একজন হিমু কয়েকটি ঝি ঝি পোকা – হুমায়ূন আহমেদ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

একজন হিমু কয়েকটি ঝি ঝি পোকা – হুমায়ূন আহমেদ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ হুমায়ূন আহমেদ

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১০২

একজন হিমু কয়েকটি ঝি ঝি পোকা – বইটির এক ঝলকঃ

‘ভাল হবার কথা না। আমার কফি বানায় ইদরিস নামের একজন সে আজ আসেনি। কোনো এক দিন হয়তোবা ইদরিসের বানানো কফি আপনাকে খাওয়াতে পারব।’
‘স্যার আমাকে কি জন্যে এখানে আনা হয়েছে বললে টেনশানটা কমে।’
‘টেনশান বোধ করছেন ?
‘সত্যি কথা বলব ?’
‘পুলিশের সামনে সত্যি কথা বলা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার তারপরেও সত্য বলতে চাইলে বলুন।
‘টেনশান বোধ করছি না।’
ভদ্রলোক চেয়ারে হেলান দিলেন। তাঁর সামনে রাখা টিস্যু বক্সে হাত দিয়ে টিস্যু বের করলেন। মুখ মুছে টিস্যু ফেললেন তাঁর পায়ের কাছে রাখা বেতের ঝুড়িতে। কিছুক্ষণ পর পর টিস্যু দিয়ে মুখ মোছা মনে হয় এই পুলিশ সাহেবের অভ্যাস। আমার সামনেই তিনি তিনবার মুখ মুছলেন। ‘আপনি তা হলে টেনশান বোধ করছেন না!’
“জ্বি না।’
“পুলিশ যে কোনো মানুষের সামনে এসে দাঁড়ালেই সে টেনশান বোধ করে। সেখানে আপনাকে ধরে নিয়ে আসা হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে তারপরেও টেনশান বোধ করছেন না ?’
“জ্বি না।’
‘কারণ কি এই যে আপনার ধারণা আপনি কোনো অপরাধ করেননি কাজেই টেনশান বোধ করার কিছু নেই।’
‘এটা কারণ না।’ আমি ঢোঁক গিলতে গিলতে বললাম, পুলিশ যাদের ধরে নিয়ে আসে তাদের বেশ বড় অংশই কোনো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকে না। তাদেরই টেনশন বেশি।
‘কেন ?’
‘কারণ তারা চেষ্টা করে তাদের নিরপরাধ প্রমাণ করতে। এই চেষ্টা করতে গিয়ে সব কিছু আরো জট পাকিয়ে ফেলে। অপরাধী পুলিশের হাত থেকে ছাড়া পায় নিরপরাধী সাধারণত পায় না।’
‘আপনার কি ধারণা আপনি অপরাধী না নিরপরাধী?’
‘নিরপরাধী।’
‘তা হলে তো আপনার ভীত হওয়া উচিত। ভীত হচ্ছেন না কেন ?’ “থানা হাজতে আমার অভ্যাস আছে।’
‘বাহ্ ভাল তো।’ আপনার কনভিকশান হয়েছে ? না-কি আপনার দৌড় হাজত পর্যন্ত?’
‘এখনো কনভিকশান হয়নি।’
‘একটা অভিজ্ঞতা তা হলে বাকি থেকে গেল। এটা কি ঠিক হচ্ছে ? ভদ্রলোক হাসি মুখে প্রশ্ন করে উত্তরের জন্যে অপেক্ষা করতে লাগলেন
এবং আমার দিকে সামান্য ঝুঁকে এলেন। এই প্রথম তাঁকে ‘পুলিশ’ বলে
মনে হচ্ছে।
“হিমু সাহেব!” ‘জ্বি স্যার।’
‘আপনার ভয় পাবার কিছু নেই।’
‘থ্যাংক য়্যু।’
‘জুঁই নামের কোনো মেয়েকে আপনি চেনেন
“জ্বি না।’
‘বড় কালো রঙের গাড়িতে করে যে মেয়েটির সঙ্গে যাচ্ছিলেন তাঁকে চেনেন না ?’
‘ওর নাম জুঁই ?’
‘হ্যাঁ জুই।’
‘জুঁইকে সামান্য চিনি।’
‘তাঁর বাবাকে চেনেন ?
‘জ্বি-না।’
‘আমি জুঁই-এর বাবা। ‘
ভদ্রলোক আবারো মিষ্টি করে হাসলেন। আমিও হাসলাম। হাত বাড়িয়ে টিস্যু পেপার নিয়ে মুখ ঘসলেন। এই কাজটা আমার করতে ইচ্ছে হচ্ছে। কাউকে বিরক্ত করার সবচে সহজ পথ হচ্ছে তাকে অনুকরণ করা। সে হাসলে হাসা। সে ভুরু বাঁকালে ভুরু বাঁকানো, সে কাশলে কাশা । ভদ্রলোক থানার সেকেন্ড অফিসার হলে হাত বাড়িয়ে বক্স থেকে টিস্যু পেপার নিয়ে মুখ ঘসতাম। এনার সঙ্গে করা যাচ্ছে না। ভদ্রলোক চট করে হাসি বন্ধ করে গম্ভীর হয়ে গেলেন। পুলিশের লোকরা এই কাজটা খুব ভাল পারে। এই মেঘ এই রোদ্র। এই চাঁদের আলো, এই বজ্রপাত।
“হিমু!’
আমি সামান্য চমকালাম, ভদ্রলোক এতক্ষণ হিমু সাহেব বলছিলেন। এখন সাহেব বাদ পড়েছে। আমি বিনীতভাবে বললাম, ইয়েস স্যার।
‘আমার এই মেয়েটাকে নিয়ে আমি খুব সমস্যায় পড়েছি। সে আমার সঙ্গে চোর-পুলিশ খেলছে। চার পাঁচ মাস ধরে সে সবাইকে লুকিয়ে কোথায় যেন যাচ্ছে। দুই থেকে তিন ঘন্টা কাটিয়ে সহজ ভাবে ফিরে আসছে। উদাহরণ দেই। সে গাড়ি নিয়ে ইস্টার্ন প্লাজায় যাবে। গাড়ি দূরে কোথাও রেখে ইস্টার্ন প্লাজায় ঢুকবে। তারপর সে উধাও। ঘন্টা দু’এক পর খুব স্বাভাবিক ভাবে বের হবে। এই দু’ঘন্টা সে কিন্তু শপিং করছিল না । অন্য কোথাও ছিল। এরকম সে প্রায়ই করছে। আমি অনেক চেষ্টা করেও ব্যাপারটা ধরতে পারছি না। তুমি কি জান সে কোথায় যায়!’
ব্যারোমিটারের কাঁটা দ্রুত নামছে। আগে ছিলাম আপনি। এখন হয়েছি তুমি। এই তুমি আন্তরিকতার তুমি না। অন্য তুমি। ভদ্রলোকের দিকে তাকিয়ে আমি মোটামুটি করুণ মুখ করে বললাম, স্যার আমি জানি না। ‘তুমি কি জেনে দিতে পারবে ?
‘আমি জানতে পারব কিন্তু আপনাকে জানাব কি-না তা বলতে পারছি না।’
ভদ্রলোক আবারো টিস্যু বক্স থেকে টিস্যু নিলেন। মুখ ঘসতে ঘসতে বললেন, তুমি জানবে এবং আমাকে জানাবে। তোমার সঙ্গে আমার কথা শেষ। এখন বিদেয় হও। একটা ব্যাপার তোমাকে বলে দিচ্ছি এখন থেকে আমার মেয়ের পেছনে না, তোমার পেছনে আমি লোক লাগিয়ে রাখব। বাঘের পেছনে যেমন ফেউ থাকে। তোমার পেছনেও ফেউ থাকবে। তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে তুমি বুদ্ধিমান ছেলে। তুমি আমার ভদ্র কথাবার্তা, এবং হাসি মুখ দেখে বিভ্রান্ত হোয়ো না। তুমি কি আমার বাসার ঠিকানা জান ?
“জ্বি না।’
‘জুঁই তোমাকে কখনো বাসায় চা খেতে বলেনি
‘বলেছে।’
‘তুমি যাওনি ?’ “জ্বি না।’
‘এখন যাবে। চা খেতে যাবে। গল্প করতে যাবে। এবং অতি অবশ্যই আসল খবরটা জুঁই-এর কাছ থেকে বের করবে। নাও এই কার্ডটা রাখ। এখানে আমার বাসার ঠিকানা এবং টেলিফোন নাম্বার আছে।’
‘স্যার এক গ্লাস পানি খাব।’
ভদ্রলোক বেল টিপলেন। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে একজন পানির গ্লাস নিয়ে ঢুকল। পানির কথা বলতে হল না। এটা কি ভাবে সম্ভব হল বুঝতে পারলাম না। বেল টেপার মধ্যেই কি কোনো সংকেত আছে। এই ধরনের বেল মানে চা, এই টাইপ বেল হল- পানি। আরেক ধরনের বেলের অর্থ সামনে যে বসে আছে তাকে ধরে মার লাগাও।
‘পানি খাব না স্যার।
ভদ্রলোক শীতল চোখে আমার দিকে তাকালেন। আমি কাচুমাচু মুখ করে বললাম, পুলিশ অফিসগুলিতে পানি খাওয়া ঠিক না। এদের পানির ট্যাংকে ডেডবডি থাকে। পত্রিকায় পড়েছি।
‘আই সি। তা হলে পানি না খাওয়াই ভাল।’
আমি বের হয়ে এলাম এবং মোটামুটি নিশ্চিত ভাবে জেনে গেলাম আমি শক্ত পাল্লায় পড়েছি। ইনি সহজ পাত্র না । হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে কেউ যদি দেখে তার পাশে এমন একজন লোক বসে আছে যার চেহারা তক্ষকের মত, এবং সে ক্রমাগত মুখ নাড়ছে কিন্তু মুখ থেকে কোনো শব্দ বের হচ্ছে না তখন কী করা উচিত ? লাফ দিয়ে উঠে বসে-“কে কে” বলে চিৎকার করা উচিত, না-কি প্রাথমিক ধাক্কাটা সামলাবার জন্যে আবার চোখ বন্ধ করে ফেলা উচিত ?
আমি লাফ দিয়ে উঠে না বসে চোখ বন্ধ করে ফেললাম। ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি বিবেচনা করা যাক। ঠাণ্ডা মাথায় বিবেচনা করলে হয়ত দেখা যাবে ব্যাপারটা অত্যন্ত স্বাভাবিক। জগতের অতি স্বাভাবিক ঘটনাগুলিও শুধু পরিস্থিতির কারণে অস্বাভাবিক মনে হয়।
যেহেতু আমার ঘরের দরজা সব সময় খোলা থাকে সেহেতু যে কেউ আমার ঘরে ঢুকতে পারে।
লোকটা চেয়ারে না বসে আমার গা ঘেসে বিছানায় বসে আছে। এরও যুক্তি সঙ্গত কারণ আছে। আমার চেয়ারের একটা পা নড়বড়ে। সে হয়ত চেয়ারে বসতে গিয়ে ভরসা না পেয়ে আমার বিছানায় বসেছে।
লোকটার চেহারা ‘তক্ষকের’ মত। এটা খুবই অস্বাভাবিক ধারণা। তক্ষক সরিসৃপ জাতীয় প্রাণী। মানুষ হোমোসেপিয়ান- তার চেহারা তক্ষকের মত হতে পারে না। লোকটার চোখ দুটা হয়ত বড় বড় এবং দু’টা চোখই অক্ষিগোলক থেকে সামান্য বের হয়ে আছে। এ রকম প্রায়ই দেখা যায়। থাইরয়েড গঠিত সমস্যায় এরকম হয়, চোখ কোটর থেকে খানিকটা বের হয়ে থাকে। ভদ্রলোকেরও তাই হয়েছে। সে কারণেই তাকে হয়তোবা খানিকটা তক্ষক বা টিকটিকির মত লাগছে।
বাকি থাকল মুখ নাড়ানো। মুখ নাড়ছে ঠোঁট নাড়ছে, শব্দ হচ্ছে না। অনেক সময়ই মানুষের মুখ নড়ে, ঠোঁট নড়ে, শব্দ হয় না। যেমন পান খাবার সময়, চুইং গাম চিবানোর সময়। লোকটা নিশ্চয়ই পান খাচ্ছে কিংবা

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top