ফাঁসির মঞ্চ থেকে বলছি – সাইয়েদ কুতুব শহীদ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

ফাঁসির মঞ্চ থেকে বলছি – সাইয়েদ কুতুব শহীদ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ মোহাম্মদ ইলিয়াছ আরমান

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৫০

ফাঁসির মঞ্চ থেকে বলছি – বইটির এক ঝলকঃ

১৯৫৩ সালের ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ২৩ শে জুলাইয়ের বিপ্লবীদের সাথে আমার হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। এরপর ‘হাইআতুত তাহরীর’ গঠনসহ বিভিন্ন বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন হওয়ার উক্ত সম্পর্কে ফাটল ধরে। এর মধ্যে ইখওয়ানের সাথে আমার সম্পর্ক সুদৃঢ় হয়। কারণ আমি মনে করতাম এই অঞ্চলে বিস্তর পরিসরে ইসলামের খেদমত করা ইখওয়ানে যোগদান ব্যতীত সম্ভব নয় এবং আমেরিকা থাকাকালীন সময়ে এই ব্যাপারেও আমি নিশ্চিত হয়েছিলাম যে, একমাত্র ইখওয়ানই সাম্রাজ্যবাদী, ক্রুসেডার ও জয়নবাদীদের দাতভাঙ্গা জবাব দিতে পারে। এসব কারণে ১৯৫৩ সালে আমি আনুষ্ঠানিক ভাবে ইখওয়ানে যোগদান করি।
ইখওয়ানের সদস্যরা আমাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা দিয়ে গ্রহণ করলেও প্রথমে আমার কার্যক্রম লেখালেখি, বৃক্ততা, পত্র লিখন ও পত্রিকা সম্পাদনার সীমাবদ্ধ ছিল ।
১৯৫৪ সালের জানুয়ারির ঘটনায় আমি বন্দি হই। মার্চে মুক্তি পাই। এরপর ২৬অক্টোবর আলেকজান্দ্রিয়ার ঘটনার পর বিভিন্ন মিথ্যা অজুহাতে আমাকে পুনরায় গ্রেফতার করা হয়।
যে অভিযোগে আমি দশ বছর কারাবরণ করেছি তা থেকে নিজেকে এখন নির্দোষ প্রমাণ করে কোন লাভ নেই। কারণ, আমি তো সেজন্য জেল কেটে ফেলেছি। কিন্তু পরবর্তী ঘটনাসমূহ স্পষ্ট হওয়ার জন্য তা প্রমাণ করা একান্ত প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। এখনে প্রাসংগিকভাবে ১৯৫৪ সালে সংঘটিত তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনাটির বর্ণনা এবং আলেকজান্দ্রিয়ার ঘটনার বর্ণনাও এসে যায়।
আশা করি পাঠকরা এই ঘটনাকে কোন অপ্রসাংগিক ও অপ্রয়োজনীয় ঘটনা মনে না করে মনযোগ সহকারে শুনবেন। কারণ, সামনের ঘটনাসমূহের সাথে এটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
মিসরের সমাজ কল্যাণমন্ত্রী ড. আহমদ হুসাইন ১৯৫১ সালে আমেরিকা সফর করেন। তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে মিসরে ফিরে আসেন। নুহাস পাশার সকল অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে তিনি নিজ সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। অতঃপর কৃষক-শ্রমিকদের সামাজিক অধিকার আদায়ের নামে ‘কৃষক ফোরাম’ নামে একটি সংস্থার গোড়াপত্তন করেন। সে সময় মার্কিন মিডিয়া উক্ত সংস্থার এবং তার প্রতিষ্ঠাতার এমন ভূয়সী প্রসংশা করেছে যে, তাতে প্রকারন্তরে সংস্থার সাথে মার্কিনীদের গোপন আতাত ধরা পড়ে যায়। সে সংস্থায় ড. আহমদ হুসাইন এবং এর নেতৃত্বে তার চেয়েও অনেক নামি-দামি ব্যক্তিরা পর্যন্ত যোগদান করেছিল। যেমন- পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ সালাহুদ্দীন, শিক্ষামন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক ও শাইখ বাকুরী প্রমুখ। সে সময় ইখওয়ান ও সেনা-বিপ্লবীদের মধ্যে দূরত্ব বেড়েই চলছিল। আমি তা জানতাম, কারণ আমি দিনে বার ঘন্টা বিপ্লবীদের সাথে থাকতাম । এখানে উল্লেখ্য যে, উস্তাদ ফূয়াদ জালাল প্রেসিডেন্ট নজিবের মন্ত্রিসভার সদস্য ছিল। তিনি কৃষক ফোরামের সদস্য ও দায়িত্বশীল ছিলেন। আমি লক্ষ্য করতাম, তিনি বিভিন্ন উপলক্ষ্যে ইখওয়ান ও বিপ্লবীদের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধকে উসকে দিতেন। তিনি আমাকে বিপ্লবীদের আপনজন ও ঘনিষ্টজন মনে করতেন। তাই আমার সামনেও সে সম্পর্কে আলোচনা করতেন। আমি সর্বদা উস্তাদ ফুয়াদ জালাল ও মার্কিন ইন্ধনে প্রতিষ্ঠিত ‘কৃষক ফোরাম’ ইখওয়ান ও বিপ্লবীদের মাঝে বিরোধের যে খোরাক যোগাত তা স্তব্ধ করার প্রচেষ্টায় থাকতাম। কিন্তু পরিশেষে আমার সমস্ত প্রচেষ্টা ভেস্তে যায়। বিরোধ চরম আকার ধারণ করে।
এখানে প্রশ্ন জাগে, আলেকজান্দ্রিয়ার ঘটনার সাথে এর কোন সম্পর্ক রয়েছে কি? হ্যাঁ অবশ্যই। এই ঘটনাটি ঘটার পর আমি নিশ্চিত হই যে, এটি কোন স্বাভাবিক ঘটনা নয়; বরং এটি উভয় গ্রুপের মধ্যে সাপে নেউলে সম্পর্ক সৃষ্টি করে বাইরের উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য ষড়যন্ত্রের একটি অংশ মাত্র। এরপর আমি আরো নিশ্চিত হলাম যে, উস্তাদ জালাল ও কৃষক ফোরাম বস্তুত আমেরিকার স্বার্থের জন্য
কাজ করে যাচ্ছে।
১৯৫৪ সালে সামরিক কারাগারে সায়্যিদ সালাহ্ দসুকী এই ঘটনার ব্যাপারে আমার মত জানতে চাইলে আমি এর পরিকল্পনা সম্পর্কে স্পষ্ট মতামত জানিয়ে ছিলাম তাকে। তিনি ক্ষেপে গিয়েছিলেন। উত্তেজিত হয়ে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কি এই ঘটনাকে একটি সাজানো নাটক বলে মনে করেন? আমি বললাম, আমি নাটক বলছি না; বরং আমি বলছি বিদেশীদের ইন্ধনে এই ঘটনাটি হয়েছে। তখন তিনি বললেন, যা হোক ইখওয়ানরা এই ঘটনার সাথে অবশ্যই জড়িত।
এখন আমি ১৯৫৪ সালের পর আমার তৎপরতার বিবরণ দিচ্ছি। আমি নিশ্চিত হলাম যে, আলেকজেন্দ্রিয়ার ঘটনা একটি পূর্ব পরিকল্পিত ঘটনা। তাই ১৯৫৫ সালে ভাররা কারাগারে যাদের সাথে সাক্ষাৎ হয়েছিল সবার থেকে এই ঘটনার বাস্তবতা সম্পর্কে প্রশ্ন করেছি। বিশেষত আব্দুল লতিফ যার পিস্তল থেকে গুলি বের হয়েছিল এবং হিন্দাভী দুরাইদ থেকেও জিজ্ঞাসা করলে তারা বলেছিল, বিষয়টি রহস্যজনক। অন্যরা বলেছিলেন, এটি একটি গোপন বিষয় যা জানা এখন সম্ভব নয়। এসব উত্তরে আমি সন্তুষ্ট হতে পারেনি।
এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে আমার এই বিশ্বাস আরো দৃঢ় হল যে, যায়নবাদী, ক্রুসেডার ও সাম্রাজ্যবাদীরা তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ইখওয়ানকে ধ্বংসের পথে নেমেছে। এমতাবস্থায় আমি প্রয়োজন অনুভব করলাম ইখওয়ানকে আপন কক্ষ পথে ফিরিয়ে আনতে হলে ঐসব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিতে হবে।
আমি মনে মনে এই ভেবে অনুতপ্ত হতাম যে, এই সাজানো ঘটনার কারণে হাজার হাজার মানুষ নির্যাতনের সম্মুখীন হচ্ছে। এই ঘটনাটি যে বাইরের ইন্ধনে হয়েছে- তা সে সময়কার বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার ভাষ্য থেকেও জানা যায় । আমি স্বচক্ষে দেখেছিলাম যে, ইখওয়ানের যাত্রা ব্যাহত হবার কারণে মিসরের নৈতিক অধঃপতন ও ধর্মদ্রোহিতার স্রোত বেগবান হচ্ছে। এই আন্দোলনের স্রোতের মুখে একটি প্রাচীরের মত ছিল। সুতরাং সেটা ভেঙ্গে ফেলা হলে বাঁধভাঙ্গা স্রোত তার নিজ গতিতে প্রবাহিত হল। আমি কারাগারেও এসব শুনতাম। মুক্তি পেয়ে দেখলাম, যা শুনেছি তার চাইতে বাস্তবতা আরো ভয়াবহ। গোটা মিসরী সমাজ পাশ্চাত্য সমাজে রূপান্তরিত হচ্ছে।
এই বিষয়টি স্বাভাবিক নয়; বরং অস্বাভাবিক একটি বিষয় । এটা যায়নবাদী, ক্রুসেডার ও সাম্রাজ্যবাদীদের ঐসব ষড়যন্ত্রের অংশ যা তারা প্রণয়ন করেছে মিসরীয়দের পঙ্গু করার জন্য। যাতে তাদের হাতে অস্ত্র থাকলেও তারা দর্শকের ভূমিকা পালন করে। এটা স্বতসিদ্ধ যে, মানুষের ব্যবহারে অস্ত্রের কারিশমা ফুটে উঠে। অস্ত্রের কারণে মানুষের বীরত্বের প্রকাশ পায়না । মানুষ নৈতিক ও আদর্শগত ভাবে দেওয়ালিয়া হলে তাদের মূল্য হবে স্রোতের ফেনার মত।
ইখওয়ানকে নিষিদ্ধ করার কারণে সৃষ্ট সেই অধঃপতিত অবস্থা যে কেউ আঁচ করতে পারে। যেমন এইকথাও কারো অজানা নয় যে, যায়নবাদী ও সাম্রাজ্যবাদীদের ষড়যন্ত্রের কারণেই ইখওয়ানকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এসব অবস্থার প্রেক্ষিতে ইসলামী আন্দোলনকে সাহায্য করার নিমিত্তে আমি ইখওয়ানে যোগদান
করি। ১৯৫৫ সাল থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত উক্ত আন্দোলনের রীতি-নীতি নিয়ে চিন্তা করে কাজ শুরু করি। এরপর উক্ত সংগঠনের সাথে আমার সম্পৃক্ততার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়। যা পরে আমি বিস্তারিত বর্ণনা করছি।
বি: দ্র: আলেকজেন্দ্রিয়া ঘটনার সাথে অন্য একটি ঘটনার কথাও মনে পড়েছে। যেটি ১৯৫৫ সাল থেকে ১৯৫৭ সালের মধ্যে সংঘটিত হয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে ১৯৬২ সালে আন্দোলনকে পুন:গঠন করার কথা মুলতবী করে আগে সেই ঘটনাটি বর্ণনা করছি। আলেকজান্দ্রিয়ার ঘটনার পর হাজার হাজার ইখওয়ান কর্মী জেল-জুলুম দেশান্তরসহ নানা দুঃসহ অত্যাচারের সম্মুখীন হয়েছে। তাদের পরিবার-পরিজন পর্যন্ত সে নির্যাতনের নগ্ন খড়ক থেকে রক্ষা পায় নি ।
এরপর দেখেছি কারাবন্দীদেরকে নির্বিচারে পাইকারীভাবে হত্যা করার জন্য আলেকজেন্দ্রিয়ার ঘটনার মত বিভিন্ন ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ঘটানো হয়েছে।
১৯৫৫ সালের মার্চ-এপ্রিলে ইখওয়ানের কর্মীরা তিন কারাগারে বিভক্ত ছিল । যথা: লিমোনতাররা, যেখানে ৪০০ মত বন্দী ছিল। মিসরী কারাগার এখানেও ৪০০ মত বন্দী ছিল ও সামরিক কারাগার। সেখানে দুই হাজার মত বন্দী ছিল যাদেরকে বিচারে মুখামুখী ও করা হয়নি। তাররা কারাগারে অনেক সাবেক সামরিক অফিসারও ছিল। যেমন- ফুয়াদ জাছের হুসাইন মাহমুদা, আব্দুল করীম আতিয়্যা ও জামাল রবী। আর সামরিক কারাগারে ছিল মারুফ হুদরী ও অন্যান্যরা ।
জামাল র’বী জেল থেকে মুক্তিলাভের একটি পরিকল্পনা পেশ করেন। তাহল, তিন কারাগারে বন্দী ইখওয়ান কর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে শক্তি প্রয়োগ করে পাহারারত সৈন্যদের অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে বের হয়ে অন্যান্য কর্মীদের সাথে মিলিত হবে। আর এই সামরিক পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের জন্য তিনি সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের সাথে যোগাযোগ করেন ।
তিনি এই প্রস্তাবটি ফুয়াদ জাছের ও হুসাইন মাহমুদার কাছে পেশ করলে উভয় তা নাচক করে দেয়। এরপর উস্তাদ সালেহ আবু রফিকের কাছে পেশ করার পর তিনিও তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর তিনি আমাকে বললেন, ইখওয়ানের পঞ্চাশ জন কর্মী আমার এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতে বদ্ধপরিকর। আমি সামরিক বিষয়ে অনভিজ্ঞ হওয়া সত্ত্বেও এই প্রস্তাবটিকে একটি আত্মহত্যামূলক ও নিজ পায়ে কুড়াল মারার মত মনে করলাম। কিন্তু তিনি আমাকে মুক্তির পথ নির্ধারণ ও তার প্রস্তাবের ব্যাপারে চিন্তা করতে বাধ্য করেছে।
সে সময় আমি তাররা কারাগারে বন্দি ছিলাম। এখনো আমার ব্যাপারে কোন ফয়সালা হয়নি। সেখান থেকে পরে সামরিক কারাগারে নেয়া যাওয়া হয়। ১৯৫৫ সালের ২৫শে জানুয়ারী আমি ভীষণ অসুস্থ হই। আমাকে চিকিৎসার জন্য লিমান তাররার কারা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এপ্রিলে আমি সুস্থ হলে আমাকে বিচারের জন্য সামরিক কারগারে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত হয়। সে সময় জামাল রবী আমার কাছে এসে বললেন, আপনি সেখানে যাবার পর আমার এই প্রস্ত বিটি মারুফ হাদরীর কাছে পেশ করবেন। আমি অপরাগ অবস্থায় প্রস্তাবটি মারুফ হাদরীর কাছে পেশ করলে সে প্রস্তাবকারীর নাম জানার প্রয়োজনবোধ না করে বলতে লাগল: এটি কারারুদ্ধ ও বাইরে অবস্থানরত ইখওয়ানদের উপর হত্যাযজ্ঞ চালোনোর এক গভীর ষড়যন্ত্র। অতঃপর সে প্রশ্ন করল, প্রস্তাবকারী কে? উত্তরে বললাম, জামাল রবী। আমি জানতাম তারা উভয়ে বন্ধু এবং উভয় একই ঘর থেকে বন্দী হয়েছে। তখন সে বলল, জামালকে এসব বলবেন না।
এরপর আমি তাররা কারাগারে ফিরে এসে জামালকে মারুফের মতামত জানালাম। কিন্তু তিনি আগের মত তার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ব্যস্ত রইলো। সে সময় তাররা কারাগারের প্রধান ছিলেন আব্দুল বাসেত বান্না। তিনি ইতিপূর্বে আমাকে হাসপাতালে দেখতে যেতেন এবং ইখওয়ান বন্দীদের মুক্তির পথ নিয়ে আলোচনা করতেন। তিনি বলতেন, বন্দীরা মৃত্যুর দুয়ারে উপস্থিত। বিশেষত যারা তাররা পাহাড়ের পাথরসীমা অতিক্রম করবে। যদিও আমি জানতাম তিনি তার ভাই হাসানুল বান্নার জীবদ্দশায় ইখওয়ানের কর্মী ছিলেন না। তারপরও আমি বললাম, কি করা যায়? তিনি বললেন, আমি নিজে এবং আমার অধিনস্থদের সমস্ত অস্ত্রশস্ত্র আপনদেরকে দিয়ে দেব।
তখন জামাল রবীর পরিকল্পনা ও মারুফ হুদরীর উক্তি আমার কানে ঝংকৃত হল। তখন আমি বললাম, আপনার আবেগে আমরা আনন্দিত। কিন্তু আমরা মনে করি, আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি। এখন আমাদের করার কিছু নেই। এরপর তার আনাগোনা বন্ধ হয়ে যায়। পরে তিনি অন্যত্র বদলী হয়ে যান। ইতিমধ্যে জামাল রবীসহ ইখওয়ানের অন্যান্য উর্ধ্বতন দায়িত্বশীলদেরকে তাররা থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়। ইখওয়ানদের হত্যা করার এই প্রচেষ্টা সফলতার মুখ দেখেনি। কিন্তু ১৯৫৭ সালে নির্মান তাররায় অন্য একটি নির্মম ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি হল- সেখানে আব্দুল্লাহ মাহের নামের এক দারোগা ছিল। তার সাথে কারাগারে আটক পাঁচ ইহুদী যুবকদের সাথে মধুর সম্পর্ক ছিল। এই দারোগা ইখওয়ানদেরকে বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করে লিমানের পাহারাদার ও ইখওয়ানদের মাঝে টান টান উত্তেজনাকর পরিবেশ সৃষ্টি করে। উক্ত দারোগার সাথে অন্য একজন দারোগা মিলে বিষয়টিকে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘাতের পর্যায়ে নিয়ে যায়। উস্তাদ মুনীর যুবকদের পক্ষে না থাকায় তাদের কোন অভিজ্ঞ ও বিচক্ষণ নেতা ছিল না। এক পর্যায়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে কিছু ইখওয়ানদের শান্তি প্রদানের মাধ্যমে বিষয়টি সাময়িক ভাবে নিষ্পত্তি হয়। এরপরও আব্দুল্লাহ মাহের উত্তেজনাকর পরিবেশ সৃষ্টি করে ইখওয়ানদের ক্ষেপিয়ে তুলতে থাকে। এর মধ্যে একদিন ইখওয়ানরা জানল যে, যাদেরকে পাহাড়ে নেওয়া হয় তাদের বিরুদ্ধে পলায়ন ও অবাধ্যতার অভিযোগ তুলে হত্যা করা হয়। তারা এর প্রতিবাদ জানাতে কারা প্রকোষ্টে অবস্থানের সিদ্ধান্ত নেয়। তখন সৈন্যদেরকে সেখানে প্রবেশ করে ব্রাশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। ফলে ঘটনাস্থলে ১১ জন কর্মী শহীদ হয় অপর ২১ জন আহত হয়।

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top