হলুদ হিমু কালো র‍্যাব – হুমায়ূন আহমেদ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

হলুদ হিমু কালো র‍্যাব – হুমায়ূন আহমেদ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ হুমায়ূন আহমেদ

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৪৭

হলুদ হিমু কালো র‍্যাব – বইটির এক ঝলকঃ

ফকির সাহেব! জি স্যার।
আপনি কি দুপুর পর্যন্ত এখানেই থাকবেন, না জায়গা বদলাবেন ? ফকির চুপ করে আছে। তার দৃষ্টি তীক্ষ্ণ।
আপনি যদি দুপুর পর্যন্ত এখানে থাকে, তাহলে আমার সঙ্গে খানা খাবেন।
ঠিক আছে?
কী জন্য ?
আপনি ভিক্ষুক মানুষ, আপনাকে খেতে বলেছি আপনি খাবেন। প্রশ্ন কিসের ? দাওয়াত কি কবুল করেছেন।
ভিখিরি জবাব দিল না। তার ভাবভঙ্গি বলছে সে দাওয়াত কবুল করে নি। আমি হাঁটা দিলাম। একবার পেছনে তাকালাম। গায়ক ফকির পান বন্ধ করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। এত দূর থেকে পরিষ্কার বোঝা তারপরেও মনে হলো তার ভুরু এখনো কুঁচকানো।
যাচ্ছে না,
মাজেদা খালা বললেন, অ্যাই, তোকে র‍্যাব ধরেছিল নাকি ? গভীর রাতে টেলিফোন। আমার তো কলিজা নড়ে গিয়েছিল। র‍্যাব তোকে কী করল ? ছেড়ে দিল।
মারধোর করে নাইा।
মারধোর করল না এটা কেমন কথা! পুলিশে ধরলেও তো মেরে তক্তা বানিয়ে দেয়। তোকে মারল না কেন ?
আমি তো জানি না খালা। জিজ্ঞেস করি নি। তোমার কাছে জরুরি কাজে এসেছি। কাজটা আগে সারি। এই যে দুটা ফ্লান্ত দেখছ, একটা ফ্লাঙ্ক ভর্তি করে চা বানিয়ে দেবে, আরেকটা ফ্লাঙ্ক ভর্তি কফি।
খালা বললেন, র‍্যাব তাহলে ঠিকই বলেছিল, তুই ফেরিওয়ালা হয়েছিল। চা-কফি ফেরি করিস। প্রথমে আমি র‍্যাবের কথা বিশ্বাস করি নি। তুই সত্যি ফেরি করিস ?
কোথায় কোথায় যেখানে মানুষের আনাগোনা সেখানেই যাই। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাস?
যাই ।
গুড়। তাহলে তুই আমাকে একটা কাজ করে দিতে পারবি। ইউ আর দি পারসন। ঘন ঘন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাবি। চোখ-কান খোলা রাখবি।
কেন ?
মাজেদা খালা গলা নামিয়ে বললেন, তুই লক্ষ রাখবি তোর খালু সাহেব সেখানে যায় কি-না। আমাকে বলেছে যায় না। তবে আমি নিশ্চিত সে যায়। কীভাবে নিশ্চিত হলাম শোন। একদিন সে আমাকে বলল, ধানমণ্ডি লেকের পাড়ে হাঁটতে যাচ্ছি। আমি বললাম, যাও। সে ট্রেকস্যুট পরে বের হয়ে গেল। আমিও কিছুক্ষণ পরে উপস্থিত। তোর খালুর টিকির দেখাও পেলাম না।
আমিও খালার মতো গলা নামিয়ে বললাম, খালু সাহেবের কি কোনো প্রেম ট্রেম হয়েছে না-কি ?
মাজেদা খালা বিরক্ত হয়ে বললেন, এই বয়সে প্রেম হবে কী? অন্য ব্যাপার অন্য কী ব্যাপার ?
মেয়েদের সঙ্গে ছুকছুকানি করার রোগ হয়েছে। বুড়ো বয়সে এই রোগ হয়। বাজে টাইপের একটা মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক হয়েছে। মেয়েটার নাম ফ্লাওয়ার। মেয়ের নামও তুমি জ
জানব না কেন ? তোর খালু চলে ডালে ডালে, আমি চলি পাতায় পাতায়, আর তুই চলবি শিরায় শিরায়। তুই এই দু’জনের ছবি তুলে নিয়ে আসবি। ছবি যে তুলব ক্যামেরা পাব কোথায় ?
ক্যামেরা লাগবে না, আমি তোকে নতুন একটা মোবাইল দিয়ে দিচ্ছি। এই মোবাইলে ছবি উঠে। কীভাবে ছবি উঠে তোকে দেখিয়ে দেব। কাজ শেষ হলে মোবাইল ফেরত দিবি। অনেক দামি মোবাইল। আর শোন, ছবি যে তুলবি জুম করে ক্লোজে চলে যাবি। চেহারা যেন বোঝা যায়।
তুমি যা যা করতে বলবে সবই করব। এখন থেকে সকাল আটটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাব, রাত বারোটা পর্যন্ত ঘাপটি মেরে বসে থাকব। সাবধানে থাকবি তোকে যেন দেখে না ফেলে। দেখে ফেললে সাবধান হয়ে খানে। তুমি নিশ্চিত থাক খালা দেখলেও চিনাবে না। আমি যাব ছদ্মবেশে। ফকিরের ছদ্মবেশ নেব। মুখভর্তি দাড়িগোঁফ, কাঁধে ঝোলা। ঝোলার ভেতর মোবাইল ক্যামেরা। কণ্ঠে গান।
কণ্ঠে গান মানে ?
পান গেয়ে ভিক্ষা করব,
দিনের নবি মোস্তফায়
রাস্তা দিয়া ইইিটা যায়
দুম্বা একটা বান্ধা ছিল
গাছেরও তলায়।
মাজেদা খালা বললেন, তুই পুরো ব্যাপারটা ফাজলামি হিসেবে নিয়েছিস, আমি কিন্তু সিরিয়াস।
আমি বললাম, খালা, আমিও সিরিয়াস। সিরিয়াস বলেই ছদ্মবেশে যাচ্ছি। তুমি ফ্লাস্ক ভর্তি করে দাও, আমি এক্ষুনি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলে যাচ্ছি। খালু সাহেব এবং ফ্লাওয়াকে ধরা হবে লাল হাতে।
ধরা হবে লাল হাতে মানে কী?
ধরা হবে লাল হাতের মানে হলো- Caught red handed, খালা, আর দেরি করা যাবে না। এক্ষুনি রওনা হতে হবে।
মাজেদা খালা বললেন, তাড়াহুড়ার কিছু নাই। তোর খালু সাহেব কখন জগিং করতে যায় আমি জানি। যখনই সে জগিং ট্রেক গায়ে দিবে তখনই আমি তোকে মোবাইলে জানিয়ে দেব। তুই কি সত্যই দাড়িগোঁফ লাগিয়ে ফকির সাজবি
অবশ্যই। প্যাকেজ নাটকের একজন মেকাপম্যান আছেন আমার পরিচিত। রহমান মিয়া। আমি এক্ষুনি চলে যাচ্ছি তার কাছে। Action action, direct
action.
মেকাপ নেয়ার পর আমাকে দেখিয়ে যাবি না?
তোমার বাড়িতে আসা যাবে না। খালু সাহেব টের পেয়ে যাবেন।
তাও ঠিক।
তবে আমি নিজের ছবি তুলে রাখব। তুমি ছবি দেখে বুঝবে গেটাপ কেমন হয়েছে। এখন মোবাইলে ছবি কীভাবে উঠাতে হবে আমাকে শিখিয়ে দাও। খালা মহাউৎসাহে শেখাতে শুরু করলেন। তাঁকে কিশোরীদের মতো উত্তেজিত এবং আনন্দিত মনে হলো। তাঁর জীবনে আনন্দিত এবং উত্তেজিত হবার ঘটনা বেশি ঘটে না। এইবার ঘটল। ভাগ্যিস ফ্লাওয়ারের সঙ্গে খালু সাহেবের দেখা হয়েছে।
রহমান মিয়া খুবই আগ্রহ নিয়ে দাড়িগোঁফ দিয়ে আমাকে সাজিয়ে দিলেন। একটা দাঁতে রঙ লাগিয়ে দিলেন। হা করলে মনে হয় একটা দাঁত নেই। তাঁর কাছে সব জিনিসপত্রই আছে। একটা ছেঁড়া ময়লা লুপ্তি পরলাম, কালো গেঞ্জি গায়ে দিয়ে একশ’ পারসেন্ট ভিখিরি হয়ে গেলাম।
নিজের শিল্পকর্ম দেখে রহমান ভাই নিজেই মুগ্ধ। আনন্দিত গলায় বললেন, হিমু ভাই, কোনো শালার পুত আপনারে চিনবে না। যদি চিনতে পারে আমি মাটি খাব।
দুই হাতে দুই ফ্লাঙ্ক নিয়ে লেংচাতে লেংচাতে আমি মেসের সামনে এসে দাঁড়ালাম। নিমন্ত্রিত গায়ক ফকির এখনো আছেন। তবে তিনি গান গাইছেন না। আমাকে দেখে তিনি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইলেন। যেন জগতের অষ্টম আশ্চর্য চোখের সামনে দেখছেন। আমি লেংচাতে লেংচাতে তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে ভাঙা গলায় বললাম, আমারে চিনেছেন ?
গায়ক ফকির হ্যাঁ-সূচক মাথা নাড়ল । আমি বললাম, বলুন তো আমি কে ?
গায়ক ফকির ছোট একটা ভুল করে ফেলল। সে বলল, আপনি হিমু।
আমি বললাম, আমার নাম তো আপনার জানার কথা না। নাম জানলেন কীভাবে ?
গায়ক নিশ্চুপ।
আমি বললাম, আপনি কি র‍্যাবের কেউ ? ফকির সেজে মেলের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন ?
গায়ক এখনো চুপচাপ
আমি বললাম, আপনি আমার নিমন্ত্রিত অতিথি, চলুন খেতে যাই।
পায়ক নিঃশব্দে আমার পেছনে পেছনে আসছে। বেচারা আজ বড় ধরনের একটা ধাক্কা খেয়েছে। মেস ম্যানেজার জয়নাল অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। আমি তার কাছে এগিয়ে গলা নামিয়ে বললাম, চিনেছেন ?
হিমু ভাই না ?
ঘটনা কী?
প্যাকেজ নাটকে একটা রোল পেয়েছি। ফেরিওয়ালা। সন্ধ্যার পর স্যুটিং। নাটকের নাম কী ?
নাটকের নাম ‘ফ্লাওয়ার’। ইংরেজি নাম।
আপানার সাথের ঐ লোক কে ? একটু আগে দেখেছি ভিক্ষা করছে।
সেও একজন অভিনেতা। র‍্যাবের ভূমিকায় অভিনয় করছে। ভিক্ষুকের
বেশে র‍্যাব।
ও আচ্ছা।
আমাদের খাবারটা আমার ঘরে পাঠিয়ে দেন। মেসের সবাইকে প্যাকেজ নাটকের খবর জানানোর দরকার নাই।
জয়নাল বলল, আপনার আরেক গেস্ট কোথায় ?
নাটকের ডাইরেক্টর সাহেবের আসার কথা ছিল। কাজে আটকা পড়েছেন। হিমু ভাই, স্যুটিং দেখতে পারব না ?
স্যুটিং দেখবেন। আজ না।
দুইজন গেস্টের জায়গায় আমার এখন একজন গেস্ট। গেষ্টের খাবার গতি ও পরিমাণ দেখে আমি মুগ্ধ। নিমিষের মধ্যে সব নেমে গেল। ভদ্রলোক অতি তৃপ্তির সঙ্গে খাচ্ছেন। তৃপ্তির খাওয়া দেখতেও তৃপ্তি। আমি বললাম, ভাই পেট ভরেছে ?
তিনি বললেন, খুবই আরাম করে খেয়েছি। শুকুর আলহামদুলিল্লাহ। আমি পরিমাণে বেশি খাই। এই নিয়ে লজ্জার মধ্যে থাকি। সব জায়গায় ঠিকমতো খেতেও পারি না। বিয়ে বাড়িতে গিয়ে আধপেটা খেয়ে উঠে পড়ি। আপনার এখানে আরাম করে খেলাম।
কোনো চক্ষুলজ্জা বোধ করেন নাই ।
জি-না।

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top