যুদ্ধবাজ – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১২৩
যুদ্ধবাজ – বইটির এক ঝলকঃ
বলে শরীরটা গরম হয়ে উঠল, তবে জুতো জোড়া এখনও ভিজে থাকায় হেঁটে আরাম পাচ্ছে না। খেতগুলোকে পিছনে ফেলে এল ও, তারপর পাথুরে প্রাচীর দিয়ে ঘেরা সরু পথ ধরে ঢালের মাথায় উঠতে শুরু করল, “শয়তানের তাওয়া’-টাকে ঘিরে রেখেছে এই প্রাচীর। উপকূল বরাবর দূরে দেখা যাচ্ছে লাইটহাউসের আলোর ঝলকানি। মেঘ থাকায় মাথার ওপর আকাশ নেই, অন্ধকারে পথ চলতে অসুবিধে হচ্ছে। পাহাড়-প্রাচীরের মাথা থেকে পড়ে যাবার ভয়ে খুব সাবধানে পা ফেলছে রানা ।
হেডল্যান্ডে বড় একটা সাদা চুনকাম করা বাড়ি আছে, সেটাকে পাশ কাটিয়ে এল রানা। তারপর সামনে পড়ল আংশিক কাঠ দিয়ে খাড়া করা বাংলোটা, এক লোক ওটাকে কাফে বানিয়েছে। কমলা রঙের জানালার পর্দাগুলো অর্ধেক আলোকিত, বাকি অর্ধেক ব্রাউন পেপার দিয়ে কালো করে রাখা হয়েছে। হঠাৎ করেই রানা উপলব্ধি করল, প্রায় চার-পাঁচ ঘণ্টা হলো যুদ্ধের আশঙ্কা নিয়ে কিছুই চিন্তা করেনি। মনটা আবার বিষণ্ণ হয়ে উঠল। প্রাচীর ঘেরা আরেকটা পথ পেরুতে হলো ওকে। সামনে লম্বা একটা গর্ত, থাকায় সেটাকে ঘুরে এগোতে হচ্ছে।
কেন ওকে লেবাননের তাকরির উপকূলে পাঠানো হয়েছে, প্রশ্নটা আবার ফিরে এল মনে। অন্যমনস্কই ছিল, হঠাৎ এক লোকের সঙ্গে ধাক্কা খেতে চমকে তো উঠলই, চোখের পলকে আক্রমণের একটা ভঙ্গিও নিয়ে ফেলল।
সত্যি দুঃখিত,’ ইংরেজিতে কে যেন বলল, হাতের টর্চটা জ্বেলেই আবার নিভিয়ে ফেলল। ‘আমি বোধহয় আপনাকে ভয় পাইয়ে দিয়েছি।’
রানার মনে প্রথমেই প্রশ্ন জাগল, সঙ্গে টর্চ থাকা সত্ত্বেও ভদ্রলোক অন্ধকারে হাঁটছিল কেন? ‘না-না, একটু চমকে উঠেছিলাম, এই যা। আমি আসলে অন্যমনস্ক ছিলাম ।
‘আচ্ছা, ভাই, বলতে পারেন মুয়াক্কা খাঁড়ির ঢালে জেলেদের পাড়াটা ‘কোনদিকে?’ জানতে চাইলেন ভদ্রলোক। ‘আপনাকে আমি বাড়িটার নামও বলতে পারব, চিনবেন কি?’ ইংরেজি বললেও, বাচনভঙ্গিতেই টের পাওয়া যায় তার মাতৃভাষা ইংরেজি নয়।
‘বলুন । ‘দোস্তানা ।’
‘দোস্তানা?’ বিড়বিড় করল রানা। হঠাৎ করেই মনে পড়ে গেল কোথায় দেখেছে নামটা । ‘মুয়াক্কা খাড়ির উল্টোদিকের ঢালে বাড়িটা, তাই না?’
উত্তর দিতে এক সেকেন্ড দেরি করল ভদ্রলোক। ‘হ্যা-হ্যা, তাই।’ ‘আপনি যদি আমার সঙ্গে আসেন, বাড়িটা কোনদিকে দেখিয়ে দিতে পারব,’ বলল রানা। ‘এই পথেই যেতে হবে, আধ মাইলটাক দূরে।’
ধন্যবাদ জানিয়ে রানার পিছু নিল লোকটা । রানা ভাবল, সম্ভবত ব্যাটারি খরচ হবার ভয়ে টর্চ জ্বালছে না। তবু বলতে বাধ্য হলো, ‘মাঝে মধ্যে হাতের ওটা জ্বালুন, তা না হলে হোঁচট খেতে হবে যে। ভদ্রলোক টর্চ জ্বালতেই ঘাড় ফিরিয়ে পিছন দিকে তাকাল রানা। আলোটা প্রায় সঙ্গে সঙ্গে নিতে গেলেও ও দেখল, তার পরনের ওয়াটারপ্রুফ প্রায় কোমর পর্যন্ত তেজা। ‘আপনি ভিজে গেছেন, বলল ও।
এবারও উত্তর পেতে এক সেকেন্ড দেরি হলো। ‘হ্যাঁ, আর বলবেন না । বোট নিয়ে বেরিয়েছিলাম, তীরে ভিড়তে জান বেরিয়ে যাবার অবস্থা হয়েছে। না দেখলে বুঝবেন না সাগর কিরকম ফুঁসছে।’
‘অদ্ভুত’ হাসল রানা। ‘আমিও তো ভিজে গিয়েছিলাম।’ তারপর জানাল মাছ ধরতে গিয়ে কি ঘটেছে।
ভদ্রলোক হাসল না, ব্যাপারটাকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গেই নিল। রানা থামতে জিজ্ঞেস করল, “জিনিসটা কি হতে পারে বলে আপনার ধারণা?”
“হাঙরই হবে, তাছাড়া কি,’ জবাব দিল রানা।
‘রাস্তাটা চওড়া হতে রানার পাশে চলে এল ভদ্রলোক। অন্ধকার, তবু তার মাথা ঝাঁকানোটা লক্ষ করল রানা। এদিকের পানিতে হাঙর তো আছেই। জানেন, আমিও আপনার মত ম্যাকারেল ধরতে বেরিয়েছিলাম।’ এরপর প্রসঙ্গ বদলে যুদ্ধের হুমকি নিয়ে কথা বলল, জানতে চাইল, সমস্যাটার কূটনৈতিক কোন সমাধান কি সম্ভব নয়? তারপর জিজ্ঞেস করল, রানা কোন যুদ্ধ জাহাজের বহরকে সাগরে দেখেছে কিনা। জবাবে রানা বলল, “বেশ কয়েকটা ডেস্ট্রয়ারকে দেখা গেছে। কয়েকটা গানবোটও চোখে পড়েছে। আর একটা সাবমেরিন—কোন দেশের বলতে পারব না।’
দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভদ্রলোক বলল, ‘যুদ্ধ তাহলে বাধবেই।’
‘তাই তো মনে হচ্ছে,’ মন্তব্য করল রানা। তারপর জানতে চাইল, “সেনাবাহিনীতে আপনার ডাক পড়েনি?’
“পড়েনি, তবে পড়তে বাধ্য।’
“কোন ট্রেনিং নেয়া আছে?’
“হ্যাঁ, নৌ-বাহিনীতে একবার নাম লিখিয়েছিলাম। বাজেটের অভাবে ছাঁটাই হয়ে যাই।’
‘নেভী তবু ভাল,’ বলল রানা। ‘ট্রেঞ্চে ঢুকতে হয় না।’
“আপনি আমাকে মিথ্যে সান্ত্বনা দিচ্ছেন,’ হালকা সুরে বলল লোকটা। ‘যুদ্ধের মধ্যে ভাল বলে কিছু নেই।
বেশ কিছুক্ষণ আর কেউ কোন কথা বলছে না। যুদ্ধের ভয়াবহতা ভোলার জন্যে এক সময় রানাই নিস্তব্ধতা ভাঙল। তাকরির উপকূল, জলমগ্ন পাহাড়, জাহাজডুবি ইত্যাদি নিয়ে কথা বলছে ও।
ভদ্রলোক মন্তব্য করল, ‘এদিকে আমি আগেও এসেছি, সবই জানা আছে। তাকরির খুব বিপজ্জনক কোস্ট। বিপজ্জনক এই কারণে যে পানিতে ডোবা পাথরগুলো চার্টে দেখানো হয়নি।’
রানা বলল, ‘তবে স্থানীয় জেলেরা জানে কোথায় কি আছে।’ ‘তা হয়তো জানে।
‘হয়তো নয়, সত্যি জানে,’ বলল রানা। ‘পাথরগুলোর মাঝখানে ঠিক কোথায় ডুব দিলে সাগরের তল আর বালি পাওয়া যাবে, একবারে মুখস্থ বলে দেবে ওরা। পানির নিচের রক ফরমেশন সম্পর্কে এই জ্ঞান, আমার ধারণা, পূর্ব-পুরুষদের কাছ থেকে পায়।’ ইতিমধ্যে হেডল্যান্ডের মাথায় উঠে এসেছে ওরা, একটা পথ ডান দিকে ঘুরে গেছে, ছোট এক মাঠকে ঘিরে। “আপনি ওই রাস্তা ধরে চলে যান। কটেজটা, দোস্তানা, আপনার ডান দিকে পড়বে।’
আরেকবার ধন্যবাদ দিয়ে নিজের পথ ধরল ভদ্রলোক। তার ঋজু কাঠামোটা একটু পরই হারিয়ে গেল অন্ধকারে। ঢাল বেয়ে নিজের বাড়ির দিকে এগোল রানা।
দুই
পরদিন সকালে মুয়াক্কা রেস্তোরার সামনে থেকে গাড়িতে চড়ল রানা, চলে এল হাদীদের জেলে পাড়ায়। লিজার কাছ থেকে নিজের কাপড়-চোপড়ের প্যাকেটটা নিল, ফিরিয়ে দিল তার স্বামীর ট্রাউজার আর শার্ট। পাড়িটা ওখানেই থাকল, সৈকতে এসে দেখে সাগরে বেরুবার জন্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে হাদী। ওকে দেখে সিধে হলো, জানতে চাইল, ‘কাল ভিজে গেলেন, ঠাণ্ডা লাগেনি তো, স্যার?’
“আরে না!’ বলল রানা। ‘অদ্ভুত ব্যাপার হলো, মুয়াক্কায় ফেরার পথে এক ট্যুরিস্ট ভদ্রলোকের সঙ্গে দেখা হলো আমার, তিনিও মাছ ধরতে গিয়ে ভিজে গেছেন।’
‘মুয়াক্কার ওদিকে দেখা হলো? মুয়াক্কার কোথায় থেকে মাছ ধরতে যাবে? হাদী বিস্মিত।
কাঁধ ঝাঁকাল রানা। ‘তা কি করে বলি। কাফেটা ছাড়িয়ে খানিক এগিয়েছি, এই সময় তাঁর সঙ্গে আমার ধাক্কা লাগে।’
‘মুয়াক্কার ওদিকটায় শুধু আপনার বাড়ির নিচে ছোট্ট একটু সৈকত আছে,’ বলল হাদী। ওখানে কখনোই কোন বোট ভেড়ে না।’
‘হয়তো আরও দক্ষিণের কোন তীরে ভিড়েছে।
“বাধ্য না হলে কেন কেউ ওদিকে বোট ভেড়াবে? ওদিকটা তো ডোবা পাথরে ভর্তি।’
“কি জানি। তবে তাঁর কোমর পর্যন্ত ভেজা দেখলাম। সে যা-ই হোক, কি আসে যায় তাতে?’ হাদীকে অবাক হতে দেখে অস্বস্তি বোধ করছে রানী।
খোঁচা খোঁচা দাড়ি চুলকাল হাদী। খানিক ইতস্তত করার পর বলল, ‘না, কাল রাতের কথা ভাবছিলাম। আমরা কি সত্যি-সত্যিই জানি যে ওটা একটা মাছ ছিল
“মাছ ছাড়া আর কি হতে পারে?’
ভুরু কুঁচকে হাদী বলল, ‘স্যার, হাসবেন না-যদি বলি ওটা একটা সাবমেরিন ছিল?’
… হাদীর দিকে তাকিয়ে থাকল রানা। ‘সাবমেরিন?’ হঠাৎ হেসে উঠল ও। ‘নিরীহ একটা ম্যাকারেলকে ধাওয়া করার জন্যে কেন একটা সাবমেরিন লাফ দিয়ে পানির ওপর অর্ধেকটা উঠে আসবে?’
‘লাফ দিয়ে পানির ওপর অর্ধেকটা উঠে এসেছিল?’ ‘জিজ্ঞেস করল হাদী, রীতিমত সিরিয়াস হয়ে উঠছে। ‘স্যার, আপনি ঠিক জানেন, ম্যাকারেলটাকেই ধাওয়া করেছিল ওটা?’
‘পানির ওপর উঠে পড়া বলাটা একটু হয়তো অতিরঞ্জিত হয়ে যাচ্ছে,’ স্বীকার করল রানা। ‘তবে ফিন বা ওই ধরনের কিছু একটা দেখেছি আমি
‘পেরিস্কোপ নয় তো, স্যার?’
এবার জবাব দেয়ার আগে দু’সেকেন্ড চিন্তা করল রানা। ‘স্বীকার করছি, অসম্ভব নয়। কিন্তু আমার লাইন কেন ছিড়বে?’
লাইনটা হয়তো পেরিস্কোপে জড়িয়ে গিয়েছিল।
মাথা নাড়ল রানা। “বিশ্বাস হয় না ।
“স্যার, আপনি তলিয়ে যাবার পর পানির অবস্থা দেখেননি, রীতিমত টগবগ করে ফুটছিল। হাঙর হলে এতটা আলোড়ন উঠত না।’
“তাহলে আমার প্রশ্নের জবাব দাও, একটা সাবমেরিন তীরের এত কাছাকাছি কেন আসবে?’ জিজ্ঞেস করল রানা। “বিশেষ করে ওদিকের ওই বিপজ্জনক তীরে?’
‘সেটাই তো ধাঁধায় ফেলে দিয়েছে আমাকে, স্যার,’ বলল হাদী। ‘তবে আপনার মুখে ভেজা লোকটার কথা শুনে আমার মাথায় একটা আশঙ্কা জাগছে। ওরা হয়তো কাউকে সাবমেরিন থেকে তীরে নামাতে এসেছিল।
সম্ভাবনাটা নিয়ে চিন্তা করল রানা। একেবারে অসম্ভব, তা মনে হচ্ছে না। অথচ বিশ্বাস করতে মন চায় না।
‘লোকটার সঙ্গে আপনার কোনও কথা হলো?’ জানতে চাইল হাদী
“হ্যাঁ। একটা বাড়ির খোঁজ চাইলেন। দোস্তানা। ভদ্রলোকের সঙ্গে কি কি কথা হয়েছে, সব মনে পড়ে গেল ওর। শোনালও হাদীকে।
হাদী উত্তেজিত হয়ে উঠল। ‘এদিকে সে আগেও এসেছে, এ-কথা বলার মানে হলো, লোকটা ট্যুরিস্ট বা অস্থানীয়। তাহলে জানল কিভাবে ওদিকের কোস্ট বিপজ্জনক?’
‘বললেন, আগেও এসেছেন। ‘তাহলে বলুন, সে জানল কিভাবে পানিতে ডোবা পাথরগুলো চার্টে দেখানো হয়নি?’
হাদী যতই উত্তেজিত হোক, নিজেকে রানা বিশ্বাস করাতে পারছে না যে ভদ্রলোক স্পাই ।
‘স্যার, ব্যাপারটা স্বভাবিক বলে মনে হচ্ছে না,’ কাল হাদী। ‘আমাদের যোসেফের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত। তাকবিরের সবাইকে সে চেনে। দোস্তানা কটেজটা কার, সে বলতে পারবে।
হাদীর পিছু পিছু বার-এ ফিরে এল রানা। রেডিওর খবর শুনছে সবাই । জাতিসংঘের মহা সচিব কফি আনানের বাগদাদ সফর অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। দু’হাজার মার্কিন সৈন্যের তৃতীয় দলটা পৌঁছে গেছে কুয়েতে। জাতিসংঘের বিভিন্ন মিশনের লোকজনকে ইরাক ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
যুদ্ধের আশঙ্কা আরও বাড়ছে, সন্দেহ নেই। দুই তরুণ বার থেকে বেরিয়ে গেল, একজন বলে গেল সে তার ভাইকে টেলিফোন করতে যাচ্ছে। রেডিও বন্ধ হতে যোসেফকে হাদী জিজ্ঞেস করল, “মুয়াক্কার জেলে পাড়ায় দোস্তানা নামে একটা বাড়ি আছে। ওখানে কে থাকে বলতে পারো?’
বছর তিন হলো বাড়িটা এক ব্যাঙ্ক ম্যানেজার ভাড়া নিয়েছেন। রিটায়ার্ড এক বুড়ো, নামটা বোধহয় জামালু দীন। কেন?
ইতস্তত করে হাদী বলল, ‘না, এমনি – আমার স্যার জানতে চাইছেন আর কি। তা রিটায়ার্ড ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের কাছে খুব বেশি লোকজন আসে কিনা বলতে পারো?”
যোসেফকে কৌতূহলী দেখাল। ‘তা আমি কিভাবে জানব?”
বার থেকে বেরিয়ে এসে হাদী বলল, ‘স্যার, তেমন কিছুই তো জানা গেল না। চলুন আমরা শমসের লিবানের সঙ্গে কথা বলি। শমসের লিবান একজন কোস্টগার্ড, জানে রানা। জেলে পাড়ার সবাই তাকে নিজেদের অভিভাবক হিসেবে মান্য করে ।
কোস্টগার্ড শমসের লিবানকে পাওয়া গেল মাছ ব্যবসায়ী সমিতির অফিস কামরায়। অফিসটা পাহাড়ের ঢালে। পুরো ঘটনাটা তাকে শোনাল হাদী। পা সামান্য ফাঁক করে দাঁড়িয়েছে সে, দু হাতের আঙুল লেদার ওয়েস্টবেল্টে গোঁজা, দেখে মনে হচ্ছে তার বিশাল কাঠামো গোটা কামরাটাকে ভরাট করে রেখেছে। তুলনায় শমসের লিবান লিলিপুটিয়ান, ডেস্কের ওপর টেলিস্কোপের সামনে বসে আছে। হাদীর কথা শেষ হতে ডেস্কের ওপর আঙুলের গিট দিয়ে ড্রাম বাজাতে শুরু করল। ‘সম্ভব,’ বলল সে। ‘কালই তোঁ আমি নিজে দেখলাম কোস্ট থেকে মাত্র ছ’মাইল দূরে ভুস করে একটা সাবমেরিন ভেসে উঠল। তারপরই অবশ্য ডুব দেয়। কিন্তু লোকটা বোট নিয়ে নামবে কোথায়?’
‘মুয়াক্কার ছোট্ট সৈকতে,’ বলল হাদী।
‘ওখানে পানির নিচে কত পাথর আছে জানো না? বোট তো ভেঙে
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!