান খনি ।
পুলিসের গাড়ি কাছে চলে এল। পর্দার ফাঁক দিয়ে বারগাম দেখল, মেঝের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থরথর করে কাঁপছে গামবুটি।
দরদর করে ঘামছে বারগাম । অপেক্ষা করছে ।
পাঁচ
দলের আরও পাঁচ-সাতটা বেবুনের মত এটাও দু’বছর বয়েসী একটা পুরুষ, তবে পার্থক্য হলো এটা বাকিগুলোর চেয়ে লম্বা-চওড়া আর শক্তিশালী। আচরণে আক্রমণাত্মক একটা ভাব আছে, কৌতূহল খুব বেশি, রোমাঞ্চের গন্ধ পেলে নিজেকে সামলাতে পারে না।
স্ত্রীলোকটিকে গত এক হপ্তা ধরে লক্ষ করছে সে। লক্ষ করছে আর তার গন্ধ শুঁকছে। মেয়েটা প্রথম তাকে এই গন্ধ দিয়েই আকৃষ্ট করে। গন্ধটা তার নাকে আশ্চর্য ঝাঁঝালো অথচ মিষ্টি নেশা ধরানোর মত লাগে । প্রথমে সে বুঝতে পারেনি ঠিক কোথা থেকে আসছে গন্ধটা, শুধু অনুভব করতে পারে অদৃশ্য কুয়াশার মত স্ত্রীলোকটিকে ঘিরে আছে। তারপর এক সকালে, ও যখন পানির কিনারায় বসে নিজেকে পরিষ্কার করছিল, ওর মাথার চুল আর নাভীর নিচে একই রঙের লোম দেখতে পেয়ে, দুটোর মধ্যে একটা যোগাযোগ খুঁজে পায় সে। পুরুষ বেবুন এবার গন্ধটার উৎসও আন্দাজ করে নেয়।
তারপর থেকে, কৌতূহলের চরমে পৌঁছে, ঠিক কোন্ ইচ্ছে থেকে নিজেও জানে না, ধীরে ধীরে কাছে আসতে শুরু করে সে। কিন্তু যতবারই কাছাকাছি হতে চেয়েছে, তাকে ছুঁতে চেয়েছে, গন্ধয় উৎসটা চাটতে চেয়েছে, ততোবারই স্ত্রীলোকটির দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে সে। ফলে আতঙ্কে অস্থির হয়ে পালিয়ে না এসে উপায় কি। একবার সরে আসতে দেরি করে ফেলে সে, আঁচড়ে তার কান থেকে রক্ত বের করে দিয়েছে। আরেকবার দলের সর্দার, বেহায়াপনা করার অপরাধে কামড়ে ক্ষতবিক্ষত করেছে তাকে। কিন্তু তারপর আতঙ্ক কমে এলেই, উত্তেজনা আর ইচ্ছেটা বাড়লেই, মেয়েটার ওপর নজর দিয়েছে সে, অপেক্ষায় থেকেছে গন্ধের উৎসটা সম্পর্কে জানার সুযোগ আসবে এই আশায় ।
সেদিন বিকেলে বুড়ো সর্দার বুকের মধ্যে মাথা গুঁজে ঝিমুচ্ছিল। তাকে ঘিরে গোটা পালটা চরছে, শুকনো ঘাসের শিকড় খাচ্ছে। এক জোড়া বেবুন বসে আছে উঁচু পাথরের মাথায়, নজর রাখছে শত্রুরা কেউ এদিকে আসে কিনা। এই সুযোগে পুরুষটা সতর্ক চোখে তাকাল মেয়েটার দিকে। বাকি সবার চেয়ে খানিকটা দূরে রয়েছে সে, ধুলোর

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top