ঈমানদীপ্ত দাস্তান ১ম খণ্ড – এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

ঈমানদীপ্ত দাস্তান ১ম খণ্ড – এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৩০৩

ঈমানদীপ্ত দাস্তান ১ম খণ্ড – বইটির এক ঝলকঃ

পাঁচজন-ই নীরব। আলী বিন সুফিয়ান পাঁচজনের একজনকে ধরে রক্ষীদের বললেন— ‘একে ঐ গাছটার সাথে বেঁধে রাখো।’
লোকটিকে একটি খেজুর গাছের সঙ্গে দাঁড় করিয়ে বেঁধে রাখা হলো। আলী বিন সুফিয়ান তাঁর তীরন্দাজের কানে কানে কী যেন বললেন। তীরান্দাজ কাঁধ থেকে ধনুক নামিয়ে তীর সংযোজন করে এবং গাছের সঙ্গে বাঁধা লোকটিকে লক্ষ্য করে তীর ছুড়ে। তীর গিয়ে বিদ্ধ হয় লোকটির ডান চোখে। ছট্‌ফট্ করতে শুরু করে লোকটি। আলী বিন সুফিয়ান অপর চারজনকে উদ্দেশ করে বললেন, ‘তোমাদের মধ্যে আর যে ক্রুশের সন্তুষ্টি অর্জনে এভাবে ছট্‌ফট্ করে করে জীবন দিতে প্রস্তুত আছো, ওর দিকে তাকাও।’ লোকটির প্রতি চোখ তুলে তাকায় তারা । লোকটি ছট্‌ফট্ করছে আর চীৎকার করছে। ফিনকি দিয়ে রক্ত ঝরছে তার তীরবিদ্ধ চোখ থেকে ।
‘আমি ওয়াদা দিচ্ছি, তোমাদেরকে সসম্মানে সমুদ্রের ওপারে পৌঁছিয়ে দেবো। বলো, অপর উটটিতে করে কে গেছে, কোথায় গেছে?’ বললেন আলী বিন সুফিয়ান ।
‘তোমাদের একজন কমাণ্ডার আমাদের একটি উট ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।’ • জবাব দেয় একজন।
‘আর একটি মেয়েও।’ বললেন আলী বিন সুফিয়ান।
অল্পক্ষণের মধ্যে-ই আলী বিন সুফিয়ানের কৌশল লোকগুলো থেকে স্বীকারোক্তি আদায় করে নেয় যে, তারা কারা। কিন্তু তারা একটি মিথ্যা কথা বলে যে, মেয়েটি রাতে তাঁবু থেকে পালিয়ে এসে বলেছিলো, সুলতান আইউবী রাতে তাকে তাঁর তাঁবুতে রেখেছিলেন এবং তিনি নিজেও মদপান করেন, মেয়েটিকেও পান করান। মেয়েটি পালিয়ে ভীত-সন্ত্রস্থ অবস্থায় এখানে এসে আশ্রয় নিয়েছিলো। তাকে ধাওয়া করার জন্য ফখরুল মিসরী নামক এক কমাণ্ডার আসে এবং মেয়েটির বক্তব্য শুনে উটের পিঠে বসিয়ে তাকে জোরপূর্বক নিয়ে যায় । মেয়েটি সুলতান আইউবীর নামে যে অপবাদ আরোপ করেছিলো, আলী বিন সুফিয়ানকে তারা সব শোনায় ।
আলী বিন সুফিয়ান মুচকি হেসে বললেন— ‘তোমরা পাঁচজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সৈনিক ও তীরান্দাজ। আর একটি মানুষ কিনা তোমাদের একটি মেয়েকে ছিনিয়ে নিয়ে গেলো এবং একটি উটও। নিতান্ত নির্বোধ না হলে একথা বিশ্বাস করবে কেউ লোকগুলোর নির্দেশনা মোতাবেক আলী বিন সুফিয়ান মাটিতে পুঁতে রাখা ধনুক ও তূনীর উদ্ধার করেন। তাঁবুতে পাঠিয়ে দেন চারজনকে। ছট্‌ফট্ করতে
করতে মরে গেছে পঞ্চমজন ।
উটের পদচিহ্ন চোখে পড়ছে স্পষ্ট। দশজন আরোহী ডেকে পাঠান আলী বিন সুফিয়ান। মুহূর্ত মধ্যে এসে পৌঁছে দশ আরোহী। সঙ্গে সঙ্গে তাদের নিয়ে উটের পায়ের দাগ অনুসরণ করে রওনা হন তিনি।
কিন্তু উটের রওনা হওয়া আর আলী বিন সুফিয়ানের এই পশ্চাদ্ধাবনের মাঝে চৌদ্দ-পনের ঘন্টার ব্যবধান। তদুপরি উটটি অতি দ্রুতগামীও বটে। দানা-পানি ছাড়া উঁট সবল ও তরতাজা থাকতে পারে অন্তত ছয়-সাত দিন। তাই পথে বিশ্রামেরও প্রয়োজন নেই। তার বিপরীতে পথে ঘোড়াগুলোর দানা-পানি ও বিশ্রামের প্রয়োজন পড়বে একাধিকবার। ফলে চৌদ্দ-পনের ঘন্টার ব্যবধান কাটিয়ে ফখরুল মিসরীকে ধরা সম্ভব হলো না আলীর। ধাওয়া খাওয়ার আশঙ্কায় পথে তেমন থামেনি ফখরুল ।
পথে একটি বস্তু চোখে পড়ে আলী বিন সুফিয়ানের। একটি থলে। ঘোড়া থামিয়ে নেমে থলেটি তুলে নেন তিনি। খুলে দেখেন। খাদ্যদ্রব্য পাওয়া গেলো তাতে। থলেটির মধ্যে ছোট্ট আরেকটি পুটুলি। তার মধ্যেও কিছু আহার্য বস্তু। খাবারগুলো নাকের কাছে ধরে-ই আলী বিন সুফিয়ান বুঝে পেলেন, এতে হাশীশ মেশানো। পথে দু’ জায়গায় তিনি এমন কিছু আলামত, পান, যাতে বুঝা গেলো, এখানে উট থেমেছিলো এবং আরোহী উপবেশন করেছিলো। খেজুরের বীচি, ফলের দানা ও ছিলকা ছড়িয়ে আছে এদিক-সেদিক। থলেটি সন্দেহে ফেলে দেয় আলী বিন সুফিয়ানকে। কিন্তু তিনি বুঝতে পারেননি, হাশীশের নেশায় ফেলে মেয়েটি ফখরুল মিসরীকে তার রক্ষী বানিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তথাপি তিনি থলেটি নিজের কাছে রেখে দেন। কিন্তু থলের অনুসন্ধান ও অবস্থান বেশ সময় নষ্ট করে দিয়েছে তাঁর।
ফখরুল মিসরী ও মুবী গন্তব্যে পৌঁছুতে না পারলেও এবং পথে ধরা পড়ে গেলেও তেমন কোন অসুবিধা ছিলো না। কারণ, ইতিমধ্যে নাজি, ঈদরৌস ও তার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সহকর্মী সুলতান আইউবীর বিষের ক্রিয়ায় দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছে। নাজি ফাতেমী খেলাফতের একজন সেনাপতি হলেও প্রকৃতপক্ষে সে-ই মূল রাষ্ট্রনায়ক হয়ে বসেছিলো। সে সুলতান সালাহুদ্দীন আইউবীকে একজন ব্যর্থ ও অথর্ব গভর্নর প্রমাণিত করার অপচেষ্টায় মেতে উঠেছিলো। মুসলিম শাসকবর্গ নিজ নিজ হেরেমে বন্দী হয়ে পড়েছে সেই রূপসী মেয়েদের হাতে, যাদের কেউ খৃষ্টান, কেউ ইহুদী। নাম তাদের ইসলামী। এদের সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্রে ভোগ-বিলাসিতা আর যৌনসম্ভোগে আকণ্ঠ নিমজ্জিত মুসলিম শাসকগণ। ইসলামে নিবেদিত ও দেশপ্রেমিক সুলতান আইউবী এখন তাদের চোখের কাঁটা। সুলতান নুরুদ্দীন জঙ্গী যদি না থাকতেন, তাহলে ইতিহাসে সালাহুদ্দীন আইউবী নামক কোন ব্যক্তির নাম-চিহ্নও খুঁজে পাওয়া যেতো না । পৃথিবীর মানচিত্রে থাকতো না এতগুলো ইসলামী রাষ্ট্রের অস্তিত্ব।
সামান্য ইঙ্গিত পেলে-ই নুরুদ্দীন জঙ্গী সৈন্য প্রেরণ করতেন সুলতান আইউবীর সাহায্যে। সুদানী সৈন্যদের আহ্বানে খৃষ্টানরা যখন মিসর আক্রমণের জন্য রোম উপসাগরে ছড়িয়ে পড়লো, তখন সংবাদ পাওয়ামাত্র নুরুদ্দীন জঙ্গী এমন এক খৃষ্টান দেশের সৈন্যদের উপর আক্রমণ করে বসেন, যারা মিসর আক্রমণের উদ্দেশ্যে এগিয়ে যাচ্ছিলো। নুরুদ্দীন জঙ্গী নিজের সমস্যা অপেক্ষা সুলতান সালাহুদ্দীন আইউবীর সমস্যাকে অধিক প্রাধান্য দিতেন ।
কতিপয় বিশ্বাসঘাতক মুসলিম সেনানায়ক ও অসামরিক ব্যক্তি অনুভব করলো, মিসরে সুলতান আইউবীর বিরুদ্ধে অস্থিরতা ও বিদ্রোহ দানা বেঁধে উঠছে। সেই বিদ্রোহের আগুনে হাওয়া দিতে শুরু করলো তারা। তারা নেপথ্যে থেকে সুদানী সৈন্যদের উত্তেজিত করতে শুরু করলো। তারা গুপ্তচর মারফত জানতে পারলো, সুদানী সৈনদের সালারদের গোপনে হত্যা করে গুম করে ফেলা হয়েছে। সুদানী বাহিনীর নিম্নপদস্থ কমাণ্ডাররা সালারের পদে অধিষ্ঠিত হয়েছে এবং সালাহুদ্দীন আইউবীর মিসরে অবস্থানরত স্বল্পসংখ্যক সৈন্যের উপর হামলা করার পরিকল্পনা আঁটছেন। সুলতান আইউবীর আধা ফৌজ এবং রাজধানীতে সুলতানের অনুপস্থিতি থেকে কায়েদা হাসিল করতে চাচ্ছে তারা। সেই পরিকল্পনার আওতায় কালো মেঘের ন্যায় ইসলামের চন্দ্রকে ঢেকে ফেলতে চাচ্ছে পঞ্চাশ হাজার সুদানী ফৌজ। –
কায়রো পৌঁছে গেছেন আলী বিন সুফিয়ান। যাকে ধাওয়া করতে গেলেন, তার কোন সন্ধান পেলেন না। সুদানী হেডকোয়ার্টারে অবস্থানরত গোয়েন্দাদের তলব করলেন। তাদের একজন জানালো, গতরাতে একটি উট এসেছিলো। তার আরোহী ছিলো দু’জন। একজন পুরুষ একজন নারী। এখন তারা কোন্ ভবনে অবস্থান করছে, তাও অবহিত করে গোয়েন্দা। আলী বিন সুফিয়ান ইচ্ছে করলে এক্ষুণি হানা দিয়ে তাদেরকে ধরে ফেলতে পারেন। কিন্তু তিনি ভাবলেন, বিষয়টি জ্বলন্ত আগুনে ঘৃতাহুতি হতে পারে। সমস্যা আরো বেড়ে যেতে পারে। শুধু মুৰী আর ফখরুল মিসরীকে গ্রেফতার করা-ই আলী বিন সুফিয়ানের একমাত্র লক্ষ্য নয়। তার প্রধান লক্ষ্য, সুদানী বাহিনীর প্রত্যয় ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে অবগতি লাভ করা, যাতে এই ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করা সহজ হয়।
গোয়েন্দাদের প্রতি নতুন নির্দেশনা জারী করেন আলী বিন সুফিয়ান। বেশ কিছু মেয়েও আছে তাঁর গোয়েন্দাদের মধ্যে। তারা খৃষ্টান বা ইহুদী নয়— মুসলিম। বিভিন্ন পতিতালয় থেকে তুলে আনা হয়েছে তাদের। কিন্তু তাদের প্রতি আলী বিন সুফিয়ানের আস্থা আছে ষোলআনা। তাদেরকে বলে দিলেন মুবীকে খুঁজে বের করতে।
চারদিন হলো, আলী বিন সুফিয়ান রাজধানীর বাইরে ঘুরে ফিরছেন। সুদানী ফৌজী নেতৃত্বের চারপার্শ্বে ঘুরপাক খাচ্ছে তার কর্মতৎপরতা।
আজ পঞ্চম রাত। বাইরে খোলা আকাশের নীচে বসে দু’জন গোয়েন্দার নিকট থেকে রিপোর্ট নিচ্ছেন তিনি। আলী বিন সুফিয়ান কখন কোথায় থাকেন, তা জানা থাকে তার লোকদের। দলের এক ব্যক্তি আরেকজনকে সঙ্গে করে তাঁর নিকট আসে এবং বলে— ‘এ লোকটাকে জঙ্গল থেকে ধরে এনেছি। ঢুলুঢুলু শরীরে লোকটা একবার পড়ছে আবার উঠে দু’ কদম সম্মুখে এগিয়ে পুনরায় পড়ে যাচ্ছে দেখতে পেলাম। পরিচয় জানতে চাইলে বললো, আমাকে আমার বাহিনী পর্যন্ত পৌছিয়ে দাও। নাম নাকি ফখরুল মিসরী। লোকটি ভাল করে কথা বলতে পারছে না।’ এমনি সময়ে ধপাস্ করে মাটিতে বসে পড়ে সে।
—তুমি-ই কি সেই কমাণ্ডার, যে একটি মেয়ের সঙ্গে রণাঙ্গন থেকে পালিয়ে এসেছে?’ জিজ্ঞেস করেন আলী বিন সুফিয়ান !
*আমি সুলতান আইউবীর পলাতক সৈনিক। মৃত্যুদণ্ডের অপরাধে অপরাধী। তবে আগে আমার পুরো ঘটনা শুনুন, অন্যথায় আপনাদেরও সকলের মৃত্যুদণ্ড বরণ করতে হবে।’ কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বললো লোকটি।
কথা বলার ভাব-ভঙ্গিতে আলী বিন সুফিয়ান বুঝে ফেললেন, লোকটি নেশাগ্রস্থ। তাই তাকে নিজের দফতরে নিয়ে যান এবং রাস্তা থেকে কুঁড়িয়ে আনা থলেটি তাকে দেখান। জিজ্ঞেস করেন— ‘এই থলেটি কি তোমার? এর খাদ্য-দ্রব্য খেয়ে-ই কি তোমার এই দশা?”
‘হ্যাঁ, ও আমাকে এর থেকে-ই খাওয়াতো।’ জবাব দেয় ফখরুল মিসরী ।
থলের ভিতরে পাওয়া পুটুলিটি আলীর সামনে রাখা। ফখরুল মিসরী ঝট্ করে পুটুলিটি হাতে নিয়ে খুলে-ই মিষ্টির মত একটি টুকরা তুলে নেয়। আলী বিন সুফিয়ান খপ্ করে তার হাতটা ধরে ফেলেন। ফখরুল মিসরী অস্থিরচিত্তে বলে, আল্লাহর ওয়াস্তে আমায় এটি খেতে দাও। এরই মধ্যে আমার জীবন। অন্যথায় আমি বাঁচবো না।’ আলী বিন সুফিয়ান ফখরুল মিসরীর হাত থেকে টুকরাটি ছিনিয়ে নেন এবং বলেন— ‘তোমার পূর্ণ কাহিনী শোনাও, তারপর না হয় এসব খেয়ে জীবন বাঁচাবে।’
আলী বিন সুফিয়ানকে নিজের পূর্ণ কাহিনী শোনায় ফখরুল মিসরী। ক্যাম্প থেকে মেয়েটিকে ধাওয়া করা থেকে শুরু করে সর্বশেষ ঘটনা পর্যন্ত সবিস্তার বিবরণ দেয় আলী বিন সুফিয়ানের কাছে। সে জানায়, বণিকরা আমাকে কফি পান করায়, যার ক্রিয়ায় আমি ভিন্ন এক জগতে গিয়ে উপনীত হই। বণিকরা তাকে যা যা বলেছে, তাও শোনায় সে আলী বিন সুফিয়ানকে। মেয়েটির ফাঁদে আটকা পড়া সম্পর্কে ফখরুল জানায়, বণিকদের দেয়া কফি পান করে আমি নেশাগ্রস্থ হয়ে পড়ি। মেয়েটির বিবৃত্ব কাহিনী শুনে আমার মনে সুলতান আইউবীর প্রতি অশ্রদ্ধা সৃষ্টি হয়। আমি তাদের ফাঁদে আটকা পড়ি। উটের পিঠে বসিয়ে মুবী আমাকে কোথায় যেন নিয়ে রওনা হয়। তার প্রেমে পড়ে আমি হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।
আমরা একটানা চলতে থাকি। মাঝে-মধ্যে সামান্য বিরতি দিয়ে মেয়েটি ছোট্ট পুটুলি থেকে আমাকে কি যেন খাওয়ায়। আমি নিজেকে রাজা ভাবতে শুরু করি। মেয়েটি আমাকে ভালবাসার নিশ্চয়তা দিয়েছিলো, ওয়াদা দিয়েছিলো আমাকে বিয়ে করবে। শর্ত দিয়েছিলো, আমি তাকে সুদানী কমাণ্ডারদের নিকট পৌঁছিয়ে দেবো ।
আমি নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি। বিয়ে ছাড়া ই মেয়েটিকে স্ত্রীর মত ব্যবহার করার চেষ্টা করি। মেয়েটি তার বাহুবন্ধনে জড়িয়ে নিয়ে প্রেম দিয়ে আমাকে পাগল করে তোলে।
তৃতীয়বার পানাহারের জন্য অবতরণ করে দেখি, থলে নেই। খাদ্যভর্তি থলেটি পথে কোথায় পড়ে গেছে যেন। পিছনে ফিরে গিয়ে থলেটি খুঁজে আনার জন্য বলে মুবী। আমি বললাম, আমি পলাতক সৈনিক। আশঙ্কা আছে, দলের লোকেরা আমাকে ধাওয়া করবে। কিন্তু জিদ্ ধরে বসে মেয়েটি। বলে, না, যে করে-ই হোক থলেটি খুঁজে আনতেই হবে। আমি তাকে বুঝাবার চেষ্টা করি যে, আমাদের ক্ষুধায় মরে যাওয়ার ভয় নেই। একান্ত প্রয়োজন হলে পথে কোন বাড়িতে গিয়ে কিছু চেয়ে খাবো। কিন্তু লোকালয়ের কাছে ঘেঁষতে রাজি নয় মেয়েটি । আমি তাকে জোরপূর্বক উটের পিঠে বসিয়ে নিই এবং তার পিছনে বসে উট হাঁকাই।
: সেদিন ছিলো সফরের তৃতীয় দিন। সন্ধ্যার সময় মেয়েটি শহরের বাইরে সুদানীদের এক কমাণ্ডারের নিকট গিয়ে উপস্থিত হয়। আমি আমার মাথায় এমন

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top