গুডবাই, রানা – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৮৪
গুডবাই, রানা – বইটির এক ঝলকঃ
অবশ্য,
অর্ধেকটা 1
ভেতরের পরিবেশ দেখে ঢুকবে কি না ভেবে দ্বিধায় গড়ে গেছে। রূমের মাঝখানে নিজের ডেস্কের ওপর কম্পিউটর নিয়ে ব্যস্ত টম হ্যারিসন, তার একদম গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে সেই অপরূপা, মনে মনে এতক্ষণ যাকে খুঁজছিল রানা। দরজার শব্দে একযোগে ঘুরে তাকাল দু’জনে ।
“সরি,” অপ্রস্তুত হয়ে গেল রানা। ‘বুঝতে পারিনি…’
“কাম অন ইন, রানা।’ হেসে হাত নাড়ল টম। ‘ইটস অল রাইট । আমাদের কাজ প্রায় শেষ। এসো, পরিচয় করিয়ে দিই। এ হচ্ছে শার্লি । শার্লি, এই সেই হিরো, মাসুদ রানা।
নড় করল রানা। ‘হ্যালো! মেয়েটি প্রত্যুত্তর করল নীরবে, অনেকটা অন্যমনস্কের মত। টমের কাঁধে হাত রাখল আলতো করে। ‘চলি আজ । সময়মত দেখা হবে।’ দ্বিতীয়বার রানার দিকে তাকাল না শার্লি, ধীর পায়ে বেরিয়ে গেল।
চোখ কুঁচকে টমকে দেখল রানা। “বিয়ে করা বউ ফেলে কি হচ্ছিল এখানে, , টম ‘
‘বিজনেস ওনলি, রানা,’ ওর হাতে ছুরি আর ভঙ্গি দেখে হেসে জবাব দিল সে। ‘অন্য কিছু নয়। মেয়েটা…’
‘অত কথা জানতে চাইনি, আমি এসেছি তোমাকে ধরে নিয়ে যেতে। কেসি ওদিকে কেক কাটার জন্যে অস্থির হয়ে উঠেছে।
‘ও হ্যাঁ, সরি।’ কম্পিউটরের একটা কী টিপল সে। ‘এই যাচ্ছি, বোসো। আমার ডিপার্টমেন্ট ভিক্টরকে অ্যারেস্টের বিস্তারিত রিপোর্টের জন্যে অস্থির হয়ে আছে। তাই তৈরি করছিলাম।’
মুখ টিপে হাসল সে। ‘তোমাকে তো এখনও ঠিকমত ধন্যবাদ জানানো হলো না, রানা। সত্যি, তোমার কাছে আমার কৃতজ্ঞতার সীমা নেই। সেই প্রথম পরিচয়ের দিন থেকে আজ পর্যন্ত, যতবার মারাত্মক বিপদে পড়েছি, ততবারই আমাকে উদ্ধার করতে ঠিক সময়মত সীনে উদয় হয়েছ তুমি। সত্যি, ভাবতে ভারি অদ্ভুত লাগে।’
বিব্রত বোধ করল রানা। এ প্রসঙ্গ আর কতবার তুলবে? চলো তো, সবাই অপেক্ষা করছে নিচে।
‘হ্যাঁ, যাচ্ছি।’ কম্পিউটরের প্লট থেকে একটা ৩.৫ ডিস্ক বের করল টম। তর্জনী দিয়ে টোকা দিল ওটায়। ‘ব্যাকআপ স্টোর।
ওটা কেসির বাঁধানো ছবির এক ফ্রেমের পিছনে রেখে সেট, অফ করল। রানার হাত থেকে ছুরিটা নিয়ে হাসল। এর মধ্যে ভিক্টর ইমানুয়েলকে জেরা করেছে আমার ডিপার্টমেন্ট। জবাবে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত একটা কথাই বলেছে ও। সেটা কি, জানো?’
‘কি?’
হাসি চওড়া হলো টম হ্যারিসনের। ‘বলেছে তাকে আটকে রাখার ক্ষমতা নেই আমেরিকার, ট্রায়ালে দাঁড়াবার আগেই ছাড়া পেয়ে যাবে ও। তার পকেটে নাকি অনেক প্রভাবশালী লোক আছে।’
বলতে বলতে চিন্তায় কপাল কুঁচকে উঠল তার। তা অবশ্য আছে। মিথ্যে বলেনি ভিক্টর। বাহামা থেকে চিলি, এদিকে আমেরিকা, সবখানে প্রচুর “মিলিয়ন ডলার” বন্ধু আছে ব্যাটার।’ ‘পরে শুনব ওর কাহিনী, রানা বলল। এখন চলো।’
কী ওয়েস্ট ডিইএ হেডকোয়ার্টার্স। ভিক্টর ইমানুয়েলের ব্যাপারে বিন্দুমাত্র ঝুঁকি নিতে রাজি নয় এজেন্সি, তাই তাকে কোয়ান্টিকো সিটি জেলে স্থানান্তরের তোড়জোড় চলছে। বাইরে আর্মার্ড ড্যান প্রস্তুত।
ইন্টারোগেশন ক্রমে বসে আছে ভিক্টর-একদম নির্বিকার। হাত-পা চকচকে চেইন দিয়ে বাঁধা। শটগানধারী দুই মার্শাল দু’দিক থেকে ধরে দাঁড় করাল তাকে, ভ্যানে তোলার জন্যে নিয়ে চলল। অন্য তিন সাগরেদকে তোলা হয়েছে আগেই। ভ্যানের পিছনে আরও দুটো মার্শালের গাড়ি প্রস্তুত, প্যাডে কপ্টারও। ওটার রোটর ঘুরছে অলস ভঙ্গিতে।
এজেন্সির যে অফিসার ভিক্টরকে জেল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিতে সঙ্গে যাচ্ছে, তার নাম রেড রেনার। তাকে দেখে থেমে পড়ল ভিক্টর। অভিযোগের সুরে বলল, ‘আমার ওভারনাইট কেস নেই, জেলে রাত কাটাব কি করে?’
হাসি ফুটল অফিসারের মুখে। ‘এক কেসে কাজ হবে না, বন্ধু, কয়েক মিলিয়ন দরকার হবে। এত কেস কোথায় পাব আমরা? জেলে যা আছে তাতেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে তোমাকে। ওকে বয়েজ, লেট্স্ মুক্ত।’
ভিক্টর নড়ল না। বাঁকা হাসি হেসে বলল, “তোমাদের আশা পূরণ হবে না। বলেছি না, আমাকে আটকে রাখার ক্ষমতা আমেরিকার নেই?’
‘বলেছ নাকি? তা পাগলে তো কত কিছুই বলে, ছাগলে কত কিছুই খায়, সব কি মনে রাখা সম্ভব? মার্শালদের উদ্দেশে মাথা ঝাঁকাল অফিসার, রেড। ‘হিট্ দ্য রোড, বয়েজ !’
একটু পর রওনা হলো গাড়ির বহর। সামনে-পিছনে থাকল একটা করে মার্শালের কার, ওপরে কন্টার। রুট ওয়ানে পড়তেই গতি বাড়ল কনভয়ের। কপ্টার পাইলট থেকে শুরু করে প্রত্যেক মার্শাল-গার্ড, রেড, প্রত্যেকে সতর্ক। যে কোন পরিস্থিতি সামাল দিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত । সামনে একটা ব্রিজ আছে, ওটা পেরিয়ে রুট ওয়ান থেকে নেমে যাবে বহর। সেকেন্ডারি রোড ধরে এগোবে।
শহর ছেড়ে দু’মাইল এগোতে ব্রিজ। ওটার কাছে পৌঁছে গতি কমানোর সঙ্কেত দিল লীড কার। সবাই দেখল ব্রিজে ওঠার মুখে বড় এক সাইনবোর্ড ঝুলছে। ওটায় লেখা: কশন! ব্রিজ আন্ডাব রিপেয়ার । ডান দিকের মেটাল রেলিঙের অনেকটা নেই, কাঠের রেলিঙ দিয়ে জায়গাটা সাময়িকভাবে ঘিরে রাখা হয়েছে ।
লীড কার নিরাপদে ব্রিজ পার হয়ে গেছে দেখল পাইলট, কিন্তু ভ্যানের বেলার তা ঘটল না। ভাঙা রেলিঙের কাছে পৌঁছার আগে আচমকা গতি বেড়ে গেল ওটার, নাক গুঁতো মেরে উড়িয়ে দিল কাঠের রেলিঙ। মনে হলো কিছু সময় শূন্যে ঝুলে থাকল ভ্যান, তারপর স্লো মোশনে রওনা হয়ে গেল নিচের কাদাগোলা পানির দিকে ।
কড়া ব্রেক কষে থেমে পড়ল দুই কার, গোঁত্তা খেয়ে নেমে এল কপ্টার, ব্যস্ত হয়ে পাক খেতে থাকল ওখানটায়। স্পেশাল ব্যাক আপ পাঠানোর জন্যে রেডিওতে চিৎকার শুরু করে দিল মার্শালরা।
সবার চোখের সামনে অলস গতিতে ডুবে গেল ভ্যান । ভেতরে ভিক্টরের পাশে বসা দুই মার্শাল নিজেদের বাঁচাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। একজন কোনমতে দরজা খুলে বেরিয়ে এল, অন্যজন অনুসরণ করল তাকে। ভুশ করে ভেসে উঠল তারা, বাতাসের জন্যে হাঁসফাঁস করতে লাগল ।
ওদিকে পানির নিচে বালির মেঘ ছড়িয়ে স্থির হলো আর্মার্ড ভ্যান, এক ঝাঁক লাল স্ন্যাপার ঘাবড়ে গিয়ে দ্রুত দিক বদলাল মাছেরই মত প্রকাণ্ড আরেকটা কিছু দেখে। মন্থরগতিতে ভ্যানের দিকে এগিয়ে এল ওটা । মাছ নয়, খুদে এক আন্ডারওয়াটার স্লেজ। ওয়েট স্যুট পরা কয়েকটা কাঠামো বের হলো ওটার পেট থেকে । তিনজনের দুটো দল ।
প্রথম দল দ্রুত এগোল ড্যানের দিকে, ওদের দু’জনের হাতে ওয়েটস্যুট, ব্রীদিং মাস্ক, এয়ার বটল্ আর ফ্লিপার। অন্য দল স্পিয়ার-গান হাতে পাহারায় থাকল। ভ্যানের ভেতরে হাত-পা বাঁধা ভিক্টর ইমানুয়েল নিস্তেজ হয়ে পড়েছে, বাতাসের অভাবে ফুসফুস বিস্ফোরিত হওয়ার অবস্থা, এই সময় মাউথপীস ও ব্রীদিং অ্যাপারেটাস নিয়ে পৌঁছে গেল একজন। ঠেসে ধরল তার নাকমুখের ওপর । দম নিল ভিক্টর, নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে আসতে পেরেছে বলে চোখে পানি এসে গেল কৃতজ্ঞতায় । দ্বিতীয় ডাইভার হেভি ডিউটি বোন্ট কাটার দিয়ে বাঁধনমুক্ত করল তাকে, বের করে নিল খোলা পানিতে। দু’জনে মিলে টেনে নিয়ে চলল স্লেজের দিকে। ওদিকে আরেক ডাইভার ক্যাবের দরজা
খুলল, প্রায় অজ্ঞান রেড রেনারের মুখে ঠেসে ধরল আরেক সেট মাউথপীস । টেনে হিচড়ে বের করে আনল। কয়েক সেকেন্ড পরই প্লেক্সিগ্লাস ডোমওয়ালা হাঙরের মত জলযানটা খোলা সাগরের দিকে রওনা হয়ে গেল ।
তার অনেক আগেই মারা গেছে ভ্যানের চালক। রেলিঙের সাথে ধাক্কা লেগে দরজা জ্যাম হয়ে যাওয়ায় বেরোতে পারেনি সে। ডাইভাররা ফিরেও তাকায়নি তার দিকে ।
মনে একটু আশা ছিল বাইরে শার্লির দেখা পাবে, কিন্তু হলো না । ফের গায়েব হয়ে গেছে মেয়েটা ।
কি আর করা! বাকি সময়টা তাই সেই দুই তরুণীর সাথে গল্প করে কাটাল মাসুদ রানা। ওদের একজন খাটো, বেশি কথা বলে । নাম লিজ, শিল্পী। ছবি আঁকে। অন্যটি প্যাম, লাজুক । কথা বলে কম। সে-ও শিল্পী, তবে গিটারিস্ট। রানার সাথে আলাপের পাঁচ মিনিটের মধ্যে লজ্জা গায়েব হয়ে গেল মেয়েটির, এমন বক্- বক্ শুরু করল, বেশি কথা বলা লিজ পর্যন্ত তার তোড়ের কাছে হার মানতে বাধ্য হলো। কয়েক মিনিটের মধ্যে কর্তৃত্ব খর্ব হচ্ছে বুঝতে পেরে কেটেই পড়ল দল থেকে, নিঃসঙ্গ, মাঝবয়সী এক অতিথির সাথে আড্ডা জমিয়ে নিল 1
সন্ধে হয়ে আসছে দেখে আপনাআপনি ডাঙন ধরল পার্টিতে। রানাও তৈরি হলো যাওয়ার জন্যে। ‘ফ্যান্সি ডিনার?’ প্যামকে বলল। ‘পিয়ের হাউস হোটেলে আছি আমি।’ জায়গাটা শহরের আরেক প্রান্তে। পনেরো মিনিটের পথ।
‘আজ আর কিছু খেতে পারব না,’ হেসে চোখ টিপল মেয়েটি 1 গলা খাদে নামিয়ে বলল, ‘তোমাকে ছাড়া অবশ্য।’
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!