ঝড়ের পূর্বাভাস – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১২৩
ঝড়ের পূর্বাভাস – বইটির এক ঝলকঃ
নেগ্রিটো ভ্যালিতে সরিয়ে নিতে হবে। ওখানকার পাহাড়ে সময়মত আশ্রয় নেয়া গেলে….
‘যাক্,’ স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ল ও। ‘তবু যা হোক একটা উপার আছে। তাহলে, ম্যাবলের ব্যাপারে তুমি শিওর?
সে তো মোটামুটি কাল থেকেই। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে আমার চীফ তো নয়ই, এমনকি নেভাল চীফও আমার সাথে একমত হতে পারছেন না। থিওরির বাইরে যেতে রাজি নয় তারা। এমনকি লোকাল ওয়ার্নিং ইস্যু করতেও রাজি নয়। আমাকে বাদ দিয়ে অন্য টেকনিক্যাল স্টাফকে পাঠানো হয়েছে ওয়েলার নতু করে মনিটরিজের কাজে।’
‘কেন?’
‘কোন পদক্ষেপ নেয়ার আগে কমোডর আরেকজন বিশেষজ্ঞের মত জানতে চান।’ ক্রম সার্ভিস কঞ্চি রেখে যেতে একটা কাপ টেনে নিল জ্যাকবসন । চুমুক নিল। কিন্তু আমার ভয় হচ্ছে ওদের ফিরে আসতে আসতে অনেক রাত হবে। তারপর ব্যাপারটা যদি পজিটিভ হয়, তাহলে হয়তো দেরি হয়ে যাবে। কিছু করার মত সময় থাকবে না। ওয়ার্দিও ইস্যু করা, এত মানুষ ভ্যাকেট করা, শ্রাগ করল সে। ‘আমি তো কোন আশা দেখছি না।’
নীরবে যে যার কাপে চুমুক দিল রানা-ক্রিস্টিনা। ‘তাহলে?’ বলল রানা। *এখন কি করতে চাইছ?’
দু’হাতের তালু চিত করে অসহায় ভঙ্গি করল সে। ‘কি করব? কি করার আছে আমার? কাউকে তো ব্যাপারটা বিশ্বাস করাতেই পারছি না। এই যে তোমরা, তোমরাও নিশ্চই বিশ্বাস করতে পারছ না আমাকে! হয়তো ভাবছ আমি শুধু শুধু পরিস্থিতি ঘোরাল করে তুলছি।’
“না, জ্যাক,’ মৃদু গলায় বল রানা। এক হাত তার কাঁধে রাখল। ‘আমরা মোটেই তা ভাবছি না। বরং তুমি যেমন শিওর, তেমনি আমরাও শিওর। আমরা জানি ম্যাবেল আসছে।’
চোখ কুঁচকে উঠল তার। ‘ঠাট্টা করছ?’ বলেই বুঝল ভুল হয়ে গেছে, রানার চোখে মুখে সেসবের কোন চিহ্নই নেই। গম্ভীর ও। ‘নাকি ছেলে ভোলানো সান্ত্বনা দিচ্ছ?”
“কোনটাই না।’
“তাহলে? তোমরা কি করে শিওর হলে?”
‘আমি বলছি,’ টেবিলের ওপর থেকে রানার সিগারেটের প্যাকেট তুলে নি ক্রিস্টিনা। একটা ধরিয়ে দুপুরের সেই বৃদ্ধের কথা খুলে বলল।
শুনতে শুনতে বিস্ময়ে সোজা হয়ে বসল জ্যাকবসন। ঘাড়ের খাটো খাটো চুল দাঁড়িয়ে গেল তার সব-সব করে। ‘দেখলে!’ উত্তেজনায় গলা চড়িয়ে বলল, ‘দেখলে! আমি বলিনি… হঠাৎ থেমে গেল। লজ্জা পাওয়া চেহারা করে ওদের দু’জনের দিকে তাকাল। ‘সরি, রানা। ক্রিস্টি! না বুঝে…
‘দ্যাটস অল রাইট,’ তার পিঠ চাপড়ে দিল রানা। ‘আমরা কিছু মনে করিনি। ভুলে যাও।” ‘আবহাওয়া বিজ্ঞানের আর কোন প্রয়োজন নেই, রানা। মনে যে সামান সন্দেহ ছিল, সম্পূর্ণ দূর হয়ে গেল এই খবর শোনার পর। অন্তত একজনের খোল পাওয়া গেল যে-
“সে না হয় হলো, বাধা দিল ও। কিন্তু এখন সমস্যার সমাধান করা যায় কি করে, সেই চিন্তা করো।
“গভীর হয়ে গেল জ্যাকবসন। কি করে সমাধান করব? কোন পথই তো চোখে পড়ছে না আমার। তবে….
‘কি?’
*একটা চেষ্টা করে দেখা যেতে পারে বোধহয়।
‘কি সেটা?’
‘এখানকার ব্রিটিশ কনসালকে দিয়ে ব্যাপারটা সেরারিয়েরের কানে তোলার চেষ্টা করা যেতে পারে। এতদিন সান ফের্নান্দেজের আবহাওয়া দফতরের দায়িত্বে ছিল আইল্যান্ড অ্যাফেয়ার মিনিষ্টার শুনাদি। নিরাপত্তা বাহিনীর চীফ ছিল লোকটা। দু’দিন আগে তাকে বরখান্ত করে তার সব দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়েছে প্রেসিডেন্ট। ঘাঁটির নেভাল চীফও কনসালের সাথে এ নিয়ে কথা বলবেন বলেছেন। তাঁকে দিয়ে খবরটা প্রেসিডেন্টকে জানাবার চেষ্টা করবেন।’
“কেন?” বলল রানা। তিনি নিজে কেন…..
উপায় নেই। সেরারিয়ের আমেরিকানদের দু’চোখে দেখতে পারে না। বিশ্বাসই করবে না সে।’ এ ব্যাপারে কমোডর যা যা আশঙ্কার কথা বলেছেন, জানাল সে রানাকে। তাছাড়া তিনি যদি পদক্ষেপ নেনও, নেবেন কাল। হয়তো। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও সেই একই কথা, দেরি হয়ে যাবে।
হেলান দিয়ে সিলিঙের দিকে তাকিয়ে সিগারেটে ঘন ঘন টান দিতে থাকল রানা । ডুবে আছে চিন্তায়। ব্রিটিশ কনসাল বললে কাজ হবে?’
“হতে পারে। ওদের এক-আধটু খাতির করে সেরারিয়ের।’
‘ওদের কনসুলেটটা কোথায়?”
‘বেশি দূরে নয়। ভর এলাকার কাছে।
সিগারেট শেষ করল ও নীরবে। তারপর সটান উঠে দাঁড়াল। ‘চলো।’
‘কোথায়?’ জ্যাকবসন বলল।
“কনসালের সঙ্গে কথা বলতে। দেখি, কাজ কিছু হয় কি না।’
দুই মিনিটের মধ্যে বেরিয়ে পড়ল ওরা দু’জন। ক্রিস্টিনা থেকে গেল নিজের কাজে বের হবে বলে। পরিবেশ ভীষণ গুমোট। তার ওপর রাস্তা একদম ফাঁকা, দোকানপাট সব বন্ধ। চারদিকে ভৌতিক থমথমে ভাব। আমি চোখে পড়ল না কোথাও, তবে পুলিস আছে প্রচুর। চারজনের একেকটা দল, ঘুরঘুর করছে। এ ছাড়া করার কিছু নেই তাদের, কারণ মানুষ তো দূরের কথা, একটা কুকুরও নেই
রাজায়।
“রানার সুবিধে হলো। জোরে চালিয়ে সাত মিনিটের মধ্যে পৌছে গেল কনসুলেট ভবনের সামনে। ভবনটা বেশ বড়, দোতলা। সামনের ভারী লোহার পেট বন্ধ। ওটা পেরিয়ে ভেতরে ঢুকতে যথেষ্ট সময় খরচ হলো ওদের। কনসাল ফুলারটন ছোটখাট মানুষ। টেকো। ষাটের মত করল। দুই আগন্তককে দেখলেন তিনি কিছু সময় নিয়ে। ‘আপনারা ব্রিটিশ?’ প্রশ্ন করলেন তিনি, যদিও সিকিউরিটি-ইন-চার্জের মুখে খবরটা আগেই পেয়েছেন।
‘হ্যাঁ,’ বলে নিজের ব্রিটিশ পাসপোর্ট বের করে দিল রানা। বাইরে বের হলে, বিশেষ করে ছুটিতে, দেশীটার সাথে ব্রিটিশ ও আমেরিকান, দুটো পাসপোর্টই সঙ্গে
রাখে ও’।
‘আমার অফিসে আসুন, প্লীজ।’ ওটা ফিরিয়ে দিলেন ফুলারটন। আগে আগে চললেন।
অফিস রুমটা বেশ বড়। কনসালের চেয়ারের পিছনের দেয়ালে ঝুলছে বানীর বিরাট এক ছবি। ভেতরের আসবার সব ঝকঝক করছে। ‘বসুন।’
“
কনসালের মুখোমুখি বসল ওরা। দু’জনকে আরেকবার পালা করে দেখলেন তিনি। আপনিও ব্রিটিশ জ্যাকসনের উদ্দেশে প্রশ্ন করলেন।
“না,’ রানা জবাব দিল ওদের হয়ে। ইনি ড্যানিয়েল জ্যাকবসন, লোকাল। ওয়েদার স্পেশালিস্ট।
‘আই সী! তা কি ব্যাপার? এই অসময়ে পথে বেরিয়েছেন—শহরের অবস্থা কিছু জানেন না?’
‘জানি, খারাপ। তবু বেরোতে হলো ওর চাইতেও হাজার গুণ খারাপ একটা. খবর আপনাকে জানাতে। উপায় ছিল না।’
কপালে ভাঁজ ফুটা ফুলারটনের। ‘সেটা কি?’
‘তার আগে আপনার জানা দরকার, ইনি ক্যাপ সারাড মার্কিন বেজের ওয়েদারম্যান জ্যাকবসনকে দেখাল রানা। ‘গত পরশু ওয়েদার মনিটরিও করতে গিয়ে আটলান্টিকে প্রচণ্ড এক হারিকেনের উৎপত্তি হয়েছে দেখে এসেছেন। এদিকেই আসছে ওটা
চোখ পিট পিট করতে লাগল কনসালের, চেহারায় বিমূঢ় ভাব ফুটল। ‘তা না হয় বুঝলাম,’ ‘অনিশ্চিত কণ্ঠে বললেন। কিন্তু সে খবর জেনে আমি কি করব? কমোডর…’
“তিনি জানেন,’ বাধা দিয়ে জ্যাকবসন বলে উঠল। কিন্তু প্রেসিডেন্ট পাত্তা দেবে না ভেবে ওয়ার্নিং ইস্যু করতে ভরসা পাচ্ছেন না। আপনি জানেন বোধহয় দু’দিন আগে পর্যন্ত আইল্যান্ড অ্যাফেয়ার মিনিস্টার ওনাদির দায়িত্বে ছিল আবহাওয়া দফতর। পরশু ডাকে বরখাস্ত করেছে সেরারিয়ের। কোন খোঁজ নেই তার। কাজেই এ খবর জানাতে হলে এখন সেরারিয়েরকেই জানাতে হবে। কিন্তু কমোডর সে চেষ্টা করতে গেলে লোকটা বিশ্বাস তো করবেই না, বরং সো কলড় বিদ্রোহ দমনের সময় তার মন অন্যদিকে ঘোরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে সন্দেহ করে ঝামেলা বাধিয়ে বসবে !
মাথা দোলালেন চিন্তিত কনসাল। হ্যাঁ। তা সে করতে পারে। এইজন্যে কমোডর পাঠিয়েছেন আপনাদের?’
“না। ওয়ার্নিও ইস্যু করতে দেরি হলে যে ভয়াবহ অবস্থা হবে, তা জেনে চুপ করে বসে থাকতে পারিনি আমরা। তাই নিজেরাই এসেছি।’ ‘আই সী! কমোডরের কোন চিঠি—
‘না। তবে তিনি বলেছেন, সেরারিয়েরকে যদি কেউ প্রভাবিত করতে পারে, সে আপনি।’
‘বুঝলাম। কিন্তু অফিশিয়াল কোন অনুরোধ না পেলে আমিই বা আগ বাড়িয়ে কিছু করতে যাব কোন্ ভরসায়? অন্তত একটা টেলিফোনও তো করতে পারতেন কমেন্টের।
“আমি বলেছি তাঁকে সে কথা। কিন্তু বেজের সব ফোন ট্যাপ করা হচ্ছে বলে ঝুঁকি নিতে চাননি তিনি।’
কিছুক্ষণ নীরবে টাক চুলকালেন কনসাল। ‘আমি এ দ্বীপে আছি অনেকদিন । কখনও বড় হারিকেন দেখিনি। শুনেছি শেষ যে বড় হারিকেন বয়ে গেছে দ্বীপের ওপর দিয়ে, সেটা বহুবছর আগের কথা।
মাথা ঝাঁকাল জ্যাকবসন ঠিকই শুনেছেন। সালটা বলল। ‘দেখুন তাহলে, এতগুলো যুগ পেরিয়ে গেল…
‘কখনও হাত ভেঙেছে আপনার, মিস্টার ফুলারটন?” রানার আচমকা প্রশ্নে কপাল কুঁচকে উঠল তাঁর। ‘অ্যা’ ‘অথবা মাথা ফেটেছে?’
‘হ্যা—তা,’ ঠোঁট চাটলেন কনসাল। ‘হাত একরার ভেঙেছিল অবশ্য, আমি তখন খুব ছোট।’
কত বছর আগে হবে, পঞ্চাশ?’ ঝুঁকে বসল ও।
‘তা হবে। কিন্তু এখানে সে প্রশ্ন…
‘পঞ্চাশ বছর আগে ভেঙেছে বলে আপনি কি কোন গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারেন কালই আবার ভাঙবে না ওটা?’
এক মুহূর্ত চুপ করে থাকলেন কনসাল। ইউ হ্যাড মেড ইওর পয়েন্ট, ইয়াংম্যান। জ্যাকসনের দিকে ঘুরলেন। আপনি তাহলে হারিকেনের ‘ব্যাপারে সিরিয়াস’
‘একশো ভাগ।’ জোর নিয়ে বলল সে।
“হুম! তাহলে বরং খুলে বলুন।”
আধঘণ্টা পর, রুমের মধ্যে অস্থির চিত্তে পায়চারি করছেন কনসাল। কপালে গভীর ভাঁজ। হাত পিছনে রাঁধা, নজর কার্পেটে। পায়চারি নয়, রানার মনে হলো লেফট-রাইট করছেন অভদ্রলোক। অনেকক্ষণ পর ব্রেক কষলেন তিনি। অস্ফুটে বললেন, ‘সর্বনাশ! খবরটা জানানো উচিত প্রেসিডেন্টকে। কিন্তু…এই পরিস্থিতিতে তাঁর সাথে দেখা করা যাবে কি না….
চেষ্টা করে দেখতে পারি আমরা, ‘ রানা বলল।
“নিশ্চই! যেতে হবে প্যালেসে, কিন্তু সবার যাওয়া চলবে না।’ “আমি যাব আপনার সাথে,’ তাড়াতাড়ি বলে উঠল ও।
‘আপনি।’ অবাক হলেন কনসাল ।
‘হ্যাঁ। জ্যাকসন অনেকদিন থেকে চাকরি করছে ক্যাপ সারাতে, নিশ্চয়ই প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ কেউ না কেউ চেনে ওকে। তেমন কেউ ওখানে যদি থাকে, আপনি সমস্যায় পড়ে যেতে পারেন। প্রশ্ন উঠতে পারে। আমি গেলে উঠবে না। আপনি আমাকে ব্রিটিশ কনসুলেটের ওয়েনারম্যান বলে পরিচয় করিয়ে দিতে পারবেন ওখানে প্রয়োজন দেখলে।’
“কিন্তু গেলেই তো চলবে না। প্রেসিডেন্টকে পুরো পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করার দরকার হতে পারে।
“সেটাও পারব আমি। কাল থেকে শুনে শুনে সব মুখস্থ হয়ে গেছে।’ হাসি ফুটল রানার মুখে। ‘সমস্যা হবে না।’
“কিন্তু…’ কিছু বলতে গিয়ে বাধা পেল জ্যাকবসন ।
‘আমিই যাচ্ছি,’ দৃঢ় কণ্ঠে রানা বলল। ‘তোমার যাওয়ায় ঝুঁকি আছে। তুমি হোটেলে চলে যাও। আমি কাজ সেরে আসছি।’
সেনাবাহিনীর দুটো ব্যাটালিয়ন চারদিক থেকে ঘিরে রেখেছে প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেস। ছাদে বড় বড় কয়েকটা ফ্লাড লাইট জ্বলছে, দিনের মত আলো হয়ে আছে চারদিক। অ্যাপ্রোচ রোডের তিন গার্ড সাব-পোস্টে গাড়ি দাঁড় করাতে হলো শোফারকে, আসার কারণ ব্যাখ্যা করতে হলো ফুলারটনকে। তারপর একসময় মেইন এন্ট্রান্সের শেষ গার্ড পোস্টে পৌঁছল গাড়ি। ততক্ষণে বেশ বিরক্ত হয়ে উঠেছেন কনসাল।
“চীফ অন্ত প্রটোকল, মিস্টার হিপোলাইটের সাথে দেখা করতে চাই আমি, ‘ তরুণ গার্ড অফিসারকে বললেন তিনি।
তিনি কি আপনার সাথে দেখা করতে আগ্রহী?’ নিরীহ চেহারা করে জানতে চাইল অফিসার। হাসল দাঁত বের করে।
‘আমি ব্রিটিশ কনসাল,’ দৃঢ় কণ্ঠে বললেন বৃদ্ধ। ‘এই মুহূর্তে তাঁর সাথে দেখা করার ব্যবস্থা করুন। নইলে তিনি তো বটেই, প্রেসিডেন্ট সেরারিয়েরও খুবই অসন্তুষ্ট হবেন। হারি ইট আপ, ম্যান।’
প্রেসিডেন্টের নাম শুনেই হাসি শুকিয়ে গেল অফিসারের, গম্ভীর গলার “এখানে অপেক্ষা করুন,’ বলে প্রাসাদের ভেতরে চলে গেল। যেমন দ্রুত্ গেল, ফিরেও এল তেমনি দ্রুত। ‘উনি দেখা করতে রাজি হয়েছেন, বলে পাশে দাঁড়ানো দুই সৈনিককে ইঙ্গিত করল মাথা ঝাঁকিয়ে। সার্চ করো।’
কঠিন একজোড়া হাত অনুভব করল মাসুদ রানা, সারাদেহে বিচরণ করে বেড়াচ্ছে। যেখানে-সেখানে সজোরে চাপড় মেরে ‘সার্চ’ করছে। ও হজম করে নিলেও কনসাল পারলেন না। ‘অসভ্যর বাচ্চারা বিড়বিড় করতে লাগলেন। ‘আমাকে সার্চ করা। আমি কি স্পাই? দাঁড়াও…. পিছন থেকে মাঝপিঠে বেমক্কা এক গুঁতো খেয়ে ধুপ্ ধাপ পা ফেলে কয়েক কদম এগিয়ে যেতে বাধ্য হলেন তিনি। ভেতরে যাওয়ার অনুমতি। ঘুরে কটমট করে তাকালেন অফিসারের দিকে, চোখাচোখি হতে হাসল সে। তেমনি সরল হাসি, যেন বোঝে না কিছু।
‘বাদ দিন, নিজের গুঁতো সামলে রানা বলল। ‘মাথা গরম করে লাভ নেই। চলুন, আসল কাজ সেরে বাকি মানটুকু নিয়ে কেটে পড়ি।
আলোয় আলোয় ঝলমল করছে প্রটোকল অফিসারের বড়, বিলাসবহুল রুম।
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!