গুপ্ত আততায়ী – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

গুপ্ত আততায়ী – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২৬৮

গুপ্ত আততায়ী – বইটির এক ঝলকঃ

ট্রেইলার ট্রাক ছুটে যাওয়ার শব্দ আসছে। মাটি কাঁপছে।
ডানে-বাঁয়ে তাকাল জন। লম্বা লম্বা ঘাস ছাড়া কিছু চোখে পড়ল না। ভুট্টার খেত কোথায়? এখানে না ভুট্টার খেত ছিল?’ “এক সময় ছিল, ব্রুস বললেন। কিন্তু গত দুই দশকে এখানে ওসবের কিছুই চাষ হয়নি। পুরোটাই গবাদি পশুর ঘাসের জন্য অনাবাদী রাখা হয়েছে।
একটা সাইক্লোন ফেন্সের কাছে গিয়ে দাঁড়ালেন আইনজীবী। দূরের এক সারি পাইন গাছ দেখালেন হাত তুলে। ওগুলোর ওপাশে ছিল ভুট্টা ক্ষেত।’
পাইন গাছগুলো দেখে নতুন করে অস্বস্তিতে পড়ল জন নিউম্যান। এগুলো আগে ছিল না, জানে সে। ছোটোবেলায় এ পথে অজস্রবার আনাগোনা করেছে সে ট্রেইলারে করে, কখনও এই গাছগুলো চোখে পড়েনি। তা হলে? ব্রুসকে জিজ্ঞেস করে জানা গেল, ষাটের দশকের শেষদিকে কেউ লাগিয়েছিল এগুলো।
এখন ত্রিশ ফুট লম্বা হয়ে চোখের সামনে একটা পর্দার মত দাঁড়িয়ে আছে। ওগুলোর কারণে পুরনো রুট ৭১ থেকে সেই ভুট্টার খেত এখন আর দেখা যায় না। একটা সন্দেহ দেখা দিল জনের মনে। তা হলে কি ভুট্টার খেতের নির্দিষ্ট জায়গাটা আড়াল করতেই গাছের এই দেয়াল সৃষ্টি করা হয়েছে?
গাছগুলোর মধ্য দিয়ে ঘন সবুজ ঘাসমোড়া একটা সমতল মাঠ দেখতে পেল ওরা। ঘাসের মধ্যে কিছু কিছু বুনো লতাপাতা আর ঝোপঝাড় আছে, ঘাসের সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকার সংগ্রাম করছে। ছোটো ছোটো সাদা ফুল ধরেছে তাতে, মৃদু হাওয়ায় মাথা দোলাচ্ছে।
‘পঁয়ষট্টি সালে ওখানকার পুরোটায় ঘন ভুট্টার খেত ছিল, ‘ বললেন বৃদ্ধ। ‘ভেতরে কিছু দেখা যেত না। তোমার ড্যাডির মারা যাওয়ার খবর পেয়ে আমরা যখন এখানে আসি, তখন সম্ভবত রাত সাড়ে বারোটা। তারপর এক এক করে আরও অনেক গাড়ি এল। এক কুড়ির কম না।
চোখ মুদল জন। অন্ধকারে পুলিশ কারের মিছিল, ওগুলোর মাথায় রিভলভিং বাবলসের রঙিন আলো, একাধিক রেডিওর খুট খাট, ঘাস ঘোঁস আর মেডিকদের জরুরি সাহায্যের নিরর্থক চিৎকার ও ছোটাছুটির সময় জায়গাটা কেমন দেখাতে পারে, কল্পনার চোখে দেখার চেষ্টা করল।
ফ্লাঙ্ক খুলে এক ঢোক উইস্কি গিললেন ব্রুস উইলিয়ামস। ‘ওটা সম্ভবত ও’ব্রায়ান নামে একজনের সম্পত্তি ছিল। ওই যে, গড্যাম হাইওয়ে যেখান দিয়ে বাঁক নিয়েছে। ওখানে ছোটো ছোটো কাঠের কেবিন বানিয়ে কিছু হোয়াইট ট্র্যাশ পরিবারকে ভাড়া দিয়েছিল লোকটা। আমি আর তোমার ড্যাডি একবার এখানে হরিণ শিকারে এসে জবর বিপদে পড়ে গিয়েছিলাম। ঊনষাট সালে।
“বিপদ কীসের?” জন বলল।
“কেবিনগুলোর কাছে একটা হরিণ দাঁড়িয়ে আছে দেখে লোভ সামলাতে না পেরে গুলি করেছিলাম আমি। ওফ! আর যায় কোথায়!’ আরেক টোক খেলেন বৃদ্ধ। হাতের উল্টোপিঠ দিয়ে মুখ মুছে বললেন, ‘কী বিপদেই না পড়েছিলাম!’
‘কেন?’
‘হরিণটা যেখানে ছিল, তার সবচেয়ে কাছের কেবিনটায় থাকত এক বুড়ি। গুলির শব্দে তীরের বেগে ছুটে বেরিয়ে এল সে। বন্দুক হাতে আমাদের দেখে কোমর বেঁধে ঝগড়া শুরু করে দিল। বুড়ির দাঁত ছিল না। কালো মাঢ়ি বের করে হাউমাউ করে কী সব ঘোড়ার ডিম বলছিল, কিছুই বুঝতে পারিনি। পরে চার্লসের কাছে শুনি, ঘরের মধ্যে তার নাতীরা খেলা করছিল… তাদের গায়ে গুলি লাগতে পারত। সেইজন্য তড়পাচ্ছিল ডাইনী বুড়ি। “ড্যাডির লাশ কোথায় ছিল?
হাত তুলে একটা জায়গায় আঙুল তাক করলেন আইনজীবী। ‘ওখানটায়। ওই যে একটা সরু রাস্তা দেখা যাচ্ছে, ভাঙাচোরা, ভুট্টা খেতের মধ্যে ছিল ওটা। তখন বাইরে থেকে চোখে পড়ত না। ওই রাস্তায় তোমার ড্যাডির ক্রুজার আড়াআড়িভাবে পার্ক করা ছিল। জ্যাকেরটা ছিল আরও বিশ-পঁচিশ গজ ওপাশে।’
কাছে গিয়ে দেখা দরকার,’ জনকে বলল রানা। “অ্যা?’ বৃদ্ধ বললেন।
“আমরা কাছ থেকে দেখতে চাই জায়গাটা।’
যাও। দেখে এসো। আমি এখানে বিশ্রাম নেব ততক্ষণ। পথ হারালে বা চোরাবালিতে আটকে গেলে ডাক দিয়ো। গিয়ে উদ্ধার করে আনব,’ হাসলেন। ‘খেয়াল রেখো। পথে সাপ-টাপ পড়তে পারে কিন্তু। আমাদের সামনে পড়েছিল সেদিন। চার্লস মারা যাওয়ার দিন। ইয়া বড় এক র‍্যাটলার। রাস্তা পার হওয়ার চেষ্টা করছিল। ভয়ে সবার আত্মারাম খাঁচাছাড়া হয়ে গিয়েছিল। ম্যাক জিমসন গুলি করে মারে ওটাকে।’
‘বাটলার?’ জন বলল ।
“হ্যাঁ। গড্যাম টিম্বার র‍্যাটলার। বিশাল। ভুট্টা খেতের ভেতরেই কোথাও লুকিয়েছিল হয়তো। পরে অনেক মানুষ দেখে ভয় পেয়ে পালাবার চেষ্টা করে।
রানা আর জন পা বাড়াল। মিনিট পাঁচেক হেঁটে পাইন গাছের বেড়া গলে ওপারে চলে গেল। অযত্নে বেড়ে ওঠা লম্বা লম্বা ঘাস মাড়িয়ে এগোতে লাগল সামনের দিকে। এখন এটা শুধুই ঘাসের মাঠ, হাইওয়ের ছায়ায় গা এলিয়ে পড়ে আছে। কোনও শস্য-টস্য নেই। রাস্তার আভাস যেদিকে দেখেছিল, সেদিকে এগোল ওরা। এখন আর রাস্তা নেই সেটা। খানিকটা লম্বা, ফাঁকা জায়গা। লতা-পাতা ঠিকমত জন্মাতে পারেনি ওখানে। রাস্তাটা ধরে একশো গজমত এগিয়ে থামল ওরা। “এখানে?’ জন বলল দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে।
বৃদ্ধের দিকে ফিরল দু’জনে। ওদের তাকাবার কারণ বুঝতে পেরে মাথা দোলাতে লাগলেন তিনি-ওখানেই।
মাটির দিকে তাকিয়ে থাকল জন। অদ্ভুত লাগছে। ড্যাডির মৃত্যুর পর আরও আট বছর এই শহরে কাটিয়ে গেছে সে, কিন্তু এখানে কখনও আসেনি। আজই প্রথম।
কখনও ফুল দিতে বা ঘটনাস্থলে একবার নজর বোলাতেও না। কেন? কারণটা সঠিক জানে না সে, তবে সীমাহীন কষ্টই হবে হয়তো। তার মা স্বামীকে হারানোর কঠিন বেদনা সহ্য করতে না পেরে দিন-রাত মদ খেয়ে পড়ে থাকত। তারপর সে- ও একদিন ফট্ করে মরে গেল।
পরের কয়েকটা বছর যে কীভাবে কেটেছে, পুরোপুরি মনে নেই জন নিউম্যানের। বাড়িতে তাকে দেখাশোনা করার কেউ নেই, তাই মিস জুডি ক্যামেরন নিজের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন তাকে। সেখানে থেকে জন পড়াশোনা চালিয়ে গেছে কোনওমতে। ওকে ভীষণ ভালবাসতেন মহিলা। তীক্ষ্ণ নজর রাখতেন ওর দিকে, যাতে কোনও কষ্ট না হয়।
‘৭৪ সালের ১২ জুন হাই স্কুল থেকে গ্রাজুয়েশন করে জন নিউম্যান। তার পরদিনই এই রুট দিয়ে তাকে ফোর্ট স্মিথে নিয়ে যান ব্রুস উইলিয়ামস, ইউএস মেরিন কর্পসে ভর্তি করতে। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, জনের ব্লু আই থেকে দূরে সরে থাকাই ভাল হবে। সেটা নিশ্চিত করতে ওকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেন তিনি।
1
‘এখানে, রানার কথায় ধ্যান ভাঙল তার। ওর নজর পত্রিকার ডায়াগ্রামের দিকে। এখানেই পার্ক করেছিল জ্যাক রিচি।’ জনকে পাশ কাটিয়ে কয়েক পা সামনে এগিয়ে গেল। “এখানে ছিল তোমার বাবার ক্রুজার। আর এখানে পড়ে ছিলেন।
তোমার বাবা। “রক্ত নিঃশেষ হয়ে?”
“বলছি, রঙ নিঃশেষ হওয়ার কারণেই তো ড্যাডির মৃত্যু হয়েছে, তাই না?” এর দিকে ঘুরল এক্স মেরিন। ‘ব্লাড লস। কোনাও মেজর ব্লাড ভেসেলে বুলেট ঢুকে পড়েছিল হয়তো।
বুলেট তিনভাবে মানুষকে হত্যা করতে পারে, বলল রানা। “প্রথমত, সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম ধ্বংস করে দিয়ে। মাথায় গুলি লাগলে তাৎক্ষণিকভাবে এটা হতে পারে। সেরিবেলামের গভীরে, মানে, চোখের দু-ইঞ্চি পিছনে, দুই কানের মাঝখানে যদি লাগে। তেমন হলে যে কেউ ভাঙাচোরা পুতুলে পরিণত হবে চোখের মাকে। সেকেলের দশ ভাগের এক ভাগের মধ্যে ক্লিনিক্যালি ডেড হয়ে যাবে।
দ্বিতীয়ত, ধর্মনী ছিঁড়ে গিয়ে রক্ত সঞ্চালন ব্যবস্থা ভেঙে পড়লে ডিপ্রেশারাইজেশনের মাধ্যমে। হৃৎপিণ্ডের বাঁ দিকের কোনও রক্তবাহী ধমনী ছিঁড়ে গেলেও পরিণতি একই হবে। সে ক্ষেত্রে পনেরো থেকে বিশ সেকেণ্ডের মধ্যে ক্লিনিক্যালি মৃত্যু হবে তার। আর যদি কোনও মেজর ব্লাড বিয়ারিং অর্গানে গুলি লাগে, তা হলে পরিস্থিতি ভেদে তিন, চার মিনিট, কখনও বা পনেরো থেকে বিশ মিনিট টিকে থাকতে পারে মানুষ। অসহায়ের মত রক্ত বাড়া দেখতে দেখতে মরে।’ একটু বিরতি দিল রানা। এর কোনটা হয়েছিল তাঁর বেলায়?”
জানি না। ওই ব্যাপারে কোনও পত্রিকা বিস্তারিত লেখেনি। শুধু লিখেছে “ব্লেড টুডে”।
गा ान রানা। তা হলে শেষেরটাই হয়েছে। অসহায়ের মত রক্ত পড়া দেখতে দেখতে মৃত্যু।’
“আমি জানি না। কীভাবে জানা যায়?”
জবার দিন না রানা। চারদিকে চোখ বোলাল। এখানকার
পতিত জমির ভাষা পড়ার চেষ্টা করল। ঢেউয়ের মত উত্থান-

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top