হিমুর হাতে কয়েকটি নীল পদ্য – হুমায়ূন আহমেদ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ হুমায়ূন আহমেদ
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৫৫
হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম – বইটির এক ঝলকঃ
“হিরোস ওয়েলকাম’ বলে একটি বাক্য আছে। মহান বীর যুদ্ধ জয়ের পর দেশে ফিরলে যা হয় – আনন্দ-উল্লাস, আতশবাজি পোড়ানো, গণসঙ্গীত। থানায় পা দেয়ামাত্র হিরোস ওয়েলকাম বাক্যটি আমার মাথায় এল। আমাকে নিয়ে হৈ-চৈ পড়ে গেল। সেন্ট্রির সেপাই একটা বিকট চিৎকার দিল – “আরে হিমু ভাইয়া!” আমি গেলাম হকচকিয়ে। থানার সবাই ছুটে এলেন। সেকেন্ড অফিসার একগাল হেসে বললেন, “স্যার, কেমন আছেন?” ওসি সাহেব আমাকে হাত ধরে বসাতে বসাতে বললেন, ভাই সাহেব, আরাম করে বসুন তো। আপনি আমাদের যা দুশ্চিন্তায় ফেলেছিলেন। কাওরান বাজারে যেখানে আপনাকে নামিয়ে দিয়েছে সেখানে দু’বার জীপ পাঠিয়েছি আপনার খোজে।
আমি হতভম্ব হয়ে বললাম, ব্যাপার কি?
‘ব্যাপারটা যে কি সে তো আপনি বলবেন। আপনি যে এরকম গুরুত্বপূর্ণ মানুষ তা তো বুঝিনি। মানুষের কপালে তো লেখা থাকে না সে কে। লেখা থাকলে পুলিশের জন্যে ভাল হত। কপালের লেখা দেখে হাজতে ঢুকাতাম, লেখা দেখে চা- কফি খাইয়ে স্যালুট করে বাসায় পৌঁছে দিতাম।”
‘ভাই, আমি অতি নগণ্য এক হিমু’
‘আপনি নগণ্য হলে আমাদের এই অবস্থা!’
“কি অবস্থা?”
‘একেবারে বেড়াছেড়া অবস্থা। দাড়ান সব বলছি। ভাই সাহেব, চা খাবেন – ঐ আকবর, হিমু ভাইয়ারে চা দে। তারপর ভাইসাহেব শোনেন কি ব্যাপার। আপনাকে তো ছেড়ে দিলাম, তারপরই মারিয়া নামের একটি মেয়ে টেলিফোন করল – আপনার সঙ্গে কথা বলতে চায়। আমি যতই বলি ছেড়ে দিয়েছি ততই চেপে ধরে। আমার কথা বিশ্বাস করে না, রাগ করে টেলিফোন রেখে দিলাম, তারপর শুরু হল গজব।
‘কি গজব ?”
‘একের পর এক টেলিফোন আসা শুরু হল, ডিআইজি, এআইজি, সবশেষে আইজি সাহেব নিজে। আমি স্যারদের বললাম –
আপনাকে ছেড়ে দিয়েছি। তারা বিশ্বাস করলেন। তারপর টেলিফোন করলেন হোম মিনিস্টার। রাত তখন তিনটা দশ। মন্ত্রীরা তো সহজে কিছু বোঝেন না। যতই বলি, স্যার, ওনাকে ছেড়ে দিয়েছি মন্ত্রী বলেন, দেখি লাইনে দিন, কথা বলি। আরে, যাকে ছেড়ে দিয়েছি তাকে লাইনে দেব কিভাবে? আমি কি যাদুকর জুয়েল আইচ ?”
উনি বললেন, হিমু সাহেবকে যেখান থেকে পারেন খুঁজে আনেন।
“আমার কলজে গেল শুকিয়ে। হার্টে ড্রপ বিট শুরু হল। এখন আপনাকে দেখে কলিজায় পানি এসেছে। হার্টও নরমাল হয়েছে। ভাইয়া, আপনি যে এমন তালেবর ব্যক্তি সেটা বুঝতে পারিনি। নিজগুণে ক্ষমা করে দিন। পায়ের ধুলাও কিছু দিয়ে দেবেন, বোতলে ভরে থানার ফাইল ক্যাবিনেটে রেখে দেব। এখন হিমু ভাইয়া, আপনি টেলিফোনটা হাতে নিন। খাদের নাম বললাম এক এক করে তাঁদের সবাইকে টেলিফোন করে জানান যে আপনি আছেন। আপনার মধুর কন্ঠস্বর শুনিয়ে ওঁদের শান্ত করুন। ওনারা বড়ই অশান্ত।’
‘এঁদের কাউকেই আমি চিনি না।
‘আপনি এঁদের চেনেন না আর এঁরা আমার জান পানি করে দেবে, তা তো হবে না ভাইয়া। নাচতে নেমেছেন, এখন আর ঘোমটা দিতে পারবেন না। আপনি মারিয়াকে টেলিফোন করুন। তার কাছ থেকে নাম্বার নিয়ে অন্যদের টেলিফোনে ধরুন।
আকবর চা নিয়ে এসেছে। ওসি সাহেব আকবরের কাছ থেকে চায়ের কাপ নিয়ে আমার সামনে রাখলেন। আকবরের দিকে আগুন-চোখে তাকিয়ে বললেন, ‘হারামজাদা, এক কাপ চা আনতে এতক্ষণ লাগে?’ বলেই আচমকা এক চড় বসালেন। আকবর উল্টে পড়ে গেল। আবার স্বাভাবিকভাবে উঠে দাড়িয়ে চলে গেল। যেন কিছুই হয়নি।
ওসি সাহেব টেলিফোন সেট আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললেন, নাম্বার বলুন আমি ডায়াল করে দিচ্ছি। ডায়াল করতে আপনার কষ্ট হবে। আপনাকে কষ্ট দিতে চাই না ।
‘নাম্বার হচ্ছে আট-আমি-তুমি-আমি-তুমি-আমরা। এর মানে ৮ ১২ ১২৩।
“ভাই, আপনার কাণ্ডকারখানা কিছুই বুঝতে পারছি না। বুঝতে চাচ্ছিও না। আপনি নিজেই টেলিফোন করুন। বুঝলেন হিমু ভাইয়া, আমি প্রতিজ্ঞা করেছি যতদিন পুলিশে চাকরি করব ততদিন হলুদ পাঞ্জাবি পরা কাউকে ধরব না। মার্ডার কেইসের আসামী হলেও না।’
মারিয়া জেগেই ছিল। আমি তাকে জানালাম যে আমাকে নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ নেই। আমি ছাড়া পেয়েছি এবং ভাল আছি।
মারিয়া বলল, আপনাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করছি কে বলল? আপনাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করছি না। অকারণে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হবার মেয়ে আমি না। বাবা দুশ্চিন্তা করছেন। আমার কাছ থেকে আপনার গ্রেফতারের কথা শুনে তিনি অস্থির হয়ে পড়লেন। তারপর শুরু করলেন টেলিফোন।
‘আসাদুল্লাহ সাহেব কেমন আছেন?’
“ভাল আছেন। টেলিফোন রাখি”
“তুই রেগে আছিস কেন?”
“আপনাকে অসংখ্যবার বলেছি – তুই তুই করবেন না।’
“আচ্ছা, করব না। তুমি এত রাত পর্যন্ত জেগে আছ কেন?” “হিমু ভাই, আপনি অকারণে কথা বলছেন?”
‘তোমার বাবা কি জেগে আছেন ?
‘হ্যাঁ, জেগে আছেন। বাবা রাতে ঘুমুতে পারেন না। আপনি কি বাবার সঙ্গে কথা বলবেন ?”
‘না।’
“বাবা আপনার সঙ্গে কথা বলার জন্যে এত ব্যস্ত, আপনি তাঁর সঙ্গে সামান্য
কথা বলতেও আগ্রহী না?’
‘মরিয়ম, ব্যাপারটা হল কি …’
‘মরিয়ম বলছেন কেন? আমার নাম কি মরিয়ম …. ‘ভুল হয়ে গেছে।’
‘ভুল তো হয়েছেই। আপনি একের পর এক ভুল করবেন ভুলটা শুদ্ধ হিসেবে দেখাবার একবার চেষ্টা করবেন। সেটা কি ঠিক?” ‘কি ‘ভুল করলাম?’ তারপর সেই
‘যখন আপনাকে আমাদের খুব বেশি প্রয়োজন হয়েছিল তখন আপনি ঠিক করলেন – আমাদের বাসায় আর আসবেন না। বাবা আপনাকে এত পছন্দ করেন
‘ভুল বলছ কেন? তখন যা করেছিলে হয়ত ঠিকই করেছিলে। এখন ভুল মনে হচ্ছে। আমি জানতাম একদিন তোমার এ রকম মনে হবে… ‘জানতেন বলেই আমার চিঠির জবাব দেননি?
‘মারিয়া, তোমাকে বলেছি – চিঠির পাঠোদ্ধার আমি করতে পারিনি।’
‘আবার মিথ্যা বলছেন?”
‘পুরোপুরি মিথ্যা না। পঞ্চাশ ভাগ মিথ্যা। আমি আবার একশ ভাগ মিথ্যা বলতে পারি না। সব সময় মিথ্যার সঙ্গে সত্যি মিশিয়ে দি।
‘আমি কিছুই বুঝতে পারছি না, মিথ্যা কতটুকু আর সত্যি কতটুকু?” ‘আমি পাঠোদ্ধার করতে পারিনি এটা সত্যি, তবে বাদল পেরেছে।’ ‘বাদল কে?’
‘আমার ফুপাতো ভাই। আমার মহাভক্ত। আমার শিষ্য বলা যেতে পারে।’ “আপনি আমার চিঠি দুনিয়ার সবাইকে দেখিয়ে বেড়িয়েছেন?”
‘সবাই না, শুধু বাদলকে দিয়েছিলাম। সে সঙ্গে সঙ্গে অর্থ বের করে ফেলল – তখন আর চিঠিটা পড়তে আমার ইচ্ছা করল না। কাজেই অর্থ বের করার পরেও আমি চিঠি পড়িনি।
‘আপনি চিঠি পড়েননি ?
‘না।’
“কি লিখেছিলাম জানতে আগ্রহ হয়নি?”
‘আগ্রহ চাপা দিয়েছি।”
‘কেন?’
‘কারণটা হল … ‘
‘থাক, কারণ শুনতে চাই না।’
মারিয়া হঠাৎ করে বলল, এখন আমার ঘুম পাচ্ছে, আমি টেলিফোন রাখলাম। ডাল কথা, আপনার ঠিকানা বলুন। লিখে নেই। আর শুনুন, মা আপনাকে হাত দেখাতে চান। একদিন এসে মা’র হাতটা দেখে দিন।
আমি ঠিকানা বললাম। সে টেলিফোন রাখল। আমি ওসি সাহেবের দিকে তাকিয়ে হাসলাম। তিনি হাসলেন না। ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে রইলেন। আমি বললাম, আপনার দুশ্চিন্তা করার কোন কারণ নেই। ভাল কথা, আপনাদের হাজতে আলি আসগর বলে কি কেউ আছে? বেচারার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
ওসি সাহেব সেকেন্ড অফিসারের দিকে তাকিয়ে বললেন, হিমু ভাইয়াকে হাজতে নিয়ে যান। উনি নিজে দেখুন। আসগর-ফাসগর যাকেই পান নিয়ে বাড়ি চলে যান।
আসগর সাহেব হাজতে ছিলেন। মনে হল নাভির এক ইঞ্চি উপরে রোলারের গুঁতা খেয়েছেন। সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছেন না। আমি তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে চলে
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!