হেজাজের কাফেলা – নসীম হেজাযী – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

হেজাজের কাফেলা – নসীম হেজাযী – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ আবদুল হক

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৪০১

হেজাজের কাফেলা – বইটির এক ঝলকঃ

: ‘হাসান!’ ধরা আওয়াজে বলল মাহবানু। ‘তুমি মুসলিম ফৌজে শামিল হয়েছ?’ : ‘হ্যাঁ।’ নির্দ্বিধায় জওয়াব দিল হাসান।
অশ্রু ভেজা কণ্ঠে মাহবানু বললঃ ‘এখন তুমি আমায় বলতে এসেছ, হরমুজের জুলুম জাহাদাদের দোস্তকে তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে তরবারী তুলতে বাধ্য করেছে?’
ঃ ‘মাহবানু। কিভাবে ভাবতে পারলে, জাহাদাদের দোস্ত মিয়ানদাদের দুশমন হতে পারে।’
মাহবানুর চোখ থেকে উছলে এল অশ্রুর বন্যা। কান্নার গমকে সে বললঃ ‘মুসলমান যখন এগিয়ে আসবে ইরানের দিকে, সমগ্র শক্তি দিয়ে কিসরার লশকর তাদের মোকাবেলা করবে। কিসরার লশকর ময়দানে এলে মিয়ানদাদ থাকবে প্রথম সারিতে। ‘
স্তম্ভিত হয়ে দাঁড়িয়ে রইল হাসান। মাহবানুর নীরব দৃষ্টি বার বার প্রশ্ন করছিলঃ ‘তুমি কি সেই ময়দানে আমার ভাইয়ের মোকাবিলা করবে, এও কি সম্ভব!’
একটু পর ব্যথাভরা কন্ঠে হাসান বললঃ ‘মাহবানু, মৃত্যু যখন ধাওয়া করেছিল আমায়, আশ্রয় দিয়েছিলে তুমি, আহত ছিলাম, সেবা করেছ। যখন নিরাশার আঁধারে আমি ঘুরপাক খাচ্ছিলাম, তোমার দৃষ্টি আমার হৃদয়ে জ্বালিয়েছিল আশার আলো। আমি অকৃতজ্ঞ নই । শোন মাহবানু, এখান থেকে বেরিয়ে যাবার পর আমার জীবনের একমাত্র সাধ ও স্বপ্ন ছিল দুনিয়ার সব হাসি আনন্দ তোমার পায়ের কাছে জমা করব। বাহরাইনের বিরাণ ভূমিতে তোমার জন্য খুঁজছিলাম চির বাসন্তি খর্জুর বীথি। তোমার জন্যে শান্তির ঘর বানাতে চাইছিলাম আমার আহত হাতে। আমার দুর্ভাগ্যের অন্ধকারে তোমার জন্য খুঁজেছি ঝলমলে আলো। এ ছিল এক পাগলের স্বপ্ন। তবুও আমি ভাবতাম, কোন মোজেযা যদি সময়ের এ সয়লাবের গতিপথ বদলে দেয়, আচানক এমন এক জান্নাতে আমি পৌঁছব, জীবন যেখানে মৃত্যুভয় শূন্য। শক্তিমানের হাত যেখানে পৌঁছবে না দুর্বলের শাহরণ পর্যন্ত। ফিরে এসে তোমার এ পয়গাম দেব, তোমার জন্য শান্তির নীড় খুঁজে পেয়েছি, আর পূর্ণ হয়েছে আমার জীবনের সবচে বড় আরজু। মাহবানু! আমি ফিরে এসেছি তোমাকে এ কথা বলতে, পাগলের মতো যে মনোলোভা স্বপ্ন আমি দেখতাম তা পূর্ণ হয়েছে। আমি দেখেছি সে দ্বীনের মোজেযা, বংশীয় বিদ্বেষের প্রাচীর যে উপড়ে ফেলেছে। যার আইন শাহানশাহের শক্তি নয়, বরং জনতার অধিকারের হিফাজত করছে। আমি দেখেছি সেই জান্নাত, যেখানে ঘুচে গেছে টু-নিচু, আমীর-গরীব, আর শক্তিধর ও দুর্বলের ভেদাভেদ।
কয়েক বছর আগেও যাঁরা ছিলো ইসলামের দুশমন, এখন ওরাই ইসলামের জন্য বাঁচা-মরাকে সৌভাগ্য মনে করে। মাহবানু। তোমায় হয়তো বোঝাতে পারবো না, মুনীব-গোলাম, আর জালেম- মজলুমের দুনিয়ায় শান্তি ও ইনসাফের অন্বেষীরা যে বিরাট বিপ্লবের প্রত্যাশা করছে, তা সমাগত। যদি জাহাদাদ বেঁচে থাকতো, দেখতো নূরের সে ফোয়ারার একটা ঝলক, গোটা আরবকে আবেষ্টনীতে নেয়ার পর যে আজ আজমের দিকে এগিয়ে আসছে, তার অনুভূতি আমার চেয়ে ভিন্ন হতো না। ভাই বোন আর পিতার সামনেই নয় বরং মাদায়েনের চৌরাস্তায় দাঁড়িয়ে সে ঘোষণা করত কোন শাহানশাহ নয়, বরং মুসলমানরা বুলন্দ করছে মানবতার ঝাণ্ডা। যারা ইনসানিয়াতকে প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তাদের বিজয় আমারই বিজয়।’
এর কোন জওয়াব ছিল না মাহবানুর কাছে। তার মুখে ও শুনতে চাইছিল, বিচ্ছেদের দিনগুলোর কাহিনী। যার প্রতিটি মুহূর্ত বছরের চেয়ে দীর্ঘ মনে হয়েছে ওর কাছে। অশ্রুর পরিবর্তে অশ্রু আর হাসির জওয়াবে হাসি দেখতে চাইছিল ও। কিন্তু যে সরল ব্যক্তিটি ভালবাসা আর বিশ্বাসে ওকে অভিষিক্ত করেছিল তাকে মনে হচ্ছিল দুর্বোধ্য। ও নির্নিমেষ নয়নে তাকিয়ে রইল তার দিকে ।
কয়েক কদম এগিয়ে জংগলের দিকে তাকাল হাসান। ফিরে বললঃ ‘কাউস আমার জন্য ঘোড়া নিয়ে এসেছে। বেশী সময় থাকতে পারিনি বলে আফসোস হচ্ছে আমার। তোমার আব্বাজানের সাথেও কোন কথা বলতে পারলাম না। তবে আমি খুব তাড়াতাড়িই ফিরে আসব। মাহবানু, আমার বিশ্বাস তিনি আমাকে দুশমন ভাববেন না । একদিন হয়ত মুসলমানদের ব্যাপারে তোমার অনুভূতিও আমার থেকে ভিন্ন হবে না । যদি আমি ফিরে না আসি, অথবা লড়াইয়ের ময়দানে খতম হয়ে যায় আমার জীবনের সফর, আর আমি শামিল হই ঐ সব শহীদানদের সাথে, আঁধারের আবর্তে যারা আপন খুনে চেরাগ জ্বালাচ্ছেন, জীবনের সেই অন্তিম মুহূর্তেও এ ঘরের নকশা ঝলমল করবে আমার দৃষ্টিতে। যখন দজলা ফোরাতের উপত্যকা থেকে মুছে যাবে জুলুম আর শোষণের সয়লাব, আল্লাহর জমিনে কায়েম হবে তারই দ্বীন, খতম হবে মানুষের উপর মানুষের প্রভুত্ব, ভেদাভেদ ঘুচে যাবে শাদা-কালো, আমীর-গরীব আর আরব-আজমের, ঝুপড়ি আর মর্মর প্রাসাদের অধিবাসী সকলেই দেখবে ইনসাফের একই মানদণ্ড, আশা করি এ ঘরের লোকেরা সেদিন আমাকে দুশমন ভাববে না।’ –
কাঁপা আওয়াজে মাহবানু বললঃ আমি শুনেছি মুসলমানদের এক ক্ষুদ্র লশকর গত কয়েক মাস ধরে ইরানী এলাকায় হামলা করে যাচ্ছে। এখন আরেক লশকর এসে শামিল হয়েছে তাদের সাথে। আমি জানি না কি হবে এদের অভিযানের ফল! জাহাদাদ বেঁচে থাকলে মুসলমানদের ব্যাপারে কি মত পোষণ করতো তাও জানা নেই আমার। আমি শুধু জানি, যদি তুমি বল আরবের পর্বতমালা উপড়ে সমুদ্রে নিক্ষেপ করবে মুসলমানরা, অথবা ওখানকার বালুকাময় শৃংগগুলো রূপান্তরিত হবে সোনা রূপায়, আমি বিশ্বাস করব। কিন্তু মুসলমানদের সাফল্যের ব্যাপারে যদি তুমি স্থির নিশ্চিত হও, তবে আমার একটা প্রশ্নের জবাব দাও, কিসরার বিরাট লশকর প্রচণ্ড শক্তি নিয়ে যখন ময়দানে আসবে, কোন্ শক্তি দিয়ে তার মোকাবিলা করবে ওরা। তাও এমন পরিস্থিতিতে, যখন রোমও তাদেরকে দুশমন মনে করে। কাইজারের দশকরও যে কোন সময় তাদের ওপর চড়াও হতে পারে।
হাসান, আমি মিয়ানদাদের বোন আর মিয়ানদাদ কিসরা সেনাবাহিনীর এক জবরদস্ত অফিসার। আমি কোব্বাদের বেটি, আর হরমুজের প্রতি প্রচণ্ড ঘৃণা থাকা সত্ত্বেও তিনি শাহানশাহের পরাজয় সইবেন না। হাসান, যদি তুমি মুসলিম ফৌজে শামিল হয়েই থাক, মনে রেখো, কোব্বাদের বেটি আর মিয়ানদাদের বোন তোমাদের বিজয়ের জন্য কখনো দোয়া করতে পারবে না। তবে এ ঘরের অধিবাসীরা তোমার জন্য অনন্তকাল প্রতীক্ষায় থাকবে। আমার জিন্দেগীর প্রতিটি শ্বাস তোমার নিরাপত্তার জন্যে দোয়া করবে। তুমি বাহরাইন গিয়েছ, ভাবতাম তোমার ফিরে আসা বিপদমুক্ত নয়। তবুও তোমার পথ পানে তাকিয়ে থাকতাম সকাল সন্ধ্যা। কখনো মনে হতো পথে হরমুজের লোকদের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছ তুমি। ওরা তোমায় কোতল করেছে। কখনো স্বপ্নে দেখতাম, হরমুজের লোকেরা ধাওয়া করেছে তোমায়। আহত হয়ে পৌঁছেছ আমাদের ঘরে। ওরা তোমায় ধরে নিতে চাইত। পথ আগলে দাঁড়াতাম আমি। ওরা তোমায় কোতল করতে চাইত, মাঝখানে আমি ঢাল হয়ে দাঁড়াতাম। চিৎকারের সাথে শেষ হত এ ভয়ংকর স্বপ্ন। আবার যাচ্ছ তুমি। জানি রুখতে পারব না। কিন্তু অন্তিম নিঃশ্বাস পর্যন্ত আমি তাকিয়ে থাকব তোমার পথের পানে।
হাসান, মুসলমান হলে কি দুনিয়ায় সাথে মানুষের সব সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়? তোমার ভাইকে মাদায়েন পাঠিয়ে দিয়েছি বলে তোমার আগমন সংবাদে আমি কতই না পেরেশান ছিলাম। আমার ধারণা ছিল, সোহেলের ব্যাপারে তোমার অসংখ্য প্রশ্নের জওয়াব দিতে গিয়ে আমি অস্থির হয়ে যাব। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, সোহেলের এখানে থাকা না থাকা তোমার জন্যে সমান।’
ঃ ‘ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় না পেলে সোহেলের বিচ্ছেদ আমার জন্যে হতো কঠিন পীড়াদায়ক। দীর্ঘ সময় পর এখানে পৌঁছে যখন শোনতাম সোহেল নেই, দুনিয়ার কোন শক্তি তার কাছে যাওয়া থেকে আমায় ফিরাতে পারত না। যদি তুমি বলতে হরমুজের সিপাইরা তাকে ধরে নিয়ে গেছে, সম্ভবত পিছপা হতাম না ওখানে যেতেও। কিন্তু বাহরাইন পৌঁছে আমি সে কাফেলার সাথে সফর শুরু করেছি, যারা দ্বীনী সম্পর্ককে সব সম্পর্কের ওপর প্রাধান্য দেয়। আল্লাহর সেসব বান্দাদের আমি দেখেছি, ইসলামের বিজয় যাদের জীবনের সবচেয়ে বড় মাকসাদ। আল্লাহর পথে কোরবান করেছে ওরা জীবনের সকল হাসি আনন্দ। সেসব পিতা, স্বামী আর সন্তানদের আমি দেখেছি, আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হওয়ার ব্যাকুলতা যাদের কাছে বিবি বাচ্চা আর ‘পিতামাতার মুহাব্বতের চাইতে অনেক বেশী। এখন শুধু সোহেলই নয় বরং দুনিয়ার প্রতিটি মজলুম আর অসহায় মানুষ আমার ভাই। সোহেল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েও এ .. প্রশান্তি আমি অনুভব করছি, এমন লোকদের সাথে শামিল আমি হয়েছি যারা কেবল আপন ভাই-বেটার জন্যই নয়, বরং সমগ্র মানবতার জন্য শান্তি ও স্বাধীনতার মুক্ত বীঘিতে পানি সিঞ্চন করছে আপন খুনে।’
: ‘আপনার কি মনে হয়, মাদায়েন পৌঁছতে যে সব লাশ আপনাকে মাড়াতে হবে, মিয়ানদাদের লাশ থাকবে না তাদের সাথে?
: ‘আল্লাহ যদি আমার দোয়া কবুল করে থাকেন, তবে মিয়ানদাদ আর সোহেলের পথ আমার পথের চেয়ে আলাদা হবে না।’
আশান্বিতা হয়ে মাহবানু বললঃ ‘হাসান, প্রতিশ্রুতি দাও তোমার ধারনা যদি ভুল প্রমাণিত হয়, পরাজিত অথবা আহত হয়ে যদি প্রয়োজন হয় কোন আশ্রয়ের, আমাদের ঘরের পথ ভুলবে না।’
: না! মুসলমানদের বিজয় আমার প্রাণের চাইতে বেশী প্রিয়। বিজয় অথবা শাহাদাত ছাড়া আমার তৃতীয় কোন পথ থাকবে না। আহত হয়ে পিছু হটবো না ময়দান থেকে। যতোক্ষণ পর্যন্ত এ পা দুটো বইতে পারবে শরীরের বোঝা, শিরার থাকবে রক্তের শেষ বিন্দু, হৃদয়ে থাকবে প্রাণের স্পন্দন, এগিয়ে যাব সামনের দিকে। আমার দেহ ধুলায় লুটিয়ে পড়লে এ শান্তনা পাব, আমার দায়িত্ব আমি পূর্ণ করেছি। যদি আমি বেঁচে থাকি, যখম দেখাতে নয়, বরং এ ঘরের লোকদেরকে ইসলামের বিজয়ের খোশ খবর শোনানোর জন্যই আসব। মাহবানু! মুসলমানদের শৌর্য বীর্য নিজের চোখে না দেখলে কখনোই এ কথা বিশ্বাস করতাম না যে, ওরা ইরানের সাথে লড়তে পারবে। কিন্তু এখন কিছুই অসম্ভব মনে হয়না আমার কাছে। যদি তুমি শুনে থাক মুসলমানদের নতুন লশকর পৌঁছেছে ইরানের সীমান্তে, বলব, সামনের মাসের নতুন চাঁদ আকাশে দেখা দেবার পূর্বেই তাদের বিজয়ের অবিশ্বাস্য সংবাদ আসবে তোমার কানে। আমার শুধু আফসোস, আল্লাহর সে নেক বান্দাদের তুমি দুশমন ভেবেছ, মানবতাকে যারা নতুন মর্যাদায় অভিষিক্ত করছে।’
মাথা নিচু করল হাসান। নেমে এল বিষন্ন নীরবতা। কিছুক্ষণ পর মাথা তুলে বললঃ এবার আমায় এজাযত দাও।’
: ‘যাচ্ছেন আপনি!’
: ‘হ্যা, আমার দেরী হয়ে যাচ্ছে।।
মাহবানুর চেহারায় ফুটে উঠল এক টুকরা বেদনা বিধুর হাসি। বললঃ ‘বিজয়ের নাকাড়া বাজিয়ে এলে এ ঘরের দুয়ার তো আর বন্ধ করতে পারব না!
: ‘প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, তোমাদের অনুমতি ছাড়া দরজার ভেতরে পা রাখব না আমি।’
ঃ ‘আর তোমার সাথে যারা আসবে কারো ঘরে ঢুকতে তারাও কি আমার অনুমতি জরুরী ভাববে।’
: ‘ওরা যে বস্তিতে পা রাখবে জুলুম আর বর্বরতার ভয়ংকর অন্ধকার আঁচল গুটিয়ে নেবে সেখানে থেকে। তুমি দেখবে, আজ যারা তাঁদের দুশমন ভাবছে, তারাই ওদের চলার পথে ফুলের পাপড়ি ছড়াবে।
: ‘হাসান, তোমার কথা আমার বোধগম্যের বাইরে। মনে হয় স্বপ্ন দেখছি। আরবের মরুচারীরা কিসরার পতাকা ধুলায় লুটাবে, মিয়ানদাদ ইরানের সিপাহী আর আমি ইরানের দুশমনের জন্য উদগ্রীব নয়নে তাকিয়ে থাকব, এ কিভাবে সম্ভব?’
ঃ ‘আরবের বেদুইনরা যখন মুসলমানদের বিরুদ্ধে লড়ছিল, ইসলামের বিজয়ের কল্পনা ছিল ওদের কাছে স্বপ্নের মতোই। শতশত বছর ধরে যে অন্ধকার ঘনীভূত হয়েছিল, তার সামনে দেখতে ওরা রাজী ছিল না। কিন্তু এখন এ স্বপ্নই রূপান্তরিত হয়েছে সত্যে। ওরা ইসলামের পতাকাধারীদের পথ পানেই শুধু তাকিয়ে থাকে না, বরং এ আলোর শিখা আরব সীমান্তের বাইরে ছড়িয়ে দিতে বেকারার। আমার বিশ্বাস, আরববাসীর মত ইরানের লোকেরাও যখন চোখ খুলবে এ আলোয়, অতীত অন্ধকার ওদের মনে হবে এক ভয়ংকর দুঃস্বপ্ন। আমাকে বিশ্বাস করো মাহবানু, নিজের চোখে সে আলো আমি দেখেছি।’
কিছু বলতে চাইল মাহবানু। সিঁড়ি থেকে ভেসে এলো কারো পায়ের আওয়াজ। কাউস ছাদে উঠে বললঃ ‘আপনার ঘোড়া তৈরী। জলদি করুন, ভোর হয়ে এল প্রায়।’ ‘চলো।’
বিষন্ন দৃষ্টিতে তাদের দিকে তাকিয়ে রইল মাহবানু। সহসা দ্রুত পারে এগিয়ে ধরা গলার ডালঃ ‘गान।’
থামল হাসান। কিন্তু পিছন ফিরে দেখার সাহস হল না তার।
ঃ হাসান …. হাসান, আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করবো।’
পলকের জন্য পিছন ফিরল হাসান। ‘খোদা হাফেজ’ বলে দ্রুত তালে এগিয়ে
চলল সম্মুখপানে।

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top