জারের গুপ্তধন – আবুল আসাদ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ আবুল আসাদ
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৭৭
জারের গুপ্তধন – বইটির এক ঝলকঃ
‘কেন দেরি করালেন?’
‘আমি চাই না তারা পিছু নিক।’
‘বুঝেছি।’ কেলা এলভার চোখে সপ্রশংস দৃষ্টি।
আহমদ মুসা গাড়ি স্টার্ট দেবার আগে পকেট থেকে একটা রিভলভার বের করে পেছন দিকে তাকিয়ে ছুঁড়ে দিল কেলা এলভার কোলে। বলল, ‘আপনার রিভলভার। ‘
রিভলভারের দিকে একবার তাকিয়ে কেলা এলভা নিজের পকেটে হাত দিল। রিভলভার পেল না। বিস্ময় ফুটে উঠল তার চোখে-মুখে। বলল, “আমার পকেট থেকে রিভলভার কিভাবে আপনার কাছে গেল?”
“যখন আমি আপনার পেছন থেকে রিভলভার তাক করি আপনার মাথায়, তখনই আপনার পকেট থেকে রিভলভার তুলে নেই। আপনি খেয়াল করেননি, মনোযোগ অন্যদিকে থাকার কারণে।”
‘নেয়ার পর রিভলভার আবার ফেরত দিচ্ছেন কেন?”
‘অন্যদের নেয়া হয়েছে, তাই আপনারও নেয়া হয়েছিল। অন্যরা এখানে নেই, তাই আপনারটা ফেরত দেয়া হলো।’
‘তার মানে আমাকে আপনাদের কোন ভয় নেই! কেন?”
‘ভয় নেই তা নয়, তবে বিদেশে যখন এসেছি, তখন কোথাও না কোথাও একটা আস্থার স্থান আমরা অবশ্যই খুঁজে পেতে চাইব।’
‘রিভলভার উঁচিয়ে কি এ আস্থা কেউ অর্জন করতে পারে?”
“সে জন্যেই তো আপনার রিভলভার ফেরত দিলাম।’ ঈষৎ হেসে বলল আহমদ মুসা।
“আমার ধারণার চেয়েও আপনি বুদ্ধিমান। কিন্তু আমার লোকদের হেনস্থা করে, , আমাকে রিভলভারের মুখে ধরে এনে আপনি কোন সাহায্যের আশা করতে পারেন না। নিকোলাস বুখারিন বললেই কি আমরা আপনাকে গ্রেফতার করতাম মনে করেন?’
আহমদ মুসা হাসল। বলল, ‘আপনারা আমার কোন ক্ষতি করবেন বলে আমি রিভলভার, ওয়্যারলেস সেট কেড়ে নিয়ে ও গাড়ির টায়ার নষ্ট করে এবং আপনাকে ধরে এনে আপনাদের কষ্ট দিতে চাইনি। আসলে আপনাদেরকে একটা বিপদ থেকে আমি বাঁচিয়েছি।’
‘কেমন?’ কেলা এলভার চোখে-মুখে বিস্ময়।
‘আমি যদি কিছু না করতাম, তাহলে আমাদেরকে গ্রেফতার করতে হতো আপনাদের।’
“কেন?”
“গ্রেফতার না করলে আমাদের ছেড়ে দেয়ার দায়ে আপনারা অভিযুক্ত হতেন। গ্রেট বিয়ার, এমনকি রুশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রবল চাপ আসতো আপনাদের উপর। সুতরাং, আমি যা করেছি, তাতে আপনারাও বেঁচেছেন, আমরাও বেঁচেছি।’
“বুঝতে পারছি মিঃ আহমদ মুসা, কেন আপনি অজেয়। কিন্তু আপনারা বেঁচে গেছেন মনে করবেন না। আপনি পুলিশ অফিসারের ওয়াকিটকি নিয়ে এসেছেন। কিন্তু আসল ওয়্যারলেস তার পকেটেই রয়ে গেছে।”
‘ধন্যবাদ এই মূল্যবান ইনফরমেশনের জন্যে। আপনি আমাদের পাশে থাকা পর্যন্ত আমাদের কোন চিন্তা নেই।’ বলল আহমদ মুসা গাড়ির স্পীড বাড়িয়ে দিতে দিতে।
‘আমি কি আপনাদেরকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছি?” বলল কেলা এলভা অনেকটা শক্ত কণ্ঠে।
‘প্রতিশ্রুতি দেননি। কিন্তু আমরা আপনার সাহায্য পাব।’
আহমদ মুসা তার গাড়ির স্পীড বাড়ানোর সাথে সাথে গাড়িটি একেবারে অ্যাবাউট টার্ন করে পুব দিকে যাওয়া শুরু করল।
“কি ব্যাপার, কোথায় যাচ্ছেন?”
‘পূর্ব দিকে।’
‘সেতো দেখতেই পাচ্ছি। কিন্তু কোথায় যাচ্ছেন?”
‘আপাতত তারতু, তারপর কালান্তি।’
‘তারপর লেকের পথে রাশিয়ায় প্রবেশ?’ বলল কেলা এলভা। “ঠিক বলেছেন।’ চোখে-মুখে বিস্ময় ফুটে উঠেছে কেলা এলভার। আহমদ মুসার ক্ষমতা সম্পর্কে সে অবহিত। কিন্তু একটি ভিনদেশের মানচিত্র সম্পর্কে তার এত স্বচ্ছ ধারণা এবং এমন দ্রুত এমন একটি রুটের সিদ্ধান্ত সে নিতে পারে! অনেক এস্টোনীয় নাগরিকই জানে না যে, রাশিয়ায় অবৈধ প্রবেশের এটাই সবচেয়ে নিরাপদ পথ। লেক ‘পাইপাস’ অনেকটাই নির্জন। পশ্চিম তীরের উত্তরাংশের একটা অংশ ছাড়া লেক পাইপাসের গোটা তাঁরই সাধারণ ব্যবহারের অযোগ্য। রুশ পূর্ব তীরে কোন নগর-নগরী তো দূরে থাক, রাস্তাঘাটও গড়ে উঠতে পারেনি। ‘সত্যিই আমি চমৎকৃত। রাশিয়ায় অবৈধ প্রবেশের সবচেয়ে উত্তম পথ বেছে নিয়েছেন। লেক ‘পাইপাসে’ জেলেদের নৌকা ভাড়া করে আপনি একদম নির্বিবাদে রাশিয়ার লেক পুশকভে প্রবেশ করতে পারেন। তারপর লেক পুশকভের তীরে উঠে বা পুশকভ নগরী হয়ে রাশিয়ার যেথা ইচ্ছা যেতে পারেন।
একটু থামল কেলা এলভা। তারপর বলল, ‘আমার প্রশ্ন দু’টি, এক, এই গোপন পথের কথা আপনি জানলেন কি করে? দুই, আপনার মত আদর্শবাদী লোক অবৈধ প্রবেশের মত দুর্বল ভিত্তি নিয়ে রাশিয়ায় যাচ্ছেন কেন?”
আহমদ মুসা হাসল। স্টিয়ারিং-এ দু’টি হাত এবং চোখ সামনে প্রসারিত রেখেই ধীরে ধীরে বলল, ‘সাইবেরিয়ার রুশ বন্দী শিবির থেকে পলাতক এস্টোনীয় লেখক এমাস্তে এলভার লেখা ‘দি লং নাইট’-এর ইংরেজি অনুবাদ পড়েছি। তাতে এই পথের বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। এই পথেই এমাস্তে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে পালিয়েছিলেন।’
কেলা এলভার চোখে আনন্দের স্ফূরণ। বলল, “আপনি এমাস্তে এলভার
বই পড়েছেন! ভালো লেগেছে আপনার?”
“সব মানুষেরই ভালো লাগার কথা। চিরন্তন এক কাহিনী। ‘
‘বইটির কোন দিক আপনার ভালো লেগেছে?’
‘এস্টোনীয় জনসংখ্যার এক-দশমাংশ মানুষ সাইবেরিয়ার সোভিয়েত বন্দী শিবিরে কিভাবে হারিয়ে গেল, তার এক মর্মন্তুদ চিত্র গ্রন্থটি। সবচেয়ে ভালো লেগেছে একজন পরাধীন দেশপ্রেমিকের অন্তর্জালার দিকটি।’ ধন্যবাদ আপনাকে। ক্ষুদ্র এক জাতির সাহিত্য আপনি এইভাবে পড়েছেন?’
‘সংখ্যার কারণে কোন জাতি ক্ষুদ্র হয় না। হৃদয়ের কারণে ক্ষুদ্র জনসংখ্যার জাতিও বিশ্বে বড় আসন পেতে পারে।’
‘সব জাতির ক্ষেত্রেই কি আপনার এই কথা প্রযোজ্য?”
“হৃদয়বৃত্তি একটা মানবিক ধর্ম, যদি তা প্রবৃত্তির অমানবিক কোন চাহিদা দ্বারা কলুষিত না হয়। এই মানবধর্ম স্রষ্টার দেয়া একটা নিয়ামাত। এর কোন দেশ- কাল-পাত্র নেই।’
“আপনি দেখছি পরম মানবতাবাদী, উদার। কিন্তু শুনেছি যে, চরম সাম্প্রদায়িক আপনি?”
“তারা ঠিকই বলেছে, স্রষ্টা যতটুকু সাম্প্রদায়িক, আমি ততটা সাম্প্রদায়িক অবশ্যই।’
হাসল কেলা এলভা। বলল, ‘কথাটা মজার, কিন্তু বুঝলাম না।
‘স্রষ্টা তার প্রত্যেকটি সৃষ্টিকে একটা সুনির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে রেখেছেন। কারও পক্ষে এই নিয়মের অন্যথা করার সুযোগ নেই। কোন উপায় নেই অসাম্প্রদায়িক বা ‘আনলফুল’ হবার। সুতরাং স্রষ্টা অসাম্প্রদায়িক নন, আমিও নই।’
“কিন্তু মিঃ আহমদ মুসা, স্রষ্টার সেই আইন বা প্রকৃতিগত দেহতাত্ত্বিক ও বস্তুগত চরিত্র নিয়ে সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ কোথাও নেই। অভিযোগ এসেছে মানুষের স্বাধীন জীবন পরিচালনার উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ নিয়ে।’
“আচ্ছা বলুন তো, নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন হয় কোথায়?”
“যেখানে আইন ভংগের সম্ভাবনা থাকে, ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে, কোন ধরনের সংকটের সম্ভাবনা থাকে, ইত্যাদি।’
‘তাহলে মানুষের জীবন পরিচালনায় এসব কিছুই আছে কিনা?’
‘আছে, অবশ্যই। এ জন্যেই তো রাষ্ট্র, আইন, সংবিধান- এসব কিছু।’ ‘রাষ্ট্র, আইন ও সংবিধানের নিয়ন্ত্রণ স্থান, কাল ও পাত্রের পরিবর্তনের সাথে সাথে পরিবর্তনশীল। এ নিয়ন্ত্রণ সংকীর্ণ গণ্ডীর ও সীমাবদ্ধ বুদ্ধির বলেই এই পরিবর্তন ঘটে। অথচ মানুষের জীবন একটা অব্যাহত বিষয়। এর জন্যে একটা কালোত্তীর্ণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার প্রয়োজন আছে কিনা?”
‘সত্যিই কি প্রয়োজন আছে?’
“জীবের বিশেষ করে মানুষেরও বস্তুগত দিক নিয়মের অধীন বলে, তার জীবন পরিচালনা একটা স্থায়ী নিয়মের অধীন হবে না কেন?”
‘মানুষের দেহগত দিকের মত তার জীবন পরিচালনাকে তাহলে একটা অলংঘনীয় বা স্থায়ী নিয়মের অধীন করে দেয়া হয়নি কেন?”
‘মানুষকে বিবেক-বুদ্ধি দেয়া হয়েছে বলেই এবং তাকে ভালো-মন্দ পার্থক্য করার বিচারবুদ্ধি দেয়া হয়েছে বলেই।’
‘যদি তা-ই হয়, তাহলে মানুষের জীবন পরিচালনার নিয়ন্ত্রণ তার বিবেক ও বিচারবুদ্ধির উপর ছেড়ে দেয়াই তো উচিত। খোদায়ী নিয়ন্ত্রণের আবার ব্যবস্থা কেন?”
‘মানুষ অতীত ও বর্তমান সম্পর্কে খুব অল্পই জানে এবং ভবিষ্যত সম্পর্কে কিছুই জানে না। মানুষের এই সীমিত জ্ঞান নির্ভর বিচারবুদ্ধির পক্ষে নিজেদের জীবনকে ব্যক্তিগত ও সামষ্টিকভাবে কল্যাণ ও মুক্তির পথে পরিচালনা করা সম্ভব নয়। সমুদের দিক নির্ণয়ের জন্যে যেমন আকাশের তারা, কম্পাস ও বাতিঘরের প্রয়োজন, স্থলপথে যেমন ম্যাপ ও রোড সাইনের প্রয়োজন হয়, তেমনি মানুষের আদর্শ, সৃষ্টি ও লক্ষ্যগত জীবন পরিচালনার জন্যে দিক-নির্দেশিকার প্রয়োজন আছে, যার অভাবে মানুষ লক্ষ্যচ্যুত হয়ে অশান্তি-অবিচার, জুলুম- অত্যাচারের ধ্বংসকরী পাঁকে নিমজ্জিত হয়ে যেতে পারে। এই দিক-নির্দেশিকারই নাম খোদায়ী জীবন বিধান। ‘
“মিঃ আহমদ মুসা, জানতাম আপনি বিপ্লবী, কিন্তু এখন দেখছি আপনি দার্শনিক বা মিশনারীও।’
একথা বলে একটা দম নিয়েই বলল কেলা এলভা, ‘খোদায়ী জীবন বিধান যাকে বলছেন, তাদের মধ্যেই কি ঝগড়া কম! এর কি করবেন?” ‘মানুষের বিচারবুদ্ধি যদি স্বাধীনভাবে কাজ করে, তাহলে এ ঝগড়া বাঁধতে পারে না।’
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!