হিমু এবং একটি রাশিয়ান পরী – হুমায়ূন আহমেদ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ হুমায়ূন আহমেদ
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৯২
হিমু এবং একটি রাশিয়ান পরী – বইটির এক ঝলকঃ
আমি আলমের ঘরে বসে আছি। বালক হাজতি কাদের নেই। কোথায় গেছে কখন ফিরবে কিছুই বলে যায় নি।
আলম বলল, হিমু ভাই আমি চিন্তা করে একটা বিষয় পেয়েছি।
কি পেয়েছেন?
একটা রহস্যের সমাধান পেয়েছি।
এখন বলা যাবে না। অন্য কোনো সময় বলব ।
আপনার যখন বলতে ইচ্ছা করবে, বলবেন।
আমি যে দিনরাত দরজা জানালা বন্ধ করে ঘরে বসে থাকি, খামাখা বসে থাকি না। চিন্তা করি।
এখন কি নিয়ে চিন্তা করছেন?
আজ কোনো চিন্তা শুরু করতে পারি নাই। গতকাল চিন্তা করেছি মশা নিয়ে।
মশা নিয়ে কি চিন্তা?
দুপুরবেলা মশা গালে কামড় দিয়েছে। গাল ফুলে গেছে তখন শুরু করলাম মশা নিয়ে চিন্তা। মানুষের যেমন শেষ বিচারের দিনে হিসাব নেয়া হবে মশারও কি হবে? আমাদের যেমন দোজখ বেহেশত আছে মশাদের কি আছে? দুষ্ট মশাদের আল্লাহপাক কি দোজখের আগুনে পুড়াবেন?
আপনার কি মনে হয়।
আমার মনে হয় পুড়াবেন না। অতি তুচ্ছ মশা মাছিকে শাস্তি দেয়ার কিছু নাই ।
আমি বললাম, আল্লাহর কাছে মানুষতো মশা মাছির মতই তুচ্ছ। মানুষকে তিনি কেন শাস্তি দিবেন?
আলম গম্ভীর হয়ে বলল, এটাও একটা বিবেচনার কথা। এটা নিয়ে আলাদা ভাবে চিন্তা করতে হবে।
এলিতার ঘুম ভাঙ্গল রাত আটটা বাজার কিছু আগে। লোডশেডিং হচ্ছে বলে বাতি জ্বলছে না। টেবিলের উপর দু’টা মোমবাতি জ্বলছে। মশারির ভেতর এলিতা অবাক হয়ে বসে আছে। ঘরে আলো আধারের খেলা। এলিতা বিস্মিত গলায় বলল, আমি কোথায়?
আমি বললাম, তুমি আমাদের মেস বাড়ির একটা ঘরে । আমার মাথার উপরে জালের মত এই তাবুটা কি?
একে বলে মশারি। ঘুমের মধ্যে যেন মশা বা মাহি তোমাকে বিরক্ত না করে তার জন্যেই এই ব্যবস্থা ।
আমি ভেবেছিলাম মারা গেছি। মৃত্যুর পর আমার আত্মাকে আটকে রাখা হয়েছে। কি যে ভয় পেয়েছিলাম।
ভয় কেটেছে?
হ্যাঁ। প্রচণ্ড ক্ষিধে পেয়েছে।
দশ মিনিটের মধ্যে তোমার খাবার ব্যবস্থা হবে। আজ আমরা যা দিব তাই খাবে। খাওয়া দাওয়া শেষ হলে তোমাকে হোটেলে পৌঁছে দেব। এখানকার টয়লেটগুলির অবস্থা খুবই খারাপ তারপরেও একটা পরিষ্কার করে রাখা হয়েছে। একটা মোমবাতি হাতে নিয়ে আমার পেছনে পেছনে আস আমি দেখিয়ে দিচ্ছি।
এলিতা বলল, আমি তোমাকে বলেছিলাম আমার ভয় কেটেছে আসলে কাটে নি আমার এখনো মনে হচ্ছে আমি মৃত আমার ‘soul’ তোমার সঙ্গে ঘুরছে।
আমি বললাম, কিছুক্ষণের মধ্যেই তুমি আলো ঝলমল ফাইভস্টার হোটেলে যাবে তখন আর নিজেকে মৃত মনে হবে না ।
খেতে বসে এলিতা বলল, কাঁটাচামচ কোথায়? আমিতো হাত দিয়ে খেতে পারি না ।
আমি বললাম, বাংলাদেশের খাবার হাত দিয়ে স্পর্শ করে তারপর মুখে দিতে হয়। এটাই নিয়ম। একবেলা আমাদের মত খেয়ে দেখ।
এলিতা খাওয়া শেষ করল গম্ভীর মুখে খাবার তার পছন্দ হচ্ছে কি না তা তার মুখ দেখে বুঝা যাচ্ছে না। মাঝে মাঝে ভুডু কুচকাচ্ছে তা দেখে মনে হয় খাবার ভাল লাগছে না ।
এলিতা খাওয়া শেষ করে সিগারেট ধরাতে ধরাতে বলল, আমি আমার জীবনে ভাল যত খাবার খেয়েছি আজকেরটা তার মধ্যে আছে। আমি ‘Food’ শিরোনামে যে সব ছবি তুলব সেখানে এই খাবারের ছবিও থাকবে। গরম ভাত থেকে ধোঁয়া উড়ছে। গরম ভাত একজন হাত দিয়ে স্পর্শ করছে। আজকের
খাবারের শেষ কে?
আমি আলমকে পরিচয় করিয়ে দিলাম। এলিতা অবাক হয়ে বলল, আপনার চোখে পানি কেন?
আলম বলল, সামান্য খানা বিষয়ে এত ভাল কথা বলেছেন এই জন্যে চোখে পানি এসেছে। সিস্টার আমি ক্ষমা চাই।
এলিতা বলল, আপনার চোখের পানি দেখে আমি খুবই অবাক হয়েছি। আপনি কি ফুল টাইম শেফ। কোন রেষ্টুরেন্টে কাজ করেন ?
আলমের চোখে পানির পরিমাণ আরো বাড়ল। তার চরিত্রে যে এমন স্যাঁত স্যাতে ব্যাপার আছে তা এই প্রথম জানলাম। আমি এলিতাকে বললাম, আলম কোনো প্রফেশনাল কুক না। তিনি নিজের খাবার নিজে রেখে খান। দরজা জানালা বন্ধ করে দিন রাত চিন্তা করেন।
এলিতা বিস্মিত গলায় বলল, কি চিন্তা করেন।
জটিল সব বিষয় নিয়ে চিন্তা করে যেমন- গতকাল চিন্তা করছেন মশাদের soul আছে কি-না তা নিয়ে-
বল কি তোমার যদি চিন্তার কোনো সাবজেক্ট থাকে আলমকে বললেই তিনি চিন্তা শুরু করে দেবেন ।
চিন্তার জন্যে তিনি কি কোন ফিস নেন?
আমরা এলিতাকে সোনারগাঁ হোটেলে নামিয়ে দিয়ে এলাম। আলম বললেন, সিস্টার যাই? এই দু’টি শব্দ বলতে গিয়ে তার গলা ভেঙ্গে গেল এবং চোখ ছলছল করতে লাগল। এলিতা অবাক হয়ে বলল Oh God! what a strange man. এলিতা তার প্রথম ছবির সন্ধানে বের হবে। বাহন হিসেবে সে সাইকেল
চেয়েছিল। সাইকেলের বদলে রিকশার ব্যবস্থা হয়েছে। রিকশা এলিতার পছন্দ হয়েছে। এলিতার পেছনে পেছনে আমার থাকার কথা, আমি আরেকটা রিকশা নিয়েছি। আমাদের সঙ্গে একটা ভ্যানগাড়িও আছে। সেখানে আলম এবং কাদের বসে আছে। তাদের সঙ্গে নানান ধরনের রিফ্লেকটর, সান পান। ছবি তুলতে এত কিছু লাগে জানতাম না।
এলিতা বলল, আমরা দু’জনতো এক রিকশাতেই যেতে পারি । আমি বললাম, তা সম্ভব না ।
সম্ভব না কেন?
গায়ের সঙ্গে গা লেগে যেতে পারে।
তাতে অসুবিধা কি?
আমি বললাম, গায়ের সঙ্গে গা লাগলে তোমার শরীরের ইলেকট্রন আমার শরীরে ঢুকবে। আমার কিছু ইলেকট্রন যাবে তোমার শরীরে। দু’জনের মধ্যে বন্ধন তৈরি হবে। এটা ঠিক হবে না।
এলিতা বিরক্ত গলায় বলল, এমন উদ্ভট কথা আমি আগে শুনি নি। আমি অনেকের সঙ্গে গায়ে গা লাগিয়ে বাসে ট্রেনে ঘুরেছি। কারো সঙ্গেই আমার কোনো বন্ধন তৈরি হয় নি।
আমি বললাম, কেন হয় নি বুঝতে পারছি না। বন্ধন হবার কথা। একজন সাধুর সঙ্গে তুমি যদি কিছুদিন থাক তোমার মধ্যে সাধু স্বভাব চলে আসবে। দুষ্ট লোকের সঙ্গে কিছুদিন থাক তোমার মধ্যে ঢুকবে দুষ্ট স্বভাব। বক্তৃতা বন্ধ কর । বেশি কথা বলা মানুষ আমি পছন্দ করি না ।
আমি বললাম, হুট করে মাঝখান থেকে বক্তৃতা বন্ধ করা যায় না। শেষটা শোন। আমাদের কালচার বলে পাশাপাশি সাত পা হাঁটলে বন্ধুত্ব হয়। তুমি ছবি তুলতে এসেছ, দেশের কালচার মাথায় রেখে ছবি তুলবে। এখন বল কিসের
ছবি তুলবে?
ডাস্টবিনের ছবি। ডাস্টবিনে মানুষ খাদ্য অনুসন্ধান করছে এরকম ছবি। এই ছবি তুলতে পারবে না ।
কেন পারব না? তোমাদের দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে এই জন্যে পারব না?
আমি বললাম, এলিতা শোন। দেশের ভাবমূর্তি নিয়ে আমরা মাথা ঘামাই না । এই ছবি তুলতে পারবে না কারণ ডাস্টবিনে এখন কেউ খাদ্য খুঁজে না।
এলিতা বলল, তুমি স্বীকার করতে চাইছ না কিন্তু আমি জানি তোমাদের দেশে ডাস্টবিনে খাবার খোঁজা হয়। আমি ভিডিও ফুটেজ দেখেছি।
বানানো ফুটেজ দেখেছ। আমাদের দারিদ্র্য দেখতে তোমাদের ভাল লাগে বলেই নকল ছবি তোলা হয়। আমি তোমাকে ঢাকা শহরের প্রতিটি ডাস্টবিনে নিয়ে যাব। যদি এরকম দৃশ্য পাও অবশ্যই ছবি তুলবে।
এলিতা বলল, তুমি রেগে যাচ্ছ কেন?
আমি বললাম, আমি মোটেও রেগে যাচ্ছি না। তুমি চাইলে ডাস্টবিনে খাবার খুঁজছে এমন কিছু নকল ছবি তোলার ব্যবস্থা করা যাবে। কয়েকজন টোকাইকে বললেই এরা খাবার খোঁজার চমৎকার অভিনয় করবে। টোকাইরা ভাল অভিনয় জানে। বাংলাদেশে টোকাই নাট্য দল পর্যন্ত আছে।
টোকাই কি?
যারা ফেলে দেয়া জিনিসপত্র খুঁজে বেড়ায় এরাই টোকাই।
এলিতা বলল টোকাই লাগবে না। আমি টোকাই ছাড়াই ছবি তুলব। মিথ্যা ছবি আমি তুলি না।
ঢাকা শহরের ডাস্টবিনে ডাস্টবিনে বিকাল পর্যন্ত ঘুরলাম। কোথাও খাবারের সন্ধানে কাউকে ঘুরতে দেখা গেল না। এক জায়গায় একটা বালিকাকে পাওয়া গেল সে নাকে জামা চাপা দিয়ে কাঠি দিয়ে ময়লা ঘাঁটাঘাটি করছে। সে জানালো ডাস্টবিনে মাঝে মাঝে দামী জিনিস পাওয়া যায়। সে নিজে একবার
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!