যে গল্পে হৃদয় কাঁপে – মুহাম্মদ মফিজুল ইসলাম – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ মুহাম্মদ মফিজুল ইসলাম
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১০১
যে গল্পে হৃদয় কাঁপে – বইটির এক ঝলকঃ
ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৩২ সালে। ঐতিহ্যবাহী নগরী মাদায়েনে। যার বর্তমান নাম সালমান পার্ক ।
সালমান পার্ক একটি প্রাচীন জনপদ। এর অবস্থান ইরাকের রাজধানী বাগদাদ থেকে ৪০ মাইল দূরে। এক সময় এটি ছিল জনবহুল নগরী। কিন্তু কালক্রমে ছোট হতে হতে এটি আজ ছোট একটি বস্তির আকারে এসে ঠেকেছে।
সালমান পার্কে সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে সর্ব প্রথম কবরস্থ হন বিখ্যাত সাহাবী হযরত সালমান ফারসী (রা.)। এর প্রায় তেরশত বছর পর সেখানে সমাহিত হন আরো দুজন সাহাবী। তন্মধ্যে একজন হলেন হযরত হুযাইফা (রা.) এবং অপর জন হলেন হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ আনসারী (রা.)।
শেষোক্ত দুজন সাহাবীর কবর প্রথমে সালমান পার্কে ছিল না। তাদের কবর ছিল সেখান থেকে দু ফার্লং দূরে একটা অনাবাদী জায়গায়। যার অতি নিকট দিয়ে কলকল রবে বয়ে চলছে ঐতিহাসিক দজলা নদী। দীর্ঘ দিন পর একটি বিশেষ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তাদেরকে সেখান থেকে সরিয়ে এনে সালমান পার্কে দাফন করা হয়।
যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদেরকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছিল সেটি ছিল বিগত শতাব্দীর শ্রেষ্ঠতম বিস্ময়কর ঘটনা। আসুন এবার আমরা উক্ত ঘটনাটি বিস্তারিত শ্রবণ করি এবং সূরা বাকারায় বর্ণিত নিম্নোক্ত আয়াতটির বাস্তবতা। প্রত্যক্ষ করি ।
“যারা আল্লাহর পথে নিহত হয় তাদেরকে তোমরা মৃত বলো না। প্রকৃতপক্ষে তারা জীবিত । কিন্তু তোমরা তা অনুভব করতে পার না।” ‘আয়াত নং ১৫৪) তখন ইরাকের বাদশাহ ছিলেন বাদশাহ ফয়সাল। একদিন তিনি ঘুমিয়ে আছেন। হঠাৎ স্বপ্নে দেখেন হযরত হুযাইফা (রা.) তাঁকে বলছেন- আমাদেরকে বর্তমান অবস্থান থেকে সরিয়ে অন্যত্র কোনো স্থানে দাফন করা হোক। কেননা আমার কবরে পানি জমতে শুরু করেছে আর হযরত জাবের (রা.) এর কবরে পানি প্রবেশ করার উপক্রম হয়েছে।
বাদশাহ ফয়সাল ব্যস্ত মানুষ। বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে পরদিন তিনি স্বপ্নের কথা একেবারেই ভুলে যান। দ্বিতীয় রাতেও তিনি একই স্বপ্ন দেখেন । কিন্তু নানাবিধ ঝামেলার দরুণ সেদিনও স্বপ্নের নির্দেশ পালন করা তার পক্ষে সম্ভব হয়নি ।
তৃতীয় রাতে হযরত হুযাইফা (রা.) ইরাকের প্রধান মুফতি সাহেবকে স্বপ্ন যোগে দেখা দিয়ে এই একই নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে এও বলেন যে, আমি পর পর দু রাত ধরে বাদশাহকে এ ব্যাপারটি অবহিত করে আসছি। কিন্তু তিনি দিনের বেলায় ভুলে যাওয়ার কারণে এ পর্যন্ত কোনো রকম পদক্ষেপ নিতে সক্ষম হননি। এখন আপনার দায়িত্ব হচ্ছে, আমার নির্দেশটি তাকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া এবং যথাশীঘ্র আমাদেরকে স্থানান্তর করার ব্যবস্থা করা।
পরদিন সকাল হওয়া মাত্রই মুফতি সাহেব প্রধানমন্ত্রী নূরী আস সাঈদকে টেলিফোন করলেন। বললেন, আমি আপনার কাছে একটি বিশেষ প্রয়োজনে এক্ষুণি আসছি। আপনার কোনো কাজ থাকলে একটু পরে বের হবেন। প্রধানমন্ত্রী বললেন, ঠিক আছে আপনি আসুন। আমি আপনার অপেক্ষায় থাকলাম ।
নূরীর সাথে সাক্ষাত হলে মুফতি সাহেব স্বপ্নের বিস্তারিত বিবরণ পেশ করেন। প্রধানমন্ত্রী তৎক্ষণাত বাদশাহের সাথে তার সাক্ষাতের সুযোগ করে দেন এবং নিজেও তার সাথে সেখানে উপস্থিত হন। মুফতি সাহেবের মুখ থেকে সবকিছু শুনে বাদশাহ বললেন, হ্যাঁ, আমি পর পর দু রাত এ স্বপ্ন দেখেছি । প্রতিরাতই তিনি আমাকে এ নির্দেশ দিয়েছেন। আমি তো ভেবেই পাচ্ছিলাম না- এ আমি কি দেখতে পাচ্ছি। আপনি এসে ভালোই করেছেন। এখন আপনিই বলুন, এমতাবস্থায় আমাদের কি করণীয়।
মুফতি সাহেব বললেন, তিনি তো স্পষ্ট করেই সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন। অতএব, আমি মনে করি সত্ত্বর তাঁর আদেশ পালন করাই হবে আমাদের কর্তব্য।
বাদশাহ বললেন, ঠিক আছে, তাহলে আপনি আগে স্থানান্তর করার ফতোয়াটা দিন । মুফতি সাহেব তখন সেখানে বসেই সাহাবায়ে কেরামের কবর স্থানান্তর সংক্রান্ত ফতোয়া লিখে দেন। এরপর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, সামনের কুরবানির ঈদের দিন জোহরের নামাজের পর সম্মানিত দুই সাহাবীর কবর খুঁড়ে তাদের লাশ মুবারক তুলে অন্য কোনো নিরাপদ স্থানে দাফন করা হবে।
ইরাকের পত্র-পত্রিকায় খবরটি প্রচারিত হওয়ার সাথে সাথে সমগ্র ইরাকে আনন্দের ঢেউ খেলে যায়। তাছাড়া রয়টারসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলো মুহূর্তের মধ্যে খবরটি গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়।
তখন বিশ্বের অসংখ্য ধর্ম প্রাণ মুসলমান ছিলেন মক্কা নগরীতে সমবেত । কারণ সময়টা ছিল হজের মৌসুম। এ সংবাদ শ্রবণ করে হাজীগণ বাদশাহ ফয়সালের কাছে আবেদন করলেন আমরাও মহান সাহাবীদ্বয়ের চেহারা দর্শনে আগ্রহী। অনুগ্রহ পূর্বক তারিখটা আরো কদিন পিছিয়ে দেওয়া হোক। এদিকে ইরান, তুরস্ক, লেবানন, ফিলিস্তিন, হেজাজ, বুলগেরিয়া, উত্তর আফ্রিকা, রাশিয়া, ভারত প্রভৃতি রাষ্ট্র থেকে বাদশাহ ফয়সালের নিকট একই আবেদন সম্বলিত অসংখ্য তারবার্তা আসতে থাকে ।
বাদশাহ ফয়সাল পড়লেন মহা বিপাকে। একদিকে গোটা মুসলিম বিশ্বের তারিখ পিছানোর জোড়ালো অনুরোধ, আর অন্য দিকে দ্রুত লাশ স্থানান্তর করার স্বাপ্নিক নির্দেশ। এমতাবস্থায় কি করবেন তিনি? তাঁর চিন্তা হলো, যদি সত্যি সত্যি মাজারে পানি এসে থাকে, তবে তো বিলম্বের কারণে মাজারদ্বয়ের ক্ষতি হবে।
অবশেষে এ ব্যাপারে পরামর্শ হলো। বহু আলোচনা পর্যালোচনার পর সিদ্ধান্ত হলো আপাততঃ কিছুদিন যাতে কবরের ভিতর পানি প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য নদীর দিক থেকে দশফুট দূরে একটা গভীর গর্ত খনন করে সেখানে কাঁকর ফেলা হবে। আর সারা বিশ্বের মুসলমানদের আগ্রহের প্রতি সম্মান প্রদর্শনপূর্বক পূর্বের তারিখটি আরো দশদিন পিছিয়ে দেওয়া হল। অর্থাৎ লাশ স্থানান্তরের কাজটি ঈদের দশদিন পর সোমবার দুপুর বারটায় সম্পন্ন করা হবে ইনশাআল্লাহ ।
এ ঘোষণার পর ক’দিনের মধ্যেই সালমান পার্কের ছোট্ট বস্তিটি লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। অসংখ্য জ্ঞানী-গুণী, রাষ্ট্রদূত, উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা ও লক্ষ লক্ষ রাসূল প্রেমিকের ঢল নামে সালমান পার্কে। ফলে জৌলুসের দিক দিয়ে জায়গাটা আরেক বাগদাদে পরিণত হয়। অতিথি পরায়ণ প্রতিটি মুসলিম পরিবার মুখর হয়ে উঠে দর্শনার্থীদের পদ চারণায়। তাঁবুয় তাঁবুয় পরিপূর্ণ হয়ে যায় মাদায়েনের ঐতিহাসিক মাঠটিও। একটি গ্রহণযোগ্য হিসেব অনুযায়ী আগত দর্শনার্থীদের সংখ্যা ছিল পাঁচ লাখ ।
শেষ পর্যন্ত সেই প্রতীক্ষিত দিনটি এসে গেল। লক্ষ লক্ষ জনতার উপস্থিতিতে কবর খোঁড়া হলো। দেখা গেল সত্যিই হযরত হুযাইফা (রা.) এর কবরে কিছু পানি জমে গেছে এবং হযরত জাবের (রা.) এর কবরে কিছুটা আদ্রতা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় প্রত্যক্ষ করে সমবেত জনতা আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে। তাদের কণ্ঠে বারবার উচ্চারিত হয় আল্লাহু আকবার ধ্বনি। চোখে নেমে আসে অশ্রুর বন্যা। তাদের এ কান্নায় শরিক হতে সালমান পার্কের পবিত্র ভূমিও যেন আবেগাপ্লুত হয়ে কাঁদছে।
বাদশাহ ফয়সালের নেতৃত্বে তাঁর মন্ত্রী ও কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিভিন্ন দেশ থেকে আগত রাষ্ট্রদূতগণের সহযোগিতায় প্রথমে হযরত হুযাইফা (রা.) এর লাশ মোবারক কবর থেকে ক্রেন দ্বারা তোলা হলো। ক্রেনের সাহায্যে তাঁর পবিত্র লাশটি কবর থেকে এমনভাবে উঠানো হয় যে, মোবারক লাশটি আপনাতেই ক্রেনের মাথায় ফিট করে রাখা ট্রেচারে এসে পৌঁছায়। অতঃপর ট্রেচারটি ক্রেন থেকে পৃথক করে নেওয়া হলে বাদশাহ ফয়সাল, মুফতি সাহেব, সিরিয়া ও তুরস্কের নির্বাচিত মন্ত্রীবর্গ এবং মিশরের যুবরাজ শাহ ফারুক অত্যন্ত যত্ন ও তাজীম সহকারে লাশ মোবারককে তুলে এনে একটি কফিনের ভিতর রাখেন। অতঃপর একই ভাবে হযরত জাবের (রা.) এর পবিত্র লাশটিকেও তুলে আনা হয় ।
আশ্চর্যের বিষয় হলো, শত শত বৎসর কেটে গেলেও শুধু লাশ মোবারকই নয়, কাফন বাধার ফিতাগুলোর মধ্যেও কোনো প্রকার পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগেনি। লাশ দুটি দেখে কেউ কল্পনাও করতে পারছিল না যে, এগুলো দীর্ঘ তেরশত বছরের প্রাচীন লাশ। আরো বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, তাদের চোখগুলো ছিল খোলা। সেই খোলা চোখ থেকে এমন রহস্যজনক অপার্থিব জ্যোতি ঠিকরে পড়ছিল যে, অনেকেই তাদের চোখ ভালভাবে দেখার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু চোখ থেকে বেরিয়ে আসা অতি উজ্জ্বল আলোর কারণে কেউই দৃষ্টি স্থির রাখতে পারছিলেন না ।
এ অবস্থা প্রত্যক্ষ করে বড় বড় ডাক্তারগণ হতবাক হয়ে যান। এ সময় আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জনৈক জার্মান চক্ষু বিশেষজ্ঞ অত্যন্ত আগ্রহ সহকারে সবকিছু খুঁটে খুঁটে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখে যাচ্ছিলেন। এ দৃশ্য তার উপর এমনই প্রভাব বিস্তার করে যে, পবিত্র লাশ দুটি কফিনের ভিতর রাখার সাথে সাথে তিনি
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!